পৃথিবীর প্রাচীন ভাষাগুলোর মধ্যে একটি হলো ছবির ভাষা। এই ছবির ভাষার পথ ধরে মানুষ নিজেদের ভাষা লিখে রাখার জন্য আবিষ্কার করলো বর্ণমালা। আবার কারো কারো ভাষা থেকে গেল মুখে মুখে। ভাষা হয়ে উঠল সভ্যতা আর সংস্কৃতির বাহন। আমাদের প্রাণের ভাষা বাংলা, আমাদের সংস্কৃতির অন্যতম বাহন।
নিজেদের ভাষা আর সংস্কৃতিকে রক্ষা করার জন্য প্রতিনিয়ত পৃথিবী জুড়ে সংগ্রাম করছে অনেক জাতিগোষ্ঠীর মানুষ। পৃথিবীর ইতিহাসে আমরা তেমন একটি জাতি যারা নিজেদের মাতৃভাষা রক্ষার জন্য প্রাণ দিয়েছি। আমাদের ইতিহাসে ভাষা রক্ষার আন্দোলনের সে মাসটি ছিল পলাশের মাস, সে দিনটি ছিল বসন্তের দিন। ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে ঐ দিনটি ছিল ২১শে ফেব্রুয়ারি আর বঙ্গাব্দে ৮ই ফাল্গুন ১৩৫৮। শীতের শেষে বসন্তের আগমনে সেদিনও গাছে গাছে ছিল সবুজ নতুন পাতা। প্রকৃতি সেজেছিল পলাশ, শিমুল, কৃষ্ণচূড়ার রঙে। সেদিনের সে আগুনকরা দিনে পাকিস্তানি শাসকের সকল বাধা অতিক্রম করে একদল তরুণ ঢাকার রাজপথে নেমেছিল মায়ের ভাষা বাংলাকে রক্ষা করার জন্য। তখন পাকিস্তানি ঘাতকের বন্দুকের গুলিতে ঝরে গেল সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ আরো অনেক তাজা প্রাণ। তাঁদের প্রাণের বিনিময়ে আমরা পেলাম আমাদের বাংলা ভাষা আর তাঁরা হলেন আমাদের ভাষা শহিদ ।
ভাষা শহিদদের প্রতি সম্মান আর ভালোবাসা প্রকাশের জন্য তৈরি হয় শহিদমিনার। দিবসটি হয় শহিদ দিবস'। আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী রচনা করলেন কালজয়ী গান-
এই গানে প্রথমে সুর দিলেন আবদুল লতিফ এবং পরে সুর দিলেন আলতাফ মাহমুদ। ভাষার জন্য এই মহান আত্মত্যাগকে সম্মান জানাতে জাতিসংঘ ২১শে ফেব্রুয়ারি দিনটিকে আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস' হিসেবে ঘোষণা করে। জাতি হিসেবে এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গৌরবের আর সারা বিশ্বের সকল ভাষার মানুষের জন্য সম্মানের।
এই অধ্যায়ে আমরা যেভাবে অভিজ্ঞতা পেতে পারি-
এরপর আমরা পাতা ফুল সংগ্রহ করে দলবদ্ধভাবে একটি ফুলের তোড়া বানানোর পরিকল্পনা তৈরি করব। শহিদ দিবস উদযাপনের জন্য প্রভাতফেরির গান/নাট্যদৃশ্য/পোশাক-পরিচ্ছদসহ সকল পরিকল্পনা বন্ধুখাতার কাছে জমা রাখব। শহিদ দিবসে বানানো ফুলের তোড়া নিয়ে কিভাবে প্রভাতফেরিতে অংশগ্রহণ করব এবং ভাষা শহিদদের সম্মান জানাব তার পরিকল্পনা করব।
এই অধ্যায়ে আমরা যা যা করব -
এরপর আমরা সকলে মিলে ২১শে ফেব্রুয়ারির প্রভাতফেরির গান 'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি'- গেয়ে খালি পায়ে বিদ্যালয় প্রাশনের শহিদ মিনারে নিজেদের তৈরি করা ফুলের তোড়া দিয়ে ভাষা শহিদদের প্রতি সম্মান জানাব।
নিজেদের করা নাট্যদৃশ্য/ছড়া/কবিতার মধ্যদিয়ে আমরা ভাষা আন্দোলনের সকল ভাষা শহিদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করব। আমাদের দেশের সকল জাতিসত্তার মানুষের ভাষাসহ পৃথিবীর সকল মায়ের ভাষার প্রতি জানাব অনন্ত ভালোবাসা।
আরও দেখুন...