কোম্পানি সংগঠনের গঠন প্রণালী

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র | | NCTB BOOK

কোম্পানি সংগঠন হলো আইন-সৃষ্ট ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান যা কোম্পানি আইনের নির্ধারিত পন্থায় গঠিত ও পরিচালিত হয়। পাবলিক ও প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি উভয় “কোম্পানি আইন ১৯৯৪” অনুসারে গঠিত ও পরিচালিত হয়। কোম্পানি গঠনে বিভিন্ন পর্যায়ে কতকগুলো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ বা পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়ে থাকে ।

নিম্নে এ আইন অনুযায়ী কোম্পানি আইনের পদক্ষেপ/পদ্ধতি বর্ণনা করা হলো-

১. উদ্যোগ গ্রহণ পর্যায় (Promotional stage):

একাধিক ব্যক্তি কোম্পানি গঠনের লক্ষ্যে সর্বপ্রথম উদ্যোগী হন । কোম্পানি গঠনের জন্য পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৭ জন এবং প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির ক্ষেত্রে কমপক্ষে ২ জন উদ্যোক্তার প্রয়োজন হয়। ব্যবসায়ের সম্ভাবনা, সাফল্য ইত্যাদি বিষয়ে চিন্তাভাবনা করে তারা কোম্পানি গঠনের প্রাথমিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন ।

এ ব্যক্তিবর্গ বা প্রবর্তকগণ এ পর্যায়ে নিম্নোক্ত কাজ সম্পাদন করেন:

ক. প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ
খ. নামের ছাড়পত্র সংগ্রহ

২. দলিলপত্র প্রণয়ন পর্যায়

Documents Preparation Stage পরিকল্পনা তৈরির পর উদ্যোক্তাগণ কোম্পানির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিম্নোক্ত দুটি দলিল প্ৰণয়ন করেন—

ক. স্মারকলিপি/সংঘস্মারক বা পরিমেলবদ্ধ (Memorandum of Association): এটি কোম্পানির মূল দলিল বা সনদ। এ দলিলে কোম্পানির নাম, কোম্পানির নিবন্ধিত অফিসের ঠিকানা, কোম্পানির মূল লক্ষ্যসমূহ, শেয়ার, মূলধনের পরিমাণ, শেয়ারের আংকিক মূল্যসহ মূলধনের বিভক্তি এবং এটি প্রাইভেট লিমিটেড না-কি পাবলিক লিমিটেড তা উল্লেখ করা অবশ্যক ।

খ. সংঘবিধি বা পরিমেল নিয়মাবলি (Articles of association): এ দলিলে কোম্পানির অভ্যন্তরীণ পরিচালনা সংক্রান্ত নিয়ম-পদ্ধতি লেখা হয়। পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি আইনে বর্ণিত তফসিল-১ কে সংঘবিধি হিসেবে গ্রহণ করলে সেক্ষেত্রে তাকে আর এ দলিল তৈরি করতে হয় না ।

৩. নিবন্ধনপত্র সংগ্রহ পর্যায় (Certificate of incorporation collection stage): 

এ পর্যায়ে প্রবর্তকগণ কোম্পানি নিবন্ধকের অফিস হতে প্রয়োজনীয় ফরম সংগ্রহ করন এবং তা পূরণপূর্বক দলিলপত্র সন্নিবেশিত করে নিবন্ধকের নিকট জমা দেন। অবশ্য জমাদানের সময় মূলধন অনুপাতে প্রয়োজনীয় স্ট্যাম্প ও ফি এর সাথে দাখিল করতে হয়।

আবেদনপত্রের সাথে নিম্নোক্ত দলিল ও কাগজপত্র জমা দেয়ার প্রয়োজন পড়ে—

ক. কোম্পানির স্মারকলিপির তিন কপি ;
খ. সংঘবিধির তিন কপি; অবশ্য পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি তফসিল-১ কে সংঘবিধি হিসেবে গ্রহণ করলে এ মর্মে ঘোষণাপত্রের কপি;
গ. উদ্যোক্তা পরিচালকদের নাম, ঠিকানা ও পেশা;
ঘ. উদ্যোক্তা পরিচালকেরা নিজ স্বাক্ষরযুক্ত দায়িত্বপালনের সম্মতিপত্র; ঙ. উদ্যোক্তা পরিচালকগণ যোগ্যতাসূচক শেয়ার ক্রয়ে সম্মত আছেন এ মর্মে একটি চুক্তিপত্র ও
চ. হাইকোর্টের উকিল অথবা সংঘবিধিতে উল্লেখ কোনো পরিচালক বা সচিব পদের অধিকারী ব্যক্তি কর্তৃক প্রদত্ত যথার্থতার ঘোষণাপত্র ।

উপরোক্ত সবকিছু ঠিকভাবে পেয়ে নিবন্ধক নিবন্ধন বইতে কোম্পানির নাম তালিকাভুক্ত করেন এবং প্রবর্তকদের নিবন্ধনপত্র (Certificate of Incorporation) এবং চাইলে প্রত্যায়িত স্বারকলিপি ও সংঘবিধির কপি প্রদান করেন। এর পরই প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি কাজ শুরু করতে পারে কিন্তু পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিকে কাজ শুরু করার জন্য নিবন্ধকের নিকট হতে কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র সংগ্রহ করতে হয় ।

৪. কার্যারম্ভ পর্যায় (Commencement stage): 

পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিকে কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র পাওয়ার জন্য ন্যূনতম চাঁদা (Minimum Subscription) সংগ্রহের ঘোষণাপত্র এবং জনসাধারণের নিকট শেয়ার বিক্রয়ের ঘোষণাপত্রসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দলিলপত্রসহ আবেদন করতে হয়। সব কাগজপত্র ঠিক থাকলে এবং সন্তুষ্ট হলে নিবন্ধক পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিকে কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র প্রদান করেন। এ পত্র পাওয়ার পরেই পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি ব্যবসায় শুরু করতে পারে।

Content added By

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

পরিচালক মন্ডলীর নাম
কোম্পনির বিভিন্ন ধরণের সভা
কোম্পানি গঠনের প্রাথমিক খরচ
কোম্পানির মোট মূলধনের পরিমান
Promotion