সিএনসি মেশিন (CNC means Computer Numerical Control) বলতে এমন মেশিনকে বুঝানো হয় যা Computer Numerical দ্বারা পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রত হয়ে কাজ সম্পন্ন করে থাকে।
ম্যানুফেকচারিং- এ এনসিঃ
মেশিন টুলে কাটার বিভিন্ন দিকে কার্যবন্তুর আলোকে ঘুরে থাকে এবং এজন্য কন্ট্রোলার সচরাচর একাধিক মেশিন অক্ষে কার্যক্রম পরিচালনা করে কাজ সম্পন্ন করে থাকে। নিচে মেশিন প্রয়োগ ও অক্ষ সংখ্যা গতি উল্লিখিত হলঃ
দুই অক্ষ গতি (Two Axis Motion) : যা সচরাচর অধিকাংশ, পাঞ্চ প্রেস, ফ্লেম এবং প্লাজমা আর্ক মেশিনে, ইলেকট্রনিক উপাদান প্রক্ষিপ্তকরন, এবং বিভিন্ন ড্রিলিং মেশিন এ প্রয়োগ হতে দেখা যায় ।
তিন অক্ষ গতি (Three Axis Motion) : সচরাচর তিনটি প্রধান দিকে কার্টেসিয়ান স্থানাংক পদ্ধতিতে কাজ করে এবং মিলিং বা বোরিং বা ড্রিলিং এবং স্থানাংক পরিমাপন মেশিনে প্রয়োগ করা হয়।
চার অক্ষ গতি (Four Axis Motion) : যা তিনটি রৈখিক ও একটি ঘূর্ণন অক্ষের জন্য জড়িত গতি। এটি সাধারনত মিলিং হেড সংযুক্ত লেদে প্রয়োগ করা হয়।
পাঁচ অক্ষ মেশিন (Five Axis Machines) : যা সাধারনত তিনটি রৈখিক অক্ষ, যাদের মধ্যে দুইটি ঘূর্ণনশীল অক্ষ থাকে যাহা সচরাচর মিলিং মেশিনে প্রয়োগ করা হয়।
জি এবং এম কোডের ব্যবহারঃ (Uses of G and M codes )
কম্পিউটার সহায়ক রুট (মূল কেন্দ্র) থেকে দেখা যায় যে, কাটার পথ প্রথম বর্গীয় (Genevic) ফরম্যাট এবং অতঃপর প্রোগ্রাম পোস্ট প্রসেসর এ রুপান্তর করা হয় যা মেশিন টুলের জন্য এ অন্যন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করে। একে মেশিন কন্ট্রোল ডাটা বলা হয়। নিউমেরিক্যাল কন্ট্রোলে প্রোগ্রাম সংরক্ষনকে পার্ট প্রোগ্রাম এবং এরুপ প্রোগ্রাম লেখার প্রক্রিয়াকে পার্ট প্রোগ্রামিং বলা হয়।
আমরা যখন সিএনসি মেশিনে কাজ করি তখন কাজ করার প্রক্রিয়া নিম্নরুপ হয়ে থাকে ।
ক) প্রথমে মূল জবের ডিজাইন করতে হয়।
খ) এই প্রোগ্রামকে পেন-ড্রাইভের মাধ্যমে সিএনসি মেশিনে লোড দেয়া হয়।
গ) ক্যাড ফাইলটি জি কোড (G-Code) এবং এম কোডে (M-Code) রুপান্তরিত হয়। অথবা নিজেদের নিচের ডাটা অনুযায়ী এই জি-কোড এবং এম কোড লিখতে হয়।
ঘ) ডাটা প্রসেস করে সিএনসি মেশিন জব সম্পাদন করে থাকে ।
নিউমেরিক্যাল কন্ট্রোলের প্রয়োগক্ষেত্র (Application of Numerical system)
নিউমেরিক্যাল কন্ট্রোল সিস্টেম ব্যাপকভাবে বর্তমানে শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিশেষ করে মেটাল ওয়ার্কিং কারখানা, মোটর সাইকেল তৈরি, প্রাইভেট গাড়ী তৈরি, বৃহৎ শীট মেটাল কারখানা, বৃহৎ ওয়েল্ডিং কারখানা, সারফেস ট্রিটমেন্ট কারখানা ইত্যাদি কারখানাসমূহে নিউমেরিক্যাল কন্ট্রোলের প্রয়োগ দেখা যায় । নিউমেরিক্যাল কন্ট্রোলের সবচেয়ে সহজ উদাহরন হল মেটাল কাটিং মেশিন টুলস, বাংলাদেশে এটির ব্যবহার বিশেষ করে খুলনা শীপ-ইয়ার্ডে বেশি দেখা যায়। এই ধরনের নিউমেরিক্যালি কন্ট্রোল বিশিষ্ট যন্ত্রাংশ, যা নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত ম্যাটেরিয়াল কাটিং বা দূর করতে পারে ।
নিউমেরিক্যাল কন্ট্রোলের মাধ্যমে নিম্ন লিখিত কাজ করা হয়। যেমনঃ
মিলিং (Milling)
বোরিং (Boring)
টার্নিং (Turning)
থ্রেডিং (Threading)
গ্রুভিং (Grooving) ইত্যাদি কাজ ছাড়াও আরো অনেক কাজ করা যায়।
নিউমেরিক্যাল কন্ট্রোলের সুবিধা (Advantages of NC / CNC Machine)
জব উৎপাদনের সময় এনসি এবং সিএনসি মেশিনে নিম্নলিখিত সুবিধা পাওয়া যায়
১।উৎপাদনের সময় হ্রাস করে। সাধারন মেটাল কাটিং বা অন্য উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সামান্যতম বা কোন প্রভাব নেই। এটি কম সেট আপ সম্পন্ন এবং সেটিংসও কম সময় লাগে। কার্যবস্তুর নড়াচড়ার সময় কম লাগে, স্বয়ংক্রিয়ভাবে টুল পরিবর্তন করা যায়। মূল বৃহৎ আকারের মেটাল বা শীট মেটাল কাটিং করার ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি ব্যপকভাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
২। উৎপাদনের সময় লীড সময় হ্রাস করে। কারন জবকে তাড়াতাড়ি বাধা যায় এবং এনসি বা সিএনসি মেশিনে সেট আপ করা যায়। ফলে দ্রুত সময়ে ক্রেতার কাছে মাল ডেলিভারি দেয়া যায়, ব্যবসায় দ্রুত লাভবান হওয়া সহজ ।
৩। সবচেয়ে বেশি উৎপাদন সহজসাধ্য বিষয় হয়ে দাড়ায়, কারন নিউমেরিক্যাল সিস্টেমে সহজে উৎপাদন তালিকা পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা যায় ।
নিউমেরিক্যাল কন্ট্রোলের অসুবিধাসমূহ (Disadvantages of NC / CNC Machine)
১। অধিক দক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন হয়।
২। যন্ত্রপাতির দাম তুলনামূলক অনেক বেশি হয়ে থাকে ।
৩। যন্ত্রপাতি রক্ষনাবেক্ষন খরচ অনেক বেশি।
৪। ব্যবসায় অধিক মূলধন প্রয়োগ করতে হয়।
৫। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সকল মেশিন বিদেশ থেকে ক্রয় করে আনতে হয়।
আরও দেখুন...