দ্বিপদী বিস্তৃতি (Binomial Expansions) হল গাণিতিক এক পদ্ধতি যার মাধ্যমে (a+b)n আকারের দ্বিপদী রাশিকে প্রসারিত করে ধারা আকারে প্রকাশ করা হয়। এই বিস্তৃতিতে মূলত দ্বিপদী উপপাদ্য (Binomial Theorem) ব্যবহৃত হয়, যা যেকোনো ধরণের ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা শক্তির জন্য কার্যকর।
দ্বিপদী উপপাদ্য অনুসারে, (a+b)n এর বিস্তৃতি নিম্নরূপ হয়:
(a+b)n=n∑k=0(nk)an−kbk
এখানে,
(nk)=n!k!(n−k)!
যদি (a+b)3 গণনা করতে চাই, তাহলে উপপাদ্য অনুসারে:
(a+b)3=(30)a3b0+(31)a2b1+(32)a1b2+(33)a0b3
যার মান হবে:
=a3+3a2b+3ab2+b3
দ্বিপদী সহগের কিছু গুণাগুণ রয়েছে যা দ্বিপদী বিস্তৃতিতে ব্যবহার করা হয়। যেমন:
দ্বিপদী বিস্তৃতি বিভিন্ন গাণিতিক এবং পরিসংখ্যানিক সমস্যায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যেমন সম্ভাবনা নির্ধারণ, ধারার গঠন, এবং অন্যান্য গাণিতিক কার্যকলাপে।
20%
25%
15%
21%
24C1226
24C12212
12C626
1
দ্বিপদী বিস্তৃতিতে (a+b)n এর বিস্তৃতির সাধারণ পদ, মধ্য পদ ও সমদূরবর্তী পদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই পদগুলি বিভিন্ন গাণিতিক সমস্যায় ব্যবহৃত হয় এবং সেগুলির সঠিক বিশ্লেষণ করতে সহায়ক।
দ্বিপদী বিস্তৃতির সাধারণ পদকে Tk হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এটি (a+b)n বিস্তৃতির k-তম পদ, যা নিম্নলিখিত সূত্রের মাধ্যমে বের করা যায়:
Tk=(nk)an−kbk
এখানে,
দ্বিপদী বিস্তৃতির মধ্যে যদি n একটি বিজোড় সংখ্যা হয়, তাহলে সেখানে একটি একক মধ্য পদ থাকবে। মধ্য পদটির জন্য k=n2 হবে। অন্যদিকে, যদি n একটি যুগল সংখ্যা হয়, তাহলে সেখানে দুটি মধ্য পদ থাকবে, যেগুলোর জন্য k=n2 এবং k=n2−1 হবে।
যুগল সংখ্যার উদাহরণ:
ধরা যাক, n=4, তাহলে (a+b)4 এর বিস্তৃতির মধ্য পদ দুটি হবে:
T2=(42)a2b2
এবং
T3=(43)ab3
বিজোড় সংখ্যার উদাহরণ:
ধরা যাক, n=5, তাহলে (a+b)5 এর মধ্য পদ হবে:
T3=(52)a3b2
এখানে T3 হল একক মধ্য পদ।
সমদূরবর্তী পদগুলি হল সেই সব পদ যা বাইনোমিয়াল বিস্তৃতির শুরু এবং শেষের কাছাকাছি অবস্থিত। এই পদগুলি সাধারণত বিপরীত দিকে সমান দূরত্বে থাকে। যদি n একটি বিজোড় সংখ্যা হয়, তাহলে মধ্য পদটি একক হবে এবং তার আশেপাশের দুইটি পদ সমদূরবর্তী পদ হবে। যদি n একটি যুগল সংখ্যা হয়, তাহলে দুটি মধ্য পদ থাকবে, এবং তাদের আশেপাশে সমদূরবর্তী পদগুলি থাকবে।
উদাহরণস্বরূপ, (a+b)4 এর সমদূরবর্তী পদগুলি হল প্রথম এবং চতুর্থ পদ, অর্থাৎ T1 এবং T4, এবং (a+b)5 এর জন্য সমদূরবর্তী পদগুলি হল প্রথম এবং পঞ্চম, অর্থাৎ T1 এবং T5।
অসীম ধারায় দ্বিপদী বিস্তৃতি (Binomial Expansion in Infinite Series) হল একটি বিশেষ ধরনের দ্বিপদী বিস্তৃতি যেখানে সুত্রটি অসীম পর্যন্ত প্রসারিত হয়। সাধারণত, এই ধরনের বিস্তৃতি (1+x)r আকারে হয়, যেখানে r কোনো সংখ্যা হতে পারে (এটি ধনাত্মক বা ঋণাত্মক হতে পারে) এবং x এমন একটি অমূলক সংখ্যা হতে পারে যার মান -1 থেকে 1 এর মধ্যে থাকে। এই বিস্তৃতি অসীম পর্যন্ত গমন করে, এবং এটি প্রায়ই বাইনোমিয়াল থিওরেম এর সাহায্যে গাণিতিক বিশ্লেষণে ব্যবহৃত হয়।
যদি |x|<1 এবং r কোনো সংখ্যা (ধনাত্মক, ঋণাত্মক, অথবা অমূলক) হয়, তবে (1+x)r-এর দ্বিপদী বিস্তৃতি নিম্নরূপ:
(1+x)r=1+rx+r(r−1)2!x2+r(r−1)(r−2)3!x3+⋯
এই বিস্তৃতিতে কোনও নির্দিষ্ট সীমা নেই এবং এটি একটি অসীম ধারা (infinite series) গঠন করে।
এই বিস্তৃতির প্রতিটি পদ:
এখানে, r একটি বাস্তব সংখ্যা, এবং x একটি অমূলক সংখ্যা, যার মান -1 থেকে 1 এর মধ্যে থাকতে হবে, যাতে এই অসীম ধারা কনভার্জ (converge) করতে পারে।
ধরা যাক r=12 এবং x=14, তাহলে (1+14)12-এর দ্বিপদী বিস্তৃতি হবে:
(1+14)12=1+12×14+12(12−1)2!×(14)2+⋯
এটি প্রসারিত হবে এবং অসীম ধারার মাধ্যমে এর সঠিক মান পাওয়া যাবে।
অসীম ধারায় দ্বিপদী বিস্তৃতি প্রায়ই বাস্তব জীবনে ব্যবহৃত হয়, যেমন:
এই অসীম ধারা কেবল তখনই কনভার্জ করবে (অর্থাৎ, এর মান একটি সীমানায় পৌঁছাবে) যখন |x|<1। এর মানে হল যে x এর মান অবশ্যই -1 থেকে 1 এর মধ্যে থাকতে হবে, অন্যথায় এটি ডাইভার্জ (diverge) করবে এবং তার মান সঠিকভাবে নির্ধারণ করা যাবে না।
অসীম ধারায় দ্বিপদী বিস্তৃতি একটি শক্তিশালী গাণিতিক পদ্ধতি যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। এর সঠিক প্রয়োগ গাণিতিক বিশ্লেষণ, পদার্থবিদ্যা, অর্থনীতি এবং কম্পিউটার সায়েন্সের মতো বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
Read more