পণ্যসামগ্রী ও সেবাকার্যের উৎপাদন, বিনিময় এবং ব্যবহারের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত যে কোনো মানবীয় আচরণের প্রকাশই অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড তিন ভাগে বিভক্ত : প্রথম পর্যায়, দ্বিতীয় পর্যায় এবং তৃতীয় পৰ্যায় ৷
প্রথম পর্যায়ের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড (Primary economic activities) : প্রথম পর্যায়ের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে মানুষ প্রকৃতির সঙ্গে সরাসরি কাজ করে। কৃষিকার্যের ক্ষেত্রে মানুষ বীজ বপন করে, প্রকৃতি এই বীজকে অঙ্কুরিত করে শস্যে পরিণত করে। প্রকৃতির এই অবদান মানুষ পুরস্কারস্বরূপ গ্রহণ করে। পশু শিকার, মৎস্য শিকার, কাঠ সংগ্রহ, পশুপালন, খনিজ উত্তোলন এবং কৃষিকার্য প্রথম পর্যায়ের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ প্রথম পর্যায়ের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত।
দ্বিতীয় পর্যায়ের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড (Secondary economic activities) : দ্বিতীয় পর্যায়ের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে মানুষ তার প্রথম পর্যায়ের কর্মকাণ্ড দ্বারা উৎপাদিত সামগ্রীকে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গঠন করে, আকার পরিবর্তন করে এবং উপযোগিতা বৃদ্ধি করে। খনিজ লৌহ আকরিক উত্তোলন করে তা থেকে লোহাশলাকা, পেরেক, টিন, ইস্পাত ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যে পরিণত করা হয়। রন্ধনকার্য থেকে আরম্ভ করে অত্যন্ত জটিল যন্ত্রপাতি প্রস্তুতকরণ (Manufacturing) সকল প্রকার কার্যই দ্বিতীয় পর্যায়ের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড।
তৃতীয় পর্যায়ের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড (Tertiary economic activities) : তৃতীয় পর্যায়ের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে মানুষ প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের কর্মকাণ্ড থেকে উৎপাদিত বস্তুসমূহের উপযোগিতা বৃদ্ধি করে এবং সেবাকার্য সম্পাদন করে। কোনো দেশের উৎপাদিত পণ্যের উদ্বৃত্তাংশ ঘাটতি অঞ্চলসমূহে প্রেরণ করলে ঐ বস্তুর উপযোগিতা অনেক পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। এটা সম্ভবপর হতে পারে ব্যবসা, বাণিজ্য, পরিবহন ইত্যাদির মাধ্যমে। পাইকারি বিক্রেতা, খুচরা বিক্রেতা, ফেরিওয়ালা, পরিবেশক, ব্যাংকার, শিক্ষক, চিকিৎসক, নার্স, আইনজীবী, ধোপা, নাপিত, রিকশাচালক প্রভৃতি অসংখ্য প্রকার জনসমষ্টির কর্মকাণ্ড তৃতীয় পর্যায়ের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের অন্তর্ভুক্ত ।
কাজ : দোকানদার, কামার, শিক্ষক, কৃষক, ব্যবসায়ী, নার্স-এর অর্থনৈতিক কার্যকে নিচের ছকে উপস্থাপন
কর (দলীয় কাজ)।
প্রথম পর্যায় | দ্বিতীয় পর্যায় | তৃতীয় পর্যায় |