সংখ্যার ইতিহাস মানব সভ্যতার ইতিহাসের মতই প্রাচীন। পরিমাণকে প্রতীক দিয়ে সংখ্যা আকারে প্রকাশ করার পদ্ধতি থেকে গণিতের উৎপত্তি। গ্রিক দার্শনিক এরিস্টটলের মতে, প্রাচীন মিশরের পুরোহিত সম্প্রদায়ের অনুশীলনের মাধ্যমে গণিতের আনুষ্ঠানিক অভিষেক ঘটে। তাই বলা যায় সংখ্যাভিত্তিক গণিতের সৃষ্টি যীশুখ্রিস্টের জন্মের প্রায় দুই হাজার বছর পূর্বে। এরপর নানা জাতি ও সভ্যতার হাত ঘুরে সংখ্যা ও সংখ্যারীতি অধুনা একটি সার্বজনীন রূপ ধারণ করেছে।
স্বাভাবিক সংখ্যার গণনার প্রয়োজনে প্রাচীন ভারতবর্ষের গণিতবিদগণ সর্বপ্রথম শূন্য ও দশভিত্তিক স্থানীয়মান পদ্ধতির প্রচলন করেন, যা সংখ্যা বর্ণনায় একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয়। পরে ভারতীয় ও চীনা গণিতবিদগণ শূন্য, ঋণাত্মক, বাস্তব, পূর্ণ ও ভগ্নাংশের ধারণার বিস্তৃতি ঘটান যা মধ্যযুগে আরবীয় গণিতবিদগণ ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করেন। দশমিক ভগ্নাংশের সাহায্যে সংখ্যা প্রকাশের কৃতিত্ব মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম গণিতবিদদের বলে মনে করা হয়। আবার তাঁরাই একাদশ শতাব্দীতে সর্বপ্রথম বীজগণিতীয় দ্বিঘাত সমীকরণের সমাধান হিসেবে বর্গমূল আকারে অমূলদ সংখ্যার প্রবর্তন করেন। ইতিহাসবিদদের ধারণা খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ অব্দের কাছাকাছি গ্রিক দার্শনিকরাও জ্যামিতিক অঙ্কনের প্রয়োজনে অমূলদ সংখ্যা, বিশেষ করে দুই-এর বর্গমূলের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিলেন। ঊনবিংশ শতাব্দীতে ইউরোপীয় গণিতবিদগণ বাস্তব সংখ্যাকে প্রণালীবদ্ধ করে পূর্ণতা দান করেন। দৈনন্দিন প্রয়োজনে বাস্তব সংখ্যা সম্বন্ধে শিক্ষার্থীদের সুস্পষ্ট জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। এ অধ্যায়ে বাস্তব সংখ্যা বিষয়ে সামগ্রিক আলোচনা করা হয়েছে।
এ অধ্যায় শেষে শিক্ষার্থীরা ---
স্বাভাবিক সংখ্যা (Natural Number): 1, 2, 3, 4, ... ইত্যাদি স্বাভাবিক সংখ্যা বা ধনাত্মক অখণ্ড সংখ্যা । 2, 3, 5, 7, ... ইত্যাদি মৌলিক সংখ্যা এবং 4, 6, 8, 9, ... ইত্যাদি যৌগিক সংখ্যা । দুইটি স্বাভাবিক সংখ্যার গ.সা.গু. 1 হলে এদেরকে পরস্পরের সহমৌলিক সংখ্যা বলা হয়। যেমন 6 ও 35 পরস্পরের সহমৌলিক।
পূর্ণসংখ্যা (Integer) : শূন্যসহ সকল ধনাত্মক ও ঋণাত্মক অখণ্ড সংখ্যাকে পূর্ণসংখ্যা বলা হয়। অর্থাৎ ..., −3, −2, −1, 0, 1, 2, 3, ... ইত্যাদি পূর্ণসংখ্যা ।
ভগ্নাংশ সংখ্যা (Fractional Number) : pq আকারের কোনো সংখ্যাকে (সাধারণ) ভগ্নাংশ সংখ্যা বা সংক্ষেপে ভগ্নাংশ বলা হয়, যেখানে q ≠ 0, 9 ≠ 1 এবং q দ্বারা p নিঃশেষে বিভাজ্য নয়। যেমন 12, 32, -53, 46 ইত্যাদি (সাধারণ) ভগ্নাংশ সংখ্যা। কোনো (সাধারণ) ভগ্নাংশ pqএর ক্ষেত্রে p < q হলে ভগ্নাংশটিকে প্রকৃত ভগ্নাংশ এবং p > q হলে ভগ্নাংশটিকে অপ্রকৃত ভগ্নাংশ বলা হয়। যেমন 12, 13, 23, 14, ... ইত্যাদি প্রকৃত ভগ্নাংশ এবং 32, 43, 53, 54, ... ইত্যাদি অপ্রকৃত ভগ্নাংশ।
মূলদ সংখ্যা (Rational Number) : pq আকারের কোনো সংখ্যাকে মূলদ সংখ্যা বলা হয়, যখন p ও q পূর্ণসংখ্যা এবং q ≠ 0 । যেমন = 31=3, 112=5.5, 53=1.666... ইত্যাদি মূলদ সংখ্যা। যে কোনো মূলদ সংখ্যাকে দুইটি সহমৌলিক সংখ্যার অনুপাত হিসাবেও লেখা যায়। সকল পূর্ণসংখ্যা ও ভগ্নাংশই মূলদ সংখ্যা।
অমূলদ সংখ্যা (Irrational Number) : যে সংখ্যাকে pq আকারে প্রকাশ করা যায় না, যেখানে p ও q পূর্ণসংখ্যা এবং q ≠ 0, সে সংখ্যাকে অমূলদ সংখ্যা বলা হয়। পূর্ণবর্গ নয় এরূপ যে কোনো স্বাভাবিক সংখ্যার বর্গমূল কিংবা তার ভগ্নাংশ একটি অমূলদ সংখ্যা। যেমন √2 = 1.414213..., √3 = 1.732.... √52 1.118..., ইত্যাদি অমূলদ সংখ্যা। কোনো অমূলদ সংখ্যাকে দুইটি পূর্ণসংখ্যার অনুপাত হিসাবে প্রকাশ করা যায় না ।
দশমিক ভগ্নাংশ সংখ্যা (Decimal Fractional Number) : মূলদ সংখ্যা ও অমূলদ সংখ্যাকে দশমিক দিয়ে প্রকাশ করা হলে একে দশমিক ভগ্নাংশ বলা হয়। যেমন, 3 = 3.0, 52=2.5, 103=3.3333... √3 = 1.732… ইত্যাদি দশমিক ভগ্নাংশ। দশমিক বিন্দুর পর অঙ্ক সংখ্যা সসীম হলে, এদেরকে সসীম দশমিক ভগ্নাংশ এবং অঙ্ক সংখ্যা অসীম হলে, এদেরকে অসীম দশমিক ভগ্নাংশ বলা হয় । যেমন, 0.52, 3.4152 ইত্যাদি সসীম দশমিক ভগ্নাংশ এবং 43= 1.333..., √5 =2.123512367..., ইত্যাদি অসীম দশমিক ভগ্নাংশ। আবার, অসীম দশমিক ভগ্নাংশগুলোর মধ্যে দশমিক বিন্দুর পর কিছু অঙ্কের পূনরাবৃত্তি হলে, তাদেরকে অসীম আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশ এবং অঙ্কগুলোর পুনরাবৃত্তি না হলে 122 এদের অসীম অনাবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশ বলা হয়। যেমন, 12299=1.2323..., 5.1.65.4 ইত্যাদি অসীম আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশ এবং 0.523050056..., 2.12340314... ইত্যাদি অসীম অনাবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশ।
বাস্তব সংখ্যা (Real Number) : সকল মূলদ সংখ্যা এবং অমূলদ সংখ্যাকে বাস্তব সংখ্যা বলা হয়, যেমন নিচের সংখ্যাগুলো বাস্তব সংখ্যা।
ধনাত্মক সংখ্যা (Positive Number) : শূন্য থেকে বড় সকল বাস্তব সংখ্যাকে ধনাত্মক সংখ্যা বলা হয়। যেমন, 2, 12, 32, √2, 0.415, 0..6.2, 4.120345061... ইত্যাদি ধনাত্মক সংখ্যা।
ঋণাত্মক সংখ্যা (Negative Number) : শূন্য থেকে ছোট সকল বাস্তব সংখ্যাকে ঋণাত্মক সংখ্যা বলা হয়। যেমন, -2, -12, -32, -√2, -0.415, -0..6.2, -4.120345061... ইত্যাদি ঋণাত্মক সংখ্যা।
অঋণাত্মক সংখ্যা (Non-negative Number) : শূন্যসহ সকল ধনাত্মক সংখ্যাকে অঋণাত্মক সংখ্যা বলা হয়। যেমন, 0, 3, 12, 0.612, 1..3,2.120345... ইত্যাদি অঋণাত্মক সংখ্যা।
নিচের চিত্রে আমরা বাস্তব সংখ্যার শ্রেণিবিন্যাস দেখতে পাই।
কাজ : বাস্তব সংখ্যার শ্রেণিবিন্যাসে সংখ্যাগুলোর অবস্থান দেখাও। |
উদাহরণ ১. √3 এবং 4 এর মধ্যে দুইটি অমূলদ সংখ্যা নির্ণয় কর।
সমাধান: এখানে, √3 = 1.7320508... …. ….
মনে করি, √3 এবং 4 এর মধ্যে যেকোনো দুইটি অমূলদ সংখ্যা a ও b
যেখানে a = √3 + 1 এবং b = √3 + 2
স্পষ্টত: : a ও b উভয়ই অমূলদ সংখ্যা এবং উভয়ই √3 এবং 4 এর মধ্যে অবস্থিত।
অর্থাৎ √3 < √3 + 1 < √3 + 2 < 4
∴ a ও b দুইটি নির্ণেয় অমূলদ সংখ্যা।
মন্তব্য: এরূপ অসংখ্য অমূলদ সংখ্যা নির্ণয় করা যায়।
বাস্তব সংখ্যার যোগ ও গুণন প্রক্রিয়ার মৌলিক বৈশিষ্ট্য :
১. a, b বাস্তব সংখ্যা হলে, (i) a + b বাস্তব সংখ্যা এবং (ii) ab বাস্তব সংখ্যা
২. a, b বাস্তব সংখ্যা হলে (i) a + b = b + a এবং (ii) ab =ba
৩. a, b, c বাস্তব সংখ্যা হলে (i) (a + b) + c = a + (b + c) এবং (ii) (ab) c = a (bc)
৪. a বাস্তব সংখ্যা হলে, কেবল দুইটি বাস্তব সংখ্যা 0 ও 1 আছে যেখানে (i) 0 ≠ 1 (ii) a +0 = 0 + a = a এবং (iii) a · 1 = 1. a = a
৫. a বাস্তব সংখ্যা হলে, (i) a + (- a) = 0 (ii) a ≠ 0 হলে a-1a=1
৬. a, b, c বাস্তব সংখ্যা হলে, a (b + c) = ab + ac
৭. a, b বাস্তব সংখ্যা হলে a < b অথবা a = b অথবা a > b
৮. a, b, c বাস্তব সংখ্যা এবং a < b হলে, a + c < b + c
৯. a, b, c বাস্তব সংখ্যা এবং a < b হলে, (i) ac < be যখন c > 0 (ii) ac > bc যখন c <0
প্রতিজ্ঞা: √2 একটি অমূলদ সংখ্যা।
প্রমাণ: ধরি √2 একটি মূলদ সংখ্যা।
তাহলে এমন দুইটি পরস্পর সহমৌলিক স্বাভাবিক সংখ্যা p, q > 1 থাকবে যে, √2=pq1
বা, 2=p2q2 [বর্গ করে] অর্থাৎ 2q=p2q [উভয়পক্ষকে q দ্বারা গুণ করে ]
স্পষ্টত 2q পূর্ণসংখ্যা কিন্তু p2q পূর্ণসংখ্যা নয়, কারণ p ও q স্বাভাবিক সংখ্যা, এরা পরস্পর সহমৌলিক এবং q > 1 ।
∴ 2p এবং p2q সমান হতে পারে না, অর্থাৎ 2q≠p2q
∴√2 কে pq আকারে প্রকাশ করা যাবে না, অর্থাৎ √2≠ pq
∴√2 একটি অমূলদ সংখ্যা।
মন্তব্য: যৌক্তিক প্রমাণের সমাপ্তির চিহ্ন হিসাবে □ ব্যবহার করা হয়।
কাজ : প্রমাণ কর যে, √3 একটি অমূলদ সংখ্যা। |
উদাহরণ ২. প্রমাণ কর যে, কোনো চারটি ক্রমিক স্বাভাবিক সংখ্যার গুণফলের সাথে 1 যোগ করলে যোগফল একটি পূর্ণবর্গ সংখ্যা হবে।
সমাধান : মনে করি, চারটি ক্রমিক স্বাভাবিক সংখ্যা যথাক্রমে x, x + 1, x + 2, x + 3 ।
ক্রমিক সংখ্যা চারটির গুণফলের সাথে 1 যোগ করলে পাওয়া যায়,
যা একটি পূর্ণবর্গ সংখ্যা। সুতরাং যে কোনো চারটি ক্রমিক স্বাভাবিক সংখ্যার গুণফলের সাথে 1 যোগ করলে যোগফল একটি পূর্ণবর্গ সংখ্যা হবে।
প্রত্যেক বাস্তব সংখ্যাকে দশমিক ভগ্নাংশে প্রকাশ করা যায়। যেমন 2=2.0, 25=0.4, 13=0.333 ... ইত্যাদি। দশমিক ভগ্নাংশ তিন প্রকার : সসীম, আবৃত্ত এবং অসীম দশমিক ভগ্নাংশ।
সসীম দশমিক ভগ্নাংশ : কোনো সসীম দশমিক ভগ্নাংশে দশমিক বিন্দুর ডানদিকে সসীম সংখ্যক অঙ্ক থাকে। যেমন 0.12, 1.023, 7.832, 54.67, … ইত্যাদি সসীম দশমিক ভগ্নাংশ।
আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশ : কোনো আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশে দশমিক বিন্দুর ডানদিকের অঙ্কগুলোর সব অথবা পরপর থাকা কিছু অংশ বারবার আসতে থাকে। যেমন, 3.333... 2.454545... 5.12765765 ... ইত্যাদি আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশ।
অসীম দশমিক ভগ্নাংশ : কোনো অসীম দশমিক ভগ্নাংশে দশমিক বিন্দুর ডানদিকের অঙ্ক কখনো শেষ হয় না, অর্থাৎ দশমিক বিন্দুর ডানদিকের অঙ্কগুলো সসীম হবে না এবং অংশবিশেষ বারবার আসবে না। যেমন √2=1.412135624..., √7=2.6457513111... ইত্যাদি অসীম দশমিক ভগ্নাংশ।
মন্তব্য: সসীম দশমিক ও আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশ হলো মূলদ সংখ্যা এবং অসীম দশমিক ভগ্নাংশ হলো অমূলদ সংখ্যা। কোনো অমূলদ সংখ্যার মান যত দশমিক স্থান পর্যন্ত ইচ্ছা নির্ণয় করা যায়। কোনো ভগ্নাংশের লব ও হরকে স্বাভাবিক সংখ্যায় প্রকাশ করতে পারলে, ঐ ভগ্নাংশটি মূলদ সংখ্যা।
কাজ : 1.723, 5.2333..., 0.0025, 2.1356124..., 0.01050105... 0.450123... ভগ্নাংশগুলোকে কারণসহ শ্রেণিবিন্যাস কর। |
আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশ
যে সকল দশমিক ভগ্নাংশে দশমিক বিন্দুর ডানে একটি অঙ্ক বারবার আসে বা একাধিক অঙ্ক পর্যায়ক্রমে বারবার আসে, এদের আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশ বলা হয়। আবৃত্ত বা পৌনঃপুনিক দশমিক ভগ্নাংশে যে অংশ বারবার অর্থাৎ পুনঃপুন আসে, একে আবৃত্ত অংশ আর বাকি অংশকে অনাবৃত্ত অংশ বলা হয়।
আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশে একটি অঙ্ক আবৃত্ত হলে, সে অঙ্কের উপর পৌনঃপুনিক বিন্দু এবং একাধিক অঙ্ক আবৃত্ত হলে, কেবলমাত্র প্রথম ও শেষ অঙ্কের উপর পৌনঃপুনিক বিন্দু দেওয়া হয়। যেমন, 2.555 ... কে লেখা হয় 2..5 দ্বারা এবং 3.124124124... কে লেখা হয়, 3..12.4 দ্বারা।
দশমিক ভগ্নাংশে দশমিক বিন্দুর পর আবৃত্তাংশ ছাড়া অন্য কোনো অঙ্ক না থাকলে, একে বিশুদ্ধ পৌনঃপুনিক ভগ্নাংশ বলা হয় এবং পৌনঃপুনিক দশমিক ভগ্নাংশে দশমিক বিন্দুর পর আবৃত্তাংশ ছাড়া এক বা একাধিক অঙ্ক থাকলে, একে মিশ্র পৌনঃপুনিক ভগ্নাংশ বলা হয়। যেমন 1..3 বিশুদ্ধ পৌনঃপুনিক ভগ্নাংশ এবং 4.2351.1.2 মিশ্র পৌনঃপুনিক ভগ্নাংশ।
ভগ্নাংশের হরে 2, 5 ছাড়া অন্য কোনো মৌলিক গুণনীয়ক (উৎপাদক) থাকলে, সেই হর দ্বারা লবকে ভাগ করলে, কখনো নিঃশেষে বিভাজ্য হবে না। যেহেতু পর্যায়ক্রমে ভাগ শেষে 2, 9 ছাড়া অন্য কিছু হতে পারে না, সেহেতু এক পর্যায়ে ভাগশেষগুলো বারবার একই সংখ্যা হতে থাকবে। আবৃত্তাংশের অঙ্ক সংখ্যা সবসময় হরে যে সংখ্যা থাকে, এর চেয়ে ছোট হয়।
উদাহরণ ৩. 311 ও 9537 কে দশমিক ভগ্নাংশে প্রকাশ কর।
সমাধান : নিচে বামপাশে 311 ও ডানপাশে 9537 কে দশমিক ভগ্নাংশে পরিণত করা হয়েছে।
নির্ণেয় দশমিক ভগ্নাংশগুলো যথাক্রমে 0..2.7 এবং 2..56.7
উদাহরণ 8. 0..3, 0..2.4, এবং 42.34.7.8 কে সাধারণ ভগ্নাংশে প্রকাশ কর।
সমাধান : 0..3, 0..2.4, এবং 42.34.7.8 কে সাধারণ ভগ্নাংশে পরিণত করা হয়েছে।
ব্যাখ্যা : উপরের তিনটি উদাহরণ থেকে দেখা যায় যে,
মন্তব্য : আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশকে সব সময় সাধারণ ভগ্নাংশে পরিণত করা যায়। সকল আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশ মূলদ সংখ্যা।
উদাহরণ ৫. 5.23.45.7 কে সাধারণ ভগ্নাংশে প্রকাশ কর।
সমাধান :
ব্যাখ্যা : দশমিক অংশে পাঁচটি অঙ্ক রয়েছে বলে এখানে আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশকে প্রথমে 100000 (এক এর ডানে পাঁচটি শূন্য) দ্বারা গুণ করা হয়েছে। আবৃত্ত অংশের বামে দশমিক অংশে দুইটি অঙ্ক রয়েছে বলে আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশকে 100 (এক এর ডানে দুইটি শূন্য) দ্বারা গুণ করা হয়েছে। প্রথম গুণফল থেকে দ্বিতীয় গুণফল বিয়োগ করা হয়েছে। এই বিয়োগফলের একদিকে পূর্ণসংখ্যা অন্যদিকে প্রদত্ত আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশের মানের ( 100000 – 1000 ) = 99900 গুণ। উভয় পক্ষকে 99900 দিয়ে ভাগ করে নির্ণেয় সাধারণ ভগ্নাংশ পাওয়া গেল।
নির্ণেয় ভগ্নাংশের লব = প্রদত্ত দশমিক ভগ্নাংশের দশমিক বিন্দু বাদ দিয়ে প্রাপ্ত পূর্ণসংখ্যা এবং অনাবৃত্ত অংশ দ্বারা গঠিত পূর্ণসংখ্যার বিয়োগফল।
নির্ণেয় ভগ্নাংশের হর = দশমিক বিন্দুর পরে আবৃত্ত অংশে যতগুলো অঙ্ক আছে ততগুলো নয় (9) এবং অনাবৃত্ত অংশে যতগুলো অঙ্ক আছে ততগুলো শূন্য (0) দ্বারা গঠিত সংখ্যা।
নিচের উদাহরণগুলোতে এ নিয়ম সরাসরি প্রয়োগ করে কয়েকটি আবৃত্ত দশমিককে সাধারণ ভগ্নাংশে পরিণত করা হলো।
উদাহরণ ৬. 45.2.34.6 কে সাধারণ ভগ্নাংশে প্রকাশ কর।
সমাধান :
উদাহরণ ৭. 32..56.7 কে সাধারণ ভগ্নাংশে প্রকাশ কর।
সমাধান :
দুই বা ততোধিক আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশের অনাবৃত্ত ও আবৃত্ত উভয় অংশের অঙ্ক সংখ্যা সমান হলে এদের সদৃশ আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশ বলে। অন্যথায় এদেরকে অসদৃশ আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশ বলে। যেমন 12..4.5 ও 6..3.2; 9.45.3 ও 125.89.7 সদৃশ আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশ। আবার, 0.3.45.6 ও 7.45.78.9; 6.43.5.7 ও 2.89.34.5 অসদৃশ আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশ।
কোনো আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশের আবৃত্ত অংশের অঙ্কগুলোকে বারবার লিখলে দশমিক ভগ্নাংশের মানের কোনো পরিবর্তন হয় না। যেমন 6.45.3.7 = 6.45.373.7 = 6.453.7.3 = 6.4537.3.7 । এখানে প্রত্যেকটিই একই আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশ 6.45373737…, যেটি একটি অসীম দশমিক সংখ্যা। এই আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশগুলোকে সাধারণ ভগ্নাংশে পরিবর্তন করলে দেখা যাবে প্রত্যেকটি সমান।
সদৃশ আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশে পরিণত করতে হলে ভগ্নাংশগুলোর মধ্যে যে ভগ্নাংশটির অনাবৃত্ত অংশের অঙ্ক সংখ্যা বেশি, প্রত্যেকটি ভগ্নাংশের অনাবৃত্ত অংশের অঙ্ক সংখ্যাকে ওই ভগ্নাংশটির অনাবৃত্ত অংশের অঙ্কের সংখ্যার সমান করতে হবে এবং বিভিন্ন সংখ্যায় আবৃত্ত অংশের অঙ্ক সংখ্যাগুলোর ল.সা.গু. যত, প্রত্যেকটি দশমিক ভগ্নাংশের আবৃত্ত অংশ তত অঙ্কের করতে হবে।
উদাহরণ ৮. 5..6, 7.3.4.5, ও 10.78.42.3 কে সদৃশ আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশে পরিণত কর।
সমাধান : 5..6, 7.3.4.5, ও 10.78.42.3 আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশে অনাবৃত্ত অংশের অঙ্ক সংখ্যা যথাক্রমে 0, 1 ও 2 । এখানে 10.78.42.3 এর অনাবৃত্ত অঙ্ক সংখ্যা দশমিকে সবচেয়ে বেশি এবং এ সংখ্যা 2 । তাই সদৃশ আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশ করতে হলে প্রত্যেকটি দশমিক ভগ্নাংশের অনাবৃত্ত অংশের অঙ্ক সংখ্যা 2 করতে হবে। 5..6, 7.3.4.5, ও 10.78.42.3 আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশে আবৃত্ত অংশের অঙ্ক সংখ্যা যথাক্রমে 1, 2 ও 3 । 1, 2 ও 3 এর ল.সা.গু হলো 6। তাই সদৃশ আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশ করতে হলে প্রত্যেকটি দশমিক ভগ্নাংশের আবৃত্ত অংশের অঙ্ক সংখ্যা 6 করতে হবে। সুতরাং 5..6 = 5.66.66666.6, 7.3.4.5 = 7.34.54545.4 ও 10.78.42.3 = 10.78.42342.3 নির্ণেয় সদৃশ আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশসমূহ যথাক্রমে 5.66.66666.6, 7.34.54545.4 ও 10.78.42342.3
উদাহরণ ৯. 1.7643, 3..2.4, ও 2.78.34.6 কে সদৃশ আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশে পরিণত কর।
সমাধান : 1.7643 এ অনাবৃত্ত অংশ বলতে দশমিক বিন্দুর পরের 4টি অঙ্ক, এখানে আবৃত্ত অংশ নেই। 3..2.4, এ অনাবৃত্ত অংশের অঙ্ক সংখ্যা 0 এবং আবৃত্ত অংশের অঙ্ক সংখ্যা 2, 2.78.34.6 এ অনাবৃত্ত অংশের অঙ্ক সংখ্যা 2 এবং আবৃত্ত অংশের অঙ্ক সংখ্যা 3। এখানে অনাবৃত্ত অংশের অঙ্ক সংখ্যা সবচেয়ে বেশি হলো 4 এবং আবৃত্ত অংশের অঙ্ক সংখ্যা 2 ও 3 এর ল.সা.গু. হলো 6। প্রত্যেকটি দশমিক ভগ্নাংশের অনাবৃত্ত অংশের অঙ্ক সংখ্যা হবে 4 এবং আবৃত্ত অংশের অঙ্ক সংখ্যা হবে 6।
∴ 1.7643 = 1.7643.00000.0, 3..2.4 3.2424.242424.2 ও 2.78.34.6 = 2.7834.63463.4
নির্ণেয় সদৃশ আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশসমূহ 1.7643.00000.0, 3.2424.24242.4 ও 2.7834.63463.4
মন্তব্য : সসীম দশমিক ভগ্নাংশগুলোকে সদৃশ দশমিক ভগ্নাংশে পরিণত করার জন্য দশমিক বিন্দুর সর্বডানের অঙ্কের পর প্রয়োজনীয় সংখ্যক শূন্য বসিয়ে প্রত্যেকটি দশমিক ভগ্নাংশের দশমিক বিন্দুর পরের অনাবৃত্ত অঙ্ক সংখ্যা সমান করা হয়েছে। আর আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশের ক্ষেত্রে প্রত্যেকটি দশমিক ভগ্নাংশে দশমিক বিন্দুর পরের অনাবৃত অঙ্ক সংখ্যা সমান এবং আবৃত্ত অঙ্ক সংখ্যা সমান করা হয়েছে আবৃত্ত অঙ্কগুলো ব্যবহার করে। অনাবৃত্ত অংশের পর যে কোনো অঙ্ক থেকে শুরু করে আবৃত্ত অংশ নেওয়া যায়।
আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশের যোগ বা বিয়োগ করতে হলে আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশগুলোকে সদৃশ আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশে পরিবর্তন করতে হবে। এরপর সসীম দশমিক ভগ্নাংশের নিয়মে যোগ বা বিয়োগ করতে হবে। সসীম দশমিক ও আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশগুলোর মধ্যে যোগ বা বিয়োগ করতে হলে আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশগুলোকে সদৃশ করার সময় প্রত্যেকটি আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশের অনাবৃত্ত অংশের অঙ্ক সংখ্যা হবে সসীম দশমিক ভগ্নাংশের দশমিক বিন্দুর পরের অঙ্ক সংখ্যা ও অন্যান্য আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশের অনাবৃত্ত অংশের অঙ্ক সংখ্যার মধ্যে সবচেয়ে বড় যে সংখ্যা সে সংখ্যার সমান। আর আবৃত্ত অংশের অঙ্ক সংখ্যা হবে যথানিয়মে প্রাপ্ত ল.সা.গু. এর সমান এবং সসীম দশমিক ভগ্নাংশের ক্ষেত্রে আবৃত্ত অংশের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক শূন্য বসাতে হবে। এরপর সসীম দশমিক ভগ্নাংশের নিয়মে যোগ বা বিয়োগ করতে হবে। এভাবে প্রাপ্ত যোগফল বা বিয়োগফল প্রকৃত যোগফল বা বিয়োগফল হবে না। প্রকৃত যোগফল বা বিয়োগফল বের করতে হলে দেখতে হবে যে সদৃশকৃত দশমিক ভগ্নাংশগুলো যোগ বা বিয়োগ করলে প্রত্যেকটি সদৃশকৃত দশমিক ভগ্নাংশগুলোর আবৃত্ত অংশের সর্ববামের অঙ্কগুলোর যোগ বা বিয়োগে হাতে যে সংখ্যাটি থাকে, তা প্রাপ্ত যোগফল বা বিয়োগফলের আবৃত্ত অংশের সর্বডানের অঙ্কের সাথে যোগ বা অঙ্ক থেকে বিয়োগ করলে প্রকৃত যোগফল বা বিয়োগফল পাওয়া যাবে। এটিই নির্ণেয় যোগফল বা বিয়োগফল হবে।
মন্তব্য :
১. আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশের যোগফল বা বিয়োগফলও আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশ হয়। এই যোগফল বা বিয়োগফলে অনাবৃত্ত অংশ আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশগুলোর মধ্যে সর্বাপেক্ষা অনাবৃত্ত অংশবিশিষ্ট আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশটির অনাবৃত্ত অঙ্ক সংখ্যার সমান হবে এবং আবৃত্ত অংশ আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশগুলোর আবৃত্ত অঙ্ক সংখ্যার ল.সা.গু. এর সমান সংখ্যক আবৃত্ত অঙ্ক হবে। সসীম দশমিক ভগ্নাংশ থাকলে প্রত্যেকটি আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশের অনাবৃত্ত অংশের অঙ্ক সংখ্যা হবে সসীম দশমিক ভগ্নাংশের দশমিক বিন্দুর পরের অঙ্ক সংখ্যা ও অন্যান্য আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশের অনাবৃত্ত অংশের অঙ্ক সংখ্যার মধ্যে সবচেয়ে বড় যে সংখ্যা সে সংখ্যার সমান।
২. আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশগুলোকে সামান্য ভগ্নাংশে পরিবর্তন করে ভগ্নাংশের নিয়মে যোগফল বা বিয়োগফল বের করার পর যোগফল বা বিয়োগফলকে আবার দশমিক ভগ্নাংশে পরিবর্তন করেও যোগ বা বিয়োগ করা যায়। তবে এ পদ্ধতিতে যোগ বা বিয়োগ করলে বেশি সময় লাগবে।
উদাহরণ ১০. 3..8.9, 2.1.7.8 ও 5.89.79.8 যোগ কর।
সমাধান : এখানে অনাবৃত্ত অংশের অঙ্ক সংখ্যা হবে 2 এবং আবৃত্ত অংশের অঙ্ক হবে 2, 2 ও 3 এর ল.সা.গু. 6 । প্রথমে তিনটি আবৃত্ত দশমিককে সদৃশ করা হয়েছে।
মন্তব্য : এই যোগফলে 576576 আবৃত্ত অংশ। কিন্তু কেবল 576 কে আবৃত্ত অংশ করলে মানের কোনো পরিবর্তন হয় না।
দ্রষ্টব্য : সর্বডানে যোগের ধারণা বোঝাবার জন্য এ যোগটি অন্য নিয়মে করা হলো :
এখানে আবৃত্ত অংশ শেষ হওয়ার পর আরও অঙ্ক পর্যন্ত সংখ্যাকে বাড়ানো হয়েছে। অতিরিক্ত অঙ্কগুলোকে একটা খাড়া রেখা দ্বারা আলাদা করে দেওয়া হয়েছে। এরপর যোগ করা হয়েছে। খাড়া রেখার ডানের অঙ্কের যোগফল থেকে হাতের 2 এসে খাড়া রেখার বামের অঙ্কের সাথে যোগ হয়েছে। খাড়া রেখার ডানের অঙ্কটি আর পৌনঃপুনিক বিন্দু শুরু হওয়ার অঙ্কটি একই। তাই দুইটি যোগফলই এক।
উদাহরণ ১১. 8.9.47.8, 2.346 ও 4..7.1 যোগ কর।
সমাধান: দশমিক ভগ্নাংশগুলোকে সদৃশ করতে হলে অনাবৃত্ত অংশ ও অঙ্কের এবং আবৃত্ত অংশ হবে 3 ও 2 এর ল.সা.গু. 6 অঙ্কের। এবার দশমিক ভগ্নাংশগুলোকে যোগ করা হবে।
উদাহরণ ১২. 8.2.4.3 থেকে 5.24.67.3 বিয়োগ কর।
সমাধান : এখানে অনাবৃত্ত অংশের অঙ্ক সংখ্যা হবে 2 এবং আবৃত্ত অংশের অঙ্ক সংখ্যা হবে 2 ও 3 এর ল.সা.গু. 6 । এখন দশমিক সংখ্যা দুইটিকে সদৃশ করে বিয়োগ করা হলো।
মন্তব্য : পৌনঃপুনিক বিন্দু যেখানে শুরু সেখানে বিয়োজন সংখ্যা বিয়োজ্য সংখ্যা থেকে ছোট হলে সব সময় সর্বডানের অঙ্ক থেকে 1 বিয়োগ করতে হবে।
দ্রষ্টব্য : সর্বডানের অঙ্ক থেকে 1 কেন বিয়োগ করা হয় তা বোঝাবার জন্য নিচে অন্যভাবে বিয়োগ করে দেখানো হলো :
উদাহরণ ১৩. 24.45.64.5 থেকে 16..43.7 বিয়োগ কর।
সমাধান :
দ্রষ্টব্য : সর্বডানের অঙ্ক থেকে 1 কেন বিয়োগ করা হয় তা বোঝাবার জন্য নিচে অন্যভাবে বিয়োগ করে দেখানো হলো।
আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশগুলোকে সাধারণ ভগ্নাংশে পরিণত করে গুণ বা ভাগের কাজ সমাধা করে প্রাপ্ত ভগ্নাংশটিকে দশমিক ভগ্নাংশে প্রকাশ করলেই আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশগুলোর গুণফল বা ভাগফল হবে। সসীম দশমিক ভগ্নাংশ ও আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশের মধ্যে গুণ বা ভাগ করতে হলে এ নিয়মেই করতে হবে। তবে ভাগের ক্ষেত্রে ভাজ্য ও ভাজক দুইটিই আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশ হলে, উভয়কে সদৃশ আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশ করে নিলে ভাগের কাজ একটু সহজ হয়।
উদাহরণ ১৪. 4..3 কে 5..7 দ্বারা গুণ কর।
সমাধান :
উদাহরণ ১৫. 0.2.8 কে 42..1.8 দ্বারা গুণ কর।
সমাধান :
উদাহরণ ১৬. 2.5 × 4.3.5 × 1.2.3.4 কত?
সমাধান :
উদাহরণ ১৭. 7..3.2 কে 0.2.7 দ্বারা ভাগ কর।
সমাধান :
উদাহরণ ১৮. 2..271.8 কে 1.9.1.2 দ্বারা ভাগ কর।
সমাধান :
উদাহরণ ১৯. 9.45 কে 2.8.6.3 দ্বারা ভাগ কর।
সমাধান :
মন্তব্য : আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশের গুণফল ও ভাগফল আবৃত্ত দশমিক ভগ্নাংশ নাও হতে পারে।
অনেক দশমিক ভগ্নাংশ আছে যাদের দশমিক বিন্দুর ডানের অঙ্কের শেষ নেই, আবার এক বা একাধিক অঙ্ক বারবার পর্যায়ক্রমে আসে না, এসব দশমিক ভগ্নাংশকে বলা হয় অসীম দশমিক ভগ্নাংশ। যেমন, 5.134248513942301 ... একটি অসীম দশমিক ভগ্নাংশ। 2 এর বর্গমূল একটি অসীম দশমিক ভগ্নাংশ। এখন, 2 এর বর্গমূল বের করি।
এভাবে প্রক্রিয়া অনন্তকাল পর্যন্ত চললেও শেষ হবে না। সুতরাং √2 = 1.4142135... একটি অসীম দশমিক ভগ্নাংশ।
অসীম দশমিক ভগ্নাংশের কোনো নির্দিষ্ট দশমিক স্থান পর্যন্ত মান বের করা এবং কোনো নির্দিষ্ট দশমিক স্থান পর্যন্ত আসন্ন মান বের করা একই অর্থ নয়। যেমন 5.4325893 ... এর ‘চার দশমিক স্থান পর্যন্ত মান' হবে 5.4325 কিন্তু 5.4325893... এর ‘চার দশমিক স্থান পর্যন্ত আসন্ন মান হবে 5.4326। তবে এখানে ‘দুই দশমিক স্থান পর্যন্ত মান' এবং ‘দুই দশমিক স্থান পর্যন্ত আসন্ন মান একই। সসীম দশমিক ভগ্নাংশেও এভাবে আসন্ন মান বের করা যায়।
মন্তব্য : যত দশমিক স্থান পর্যন্ত মান বের করতে হবে, তত দশমিক স্থান পর্যন্ত যে সব অঙ্ক থাকবে হুবহু সে অঙ্কগুলো লিখতে হবে মাত্র। আর যত দশমিক স্থান পর্যন্ত আসন্ন মান বের করতে হবে, তার পরবর্তী স্থানটিতে যদি 5, 6, 7, 8 বা 9 হয়, তবে শেষ স্থানটির অঙ্কের সাথে 1 যোগ করতে হবে। কিন্তু যদি 0, 1, 2, 3 বা 4 হয়, তবে শেষ স্থানটির অঙ্ক যেমন ছিল তেমনই থাকবে, এক্ষেত্রে ‘দশমিক স্থান পর্যন্ত মান' এবং ‘দশমিক স্থান পর্যন্ত আসন্ন মান' একই। যত দশমিক স্থান পর্যন্ত আসন্ন মান বের করতে বলা হবে, দশমিক বিন্দুর পর তার চেয়েও 1 স্থান বেশি পর্যন্ত দশমিক ভগ্নাংশ বের করতে হবে।
উদাহরণ ২০. 13 এর বর্গমূল বের কর এবং তিন দশমিক স্থান পর্যন্ত আসন্ন মান লেখ।
সমাধান :
∴ নির্ণেয় বর্গমূল 3.605551... এবং নির্ণেয় তিন দশমিক স্থান পর্যন্ত আসন্ন মান 3.606 ।
উদাহরণ ২১. 4.4623845 ... এর 1, 2, 3, 4 ও 5 দশমিক স্থান পর্যন্ত মান ও আসন্ন মান কত?
সমাধান : 4.4623845... ভগ্নাংশটির
এক দশমিক স্থান পর্যন্ত মান 4.4 এবং এক দশমিক স্থান পর্যন্ত আসন্ন মান 4.5
দুই দশমিক স্থান পর্যন্ত মান 4.46 এবং দুই দশমিক স্থান পর্যন্ত আসন্ন মান 4.46
তিন দশমিক স্থান পর্যন্ত মান 4.462 এবং তিন দশমিক স্থান পর্যন্ত আসন্ন মান 4.462
চার দশমিক স্থান পর্যন্ত মান 4.4623 এবং চার দশমিক স্থান পর্যন্ত আসন্ন মান 4.4624
পাঁচ দশমিক স্থান পর্যন্ত মান 4.462238 এবং পাঁচ দশমিক স্থান পর্যন্ত আসন্ন মান 4.46238
কাজ : 29 এর বর্গমূল নির্ণয় কর ও বর্গমূলের দুই দশমিক স্থান পর্যন্ত মান ও আসন্ন মান লিখ। |