আমরা ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহৃত অনেক যন্ত্রপাতি সম্পর্কে জেনেছি। এবার আরও কিছু যন্ত্রপাতি সম্পর্কে জানব।
হাব (Hub)
সাধারণত তারযুক্ত নেটওয়ার্কে থাকা অনেকগুলো আইসিটি যন্ত্র তথা কম্পিউটার, প্রিন্টার ইত্যাদিকে একসাথে যুক্ত করতে হাব ব্যবহার করা হয়। হাৰ এক যন্ত্রকে অন্য যন্ত্রের সাথে যোগাযোগ করার সুযোগ দেয়। বলা যায়, একই নেটওয়ার্কে হাব দ্বারা সংযুক্ত সকল কম্পিউটার একটি আরেকটির সাথে যোগাযোগ করতে পারে। হাব বললেই আমরা ইন্টারনেট হাব বা নেটওয়ার্ক হারকেই বুঝে থাকি। তবে ইদানীং আমরা অনেক USB হাবও দেখে থাকি।
হাবের মধ্য দিয়ে যখন তথ্য বা উপাত্ত এক যন্ত্র থেকে অন্য যন্ত্রে যায়, হাব তখন সেগুলো পড়তে পারে না। এক কম্পিউটার থেকে অন্য একটি কম্পিউটারে তথ্য বা উপাত্ত পাঠালে হাব তার সাথে সংযুক্ত সকল কম্পিউটারে ঐ তথ্য বা উপাত্ত পাঠিয়ে দেয়। এমনকি যে কম্পিউটার থেকে তথ্য পাঠানো হলো, তাকেও হাব আবার ঐ তথ্য পাঠিয়ে দেয়। অর্থাৎ হাব নির্দিষ্ট ঠিকানা অনুযায়ী তথ্য পাঠাতে পারে না। বর্তমানে কম গতি ও বেশি সুবিধা পাওয়া যায় না বলে হাবের ব্যবহার অনেক কমে গেছে।
হাবতো বোঝা গেল। ছবিও দেখা গেল। এখন আমরা সুইচ (Switch) সম্পর্কে জানব।
সুইচ তার সাথে সংযুক্ত প্রত্যেকটি আইসিটি যন্ত্রের একটি করে ঠিকানা বরাদ্দ করে এবং ঐ ঠিকানা অনুযায়ী তথ্যের আদান-প্রদান করে। অর্থাৎ কোনো একটি ঠিকানা থেকে অন্য কোনো ঠিকানার উপাত্ত বা ডেটা পাঠাতে চাইলে সুইচ এক ঠিকানার জন্য অন্য ঠিকানায় পৌঁছে দেয়। এ বরাদ্দকৃত ঠিকানাকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ভাষায় MAC Media Access Control address নামে ডাকা হয়। উপরের শ্রেণিতে এ বিষয়ে আমরা আরো ব্যাপকভাবে জানব। আলাদা আলাদা ঠিকানা ব্যবহারের কারণে সুইচ হারে চেরে অনেক দ্রুত গতিতে কাজ করতে পারে। এজন্য নেটওয়ার্ক তৈরিতে সুইচই এখন সবার পছন্দ।
রাউটার (Router)
Router শব্দটি এসেছে Route শব্দ থেকে। রাউটার একটি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র, যা হার্ডওয়ার ও সফটওয়্যারের সমন্বরে তৈরি। এটি নেটওয়ার্ক তৈরির কাজে ব্যবহার করা হয়। ইন্টারনেট অসংখ্য নেটওয়ার্কের সমন্বয়ে তৈরি। একই প্রোটোকলের (উপরের শ্রেণিতে আলোচনা করা হবে) অধীনে কার্যরত দুটি নেটওয়ার্কে সংযুক্ত করার জন্য রাউটার ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে ইন্টারনেটে অসংখ্য রাউটার রয়েছে।
রাউটার এর প্রধান কাজ ডেটা বা উপাত্তকে পথ নির্দেশনা দেওয়া। ধরো অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থিত কোনো বন্ধুকে ই-মেইলের মাধ্যমে কেউ একটি ছবি পাঠাতে চায়। ছবিটি কয়েকটি ডেটা প্যাকেটে বিভক্ত হয়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ফর কম্পিউটারে পৌঁছাবে। প্রতিটি ডেটা প্যাকেটে গন্তব্যস্থলের ঠিকানা সংযুক্ত থাকে। ইন্টারনেট যেহেতু জালের মতো গোটা পৃথিবী জুড়ে বিস্তৃত, তাই বিভিন্ন ডেটা প্যাকেট বিভিন্ন পথে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে। একটি ডেটা প্যাকেট কোনো একটি রাউটার-এ পৌছালে পরবর্তী কোন পথে অগ্রসর হলে ডেটা সহজে এবং দ্রুত পত্তব্যে পৌছাবে তার পথনির্দেশ দেয় ঐ রাউটার।
একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি তোমাদের কাছে আরও স্পষ্ট হবে। মনে কর তুমি বাংলাদেশ থেকে বিমানে করে এমন একটি দেশে যেতে চাও, যেখানে বাংলাদেশ থেকে সরাসরি বিমানে যাওয়া যায় না। খन কी হবে? বিমান কোম্পানি প্রথমে তোমাকে সুবিধাজনক একটি গন্তব্যে নিয়ে যাবে, যেখান থেকে অন্য আরেকটি বিমান তোমার কাঙ্ক্ষিত দেশটিতে তোমাকে পৌঁছে দেবে। কি! বোঝা গেল রাউটারের কাজের ধরন?
দলগত কাজ : হাব, সুইচ ও রাউটারের পার্থক্য নির্ধারণ করে উপস্থাপন কর।
নতুন শিখলাম হাব, USB হাব, Node, সুইচ, MAC address, Router, প্রোটোকল, ডাটা প্যাকেট।
Read more