বাস্তবতার ভিন্নতা

নবম শ্রেণি (মাধ্যমিক ২০২৪) - ডিজিটাল প্রযুক্তি - Digital Technology - ডিজিটাল আগামীর প্রস্তুতি | | NCTB BOOK
9
9

আজকে আমরা নতুন আরেকটি বিষয় সম্পর্কে বোঝার চেষ্টা করব এবং তা হলো বাস্তবতা ও মিডিয়ার (গণযোগাযোগ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম) চোখে বাস্তবতা। গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন তথ্য এবং বিনোদনের উপাদান নিয়ে থাকি। এই তথ্য এবং বিনোদন আমাদের মনে নির্দিষ্ট বিষয়ের প্রতি একটি মনোভাব বা Perception তৈরি করে। আর এই মনোভাবটি বাস্তবতার সাথে বা প্রকৃত সত্যের সাথে কিছুটা আলাদাও হতে পারে। এই বিষয়টি নিয়েও আমরা আমাদের স্কুল বুলেটিনে একটি প্রতিবেদন বা প্রবন্ধ লিখতে পারি।

চিত্র ১.২: ভয়েস কমান্ড ব্যবহার করে খুব সহজে আমরা বাড়ির কাজগুলো সমন্বয় করে নিতে পারি।

আজকের মূল বিষয়ে যাওয়ার আগে গত সেশনের বিষয়টি নিয়ে আরেকবার আলোচনা করা যাক। আমরা বাড়ি থেকে একটি তালিকা তৈরি করে এনেছি। আমরা একটি নতুন পদ্ধতিতে বাড়ির কাজটি সমন্বয় করব। তা হলো 'ভয়েস কমান্ড' অর্থাৎ আমরা মুখে আমাদের তালিকা থেকে আনা একটি একটি পয়েন্ট বলব আর কম্পিউটারে তা লেখা হয়ে যাবে। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো এই কাজটি কীভাবে করতে হয় জানি। যারা জানি তারা অন্যদের সাহায্য করব। আর না জানলেও অসুবিধা নেই। নিচের নির্দেশনাবলি অনুসরণ করে আমরা সহজে কাজটি করতে পারব।

এই কাজটি করতে ল্যাপটপ ও ইন্টারনেট সংযোগের প্রয়োজন হবে।

চিত্র ১.৩: শিক্ষকের ইমেইল ঠিকানা ব্যবহার করে একটি Docs ফাইল খুলে বাংলা ফন্ট সিলেক্ট করবো

১। গুগল ড্রাইভ থেকে একটি 'Docs' ফাইল খুলব। 

২। ফাইলের Fonts-এ ক্লিক করে More Fonts অপশন সিলেক্ট করব। 

৩। নতুন একটি পপ আপ ইউন্ডো আসবে। এখানে 'Scripts: all scripts'-এ ক্লিক করে 'Bengali' সিলেক্ট করব। (চিত্র - ১.৩)

৪। 'OK' ক্লিক করলে আরেকটি নতুন পপ আপ উইন্ডোতে যতগুলো বাংলা ফন্ট আছে সবগুলো আসবে, এই সবগুলোকে ক্লিক করে সিলেক্ট করে নিব। (চিত্র-১.৪) 

৫। এবার আবার আমাদের Docs-এর Font-এর অপশনে গিয়ে যে বাংলা ফন্ট গুলো আমরা সিলেক্ট করে আসলাম সেগুলো দেখতে পাব। তার যে কোনো একটি ফন্ট আমরা সিলেক্ট করে নিব।

চিত্র ১.৫: বাংলা ফন্ট আমাদের ডকুমেন্ট ফাইলে চলে আসবে, আমরা যে কোন একটি সিলেক্ট করবো

৬। ফন্ট সিলেক্ট হয়ে গেলে Ctrl + Shift + S

এই তিনটি বাটন একসাথে ক্লিক করলে ভয়েস কমান্ড চালু হয়ে যাবে এবং স্ক্রিনে একটি মাইক্রোফোনের ছবি আসবে। মাইক্রোফোনের উপর আবার আমাদের ফন্ট সিলেক্ট করার অপশান থাকবে। আমরা 'বাংলা' সিলেক্ট করে নিব।

৭। এরপর মাইক্রোফোনটিতে ক্লিক করলে আমাদের ভয়েস রেকর্ড হবে এবং সাথে সাথে তা আমার তৈরি করা Docs ফাইলে লেখা হয়ে যাবে।

এই নির্দেশনাটি বুঝতে যদি কঠিন হয় তাহলে 'Voice Type Bangla Writing' এই কয়টি 'key Word' দিয়ে ইন্টারনেটে সার্চ দিলে আমরা এই পুরো প্রক্রিয়া বর্ণনা করে কয়েকটি ভিডিও আছে, যা দেখেও আমরা সহজে কাজটি করতে পারব।

আমরা একজন একজন করে ল্যাপটপের সামনে এসে আমাদের বাড়িতে তৈরি তালিকা থেকে একটি একটি করে পয়েন্ট বলব আর একটি ডকুমেন্ট তৈরি হবে। এই ডকুমেন্টটি আমাদের স্কুল বুলেটিন তৈরির সময় কাজে লাগবে।

এই প্রক্রিয়াটি আমাদের অন্যান্য বিষয় যেমন-বাংলা, বিজ্ঞান, ধর্ম ইত্যাদি বিষয়ের কাজ করার সময় অনুসরণ করতে পারব, এতে আমাদের কাজ সহজ হয়ে যাবে।

বিদ্যালয়ে কম্পিউটার না থাকলে আমরা বোর্ডেও তালিকা তৈরির কাজটি করতে পারি।

এবার আমরা আজকের মূল আলোচনায় আসি। আমরা জানি টেলিভিশন, সংবাদপত্র, রেডিও এগুলোকে 'গণযোগাযোগ মাধ্যম' বলে, আর ইউটিউব, ফেইসবুক, ইন্সটাগ্রাম এগুলোকে 'সামাজিক যোগাযোগ' মাধ্যম বলে। আর ইন্টারনেট ব্যবহার করে যে কোনো যোগাযোগের মাধ্যম হচ্ছে 'নিউ মিডিয়া'।

দর্শক বা টার্গেট গ্রুপ (লক্ষ্য দল)-এর কাছে খুব দ্রুত পৌঁছানোর জন্য অধিকাংশ গণযোগাযোগ মাধ্যমের একটি 'নিউ মিডিয়া' সংস্করণ বা ভার্সন থাকে। আমরা কি এই ধরনের কিছু উদাহরণ দিতে পারি?

গণযোগাযোগ মাধ্যম

নিউ মিডিয়া সংস্করণ

১। বাংলাদেশ টেলিভিশন

বাংলাদেশ টেলিভিশনের ওয়েবসাইট থেকে 'লাইভ'

২। বিবিসি (টেলিভিশন)

বিবিসি ইউটিউব চ্যানেল, ফেইসবুক পেইজ, টুইটার একাউন্ট

৩।

 

81

 

ঘটনা ১ : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কিছু ব্যক্তিগত একাউন্ট থেকে বেশ কিছু ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে রাজশাহীতে মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে এবং কিছু জায়গা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এমন অনেক ভিডিও দেখার পর আমাদের মনে হবে পুরো রাজশাহী জেলা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এখন কোনো সংবাদ মাধ্যমে যদি বৃষ্টির ওই তথ্যটি প্রচার করে তাহলে সেখানে রাজশাহীর কোন উপজেলার কোনও কোনও গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে গেছে নির্দিষ্ট করে বলবে। এতে করে ঐ তথ্য সম্পর্কে আমাদের মনোভাব স্পষ্ট বা যথার্থ হবে। আর শুধু বিচ্ছিন্ন কিছু ভিডিও দেখলে আমাদের মধ্যে ভুল ধারণাটিই থেকে যাবে।

অর্থাৎ আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে বারবার যে তথ্যটি দেখি সেটিকেই প্রকৃত সত্য বলে মনে করি। অনেক সময় এটি নাও হতে পারে।

এছাড়া বর্তমানে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার কারনে, আমরা ইন্টারনেটে একবার যেটি দেখি বা অনুসন্ধান করি আমার সামনে বারবার ওই একই বিষয়ে একই ধরনের কনটেন্ট বা তথ্য আসতে থাকে। এতে করে আমার মনে হতে পারে, এটিই আসলে ঘটছে বা এটিই প্রকৃত সত্য।

আজ থেকে আগামী দুই সপ্তাহ আমরা একটি নোটবই বা জার্নাল লিখব। আমরা প্রতিদিন কমপক্ষে দুইটি করে সংবাদ পড়ব, দেখব অথবা শুনব। নোটবই বা জার্নালে এটির রেকর্ড রাখব। নোটবই এ রেকর্ড যেভাবে রাখতে পারি-

তারিখ: 

সংবাদ মাধ্যমের নাম: 

সংবাদের শিরোনাম: 

সংবাদের বিষয়: 

আমার মতামত:

আমরা সংবাদপত্র, টেলিভিশন, ইন্টারনেট, রেডিও যে কোনো জায়গা থেকে এই সংবাদ নিতে পারি। সংবাদের বিষয় এবং আমার মতামত দুই লাইনের বেশি হবে না। 'আমার মতামত' অংশে এই সংবাদটি 'প্রকৃত সত্য' 'মিডিয়ার তৈরি সত্য' নাকি 'মিথ্যা' এই বিষয়ে আমার মতামত বা সিদ্ধান্ত লিখব।

আগামী সেশনে ডায়েরি বা জার্নালটি বিদ্যালয়ে নিয়ে এসে শিক্ষককে দেখাব।

আগামী সেশনে আমরা শ্রেণিকক্ষে একটি দলীয় বিতর্কের আয়োজন করব। বিতর্কের পক্ষ ও বিপক্ষ দল শিক্ষক আগামী সেশনে লটারির মাধ্যমে নির্বাচন করবেন।

বিতর্কের বিষয় হতে পারে:

১। 'একমাত্র গণমাধ্যমই পারে প্রকৃত সত্য তুলে ধরতে' বা

২। 'সত্য যাচাই করা এবং প্রচার করার দায়িত্ব একমাত্র সাংবাদিকের'

Content added || updated By
Promotion