বাক্যে বিশেষ্যপদের পরিবর্তে যে পদ ব্যবহৃত হয়, তাকে সর্বনাম পদ বলে। যেমন :
বিশেষ্য : বকুল ভালো ছেলে।
সর্বনাম : সে প্রতিদিন স্কুলে যায়।
তার স্বাস্থ্য ভালো।
তাকে সবাই ভালোবাসে।
এখানে বিশেষ্য ‘বকুল’-এর পরিবর্তে ‘সে’, ‘তার’, ‘তাকে’ প্রভৃতি পদ ব্যবহার করায় বাক্যগুলো শ্রুতিমধুর হয়েছে।
বাংলা ভাষায় সর্বনাম পদ নানারকম হয়। যেমন :
১.ব্যক্তিবাচক সর্বনাম : আমি, আমরা, তুমি, তোমরা, সে, তারা, তিনি, এরা, ওরা ইত্যাদি।
২. নির্দেশক সর্বনাম : এ, এটি, সেটি, সেগুলো ইত্যাদি।
৩. সাকল্যবাচক সর্বনাম : সকল, সব, সমুদয় ইত্যাদি।
৪. সাপেক্ষ সর্বনাম : যে-সে, যা-তা, যিনি-তিনি ইত্যাদি।
৫. প্রশ্নসূচক সর্বনাম : কী, কার, কাদের, কিসে ইত্যাদি।
৬. অনির্দেশক সর্বনাম : কেউ, কোন, কেহ, কিছু ইত্যাদি।
৭. আত্মবাচক সর্বনাম: স্বয়ং, নিজ, খোদ, আপনি ইত্যাদি।
৮. অন্যাদিবাচক সর্বনাম : অন্য, অপর, পর ইত্যাদি।
যে সর্বনাম পদ সাধারণত বিশেষ্যকে নির্দিষ্ট করে দেয়, তাকে নির্দেশক সর্বনাম পদ বলে। যেমন :
এ, এই, এরা, ইহারা, ইহা, এঁরা, ইহাদের, এঁদের, ও, ওরা, ওদের, ওঁদের, ঐ, উনি, উহা, উহাদের ইত্যাদি।
বিশেষ্যপদের সাথে যেমন বিভক্তি যোগ হয়ে শব্দ গঠন করে, তেমনি বিভক্তি, প্রত্যয় ও কর্মপ্রবচনীয় যুক্ত হয়ে সর্বনামের রূপ হয়।
নিচে নির্দেশক সর্বনাম 'এ' এবং 'ও'-এর চলিত রূপ দেখানো হলো।
এ-এর রূপ
১. প্রাণিবাচক রূপ : একবচন বহুবচন
এ, এর, ইনি, এঁর এরা, এদের, এঁরা, এঁদের
বাক্যে প্রয়োগ : এ আমার ভাই; এর নাম উজ্জ্বল।
ইনি আমার চাচা; এঁরা করাচি থাকেন। এঁদের লোহালক্কড়ের বড় ব্যবসা আছে।
২. অপ্রাণিবাচক রূপ : একবচন বহুবচন
এটা, এটি, এখানা এসব, এগুলো, এসমস্ত
বাক্যে প্রয়োগ : এটা এখান থেকে সরাও ৷
এটি আপনার বই।
এগুলো টেবিলে রাখ।
এসবের জন্য তুমি দায়ী।
এসমস্ত কথা আমাকে কেন শোনাচ্ছেন?
১. প্রাণিবাচক রূপ : একবচন বহুবচন
ও, ওর, ওঁ, উনি, ওদের, ওকে ওরা, ওদের, ওঁরা, ওঁদের, ওদেরকে
বাক্যে প্রয়োগ : ও যেন ফিরে আসে।
উনি সম্পর্কে আমার মামা হন। ওঁদের বাড়ি ময়মনসিংহ।
ওকে এখন ডাকার দরকার নেই।
ওদের যেতে বল।
২. অপ্রাণিবাচক রূপ : একবচন বহুবচন
ওই, ওটি, ওখানা ওসব, ওগুলো, ওসমস্ত
বাক্যে প্রয়োগ : তবে ওই কথাই রইল।
ওটি কিসের বই?
ওখানা আবার কবে কিনলে?
ওসব কথা ছাড়ো তো।
তোমার ওগুলো কাল দেখে দেব।
ওসমস্ত গুলবাজি এবার বন্ধ কর।