পরিচয়
ইসলামে নারীকে যথাযোগ্য মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। পৃথিবীর আদি পুরুষ হযরত আদম (আ.) এবং আদি নারী বিবি হাওয়া (আ.)। আর এ দুইজন থেকে পৃথিবীর সকল নর-নারীর সৃষ্টি। ইসলামে নর ও নারী উভয়ের সমমর্যাদা স্বীকৃত। মাতা, কন্যা, ভগ্নী, স্ত্রী প্রভৃতি হিসেবে সমাজে নারীদের যে বিশেষ অধিকার ও স্থান রয়েছে তা যথাযথভাবে প্রতিষ্ঠিত করলে নারীর মর্যাদা সমুন্নত হবে।
ইসলামে নারীর মর্যাদা
ইসলাম একমাত্র ধর্ম যাতে নারী-পুরুষের মধ্যে কোনো বৈষম্য না করে নারীকে পুরুষের সমমর্যাদা দেওয়া হয়েছে । প্রাচীন আরব সমাজে নারীর অবস্থা ছিল করুণ। সেখানে কন্যাসন্তান জন্ম নিলে পিতা-মাতা অসন্তুষ্ট হতো । কোনো কোনো সম্প্রদায় কন্যাসন্তানকে জীবিত কবর দিত।
কুরআন মজিদে এ সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে- “তাদের কাউকেও যখন কন্যা সন্তানের সুসংবাদ দেওয়া হয় তখন তার মুখমণ্ডল কালো হয়ে যায় এবং সে অসহনীয় মনস্তাপে ক্লিষ্ট হয় । তাকে যে সংবাদ দেওয়া হয়, তার গ্লানি হেতু সে নিজ সম্প্রদায় থেকে আত্মগোপন করে। সে চিন্তা করে হীনতা সত্ত্বেও সে তাকে রেখে দেবে, না মাটিতে পুঁতে দেবে । সাবধান! তারা যা সিদ্ধান্ত করে তা কত নিকৃষ্ট ।” (সূরা আন-নাহল, আয়াত ৫৮-৫৯)
মহানবি (স.)-এর আবির্ভাবের পর নারী ফিরে পায় স্বীয় মর্যাদা । ইসলামে বলা হয়েছে-
অর্থ : “মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত।” (নাসায়ি)
নবি করিম (স.)-এর একটি হাদিসে পিতা অপেক্ষা মায়ের অধিকার বেশি বলে উল্লেখ আছে। আল্লাহর সৃষ্টি হিসেবে নারী পুরুষের সমান মর্যাদার অধিকারী। আল্লাহ তায়ালা বলেন-
অর্থ : “নিশ্চয়ই আমি নষ্ট করে দেই না তোমাদের মধ্য থেকে কোনো আমলকারীর আমলকে, সে পুরুষই হোক আর নারীই হোক, তোমরা একে অপরের অংশ ।” (সূরা আলে ইমরান, ১৯৫)
ইসলামে স্বামীর সংসারে স্ত্রীর বিশেষ মর্যাদা স্বীকৃত । আল্লাহ তায়ালা বলেন-
অর্থ : “তারা (স্ত্রীরা) তোমাদের ভূষণ আর তোমরা (স্বামীরা) তাদের ভূষণ ।” (সূরা আল-বাকারা, আয়াত ১৮৭)
মহান আল্লাহ আরও ঘোষণা করেন,
অর্থ : “নারীদের তেমনি ন্যায়সংগত অধিকার আছে যেমন আছে তাদের উপর পুরুষদের।” (সূরা আল- বাকারা, আয়াত ২২৮)
নারীদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন থাকার ব্যাপারে মহানবি (স.) বিদায় হজের ভাষণে বলেন,
অর্থ : “তোমরা নারীদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর । কেননা তোমরা আল্লাহর সাথে অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়ে তাদের গ্রহণ করেছ।” (মুসলিম)
সম্পত্তি লাভের বেলায়ও ইসলাম নারীকে পিতা ও স্বামীর উভয়ের সম্পত্তির অধিকারিণী করেছে । প্রয়োজনীয় বিদ্যার্জন এবং অর্থ উপার্জনে ইসলাম নারীদের অনুমতি দান করেছে।
আমাদের দেশে অধিকাংশ পরিবারে দেখা যায় যে, পিতা-মাতার ইনতিকালের পর উত্তরাধিকারসূত্রে যা প্রাপ্য তা নারীদের বঞ্চিত করার চেষ্টা করা হয়। এ ধরনের কাজ কুরআন সুন্নাহর আলোকে হারাম। যারা এরূপ করবে পরকালে তাদের কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে।
আমরা এ পাঠে জানলাম
১। নারীর মর্যাদা।
২। নারীর অধিকার আদায়ের ব্যাপারে মহানবি (স.)-এর তাগিদ।
আমরা নারীসমাজকে যথাযথ মর্যাদা দেব। তাদের অধিকার আদায়ের ব্যাপারে সচেতন থাকব।
কাজ : শিক্ষার্থীরা কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে ইসলাম কীভাবে নারীদের মর্যাদা দিয়েছে তার একটি তালিকা তৈরি করবে। |
আরও দেখুন...