দ্বিঘাত সমীকরণ

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - উচ্চতর গণিত - উচ্চতর গণিত – ২য় পত্র | | NCTB BOOK
19
19

দ্বিঘাত সমীকরণ (Quadratic Equation)

দ্বিঘাত সমীকরণ হল এমন একটি সমীকরণ, যেখানে চলকটির সর্বোচ্চ ঘাত বা ক্ষমতা \( 2 \)। অর্থাৎ, দ্বিঘাত সমীকরণে চলকের ঘাত সর্বোচ্চ \( x^2 \) পর্যন্ত থাকে। একটি সাধারণ দ্বিঘাত সমীকরণ নিচের রূপে লেখা যায়:

\[
ax^2 + bx + c = 0
\]

এখানে, \( a \), \( b \), এবং \( c \) হল সমীকরণের ধ্রুবক বা কনস্ট্যান্ট পদ এবং \( a \neq 0 \)। \( a = 0 \) হলে এটি আর দ্বিঘাত সমীকরণ থাকে না।


দ্বিঘাত সমীকরণের সমাধান পদ্ধতি

দ্বিঘাত সমীকরণের মূল (roots) নির্ণয় করতে বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। নিম্নে কিছু প্রচলিত পদ্ধতির উল্লেখ করা হলো:

১. বর্গ পূর্ণকরণের মাধ্যমে (Completing the Square)

বর্গ পূর্ণকরণের মাধ্যমে দ্বিঘাত সমীকরণ সমাধান করা যায়। এখানে মূলত \( x \)-এর একটি নির্দিষ্ট মান নির্ণয় করা হয় যাতে দ্বিঘাত অংশটি একটি পূর্ণ বর্গে পরিণত হয়।

২. মূল সূত্র (Quadratic Formula)

দ্বিঘাত সমীকরণের সমাধান নির্ণয়ের সবচেয়ে সহজ এবং নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি হল মূল সূত্র ব্যবহার করা। এটি হলো:

\[
x = \frac{-b \pm \sqrt{b^2 - 4ac}}{2a}
\]

এখানে, \( b^2 - 4ac \) অংশটিকে বর্গমূল বিচ্ছিন্নকরণ বা ডিসক্রিমিন্যান্ট বলা হয়, যা দ্বিঘাত সমীকরণের মূল সংখ্যা এবং প্রকৃতি নির্ধারণে সহায়ক।

  • যদি \( b^2 - 4ac > 0 \) হয়, তবে সমীকরণের দুইটি বাস্তব মূল থাকে।
  • যদি \( b^2 - 4ac = 0 \) হয়, তবে সমীকরণের একটি বাস্তব মূল থাকে।
  • যদি \( b^2 - 4ac < 0 \) হয়, তবে সমীকরণের কোন বাস্তব মূল থাকে না; এই ক্ষেত্রে মূলগুলো কাল্পনিক হয়।

উদাহরণ

ধরা যাক, একটি দ্বিঘাত সমীকরণ \( 2x^2 + 4x - 6 = 0 \)। এখানে,

\[
a = 2, , b = 4, , c = -6
\]

মূল সূত্র প্রয়োগ করে,

\[
x = \frac{-4 \pm \sqrt{(4)^2 - 4 \times 2 \times (-6)}}{2 \times 2}
\]

\[
x = \frac{-4 \pm \sqrt{16 + 48}}{4}
\]

\[
x = \frac{-4 \pm \sqrt{64}}{4}
\]

\[
x = \frac{-4 \pm 8}{4}
\]

এখানে, \( x = 1 \) এবং \( x = -3 \) দুটি মূল পাওয়া যায়।


দ্বিঘাত সমীকরণের মূল-সহগ সম্পর্ক

10
10
Please, contribute by adding content to দ্বিঘাত সমীকরণের মূল-সহগ সম্পর্ক.
Content

দ্বিঘাত সমীকরণ গঠন

8
8

দ্বিঘাত সমীকরণ গঠন (Forming a Quadratic Equation)

দ্বিঘাত সমীকরণ গঠন বলতে এমন একটি সমীকরণ তৈরি করা বোঝায়, যেখানে একটি চলকের ঘাত সর্বাধিক ২ হয় এবং সমীকরণের মূল বা রুটগুলো নির্দিষ্ট থাকে। দ্বিঘাত সমীকরণ গঠনের জন্য সাধারণত নিম্নলিখিত পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।


মূল ধারণা

যদি দ্বিঘাত সমীকরণের মূল দুটি হয় \( \alpha \) এবং \( \beta \), তবে দ্বিঘাত সমীকরণটি নিচের রূপে লেখা যায়:

\[
x^2 - (\alpha + \beta)x + \alpha \beta = 0
\]

এখানে,

  • \( \alpha + \beta \) হল মূলগুলোর সমষ্টি।
  • \( \alpha \beta \) হল মূলগুলোর গুণফল।

এভাবে মূল এবং তাদের গুণফল ব্যবহার করে দ্বিঘাত সমীকরণ তৈরি করা যায়।


উদাহরণ

ধরা যাক, দুটি মূল দেওয়া আছে \( \alpha = 3 \) এবং \( \beta = -2 \)।

এখন, এই দুটি মূল দিয়ে দ্বিঘাত সমীকরণ তৈরি করা যাক।

১. মূলগুলোর সমষ্টি: \( \alpha + \beta = 3 + (-2) = 1 \)

২. মূলগুলোর গুণফল: \( \alpha \beta = 3 \times (-2) = -6 \)

এখন সমীকরণটি হবে:

\[
x^2 - (\alpha + \beta)x + \alpha \beta = 0
\]

\[
x^2 - (1)x - 6 = 0
\]

অর্থাৎ, সমীকরণটি হলো:

\[
x^2 - x - 6 = 0
\]


সমীকরণ গঠনের জন্য অন্যান্য উদাহরণ

উদাহরণ ২

ধরা যাক, দ্বিঘাত সমীকরণের মূল দুটি \( \alpha = 4 \) এবং \( \beta = 5 \)।

১. মূলগুলোর সমষ্টি: \( \alpha + \beta = 4 + 5 = 9 \)

২. মূলগুলোর গুণফল: \( \alpha \beta = 4 \times 5 = 20 \)

তাহলে সমীকরণটি হবে:

\[
x^2 - 9x + 20 = 0
\]


এই পদ্ধতিতে মূলগুলোর মান ব্যবহার করে যে কোন দ্বিঘাত সমীকরণ সহজে গঠন করা যায়।

ত্রিঘাত সমীকরণ গঠন

11
11

ত্রিঘাত সমীকরণ গঠন (Forming a Cubic Equation)

ত্রিঘাত সমীকরণ বলতে এমন একটি সমীকরণকে বোঝায় যার সর্বোচ্চ ঘাত \( 3 \) এবং এটি সাধারণত তিনটি মূল (roots) নিয়ে গঠিত। ত্রিঘাত সমীকরণের সাধারণ রূপ হলো:

\[
ax^3 + bx^2 + cx + d = 0
\]

যেখানে \( a \neq 0 \), এবং \( b \), \( c \), ও \( d \) ধ্রুবক। যদি ত্রিঘাত সমীকরণের মূল বা রুটগুলো \( \alpha \), \( \beta \), এবং \( \gamma \) হয়, তবে সমীকরণটি নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে গঠন করা যায়।


মূল ধারণা

যদি ত্রিঘাত সমীকরণের মূল তিনটি হয় \( \alpha \), \( \beta \), এবং \( \gamma \), তবে ত্রিঘাত সমীকরণটি নিম্নরূপ হবে:

\[
x^3 - (\alpha + \beta + \gamma)x^2 + (\alpha \beta + \beta \gamma + \gamma \alpha)x - \alpha \beta \gamma = 0
\]

এখানে,

  • \( \alpha + \beta + \gamma \) মূলগুলোর সমষ্টি।
  • \( \alpha \beta + \beta \gamma + \gamma \alpha \) হল মূলগুলোর দ্বিগুণ গুণফল।
  • \( \alpha \beta \gamma \) হল মূলগুলোর গুণফল।

উদাহরণ

ধরা যাক, তিনটি মূল দেওয়া আছে \( \alpha = 2 \), \( \beta = -3 \), এবং \( \gamma = 4 \)।

এখন এই মূলগুলো দিয়ে ত্রিঘাত সমীকরণ তৈরি করা যাক।

১. মূলগুলোর সমষ্টি: \( \alpha + \beta + \gamma = 2 + (-3) + 4 = 3 \)

২. দ্বিগুণ গুণফল: \( \alpha \beta + \beta \gamma + \gamma \alpha = (2 \times -3) + (-3 \times 4) + (4 \times 2) = -6 - 12 + 8 = -10 \)

৩. মূলগুলোর গুণফল: \( \alpha \beta \gamma = 2 \times -3 \times 4 = -24 \)

তাহলে ত্রিঘাত সমীকরণটি হবে:

\[
x^3 - (3)x^2 - (10)x + 24 = 0
\]

অর্থাৎ, সমীকরণটি হলো:

\[
x^3 - 3x^2 - 10x + 24 = 0
\]


সমীকরণ গঠনের জন্য অন্যান্য উদাহরণ

উদাহরণ ২

ধরা যাক, ত্রিঘাত সমীকরণের মূল তিনটি \( \alpha = -1 \), \( \beta = 2 \), এবং \( \gamma = 3 \)।

১. মূলগুলোর সমষ্টি: \( \alpha + \beta + \gamma = -1 + 2 + 3 = 4 \)

২. দ্বিগুণ গুণফল: \( \alpha \beta + \beta \gamma + \gamma \alpha = (-1 \times 2) + (2 \times 3) + (3 \times -1) = -2 + 6 - 3 = 1 \)

৩. মূলগুলোর গুণফল: \( \alpha \beta \gamma = -1 \times 2 \times 3 = -6 \)

তাহলে ত্রিঘাত সমীকরণটি হবে:

\[
x^3 - 4x^2 + x + 6 = 0
\]


এই পদ্ধতিতে যে কোনো তিনটি মূল ব্যবহার করে ত্রিঘাত সমীকরণ সহজেই গঠন করা যায়।

Promotion