Academy

জনাব রিয়াজ সাহেবের ছেলে অসুস্থ হওয়ায় তিনি একজন ডাক্তারের কাছে গিয়ে বলেন, ডাক্তার সাহেব আপনি আমার ছেলেকে বাঁচান। আপনি ছাড়া আমার কোনো উপায় নেই। এ কথা শুনে ডাক্তার সাহেব বলেন- আপনি বিচলিত হবেন না, আল্লাহর ওপর ভরসা রাখুন। আমরা উসিলা মাত্র। আর একজন নাগরিক হিসেবে প্রত্যেক ব্যক্তিরই অধিকার আছে সুস্থ ও সুন্দর জীবনযাপনের। আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করছি মাত্র।

রিয়াজ সাহেবের আচরণ শরিয়তের আলোকে ব্যাখ্যা করো। (প্রয়োগ)

Created: 1 year ago | Updated: 5 months ago
Updated: 5 months ago
Ans :

রিয়াজ সাহেবের মধ্যে তাওয়াক্কুলের অভাব লক্ষণীয়। তাওয়াক্কুল শব্দের অর্থ ভরসা বা নির্ভর করা। কোনোকিছু অর্জনের জন্য চেষ্টা বা সাধনা করার পর সফলতার জন্য মহান আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা বা নির্ভর করাকে তাওয়াক্কুল বলে। আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করার মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, বান্দা আল্লাহর ফয়সালার ওপর সন্তুষ্ট। কিন্তু রিয়াজ সাহেবের ক্ষেত্রে তাওয়াক্কুলের অভাব লক্ষ করা যায়।

উদ্দীপকের রিয়াজ সাহেবের ছেলে অসুস্থ হলে তিনি বিচলিত হয়ে পড়েন। এক্ষেত্রে তার আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে ধৈর্যধারণ করা উচিত ছিল। কিন্তু তিনি তা না করে বলেন, ডাক্তার ছাড়া তার আর কোনো উপায় নেই। রিয়াজ সাহেবের ছেলেকে ভালো করার ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহর। যা ডাক্তার সাহেবের কথায় প্রমাণিত হয়েছে। খাঁটি মুমিন হতে হলে জীবনের সবক্ষেত্রে আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করতে হবে। যারা আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন। তাওয়াক্কুল করলে আল্লাহর সাহায্য পাওয়া যায়। আল্লাহ তায়ালা বলেন, 'যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে তার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট' (সুরা আত-তালাক: ৩)। রোগ হলে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে এবং ওষুধ খেতে হবে। আর আল্লাহর কাছে ভালো হওয়ার জন্য প্রার্থনা করতে হবে, ধৈর্যধারণ করতে হবে এবং আল্লাহর ওপর ভরসা করতে হবে। কিন্তু রিয়াজ সাহেব তা করেননি। তাই বলা যায়, তার মধ্যে তাওয়াক্কুলের অভাব রয়েছে।

1 year ago

ইসলাম শিক্ষা

**'Provide valuable content and get rewarded! 🏆✨**
Contribute high-quality content, help learners grow, and earn for your efforts! 💡💰'
Content

Related Question

View More

1 সবর কাকে কলে? (জ্ঞানমূলক)

Created: 1 year ago | Updated: 5 months ago
Updated: 5 months ago

দুঃখ-কষ্ট ও বিপদে-আপদে বিচলিত না হয়ে আল্লাহর ওপর ভ ভরসা রেখে দৃঢ়তার সাথে তা সহ্য করাকে সবর বলা হয়।

2 নাগরিক কারা? ব্যাখ্যা করো। (অনুধাবন)

Created: 1 year ago | Updated: 5 months ago
Updated: 5 months ago

যারা রাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করে, রাষ্ট্রপ্রদত্ত সুযোগ- সুবিধা ভোগ করে এবং রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করে তারাই নাগরিক। উৎপত্তিগত অর্থে নগরের অধিবাসীদেরই নাগরিক বলা হয়। কিন্তু আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গিতে নাগরিক হতে হলে রাষ্ট্র প্রদত্ত অধিকার ভোগের পাশাপাশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন ও কর্তব্য পালন করাও অত্যাবশ্যক।

ডাক্তার সাহেবের উক্তিতে ইসলামি রাষ্ট্রে একজন নাগরিকের অধিকারের বিষয়টি যথাযথভাবে ফুটে উঠেছে। ইসলামি রাষ্ট্রের নাগরিকরা যেকোনো বিষয়ে একমাত্র আল্লাহর ওপর ভরসা করবে এবং তাঁর কাছে সাহায্য চাইবে। উদ্দীপকে রিয়াজ সাহেব তার অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে বিচলিত হয়ে পড়লে ডাক্তার সাহেব তাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন, আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল বা ভরসা করুন। আমরা উসিলা মাত্র। আর একজন নাগরিক হিসেবে প্রত্যেক ব্যক্তিরই সুস্থ ও সুন্দর জীবনযাপনের অধিকার আছে। আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করছি মাত্র। এখানে ডাক্তার সাহেব একজন মুমিন ব্যক্তি হিসেবে প্রমাণিত হন। তিনি তার বক্তব্যে আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা করা এবং রিয়াজ সাহেবকে বিচলিত না হওয়ার পরামর্শ দেন। ইসলামি রাষ্ট্রের একজন নাগরিক হিসেবে প্রত্যেকের সুন্দর ও সুস্থভাবে জীবনযাপনের অধিকার আছে। আর এই সুন্দর সুস্থ জীবনযাপনের ক্ষেত্রে তিনি তার দায়িত্ব পালন করছেন। কেননা ডাক্তার হিসেবে তার দায়িত্ব রোগীকে সঠিক চিকিৎসা সেবা দেওয়ার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করা। সুস্থ করার মালিক একমাত্র আল্লাহ। এক্ষেত্রে তার মধ্যে কর্তব্যপরায়ণতার দিকটিও ফুটে ওঠে। তিনি নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছেন।

উপরের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, ইসলামি রাষ্ট্রে প্রত্যেক নাগরিকের সুষ্ঠু, সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। আর এ অধিকার পূরণে রাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিক নিজ নিজ অবস্থান থেকে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করবে। ডাক্তার সাহেবের বক্তব্যে এ বিষয়টির প্রতিফলন ঘটেছে।

অমুসলিম নাগরিকদের অধিকার বলতে ইসলামি রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে তাদের প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধাকে বোঝায়। ইসলামি রাষ্ট্রে অমুসলিম নাগরিকদের জান-মাল ও ইজ্জতের নিরাপত্তা থাকবে। রাষ্ট্র তাদের স্বাধীনভাবে ধর্মকর্ম পালনের সুযোগ-সুবিধা দেবে। ধর্মের ব্যাপারে কোনো জোর-জবরদস্তি করা যাবে না। অমুসলিম নাগরিক যাতে তাদের মৌলিক প্রয়োজন যেমন- অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা এগুলো নিশ্চিত করতে পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদ ছাড়া ইসলামি রাষ্ট্রে অমুসলিম নাগরিকদের চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে।

অমুসলিম নাগরিক ও অন্যদলের লোকদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের মাধ্যমে আলম সাহেবের সাম্প্রদায়িক মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। ইসলামি সমাজব্যবস্থায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। ইসলামে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার প্রতি সদাচরণ ও ন্যায়বিচারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্য ধর্মের লোকদের অধিকার হরণ বা তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করা ইসলামি শরিয়তে সম্পূর্ণ নিষেধ। আলম সাহেব ইসলামের এ বিধানটি লঙ্ঘন করেছেন।

উদ্দীপকে উল্লেখ করা হয়েছে, বকুলতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলম সাহেব বিচার সালিশে নিজ দলের লোকদের পক্ষে রায় দেন। এছাড়াও তিনি অমুসলিম নাগরিকদের কটাক্ষ করে কথা বলেন এবং তাদের অধিকার হরণ করেন। তার এ ধরনের কর্মকাণ্ডে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অভাব ও স্বজনপ্রীতি লক্ষ করা যায়। শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনে সামপ্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার গুরুত্ব অপরিসীম। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ন্যায়বিচারের নির্দেশ দিয়েছেন এবং কাউকে উপহাস বা তিরস্কার করতে স্পষ্টভাষায় নিষেধ করেছেন। রাসুল (স)ও সব ধর্ম ও বর্ণের লোকদের সাথে সদাচরণের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। সুতরাং বলা যায়, আলম সাহেব অমুসলিম নাগরিকদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ এবং মানুষকে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করার মাধ্যমে আল্লাহ ও তার রাসুলের (স) নির্দেশ লঙ্ঘন করেছেন। তাই তার এ ধরনের কর্মকাণ্ড ইসলামি শরিয়তের পরিপন্থি।

Promotion
NEW SATT AI এখন আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

Are you sure to start over?

Loading...