বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা রয়েছে। যেমন- রসায়ন, জীববিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, গণিত, পরিবেশবিজ্ঞান, ভূ- তত্ত্ব ইত্যাদি। বিজ্ঞানের একটি শাখার সাথে অন্য একটি শাখার গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান। বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখা যেমন রসায়নের উপর নির্ভরশীল, রসায়নও তেমনি অন্যান্য শাখার উপর নির্ভরশীল।
নিচে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার সাথে রসায়নের সম্পর্ক কয়েকটি উদাহরণের সাহায্যে ব্যাখ্যা করা হলো :
জীববিজ্ঞানের সাথে রসায়নের সম্পর্ক: উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণ (Photosynthesis) প্রক্রিয়ায় তার সবুজ অংশে গ্লুকোজ তৈরি করে। সালোকসংশ্লেষণ মূলত একটি রাসায়নিক বিক্রিয়া। উদ্ভিদ বাতাস থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড এবং মূল দিয়ে পানি শোষণ করে। উদ্ভিদ সূর্যালোকের উপস্থিতিতে সবুজ অংশের ক্লোরোফিলের সাহায্যে এই পানি আর কার্বন ডাই-অক্সাইড বিক্রিয়া করে গ্লুকোজ উৎপন্ন করে। বিভিন্ন প্রাণী যে শর্করা বা প্রোটিন জাতীয় খাবার খায় শরীর সেই খাবার ভেঙে গ্লুকোজ, অ্যামাইনো এসিড ইত্যাদি উৎপন্ন করে। সমগ্র জীবদেহই রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে তৈরি। উদ্ভিদ ও প্রাণীদেহের এ সকল রাসায়নিক পদার্থ ও তাদের মধ্যে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়া জীববিজ্ঞানে আলোচনা করা হয়। তাই জীববিজ্ঞান ও রসায়ন পরস্পর সম্পর্কযুক্ত।
পদার্থবিজ্ঞানের সাথে রসায়নের সম্পর্ক: পদার্থবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে রয়েছে চুম্বক, বিদ্যুৎ, বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ইত্যাদি। বিদ্যুতের জন্য যে ব্যাটারি ব্যবহার করা হয় তা রসায়নেরই অবদান। তেল, গ্যাস বা কয়লা পুড়িয়ে যে শক্তি উৎপন্ন হয় তা দিয়ে যানবাহন চলে, বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। রসায়নও আবার পদার্থবিজ্ঞানের উপর নির্ভরশীল। ভৌত রসায়ন হলো রসায়নের একটি শাখা যার বিভিন্ন তত্ত্ব মূলত পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন তত্ত্ব এবং সূত্রের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। গণিতের সাথে রসায়নের সম্পর্ক: রসায়নের সাথে গণিতের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। গণিতের সূত্র ব্যবহার করেই রসায়নের বিভিন্ন তত্ত্ব ও হিসাব-নিকাশ করা হয়। এছাড়া বিজ্ঞানের আরও যে সমস্ত শাখা আছে তার প্রায় সব শাখার সাথেই রসায়নের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্পর্ক রয়েছে।