ই-গভর্নান্স ও বাংলাদেশ

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি - তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং আমাদের বাংলাদেশ | NCTB BOOK
998
Summary

গুড গভর্ন্যান্সের জন্য প্রয়োজন: স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা। ডিজিটাল ব্যবস্থার মাধ্যমে সরকারি ব্যবস্থাসমূহ আধুনিক ও স্বচ্ছ হচ্ছে, যা নাগরিকের হয়রানি কমাচ্ছে।

ই-গভর্ন্যান্সের উদাহরণ:

  • পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল এখন ইন্টারনেট এবং এসএমএসের মাধ্যমে জানা যায়, যা বিড়ম্বনা কমাচ্ছে।
  • মোবাইল ফোনে উচ্চশিক্ষায় ভর্তি আবেদন করা সম্ভব হয়েছে, ফলে যাতায়াতের প্রয়োজন কমেছে।
  • জেলা ই-সেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে সেবা পাওয়ার সময় কমেছে এবং স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
  • বিল পরিশোধের প্রক্রিয়া বর্তমানে অনলাইন ও মোবাইলের মাধ্যমে করা যায়, যা সময় সাশ্রয়ী।
  • চলচলনকারী পরিষেবাসমূহ যেমন ATM ও Mobile ব্যাংকিং ২৪ ঘণ্টা উপলব্ধ।

অন্যথায়: ই-গভর্ন্যান্স সরকারের দপ্তরগুলির মধ্যে আন্তঃসংযোগ বৃদ্ধি করছে এবং কর্মীদের দক্ষতা বাড়াচ্ছে। বাংলাদেশে ই-গভর্ন্যান্স কয়েক বছর আগে শুরু হয়েছে, তবে কিছু ক্ষেত্রে এখনও প্রয়োজন রয়েছ। সব ক্ষেত্রেই এটি চালু হলে সুশাসনের দিকে দেশ এগিয়ে যাবে।

গুড গভর্ন্যান্স বা সুশাসনের জন্য দরকার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা। ডিজিটাল ব্যবস্থা প্রচলনের ফলে সরকারি ব্যবস্থাসমূহকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করার পাশাপাশি সরকারি ব্যবস্থাসমূহের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সম্ভব। এর ফলে নাগরিকের হয়রানি ও বিড়ম্বনার অবসান ঘটে এবং দেশে সুশাসনের পথ নিষ্কণ্টক হয়। শাসন ব্যবস্থায় ও প্রক্রিয়ায় ইলেকট্রনিক বা ডিজিটাল পদ্ধতির প্রয়োগই হচ্ছে ই-গভর্ন্যান্স ।
একটা সময় ছিল যখন পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল সংগ্রহ করা ছিল পরীক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের জন্য এক বিড়ম্বনার ব্যাপার। বিশেষ করে প্রধান প্রধান শহর থেকে দূরবর্তী গ্রামে অবস্থানরতদের পক্ষে এটি ছিল দুষ্কর। মাত্র দুই-দশক আগেও এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের সাত দিন পরেও অনেকেই তাদের ফলাফল জানতে পারত না। কিন্তু বর্তমানে ফল প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে ইন্টারনেট এবং মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে ফলাফল জানা যায়। ফলে, ফলাফল জানার যে বিড়ম্বনা ছিল সেটির অবসান হয়েছে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে ই-গভর্ন্যান্সের আর একটি উদাহরণ হলো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য মোবাইল ফোনে আবেদন করার সুবিধা। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, পূর্বে যশোর জেলায় একজন শিক্ষার্থী সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ইচ্ছুক হলে তাকে অনেকগুলো কাজ সম্পন্ন করতে হতো। এজন্য নিজে অথবা প্রতিনিধিকে সিলেট গিয়ে একবার ভর্তির আবেদনপত্র সংগ্রহ এবং পরে আবার আবেদনপত্র জমা দিতে হতো। বর্তমানে মোবাইল ফোনেই এই আবেদন করা যায়। ফলে, ভর্তিচ্ছুদের ভর্তির আবেদন ফরম জোগাড় ও জমা দেওয়ায় জন্য শহর থেকে শহরে ঘুরতে হয় না ।
আবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সকল সেবা স্বল্প সময়ে, কম খরচে এবং ঝামেলাহীনভাবে পাওয়ার জন্য চালু হয়েছে জেলা ই-সেবা কেন্দ্র। এর ফলে আগে যেখানে কোনো সেবা পেতে ২/৩ সপ্তাহ লাগতো, সেটি এখন মাত্র ২-৫ দিনে পাওয়া যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, তথ্যের ডিজিটালকরণের ফলে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সময় কম লাগছে। সেবা প্রদানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিভিন্ন দলিল, পর্চা প্রভৃতির নকল প্রদানে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সক্ষমতাও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। নাগরিক যন্ত্রণার আর একটি উদাহরণ হলো পরিসেবাসমূহের বিল পরিশোধ। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ইত্যাদির বিল পরিশোধের গতানুগতিক পদ্ধতি খুবই সময়সাপেক্ষ এবং যন্ত্রণাদায়ক, কোনো কোনো ক্ষেত্রে একটি সম্পূর্ণ কর্মময় দিন বিদ্যুৎ বিল পরিশোধেই নাগরিককে ব্যয় করতে হয়। কিন্তু বর্তমানে মোবাইল ফোন কিংবা অনলাইনে এই বিল পরিশোধ করা যায়। কেবল বিদ্যুৎ নয়, পানি ও গ্যাসের বিলও এখন অনলাইনে ও মোবাইল ফোনে পরিশোধ করা যায়। গভর্ন্যান্সের মূল বিষয় হলো নাগরিকের জীবনমান উন্নত করা এবং হয়রানিমুক্ত রাখা। ই-গভর্ন্যান্সের মাধ্যমে কোনো কোনো কার্যক্রম ৩৬৫ দিনের ২৪ ঘণ্টা করা সম্ভব যেমন- ATM সেবা, Mobile ব্যাংকিং, তথ্য সেবা ইত্যাদি। ফলে, নাগরিকরা নিচ্ছেদের সুবিধাজনক সমরে সেবা গ্রহণ করতে পারে ।
অন্যদিকে ই-গভর্ন্যান্স চালুর ফলে সরকারি দপ্তরসমূহের মধ্যে আন্তঃসংযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে, কর্মীদের
দক্ষতাও বেড়েছে। ফলে দ্রুত সেবা প্রদান সম্ভব হচ্ছে। বাংলাদেশে ই-গভর্ন্যান্স চালু হয়েছে বেশ কয়েক বছর হয়েছে। এখনো কিছু ক্ষেত্রে ই-গভর্ন্যান্স চালু হওয়া বাকি রয়েছে। সকল ক্ষেত্রে ই-গভর্ন্যান্স চালু হলে সুশাসনের পথে দেশ অনেক এগিয়ে যাবে।

Promotion
NEW SATT AI এখন আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

Are you sure to start over?

Loading...