Summary
“কারবালা-প্রান্তর” অংশটি মীর মশাররফ হোসেনের ‘বিষাদ-সিন্ধু’ উপন্যাসের অন্তর্ভুক্ত। এতে হোসেনের যুদ্ধের বর্ণনা করা হয়েছে, যিনি হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর কন্যা হযরত ফাতিমা (রা.) ও জামাতা হযরত আলির (রা.) পুত্র। ক্ষমতার লোভে এজিদ তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যা করে। হোসেন সৈন্যবহর নিয়ে যুদ্ধ করেন এবং এজিদের অনুপস্থিতির জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন। যুদ্ধের মধ্যে তিনি তৃষ্ণার্ত হয়ে ফোরাত নদীর কাছে গিয়ে পানির কথা ভাবেন, কিন্তু হারানো স্বজনদের স্মরণ করে পানি ফেলে দেন। এ সময় শত্রুরা আক্রমণ করলে তিনি গভীর যন্ত্রণায় ভোগেন। সীমার নামের এক ব্যক্তি তাঁকে হত্যা করার চেষ্টা করে, কিন্তু হোসেন তাঁর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে সীমারকে আত্মত্যাগে উদ্বুদ্ধ করেন। এভাবে হোসেন শহীদ হন। এই অংশে হোসেনের বীরত্ব, পরিবারের প্রতি ভালোবাসা ও আত্মত্যাগ প্রকাশিত হয়েছে।
“কারবালা-প্রান্তর” গদ্যাংশটি মীর মশাররফ হোসেন রচিত 'বিষাদ-সিন্ধু' উপন্যাসের একটি অংশ। এখানে দেখা যাচ্ছে, ফোরাত নদীর উপকূলে কারবালার প্রান্তরে এজিদ-বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন হোসেন। তিনি নবি হযরত মোহাম্মদের (সা.) কন্যা হযরত ফাতিমা (রা.) ও জামাতা হযরত আলির (রা.) পুত্র। ক্ষমতালোভী এজিদ ষড়যন্ত্র করে হোসেনের ভাই হাসান, হাসানের পুত্র কাসেমসহ পরিবারের অনেক সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। ‘কারবালা-প্রান্তরে' দেখা যাচ্ছে হোসেন নিজেই যুদ্ধে নেমেছেন। যুদ্ধে এজিদ নিজে অনুপস্থিত দেখে হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করলেন। কারণ এজিদ পাঠিয়েছে নিরীহ সৈনিকদের। তবু যুদ্ধের প্রয়োজনে প্রচণ্ড লড়াই করে তিনি পরাজিত করলেন এজিদ-পক্ষের সেনাদের। এক সময় তৃষ্ণার্ত হয়ে ফোরাত নদীর পানি পান করতে গেলেন। তাঁর মনে পড়ল পানির অভাবে মৃত্যুবরণ করা পরিবার-স্বজনদের কথা। হোসেন আঁজলা তুলে নেয়া পানি ফেলে দিলেন। মগ্ন হয়ে ভাবছিলেন হারানো স্বজনদের কথা। সে সময় লুকিয়ে থাকা শত্রুরা তাঁকে আঘাত করল। সীমারের ছুঁড়ে দেয়া বিষাক্ত তিরে বিদ্ধ হলেন তিনি। গভীর যন্ত্রণায় কাতর হলেন। হোসেনের হাতে তখন কোনো অস্ত্র নেই। সে সুযোগে সীমার তাঁর গলায় ছুরি চালিয়ে হত্যা করার চেষ্টা করল । কিন্তু বারবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলো । কেননা হযরত মোহাম্মদ (সা.) ছোট হোসেনকে আদর করে গলায় চুমু খেতেন । হোসেন সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে সীমারকে তাঁর পিঠের ওপর বসে ছুরি চালাতে বললেন। সীমারকে আশ্বাস দিলেন । মৃত্যুর পর সীমারকে না নিয়ে স্বর্গে যাবেন না। সীমার তা-ই করল । মর্মান্তিকভাবে শহিদ হলেন হোসেন। গল্পের এ অংশে প্রকাশিত হয়েছে হোসেনের বীরত্ব, স্বজনদের প্রতি ভালোবাসা, যুদ্ধনীতি ও আত্মত্যাগ ।
Read more