বাতাসের চাপের সাথে আবহাওয়ার খুব ঘনিষ্ঠ একটা সম্পর্ক আছে। তোমরা নিশ্চয়ই আবহাওয়ার খবরে অনেকবার সমুদ্রে নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়ার কথা শুনেছ, যার অর্থ সেখানে বাতাসের চাপ কমে পেছে। তখন চাপ সমান করার জন্য আশপাশের উচ্চ চাপ এলাকা থেকে বাতাস সেই নিম্নচাপের দিকে আসতে থাকে এবং মাঝে মাঝে একটা ঘূর্ণির সৃষ্টি হয়, সেই ঘূর্ণিটি বিশেষ অবস্থায় ঘুর্ণিঝড়ের সৃষ্টি করে। আমাদের দেশে ঘূর্ণিঝড়ের ভয়াবহতার খবর তোমরা নিশ্চয়ই জানো।
তোমরা যখন পরের অধ্যায়ে তাপ এবং ভাগযাত্রা সম্পর্কে পড়বে তখন তোমরা জানতে পারবে যে বাতাসের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে সেটি প্রসারিত হয় বলে তার ঘনত্ব কমে যায় এবং চাপ কমে যায়। বাতাসের চাপ আরো কার্যকরভাবে কমে, যদি তার মাঝে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে যায়। জলীয় বাষ্প হচ্ছে পানি, পানির অণুতে একটি অক্সিজেন এবং দুটি হাইড্রোজেন থাকে এবং পানির অণুর আণবিক ভর হচ্ছে (16 + 1 + 1 =) 18। বাতাসের মূল উপাদান হচ্ছে নাইট্রোজেন (পারমাণবিক ভর 14) দুটো পরমাণু দিয়ে তৈরি হয় তাই তাদের আণবিক ভর (14 + 14 =) 28 এবং অক্সিজেন (পারমাণবিক ভর 16), এটিও দুটি পরমাণু দিয়ে তৈরি তাই আণবিক ভর (16 + 16 =) 32 যা পানির আণবিক ভর থেকে অনেক বেশি। তাই যখন বাতাসে জলীয় বাষ্প থাকে তখন বেশি আণবিক ভরের নাইট্রোজেন এবং অক্সিজেনের বদলে কম আণবিক ভরের পানির অণু স্থান করে নেয় কাজেই বাতাসের ঘনত্ব কমে যায়। বাতাসের ঘনত্ব কম হলে বাতাসের চাপও কমে যায়। কাজেই ব্যারোমিটারে বাতাসের চাপ দেখেই স্থানীয় আবহাওয়া সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করা সম্ভব। ব্যারোমিটারে উচ্চ চাপ দেখালে বোঝা যায় বাতাস শুকনো এবং আবহাওয়া ভালো। চাপ কমতে থাকলে বোঝা যায় জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বাড়ছে। চাপ বেশি কম দেখালে বুঝতে হবে আশপাশের এলাকা থেকে বাতাস ছুটে এসে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হতে যাচ্ছে।
আরও দেখুন...