আমরা সমাজবদ্ধ জীব। এ সমাজের অন্যান্য মানুষের সাথে আমাদের আন্তরিকতা, সহমর্মিতা ও ভালোবাসার সম্পর্ক। আনন্দ, বিষাদে একে অপরের পাশে থেকে আমরা হয়ে উঠি আপনজন। এভাবে একই সমাজে পাশাপাশি থাকতে অভ্যস্ত হয়ে উঠি। কখনও অন্যের প্রয়োজনে আমরা ভালোবেসে ছুটে যাই, আবার কখনও আমাদের প্রয়োজনে তারা ভালোবেসেই ছুটে আসেন। এভাবে আমাদের মধ্যে গড়ে ওঠে সম্পর্কের বন্ধন।
তবে সবসময় কি সম্পর্কগুলো এমন মধুর হয়? মতের অমিল থেকে অনেক সময় দ্বন্দ্বও হয় তাই না? দ্বন্দ্ব নিয়ে আমাদের অনেকের মধ্যেই অনেক ভয়, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা দেখা দেয়; বেড়ে যায় মানসিক চাপ। অনেক সময় এই দ্বন্দ্ব থেকে সৃষ্টি হয় মনোমালিন্য, বিশৃংখলা, সংঘাত কিংবা সহিংসতা।
আচ্ছা যদি এমন হয় যে আমরা নিজেরাই এই দ্বন্দ্বের পরিস্থিতিতে হাল ধরতে পারি, কেমন হয় তাহলে? এমন কিছু ধারণা কিংবা কৌশল যদি শিখতে পারি যা দিয়ে দ্বন্দ্ব থেকে আমরা যে সমস্যার সম্মুখীন হই তা সমাধানে কাজ করতে পারতাম, তাহলে অনেক ক্ষেত্রে মনোমালিন্য, বিশৃংখলা, সংঘাত কিংবা সহিংসতা হতোই না। আমাদের পরিস্থিতি কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে পাল্টে দিতে পারতাম তাই না?
এবারের অভিজ্ঞতাটিতে আমরা কিন্তু এই ধারণা ও কৌশলগুলোই শিখব এবং ধাপে ধাপে এক একটি সিঁড়ি বেয়ে পৌঁছে যাব শান্তিপুর রাজ্যে। প্রথমে আমরা জীবন থেকে দ্বন্দ্বের যেকোনো একটি ঘটনা নিয়ে মতবিনিময় করব। এরপর কিছু ছোট ছোট ঘটনা বিশ্লেষণ করে দ্বন্দ্বের কারণগুলোর ভিন্নতা পর্যবেক্ষণ এবং প্রভাব বিশ্লেষণ করব। এভাবে আমরা বেশ কিছু কার্যক্রমের মাধ্যমে শান্তিপুর রাজ্যের উদ্দেশ্যে এক এক করে সিঁড়ির ধাপ অতিক্রম করব। আর একবার পৌঁছে গেলে দৈনন্দিন জীবনে দ্বন্দ্ব ব্যবস্থাপনার কৌশল ব্যবহার করে হয়ে যাব শান্তিপুর রাজ্যের বাসিন্দা।
শিক্ষকের কাছ থেকে তার নিজের জীবনের দ্বন্দ্বের একটি অভিজ্ঞতার কথা শুনলাম। এরপর আমরা নিজেদের জীবনে ঘটেছে এমন ১ টি করে দ্বন্দ্বের অভিজ্ঞতা, এর কারণ ও নিজেদের জীবনে এর প্রভাব শেয়ার করেছি। নিজের জীবনের একটি অভিজ্ঞতা মনে করে সবার সাথে শেয়ার করার কাজটিতে আন্তরিক ও স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করে আজ আমরা 'শান্তিপুর' রাজ্যে যাওয়ার জন্য সিঁড়ির প্রথম ধাপ পার হলাম। এর জন্য আমরা নিজেদের অভিনন্দন জানিয়েছি।
দলগত কাজ থেকে পাওয়া দ্বন্দ্বের কারণ ও প্রভাবগুলোর তালিকা তৈরি করে উপস্থাপন ও আলোচনা করেছি। আমরা দেখলাম বিভিন্ন সময়ে আমাদের জীবনে যে দ্বন্দ্বের ঘটনা ঘটে তা শুধু নেতিবাচক প্রভাবই ফেলে না। অনেক ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাবও ফেলছে। এবার তাহলে আমরা নিজেদের কয়েকটি দ্বন্দ্বের ঘটনা পর্যালোচনা করি এবং নিজের অভিজ্ঞতা থেকে 'আমার জীবনে দ্বন্দ্বের প্রভাব' ছকটি পূরণ করি। শিক্ষাবর্ষ
আমাদের জীবনে দ্বন্দ্বের প্রভাব
ঘটনা | দ্বন্দ্বের কারণ | দ্বন্দ্বের প্রভাব ইতিবাচক নাকি নেতিবাচক | দ্বন্দ্বের প্রভাবে কী করি? |
| |||
| |||
| |||
|
দ্বন্দ্বের কারণ ও প্রভাব বিশ্লেষণ করে আমরা ২য় ধাপ পার হলাম। এরপর আরও ৮টি ধাপ পার হয়ে আমরা পৌঁছে যাব আমাদের 'শান্তিপুর' রাজ্যে
এবার আমরা নিচের টি ঘটনা নিয়ে দলগতভাবে আলোচনা করব। পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে তা উপস্থাপন করব।
ঘটনা ১ অলকা এবং রাজু দুজন অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে ও খুব ভালো গান গায়। আসছে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে শ্রেণিশিক্ষক অলকা এবং রাজুকে তাদের পছন্দমতো একটি দেশাত্ববোধক গান বাছাই করে গাইতে বলেছেন। কিন্তু গান বাছাই এ দুজন একমত হতে পারছিল না। অলকা যে গানটি পছন্দ করল রাজুর তা পছন্দ না। অন্যদিকে রাজু যেই গানটি পছন্দ করে সেটি অলকার ভালোভাবে জানা নেই। অলকা কী করা যায় ভেবে একটা বুদ্ধি বের করল। সে রাজুকে বলল সে যদি তাকে একটু সময় দিতে পারে তাহলে সে গানটি শিখে নিতে চায় ভালো করে। রাজু বেশ খুশি হলো, ভাবলো এ ভাবনা তো সেও ভাবতে পারত! রাজু অলকাকে তার ভাবনার জন্য ধন্যবাদ জানালে এবং বলল 'তুমি চাইলে আমরা অন্য গানও নির্বাচন করতে পারি। অলকা রাজুকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলল, 'না তার দরকার নেই। এখন মনে হচ্ছে তুমি একটু সময় দিলেই আমি গানটি ঠিকই শিখে নিতে পারব।" এরপর গানটি শিখে নিয়ে তারা স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে গাইল। |
ঘটনা ২ আকাশ এবং অভিজিৎ একে অন্যের খুব ভালো বন্ধু। তারা একসাথে স্কুলে যায়, বাড়ি ফেরে, স্কুলের পর খেলাধুলা করে। আকাশ একদিন অভিজিৎ এর নতুন কেনা সাইকেলটা প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য চায়। প্রতিযোগিতায় ক্ষতি হতে পারে ভেবে আকাশ তার পছন্দের নতুন সাইকেলটা দিতে চাচ্ছিল না। আবার সাইকেলের কোনো ক্ষতি হলে বাবা হয়তো বকবেন। এসব বললে তার বন্ধু দুঃখ পেতে পারে এই আশঙ্কায় সে হ্যাঁ কিংবা না কিছুই বলল না। যেদিন অভিজিৎ সাইকেলটা নিতে তাদের বাড়ি এলো সেদিন সে ইচ্ছে করেই বাড়িতে রইল না। এতে করে অভিজিৎ বুঝতে পারল যে আকাশ তাকে তার সাইকেল দিতে চাচ্ছে না। তার সেদিন আর প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা হলো না। পরদিন আকাশ কারণ খুলে না বলায় অভিজিৎ এর প্রচণ্ড রাগ হলো এবং সে আকাশকে অনেক তিরস্কার করল। এরপর আর তাদের মধ্যে আগের মত বন্ধুত্ব রইল না। ২৪ |
ঘটনা ৩ নাইপু অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। সে একটু একা নিজের মতো সময় কাটাতে পছন্দ করে। সে গল্পের বই পড়তে খুব পছন্দ করে। কিন্তু তার বাবা মায়ের এটা পছন্দ না। এ নিয়ে কিছুদিন ধরে বাবা মায়ের সাথে তার রাগারাগি হচ্ছে। মা তো একদিন বন্ধুদের সামনে তাকে বকাঝকা করলেন। আবার বন্ধুদের সাথে পিকনিকেও যেতে দিলেন না। তার প্রায় সময়ই এসব নিয়ে মন খারাপ একা চলতে গিয়ে কোনো বিপদে পড়ে যাবে। নাইপুর মন খারাপ দেখে ওর ভাই ওদের সবার সাথে কথা বলল। নাইপুর এবং বাবা মা নিজেদের চিন্তাগুলো ভাই এর সাথে শেয়ার করল এবং ওর ভাই বুঝতে পারলো কেন ওদের মধ্যে সমস্যা হচ্ছিল। সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিল এরপর থেকে কোনো সমস্যা বোধ করলে তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে। চুপ করে থেকে কষ্ট করবে না। এতে সমস্যা বেড়ে যায় এবং সম্পর্ক খারাপ হয়। |
ঘটনা ৪ অনিকদের ক্লাসে সেদিন স্যার পরিবেশবিষয়ক সচেতনতা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে বেশ কিছু আলাপ করেছেন। বলেছেন যে কীভাবে আমরা একে অন্যের অসুবিধার কারণ না হয়ে, সুন্দরভাবে একসাথে থাকতে পারি। সেগুলো নিয়েই ভাবতে ভাবতে অনিক বাড়ি ফিরছিল। এমন সময় হঠাৎ করে ও পা পিছলে পড়ে গেল রাস্তায় ফেলে রাখা কলার খোসায়। সামনেই দেখতে পেল একটি ছেলে কলা খেয়ে খোসা রাস্তায় ফেলছে। অনিক রেগে গিয়ে ঐ ছেলেকে জিজ্ঞাসা করল কেন সে এভাবে কলার খোসা রাস্তায় ফেলছে? এটা যে কতটা বিপজ্জনক সেটা কি সে বুঝতে পারছে না! ছেলেটাও হঠাৎ করে এমন প্রতিবাদ প্রত্যাশা করেনি। নিজের কাজের জন্য মনে মনে কিছুটা লজ্জিত হলেও মুখে সে সেটা প্রকাশ করল না। বরং সেও রেগে গিয়ে চিৎকার করে কথা বলা শুরু করল। এরপর কথা বলতে বলতে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ল। এতে চারদিকে লোক জড়ো হয়ে গেল। |
ঘটনাগুলো থেকে দেখলাম আমাদের বিভিন্ন রকমের চাহিদা, কোনো কিছু পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা কিংবা একটি বিষয়কে আমরা বিভিন্নজন কীভাবে দেখছি বা ব্যাখ্যা করছি অর্থাৎ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয়। উপরের উদাহরণগুলো থেকে এটা আমাদের কাছে পরিষ্কার যে প্রতিটি ক্ষেত্রেই দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছে কোনো না কোনো মত অথবা চাহিদার অমিল থেকে।
১ ও ৩ নং ঘটনায় আবার সমস্যার সমাধানও হয়েছে। ১নং ঘটনায় যাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়েছে তাদের একজনই সমাধানের পদক্ষেপ নিয়েছে। আর ৩ নং ঘটনায় অন্য একজন পরিস্থিতি বুঝতে পেরে নিজে থেকে সাহায্য করেছে।
ঘটনাগুলোর দ্বন্দ্বের কৌশলগুলো বিশ্লেষণ এবং উপস্থাপন করার জন্য এবার আমরা পরপর ২টি সিঁড়ি পার হলাম।
আমরা 'দ্বন্দ্বের সমাধান' ছকে নিজেদের যে কৌশলগুলো লিখেছিলাম তা নিয়ে সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করেছি। সবার কাছ থেকে অনেকগুলো ইতিবাচক ও কার্যকরী কৌশল পেয়েছি। এর মধ্যে যে কৌশলগুলোকে আমি ব্যবহার করতে চাই তা 'আমার দ্বন্দ্ব সমাধান কৌশল' ছকে লিখি।
আমার দ্বন্দ্ব সমাধান কৌশল
পরিস্থিতি | দ্বন্দ্ব সমাধান কৌশল |
| |
| |
| |
| |
|
দ্বন্দ্বমূলক পরিস্থিতিতে আমরা যখন সচেতন হয়ে অমিলগুলোকে খুঁজে বের করতে পারি, তার পেছনের কারণ, চিন্তা ও চাহিদা বা প্রয়োজন বুঝতে পারি তখন নিজেরা তা সমাধানের উদ্যোগ নিতে পারি। যদি মনে হয় কারও সাহায্য দরকার তাও চাইতে পারি। আবার কখনও নিজ উদ্যোগে সাধ্যমতো অন্যদেরকে সাহায্যও করতে পারি।
নিজেদের কৌশল খুঁজে বের করা কাজটি দায়িত্বশীলতার সাথে সম্পন্ন করার জন্য আজও আমরা ১টি ধাপ পার হলাম। আমরা ইতোমধ্যে সফলতার সাথে শান্তিপুর রাজ্যে যাওয়ার সিঁড়ির ৫টি ধাপ পার হয়েছি। তার মানে আমরা সিঁড়ি দিয়ে শান্তিপুর রাজ্যে যাওয়ার অর্ধেকটা পথ পার হয়ে গেছি। এবার আরও বুদ্ধিমত্তার সাথে সচেতনভাবে বাকি পাঁচটি ধাপ পার হয়ে লক্ষ্যে পৌঁছার পালা।
কোনো কোনো পরিস্থিতিতে চিন্তা বা মতের অমিল অর্থাৎ দ্বন্দ্ব কিন্তু আমাদেরকে নতুন কিছু বুঝতে, সিদ্ধান্ত নিতে কিংবা নতুন কিছু আবিষ্কারেও বিশেষ ভূমিকা রাখে। অবাক লাগল? কথাটা কিন্তু একেবারেই সত্যি। তাহলে এবার আমরা নিচের ২টি ঘটনা পর্যালোচনা করে দেখি।
এরপর খেলার মাঠ ও পরিবেশ রক্ষায় সুষ্ঠু সমাধানের পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রধান শিক্ষক, সালেহা আপা, বাজার কর্তৃপক্ষ সবাই মিলে শৌনক ও তার দলকে ধন্যবাদ জানাল।
জীবনে এমন কী কোনো অভিজ্ঞতা আছে যা আমাকে কোনো বিষয়ে সচেতন করেছে বা ভিন্নভাবে চিন্তা করতে কিংবা কাজ করতে সাহায্য করেছে? এমন ১ টি অভিজ্ঞতা এবং তা কীভাবে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে তা অপর পৃষ্ঠার 'আমার ইতিবাচক অভিজ্ঞতা' ছকে লিখি।
আমার ইতিবাচক অভিজ্ঞতা
ঘটনা | ইতিবাচক অভিজ্ঞতা |
|
দ্বন্দ্বের কারণে আমরা চিন্তা করেছি এবং নতুন, আরও ভালো কোনো সমাধান খুঁজে পেয়েছি; যদি নিজেদের এমন কোনো অভিজ্ঞতা মনে করে বলতে পারি তাহলে আজ আমরা আরও ১ ধাপ উপরে উঠব।
তাহলে আমরা বুঝতে পারলাম বিভিন্ন পরিস্থিতিতে দ্বন্দ্ব হওয়াটা স্বাভাবিক। দ্বন্দ্ব হলেই যে তা সমস্যা তৈরি করে তা নয়। আসলে কি নিয়ে দ্বন্দ্ব হচ্ছে, এর পেছনে কারণ এবং সমাধানের ইতিবাচক ও কার্যকর উপায়, কারও সাহায্যের প্রয়োজন আছে কী না এবং দ্বন্দ্বের ফলে কোনো নতুন চিন্তা ও সে অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করাই দ্বন্দ্ব ব্যবস্থাপনা।
বেশিরভাগ সময় আমরা দ্বন্দ্বকে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখি। ফলে আমাদের দ্বন্দ্ব ব্যবস্থাপনার ক্ষমতাকে উপলব্ধি করতে পারিনা। এর ফলে মানুষের সাথে গড়ে ওঠা আমাদের পারস্পরিক সম্পর্কগুলো ছোট-বড় দ্বন্দ্বের ফলে খুব সহজেই নষ্ট হয়ে যেতে পারে। যা আমাদের সবার সাথে মিলে মিশে ভালো থাকতে সুরক্ষিত থাকতে নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে। নিজের প্রতি আস্থা রেখে সচেতনভাবে আমরা নিজেদের পরিস্থিতির অনেক দ্বন্দ্ব ব্যবস্থাপনায় ভূমিকা রাখতে পারি।
এই মনে হচ্ছে এই কাজটা করলে ভালো হয়, আবার মনে হয় না অন্যটা ভালো হবে। নিজেদের এই ধরনের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব আমাদের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। এতে আমাদের সচেতনতা বাড়ে, ফলে আমরা বিভ্রান্ত কম হই।
নিজেদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব সম্পর্কে সচেতন হওয়ার জন্য আমরা আরও ১টি ধাপ পার হয়ে শান্তিপুর রাজ্যের সিঁড়ির ৭ম ধাপে পৌঁছে গেলাম। আর মাত্র ৩টি ধাপ বাকি আমাদের কাঙ্ক্ষিত শান্তিপুর রাজ্যে পৌঁছতে। দ্বন্দ্ব ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়:
আমরা যে কৌশলগুলো শিখেছি তা ব্যবহার করে শিক্ষকের দেওয়া পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে দ্বন্দ্ব ব্যবস্থাপনার ভূমিকাভিনয় করেছি। গল্প, চরিত্র ও সংলাপ প্রস্তুত করার জন্য ১টি এবং ভূমিকাভিনয় করে ইতিবাচক ও কার্যকর কৌশল ব্যবহার করে দ্বন্দ্ব ব্যবস্থাপনার জন্য আরও ১টি ধাপ পার হলাম। আর মাত্র ১টি ধাপ বাকি আমাদের শান্তিপুর রাজ্যে পৌঁছাতে।
দ্বন্দ্ব ব্যবস্থাপনার কৌশল চর্চা
ঘটনা বা পরিস্থিতি | যার সাথে দ্বন্দ্ব | দ্বন্দ্ব সমাধান করার জন্য তখন যে কৌশল নিয়েছিলাম | ঐ ঘটনা আবার ঘটলে যে কৌশল ব্যবহার করে দ্বন্দ্বের সমাধান করতে চাই | |
১
| ||||
২
|
পরিকল্পনা অনুযায়ী আমার পদক্ষেপ ও অভিজ্ঞতা |
|
আমরা নিজেদের ২টি দ্বন্দ্বমূলক পরিস্থিতি বেছে নিয়েছি এবং এমন ঘটনা আবার ঘটলে তা ব্যবস্থাপনার কৌশল পরিকল্পনা করেছি। এভাবেই আমরা পৌঁছে গেলাম শান্তিপুর রাজ্যে হয়ে গেল দ্বন্দ্বের সাথে আমাদের সন্ধি। এই সন্ধি অব্যাহত রাখতে এখন থেকে আমরা সবসময় সচেতন থাকব।
আমার অগ্রগতি, আমার অর্জন
অপর পৃষ্ঠার ছকটি আমার অভিভাবক ও শিক্ষক পূরণ করবেন। আমি নিজেও পূরণ করব। এর মাধ্যমে আমি আমার অগ্রগতি সম্পর্কে জানব, কোথায় আরও ভালো করার সুযোগ আছে তা খুঁজে বের করব। দলগত কাজের অভিজ্ঞতা থেকে আমার অংশগ্রহণের বিষয়ে সহপাঠীদের মতামত জেনে নিয়ে আমি সংশ্লিষ্ট অংশে লিখে নেবো। আমার অভিভাবক বইয়ে সম্পাদিত কাজ দেখে মন্তব্য লিখবেন। সমস্ত কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে শিক্ষক আমাকে স্বীকৃতি দিবেন। কী ভালো করেছি, কীভাবে আরও ভালো করতে পারি, সে উপায় জানাবেন।
মূল্যায়ন ছক ২: ভূমিকাভিনয়ের মূল্যায়নের মাধ্যমে অভিজ্ঞতার মূল ধারণাগুলোর অর্জন মূল্যায়ন
ভূমিকাভিনয়ের পর নিজেদের স্ক্রিপ্ট, বিষয়বস্তু, অভিনয় ইত্যাদির প্রক্রিয়া কেমন লেগেছে, কতটা উপভোগ্য ছিল তা নিয়ে সহপাঠীরা অনানুষ্ঠানিক মূল্যায়ন করবে। অন্য দলের সহপাঠীরাও কেমন উপভোগ করেছে এবং বিষয়বস্তু ও প্রক্রিয়ার ওপর তাদের মতামত দিয়ে মূল্যায়ন করবে। শিক্ষক আমার কাজের প্রক্রিয়া, অংশগ্রহণ, ধারণার ওপর মূল্যায়ন করবেন ও ফিডব্যাক দিবেন।
ভূমিকাভিনয় দল | ভূমিকাভিনয় পরিকল্পনায় দ্বন্দ্ব বিষয়ে কার্যকর ও অকার্যকর চিন্তা ও বিশ্বাসের ভিন্নতাকে চিহ্নিত করতে পেরেছে | ভূমিকাভিনয় থেকে যে কৌশলগুলো শিখেছে তা পরিস্থিতি অনুযায়ী নিজের পরিকল্পনায় ব্যবহার করতে পেরেছে | ভূমিকাভিনয়ে দ্বন্দ্ব ব্যব- স্থাপনার কৌশল সংক্রান্ত ধারণাগুলোর সঠিকভাবে ব্যবহার করেছে |
দল ১
| |||
দল ২
| |||
দল ৩
| |||
দল ৪
|
মূল্যায়ন ছক ৩: দ্বন্দ্ব ব্যবস্থাপনার কৌশলগুলোর চর্চা মূল্যায়নের মাধ্যমে অর্জিত যোগ্যতা জীবনে প্রয়োগের মূল্যায়ন
শিক্ষার্থীর নাম: | দ্বন্দ্ব ব্যবস্থাপনার কৌশল চর্চা সংক্রান্ত ব্যক্তিগত পরিকল্পনার যথার্থতা | পরিকল্পনার আলোকে করা চর্চা সংক্রান্ত কাজগুলো খাতা/ডায়েরি/জার্নালে লিপিবদ্ধ করা | ডায়েরি/খাতা/ জার্নালে লিপিবদ্ধ করা কাজগুলোতে দ্বন্দ্ব ব্যবস্থাপনার ধারণাগুলোর সঠিক প্রতিফলন |
বর্ণনামূলক ফিডব্যাক
|
আরও দেখুন...