Summary
যখন কোনো তারের দৈর্ঘ্য বরাবর বল প্রয়োগ করা হয়, তখন তারের দৈর্ঘ্য বেড়ে যায় এবং ব্যাস হ্রাস পায়। এই প্রস্থের পরিবর্তনকে পার্শ্ব বিকৃতি বলে। বৈজ্ঞানিক সাইমন পয়সন দেখিয়েছেন যে, স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে পার্শ্ব বিকৃতি ও দৈর্ঘ্য বিকৃতির অনুপাত একটি ধ্রুব সংখ্যা, যা পয়সনের অনুপাত নামে পরিচিত।
পয়সনের অনুপাত বর্ণনা:
- σ = পার্শ্ব বিকৃতি / দৈর্ঘ্য বিকৃতি
 - দৈর্ঘ্য বিকৃতি = ΔL / L
 - পার্শ্ব বিকৃতি = Δr / r
 
এটি বোঝায় যে, বল প্রয়োগের ফলে দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পেলে ব্যাসার্ধ হ্রাস পায় এবং বিপরীতভাবে। পয়সনের অনুপাতের কোনো মাত্রা ও একক নেই। উদাহরণস্বরূপ, অ্যালুমিনিয়ামের পয়সনের অনুপাত 0.35 মানে এই যে, চাপপ্রয়োগের ফলস্বরূপ পার্শ্ব ও দৈর্ঘ্য বিকৃতির অনুপাত সর্বদা 0.35 হয়।
পয়সনের অনুপাতের মান:
- -1 ≤ σ ≤ 12
 - বাস্তবে পয়সনের অনুপাত ঋণাত্মক হওয়া অসম্ভব।
 - ধাতব পদার্থের ক্ষেত্রে এই মান সাধারণত 0.3 হয়।
 
স্থিতিস্থাপকতার তুলনা:
ইস্পাত রubber-এর তুলনায় বেশি স্থিতিস্থাপক। একই দৈর্ঘ্য ও প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রে ইস্পাতে কম বল লাগালে আরও বেশি দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি হয়। এজন্য, ইস্পাতের স্থিতিস্থাপকতা রubber-এর তুলনায় অনেক বেশি।
যখন কোনো তারে দৈর্ঘ্য বরাবর বল প্রয়োগ করা হয় তখন তারের দৈর্ঘ্য কিছুটা বেড়ে যায় কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে তারের ব্যাস কিছু কমে যায় বা তার সরু হয়ে যায় (চিত্র : ৭.১২)। প্রস্থের দিকে যে বিকৃতি হয় তাকে পার্শ্ব বিকৃতি বলে। কোনো বস্তুর দৈর্ঘ্য বিকৃতি ঘটলে পার্শ্ব বিকৃতিও ঘটে। বৈজ্ঞানিক সাইমন পয়সন দেখান যে, স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে পার্শ্ব বিকৃতি দৈর্ঘ্য বিকৃতির সমানুপাতিক।
সংজ্ঞা : স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে বস্তুর পার্শ্ব বিকৃতি ও দৈর্ঘ্য বিকৃতির অনুপাত একটি ধ্রুব সংখ্যা। এ ধ্রুব সংখ্যাকে বস্তুর উপাদানের পয়সনের অনুপাত বলে। পয়সনের অনুপাতকে দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
পয়সনের অনুপাত, =পার্শ্ব বিকৃতি/ দৈর্ঘ্য বিকৃতি
মান :
বৃত্তাকার প্রস্থচ্ছেদ বিশিষ্ট কোনো তারের দৈর্ঘ্য L ও ব্যাস D হলে এবং বাহ্যিক বলের প্রভাবে এর দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি l হলে ও ব্যাস d পরিমাণ কমে গেলে,
দৈর্ঘ্য বিকৃতি = I/L এবং পার্শ্ব বিকৃতি = d/D
ব্যাসের পরিবর্তে ব্যাসার্ধ দিয়েও পয়সনের অনুপাতকে প্রকাশ করা যেতে পারে।
(7.13)
.. পয়সনের অনুপাত
ধরা যাক, তারের আদি দৈর্ঘ্য L এবং ব্যাসার্ধ r। বাহ্যিক বলের প্রভাবে এর দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি L এবং ব্যাসার্ধের হ্রাস হলে
দৈর্ঘ্য বিকৃতি =
পার্শ্ব বিকৃতি =
এখানে ঋণাত্মক চিহ্ন দ্বারা বোঝানো হচ্ছে যে, L ধনাত্মক হলে r ঋণাত্মক হবে এবং L ঋণাত্মক হলে r ধনাত্মক হবে। অর্থাৎ বল প্রয়োগে দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পেলে ব্যাসার্ধ হ্রাস পাবে আর দৈর্ঘ্য হ্রাস পেলে ব্যাসার্ধ বৃদ্ধি পাবে।
মাত্রা ও একক :
বিকৃতি একই জাতীয় দুটি রাশির অনুপাত বলে বিকৃতির মাত্রা ও একক নেই । পয়সনের অনুপাত দুটি বিকৃতির অনুপাত বলে পয়সনের অনুপাতের কোনো মাত্রা ও একক নেই।
তাৎপর্য :
অ্যালুমিনিয়ামের পয়সনের অনুপাত 0.35 বলতে বোঝায় অ্যালুমিনিয়ামের দৈর্ঘ্য বরাবর স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে বল প্রয়োগ করলে পার্শ্ব বিকৃতি ও দৈর্ঘ্য বিকৃতির অনুপাত সব সময় 0.35 হয়। তাত্ত্বিকভাবে দেখানো যায় যে, পয়সনের অনুপাতের মান -1 এর চেয়ে কম এবং + এর চেয়ে বেশি হতে পারে না, অর্থাৎ । বাস্তবে পয়সনের অনুপাত কেবলমাত্র তখনই ঋণাত্মক হওয়া সম্ভব যখন দৈর্ঘ্য প্রসারণের ফলে বস্তুর ব্যাস বৃদ্ধি পায় অর্থাৎ পার্শ্বীয় প্রসারণ ঘটে। কিন্তু বাস্তবে তা অসম্ভব তাই ব্যবহারিক ক্ষেত্রে পয়সনের অনুপাতের মান ঋণাত্মক হওয়া সম্ভব নয়। বেশির ভাগ ধাতব পদার্থের ক্ষেত্রে এ মান সাধারণত 0.3 হয়ে থাকে। ধাতব পদার্থের ক্ষেত্রে তাই পয়সনের অনুপাতের সীমা ধরা হয়
৭.১১। ইস্পাত রবারের চেয়ে বেশি স্থিতিস্থাপক Steel is more Elastic than Rubber
এক টুকরো রবারের ফিতে টানলে সহজেই বেড়ে যায়, কিন্তু একটি ইস্পাতের তার টানলে তা সহজে বাড়ে না। একই প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল ও দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট দুটি ভিন্ন বস্তুর মধ্যে যে বস্তুতে যত বেশি প্রতিরোধ বলের সৃষ্টি হয় সেই বস্তুর স্থিতিস্থাপকতা তত বেশি। প্রতিরোধ বল প্রযুক্ত বলের সমান বলে নির্দিষ্ট বিকৃতি সৃষ্টি করতে যে বস্তুতে যত বেশি বল প্রয়োগ করতে হয় তাকে তত বেশি স্থিতিস্থাপক বলা হয়। এ হিসাবে দেখা যায় যে, একই দৈর্ঘ্য ও প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট রবার ও ইস্পাতের তারে সমান দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করতে রবারের তুলনায় ইস্পাতের তারে বল প্রয়োগ করতে হয় অনেক বেশি। এজন্য রবারের তুলনায় ইস্পাতের স্থিতিস্থাপকতা অনেক বেশি।
# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন
Read more