মানুষের বেঁচে থাকার জন্য যেমন খাদ্যের প্রয়োজন তেমনি অন্যান্য প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্যও খাদ্যের প্রয়োজন। দৈহিক বৃদ্ধি, পুষ্টিসাধন, ক্ষয়পূরণ এবং রোগ প্রতিরোধের জন্য খাদ্যে সকল পুষ্টি উপাদান থাকা আবশ্যক। গৃহপালিত পশুর খাদ্যে ছয়টি পুষ্টি উপাদান থাকা দরকার। নিচের ছকে পুষ্টি উপাদানের নাম, পুষ্টির উৎস ও পুষ্টির কার্যকারিতা দেখানো হলো-
| পুষ্টি উপাদান | পুষ্টির উৎস | পুষ্টির কার্যকারিতা |
| আমিষ | ডাল, খৈল, শুঁটকি মাছের গুঁড়া, রক্ত | (১) দেহকে সুস্থ ও সবল রাখতে সহায়তা করে (২) দেহের ক্ষয়পূরণ ও বৃদ্ধিসাধন করে। |
| শর্করা | গম, ভুট্টা, খড়, চালের কুঁড়া, ঝোলা গুড় | (১) দেহে শক্তি বৃদ্ধি, তাপ উৎপাদন ও সংরক্ষণ করে (২) দেহের বৃদ্ধি ও কর্মক্ষমতা বাড়ায় (৩) কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। |
| চর্বি বা স্নেহ জাতীয় পদার্থ | খৈল, সয়াবিন, বাদাম, সূর্যমুখী, দুধ, মাছের তেল | (১) দেহে তাপ ও কর্মশক্তি বৃদ্ধি করে (২) চামড়ার মসৃণতা বৃদ্ধি করে এবং চর্মরোগ প্রতিরোধ করে। |
| ভিটামিন | বিভিন্ন কাঁচা ঘাস, ফলমূল, শাকসবজির খোসা, গাছের পাতা | (১) চামড়া, হাড় ও দাঁতের গঠন ও সুস্থতা রক্ষার জন্য ভিটামিন ডি সহায়তা করে (২) ভিটামিন এ রোগ প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। |
| খনিজ পদার্থ (ফসফরাস, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, দস্তা, লৌহ, ম্যাংগানিজ, কপার ও কোবাল্ট) | কাঁচা ঘাস, লবণ মিশ্রিত উদ্ভিদজাত খাদ্য | (১) দেহে নতুন টিস্যু উৎপাদনে সহায়তা করে (২) হাড়, দাঁতের গঠন ও পুষ্টি সাধন করে (৩) রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। |
| পানি | পুকুর, খাল, বিল, নদী, গভীর ও অগভীর নলকূপের পরিষ্কার বিশুদ্ধ পানি, রসাল কাঁচা ঘাস | (১) তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ও খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে (২) খাদ্যকে দ্রবীভূত করতে সাহায্য করে (৩) কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে (৪) দেহের দূষিত পদার্থ মলমূত্র ও ঘামের আকারে বের করে দেয়। |
গৃহপালিত পশুর সুষম পুষ্টি উপাদান
উপরে আলোচিত পুষ্টি উপাদানগুলো আনুপাতিক হারে যেসব খাদ্যে বিদ্যমান থাকে, তাকে সুষম পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ খাদ্য বা সুষম খাদ্য বলে। এ খাদ্য গবাদিপশুর জন্য খুবই জরুরি। এ খাদ্য সকল পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে থাকে। এটি সুস্বাদু ও সহজপাচ্য হয়ে থাকে। এতে আঁশ জাতীয় খাদ্য (শুষ্ক ও রসাল) এবং দানাদার খাদ্য থাকে।
আঁশ জাতীয় পুষ্টি উপাদান: (ক) শুষ্ক ধানের খড়, গমের খড়, সাইলেজ ও ঘাস
(খ) রসাল: কাঁচা ঘাস, মিষ্টি আলু, মুলা, গাজর ইত্যাদি
দানা জাতীয় খাদ্য: গম ভাঙা, ভুট্টা ভাঙা, চালের কুঁড়া, গমের ভুসি, খৈল, ডালের খোসা।
| কাজ: অপুষ্টিতে ভুগছে এমন গৃহপালিত পশু এবং সঠিক পুষ্টিসম্পন্ন সুস্থ গৃহপালিত পশুর স্থিরচিত্র বা ভিডিও শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে দেখাবেন এবং শিক্ষার্থীদেরকে এ দুই ধরনের গৃহপালিত পশুর শারীরিক গঠন ও সুস্থতার পার্থক্যের কারণ ব্যাখ্যা করতে বলবেন। এ কাজটি উক্ত আলোচনা বা দলীয়ভাবে শিক্ষক করাতে পারবেন। |
Read more