শিশুপাচার (পাঠ ৩)

সপ্তম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - গার্হস্থ্যবিজ্ঞান শিশুর বিকাশ ও সামাজিক সম্পর্ক | - | NCTB BOOK
66
66

শিশুপাচার – শিশুপাচার আমাদের দেশের একটি সমস্যা। পাচারকারীরা শিশুর পিতামাতাকে বা অভিভাবককে না জানিয়ে বা প্রতারণা করে, ভয় বা লোভ দেখিয়ে অথবা জোরপূর্বক ধরে নিয়ে বা অপহরণ করে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেয় অথবা বিক্রি করে দেয়। একে শিশুপাচার' বলে। শিশু চুরির জন্য সংঘবদ্ধ চক্র দেশব্যাপী ছড়িয়ে আছে। তারা যা করে-

  • অর্থের বিনিময়ে শিশুদের দেশের বাইরে পাচার করে
  • আটক করে পিতামাতার কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করে
  • অমানবিক কাজে ব্যবহার করে।

সনদে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগের নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে। পাচার থেকে রক্ষা পেতে যা করতে হবে-

  • দূরে কোথাও বা নির্জন জায়গায় একাকী না যাওয়া।
  • অপরিচিত বা অল্প পরিচিত কারও সাথে কোথাও না যাওয়া।
  • অপরিচিত বা অল্প পরিচিত ব্যক্তির দেয়া কোনো খাবার, খেলনা, টাকাপয়সা ও কোনো জিনিস না নেওয়া। মা-বাবার
  • অনুমতি ছাড়া কারও সাথে কোথাও না যাওয়া।
  • শিশুপাচারের কৌশলগুলো জানা এবং অপরকে জানানো যেন সবাই এ বিষয়ে সচেতন হয়।
  • নিজ এলাকার শিশুসহ সকল মানুষের মধ্যে শিশুপাচার বিরোধী সচেতনতা সৃষ্টি করা।
  • আমাদের দেশের বেশির ভাগ শিশু সীমান্ত এলাকা দিয়ে পাচার হয়। তাই সীমান্ত এলাকায় মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা খুব দরকার।

আমাদের দেশে শিশু পাচারের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে। তার অন্যতম কারণ আমাদের দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। মানুষের মধ্যে শিক্ষা ও সচেতনতার অভাব।

শিশুর মতামত প্রদানের অধিকার- প্রতিটি শিশুর স্বাধীনভাবে নিজস্ব মত প্রকাশের এবং নিজ সংক্রান্ত
যেকোনো বিষয় বড়দের জানানোর অধিকার আছে। শিশুর বয়স এবং পরিণত বুদ্ধির কথা বিবেচনা করে বড়দের উচিত শিশুদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া।

  • ৫ ও ৬ বছর বয়স থেকেই শিশুর ভালোমন্দ বোঝার বয়স হয়। পারিবারিক কিংবা সামাজিক অনেক ব্যাপারে শিশু স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের অধিকার রাখে। যেমন- পারিবারিক বাজেট পরিকল্পনা, মেনু পরিকল্পনা, বেড়াতে যাওয়া, দ্রব্য ক্রয় ইত্যাদি ক্ষেত্রে নিজস্ব মতামত শিশু দিতে পারে এবং পরিবারকে এ ব্যাপারে গুরুত্ব দিতে হবে।
  • অন্য শিশুর সাথে মেলামেশা এবং আইনসম্মতভাবে দলগঠন বা দলে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার অধিকার শিশুর রয়েছে। যেমন-দল গঠন করে খেলাধুলা করা, বেড়াতে যাওয়া যেকোনো উন্নয়নমূলক কাজ করা। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই পিতামাতা বা শিক্ষকের পরামর্শ নিতে হবে। তাঁদের উপযুক্ত নির্দেশনা সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক হবে।
Content added || updated By
Promotion