আমরা কি জানি ম্যানেজার কাকে বলে? কোথায় শুনেছি ম্যানেজার শব্দটি? হ্যাঁ, বিভিন্ন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানে যিনি সমস্ত কার্যক্রম দেখভাল বা ম্যানেজ করেন তিনি হলেন ম্যানেজার। বাংলায় যাকে বলা হয় ব্যবস্থাপক। তিনি তার প্রতিষ্ঠানের ভালো-মন্দ দেখেন। প্রতিষ্ঠানের কী শক্তি আছে, সেই শক্তি ব্যবহার করে কীভাবে প্রতিষ্ঠানের উন্নতি করা যায় সেটি নিয়ে কাজ করেন। তার প্রতিষ্ঠানে যারা কাজ করেন তারা যেন আনন্দ নিয়ে কাজ করতে পারেন তা নিয়ে চিন্তা করেন। কারও কোনো সমস্যা হলে তা সমাধানের উপায় খুঁজে বের করেন, প্রয়োজনে দক্ষ কারও সাহায্য নেন। সব বিষয় জেনে-বুঝে দক্ষতার সাথে নিজের প্রতিষ্ঠানকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান।
এই অধ্যায়ে আমরাও প্রত্যেকে একজন করে দক্ষ ম্যানেজার হয়ে উঠব। কিন্তু প্রশ্ন হলো, আমরা তো ছোট, তাহলে আমরা কী ম্যানেজ করব! আমরা এই অধ্যায়ে আমাদের নিজেদের অনুভূতি, চিন্তা ম্যানেজ করে আচরণ করতে শিখব। নিজেদের প্রতি যত্নবান হয়ে অন্যের প্রতি সহমর্মী আচরণ কীভাবে করা যায় সে সম্পর্কে ধারণা লাভ করব। একটা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজারের মতোই আমরা আমাদের অনুভূতি, চিন্তা ও আচরণ বুঝে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার দক্ষতা অর্জন করব। নিজেদের এবং অন্যের ভালো থাকার জন্য নিজের ইতিবাচক চিন্তা ও আচরণের উন্নয়ন করতে পারব। এতে করে সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার দায়িত্ব অনেকটাই নিজেরা নিতে পারব; আর এভাবেই আমরা নিজেদের অনুভূতি ও চিন্তার ম্যানেজার হয়ে উঠব যা আমাকে বড় করে তুলবে মন ও মননে।
চলো খেলি দলগত খেলা
ম্যানেজার হওয়ার শুরুতেই আমরা একটি দলগত খেলা খেলব। খেলাটি কীভাবে খেলতে হয় তা শিক্ষকের কাছ থেকে ভালোমতো বুঝে নেব।
অনেকটা সময় ধরে অনেক উত্তেজনা নিয়ে আমরা দলগতভাবে খেলাটি খেললাম। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খেলাটি খেলতে গিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে আমাদের যে অনুভূতিগুলো হয়েছিল তা মনে করি এবং প্রতিটি অনুভূতির সাথে সাথে কী চিন্তা হচ্ছিল ও তখন কী করতে ইচ্ছে হচ্ছিল তা ছকে লিখি।
অনুভূতি | চিন্তা | তখন কী করতে ইচ্ছা হচ্ছিল |
---|---|---|
এবার ছকে লেখা আমার অনুভূতি, চিন্তা ও তখন কী করতে ইচ্ছে হচ্ছিল সহপাঠীদের সাথে মিলিয়ে দেখি এবং আলোচনা করি।
সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করে দেখতে পেলাম একটিমাত্র খেলায় অংশগ্রহণের সময় এক একটি পরিস্থিতিতে আমরা বিভিন্ন ধরনের অনুভূতি অনুভব করেছি। কোনো পরিস্থিতিতে আমাদের অনুভূতির বা চিন্তার মিল পেয়েছি আবার কখনো পাইনি। আবার কখনো অনুভূতির মিল পেয়েছি কিন্তু চিন্তার মিল পাইনি। তার উল্টোটাও হয়তো হয়েছে।
অনুভূতি, চিন্তা ও আচরণের সম্পর্ক
আমরা কোনো কিছু সম্পর্কে যেভাবে চিন্তা করি বা ভাবি তা আমাদের অনুভূতিকে প্রভাবিত করে। আবার অনূভূতি আমাদের আচরণকে প্রভাবিত করে। বেশিরভাগ সময় আমাদের আচরণের ওপর তার ফলাফল নির্ভর করে। এভাবে আমাদের চিন্তাভাবনা এবং অনুভূতি আমাদের আচরণ, পছন্দ এবং শেষ পর্যন্ত ফলাফলকে প্রভাবিত করে। কথাগুলো কি একটু ভাবনায় ফেলে দিয়েছে? এবার একটা গল্প দিয়ে বিষয়টা আমরা বুঝতে চেষ্টা করি।
রিতা ও বিপ্লব তাদের স্কুলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মঞ্চ সাজানোর দায়িত্ব পেয়েছে। ওরা দুজন আরও | কয়েকজন সহপাঠীকে নিয়ে ওদের শিক্ষক রাবেয়া আপার সাথে পরিকল্পনা করে কিছু কাগজ কেটেছে আর | রং-বেরংয়ের ফুল বানিয়েছে। আর একদিন পরে অনুষ্ঠান। ওরা দুজন মিলে সবকিছু গুছিয়ে রাবেয়া আপার | কাছে রেখে দিয়েছে। ঠিক করে রেখেছে কাল টিফিনের পরে ওরা সবাই মিলে মঞ্চ সাজিয়ে ফেলবে যাতে | পরশু সাজানো মঞ্চে অনুষ্ঠান করা যায়। পরের দিন সকালে স্কুলে এসে বিপ্লব ওর এক বন্ধুর কাছে শুনতে | পায় রাবেয়া আপার একজন নিকট আত্মীয় অসুস্থ হওয়ায় উনি তাকে নিয়ে শহরে চলে গেছেন। আজ ছুটি | নিয়েছেন, স্কুলে আসবেন না। বিপ্লব ভীষণ চিন্তায় পড়ে গেল। দৌড়ে সে রিতার কাছে গিয়ে মাথায় হাত | দিয়ে বসে পড়ল। বলল, ‘কী বিপদ হলো বলো তো! আমার তো খুব ভয় লাগছে। মঞ্চ সাজাতে না পারলে | তো হেড স্যারের বকা খাব।' রিতা বলল, হ্যাঁ সমস্যা তো একটু হলোই। দাঁড়াও একটু ভেবে দেখি। একটা সমাধান বের করে ফেলব। চলো আমরা নারায়ণ স্যারের সাথে একটু আলাপ করি সমস্যাটা নিয়ে। দুজন মিলে স্যারের সাথে কথা বললে স্যার ওদের কাটা কাগজ আর ফুলগুলো পাওয়ার ব্যবস্থা করে দিলেন। ওরা সেগুলো দিয়ে মঞ্চ সাজিয়ে ফেলল। শিক্ষকবৃন্দ খুব প্রশংসা করলেন এবং ধন্যবাদ জানালেন সুন্দর করে মঞ্চ সাজানোর জন্য। ওরাও নারায়ণ স্যারকে ধন্যবাদ জানাল তাদের সহযোগিতা করার জন্য।
ওপরের ঘটনা থেকে রিতা ও বিপ্লবের অনুভূতি চিন্তা ও আচরণের বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করি
ওপরের একই ঘটনায় আমরা দেখতে পেলাম বিপ্লব ও রীতা ভিন্নভাবে চিন্তা করায় অনুভূতিও ভিন্নরকম হলো এবং তারা ভিন্নভাবে আচরণ করল।
আমার অনুভূতি, চিন্তা ও আচরণ
রিতা ও বিপ্লবের ঘটনা থেকে আমরা চিন্তা, অনুভূতি ও আচরণের সম্পর্ক বুঝলাম। এবার আমরা বন্ধুর সাথে ঘটে যাওয়া ভয়ের একটি ঘটনা শেয়ার করি এবং নিচের ছকটি পূরণ করি।
আমার অনুভূতি আমার প্রকাশ : ছক ১
এভাবে কোনো ঘটনায় আমরা কী চিন্তা করছি এবং তার সাথে আমাদের অনুভূতি ও আচরণের সম্পর্ক নিজেরা বের করতে পারি। একইভাবে আমরা বাড়িতে ঘটে যাওয়া দুঃখ, রাগ ও আনন্দের একটি করে ঘটনা মনে করব এবং ওই ঘটনায় আমাদের চিন্তা ও আচরণ দিয়ে নিচের ছকটি পূরণ করব।
আমার অনুভূতি আমার প্রকাশ : ছক ২
আমার অনুভূতি আমার প্রকাশ : ছক ৩
আমার অনুভূতি আমার প্রকাশ : ছক ৪
আমদের চিন্তা আমাদের অনুভূতিকে প্রভাবিত করে। কিন্তু আমরা বেশির ভাগ সময় অনুভূতিই আগে বুঝতে পারি। অনুভূতির কারণ বুঝতে আমরা আমাদের নিজেদের কোন চিন্তাটি ওই অনুভূতি তৈরিতে কাজ করছে তা বের করতে পারি। আর এটা করতে পারলেই আমরা আমাদের নিজেদের দক্ষ ম্যানেজার হওয়ার পথে মূল কাজটি করে ফেলতে পারব। তখনই আমরা সচেতনভাবে আমাদের জন্য ইতিবাচক আচরণ নির্বাচন করতে পারব। একই সাথে আমাদের আচরণটি অন্যের বা আমার পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কিনা, তাও চিন্তা করে সেই আচরণটি করা বা না করার সিদ্ধান্ত নিতে পারব।
এই ‘ম্যানেজার’-এর কাজটি দক্ষভাবে করতে অনুভূতির যত্ন নিতে হয়। এর ফলে আমরা সচেতন হয়ে বাস্তবসম্মত ও কার্যকর চিন্তা করতে পারি। আমাদের চিন্তাকে পরিবর্তন করার শক্তি পাই। কোন চিন্তা আমাদেরকে সহায়তা করে এবং কোনটা করে না, তা খুঁজে বের করতে পারি এবং সঠিক আচরণটি বেছে নিতে পারি।
আমার অনুভূতি যত্ন
অনুভূতি ও মনের যত্নে আমরা যে চর্চাগুলো নিয়মিত করি এবার তা ‘আমার অনুভূতি, আমার ভালোবাসা' ফুলের পাপড়িতে লিখি।
আমার অনুভূতি আমার শক্তি
আমি আমার অনুভূতির যত্ন নিতে যা করি তা ফুলের পাপড়িতে লিখেছি। সেগুলো নিয়ে সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করেছি। ওদের কাজগুলোও শুনেছি। এতে আমরা কীভাবে উপকৃত হচ্ছি তা নিয়েও আলোচনা করেছি।
এবার আমরা দেখব অনুভূতির যত্ন নেওয়াতে আমাদের কী সুবিধা হয়েছে। অনুভূতির যত্ন আমাকে যেভাবে সহযোগিতা করছে ‘আমার অনুভূতি আমার শক্তি' ছকে লিখি। যেমন : অনুভূতি সহজভাবে গ্রহণ করি, অনুভব করি, নিজেকে দোষারোপ করি না। এতে শান্তি পাই, নিজেকে ছোট লাগে না। এরকম আরও যা যা উপকার পাই তা নিচের ছকে লিখি।
আমার অনুভূতি আমার শক্তি |
---|
|
|
|
|
|
আমার চাওয়া
আমাদের প্রত্যেকটি অপ্রত্যাশিত অনুভূতির পেছনে আমাদের চাওয়া থাকে। এই চাওয়া যখন পূরণ হয় তখন আমরা শান্তি পাই, ভালো লাগে। যেমন : যখন ভয় পাই তখন হয়তো চাই কেউ আমার পাশে থাকবে, সাহস দেবে। রাগের সময় চাই কেউ আমাকে রাগের কারণ জানতে চাইবে, আমার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবে, আমার অনুভূতি ও প্রয়োজনের গুরুত্ব দেবে। আবার দুঃখের সময় চাই আমাকে কাছে নিয়ে আদর দেবে, আমাকে ভালোবাসবে। এই চাওয়া একেকজনের একেক রকম হতে পারে।
এবার আমরা একটু নিজেকে সময় দিই এবং ভয়, রাগ, দুঃখ ও আনন্দের সময় আমার মন কী চায় তা ভাবি। নিজেদের চাওয়াগুলো নিয়ে সহপাঠীর সাথে আলোচনা করি।
প্রথমে নিজেদের চাওয়াগুলো নিয়ে সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করে উপস্থাপন করেছি। এরপর সবার চাওয়াগুলো নিয়ে শিক্ষকের সাথে আলোচনা করেছি।
সাধারণত আমরা যে বিষয়গুলো নিজের মধ্যে অনুভব করতে চাই সেগুলো হলো :
• আমাকে অন্যরা ভালোবাসে
• আমি গুরুত্বপূর্ণ
• আমি সম্মানিত
• আমি আত্মবিশ্বাসী
• আমি আমার ও অন্যের জন্য ভালো কাজ করতে পারি
• আমি সাহসী
• আমি সিদ্ধান্ত নিতে পারি
• আমি যোগ্য
• ভুল করলেও আমি গ্ৰহণযোগ্য
• আমি আমাকে ভালোবাসি
এই চাওয়াগুলো পূরণ হলে আমরা খুশি থাকি। আমাদের মনোবল বাড়ে। তবে এই কথাগুলো শুধু অন্যরা বললে বা আচরণে প্রকাশ করলেই যে আমাদের মনোবল ও আত্মবিশ্বাস বাড়ে, তা নয়। আমাদের নিজেদের প্রতি এই চিন্তাগুলো আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। আমরা যখন বিশ্বাস নিয়ে নিজেকে এই কথাগুলো বলি আমাদের মস্তিষ্ক তা গ্রহণ করে এবং সেই অনুযায়ী কাজ করে। এবার আমরা অভিজ্ঞতা দিয়ে বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করব। এর জন্য আমরা কয়েকটি কাজ করব।
শুরুতেই আমরা যে গুণ ও বৈশিষ্ট্য নিজেদের মধ্যে দেখতে চাই ও শুনতে চাই নিচের বেলুনে তা লিখে নিই। এর মধ্য থেকে আজকের কাজটির জন্য আমার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি বেছে নিই। পরে আমরা চাইলে আরও বেলুন যোগ করে আমাদের চাওয়াগুলো লিখতে পারব। আমরা যত বেশি নিজের চাওয়াগুলোকে বুঝতে পারব, তত বেশি নিজের সন্তুষ্টির জন্য কাজ করতে পারব।
আমার চাওয়া গুণ ও বৈশিষ্ট্য
আমার অনুভূতির কার্যকর প্রকাশ
প্রথমে আমি নিজের চাওয়া গুণ ও বৈশিষ্ট্যগুলো বললাম ও অনুভব করলাম। এরপর কয়েকজন সহপাঠী আমার চাওয়াগুলো একইভাবে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলল। আমরা তাও শুনলাম এবং অনুভব করলাম। এভাবে আমরা সচেতনভাবে নিজেদের চাওয়া এই গুণ ও বৈশিষ্ট্যগুলোকে স্বীকৃতি দিলাম। ইতিবাচক স্বীকৃতি সচেতনভাবে গ্রহণ ও অনুভব করার ফলে আমাদের মনে সন্তুষ্টি তৈরি হয়। মনোবৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ার ফলে এভাবে গুণ ও ইতিবাচক বৈশিষ্ট্য আরও জোরদার হয়। আমাদের প্রত্যাশিত গুণ ও বৈশিষ্ট্যগুলো অর্জনে প্রেরণা বাড়াতেও কাজ করে ।
আমরা বইয়ে ‘আমার অনুভূতির আমার প্রকাশ : ছক ১-৪’পূরণ করেছিলাম। এবার ওই ছকগুলোতে দেখি এবং সেখান থেকে তথ্য নিয়ে প্রথমে নিচের ‘আমার অনুভূতি আমার প্রকাশ : ছক ৫' ছকটি পূরণ করি। এরপর আরও যে অনুভূতিগুলো হয় এবং যেভাবে তা প্রকাশ করি তাও নিচের ছকে যোগ করি
আমার অনুভূতি আমার প্রকাশ : ছক ৫
আমার অনুভূতি | যেভাবে প্রকাশ করি |
---|---|
ভয় | |
দুঃখ | |
রাগ | |
আনন্দ | |
আমরা নিজেদের অনুভূতি ও তা প্রকাশের ধরনগুলো দেখলাম। এবার নিজেদের বাড়িতে বা বিদ্যালয়ে তিনজনের সাক্ষাৎকার নিই এবং তাদের নিজেদের এই অনুভূতিগুলো প্রকাশ করতে কী আচরণ করে তা জানার চেষ্টা করি।
সাক্ষাৎকার প্রদানকারী | আনন্দ | দুঃখ | রাগ | ভয় |
---|---|---|---|---|
| ||||
| ||||
|
আমরা নিজেদের এবং যাদের কাছ থেকে সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছি তাদের অনুভূতি প্রকাশের ধরন লিখেছি। কোন আচরণ বা প্রকাশভঙ্গী কার্যকর সেটাও বুঝলাম। অর্থাৎ কোন আচরণ আমার বা অন্যের ক্ষতি করে না এবং অন্যের কাছে আমার অনুভূতি ও চাওয়া প্রকাশ করতে সাহায্য করে, তা বুঝলাম। এবার এই ধারণাকে কাজে লাগিয়ে আমার নেতিবাচক প্রকাশভঙ্গি বাদ দিয়ে কী আচরণ করতে চাই তা লিখি।
আমার অনুভূতির অকার্যকর/নেতিবাচক প্রকাশ | আজ থেকে আমি যেভাবে প্রকাশ করব |
---|---|
| |
| |
| |
| |
|
সহায়তা চাওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা
কখনো এমন হতে পারে যে আমি আচরণ পরিবর্তন করতে চাই, কিন্তু একা একা পারছি না। কী কারণে অসুবিধা হচ্ছে তা ঠিক বুঝতে পারছি না। সে ক্ষেত্রে আমরা বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য কারও কাছ থেকে সাহায্য চাইতে পারি। কেউ কেউ সাহায্য চাওয়াকে দুর্বলতা মনে করতে পারে। আবার কেউ কেউ ভয় পায় এই ভেবে যে হয়তো অন্যরা সহায়তা করবে না অথবা ছোট করে দেখবে ও সমালোচনা করবে। আসলে নিজের প্রয়োজনে ও সমস্যায় বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য কারও কাছ থেকে সহায়তা চাইতে পারা সাহসী কাজ। সবাই সহায়তা চাইতে পারে না, বিব্রতবোধ করে। প্রয়োজনে সহায়তা চাওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা। আমরা চাইলে এই দক্ষতার উন্নয়ন করতে পারি। প্রয়োজন হলে আমরা প্রশিক্ষিত ও দক্ষ পেশাজীবীর কাছ থেকেও সেবা গ্রহণ করতে পারি।
গত কয়েকদিন সেশনের মাধ্যমে আমরা বুঝলাম আমাদের চিন্তা ও অনুভূতি কীভাবে আমাদের আচরণকে প্রভাবিত করে। অনুভূতির যত্ন নিয়ে যে প্রকাশভঙ্গিগুলো ভালো থাকতে সহায়তা করে না তা খুঁজে বের করেছি এবং ইতিবাচক আচরণ দিয়ে তা পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এবার আমরা সহমর্মী আচরণ করার জন্য আমরা এই অভিজ্ঞতাগুলোকে ব্যবহার করব। এই কাজটি করে আমরা আরও দক্ষ ম্যানেজার হব।
আমার সহমর্মী আচরণ : সঙ্গীকে পথ দেখাই
আমরা নিজেরা চোখ বন্ধ করে সঙ্গীর সহায়তা নিয়ে পথ অতিক্রম করেছি এবং সঙ্গীকেও সহায়তা করেছি। তারপর শ্রেণিকক্ষে নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছি। যখন সঙ্গীকে নিয়ে পথ হেঁটেছি তখনকার অভিজ্ঞতাও শেয়ার করেছি। আমরা নিজেদের অভিজ্ঞতা দিয়ে তাদের পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা করেছি। তাদের কোনো সাহায্য দরকার কিনা জানতে চেয়েছি। আবার নিজেদের প্রয়োজনেও সাহায্য চেয়েছি। নিজেদের অভিজ্ঞতা দিয়ে আমরা ‘সঙ্গীকে পথ দেখানো'র কার্যক্রমটি সম্পন্ন করেছি। এই কার্যক্রমে আমরা যে সহমর্মী আচরণগুলো করেছি তা নিচের ছকে লিখি। এরকম আরও যে সহমর্মী আচরণগুলো করি তাও এই ছকে লিখি।
আমার সহমর্মী আচরণ |
---|
|
আমরা নিজেদের সহমর্মী আচরণগুলো লিখলাম ও আলোচনা করলাম। এবার এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নিচের তিনটি ঘটনা নিয়ে ভূমিকাভিনয় করি।
ঘটনা : ১ পুরায়েতা চাকমা রাতে একটি ছবি আঁকছিল। ওর স্কুল থেকে একটা প্রদর্শনী করবে। কালই ছবি জমা দিতে হবে, তাই আজকের মধ্যে ছবিটা শেষ করবে সে। মা-বাবাকে সে বলেছে তার দেরি হবে আজ, তারা যেন শুয়ে পড়েন। বেশ কিছুক্ষণ পরে তার কেমন যেন একটু ভয় করছিল। ঘরের বাইরে কুকুরও ডাকছে। পাহাড়ের গা ঘেঁষেই তাদের ঘর। অনেক গাছপালা আছে আশপাশে। মাকে একবার ডাকল, কিন্তু মনে হচ্ছে মা ঘুমিয়ে পড়েছেন, শুনতে পাননি। |
ঘটনা : ২ পরমা খেলাধুলায় অনেক ভালো। এ বছর দৌড় প্রতিযোগিতায় উপজেলায় প্রথম হয়ে জেলায় খেলার জন্য সুযোগ পেয়েছে। মা-বাবা চান যে সে জেলায় খেলবে। কিন্তু জেলা শহরে তার কোনো আত্মীয় নেই যে সেখানে গিয়ে থাকবে ও খেলায় অংশগ্রহণ করবে। তার মা-বাবার পক্ষে হোটেলে রেখে খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া সম্ভব নয়। তার অনেক দুশ্চিন্তা হচ্ছে, খেলতে যেতে পারবে তো! সে স্কুলে শিক্ষকের সাথে আলাপ করায় তিনি একটা ব্যবস্থা করে দিলেন। পরমা জেলায়ও প্রথম হলো। |
ঘটনা : ৩ স্কুলে বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হবে। মেলা আয়োজনের দায়িত্বগুলো ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। সবাই খুব আনন্দ আর উৎসাহ নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে । শম্পা প্রস্তুতির কাজে আজ একটু আগে এসেছে। ওর এই উৎসাহ দেখে কয়েকজন ছেলেমেয়ে হাসাহাসি করছে। ওরা নিজেরা কোনো কাজ করছে না বরং বিভিন্ন কথা বলে উপহাস করছে। দূর থেকে সজল বিষয়টা দেখতে পেয়ে আবীর ও নমিতাকে গিয়ে বলল। আবীর ও নমিতা নবম শ্রেণিতে পড়ে। ওরা দুজন এসে যারা হাসাহাসি আর উপহাস করছিল তাদের সাথে কথা বলল। এতে তারা দুঃখ প্রকাশ করে যে যার ক্লাসে চলে গেল। |
গিয়েই যদি তার সাথে কথা বলে আমার অনুভূতি জানাতে পারি এবং তার কাছ থেকে শুনতে পারি কেমন হয়? জোড়ায় ভাগ হয়ে নিজেদের মধ্যে অভিজ্ঞতা শেয়ার করি।
১ম বার | ২য় বার |
---|---|
আমি তাকে সামনে কল্পনা করে আমার অনুভূতির | কথা বলছি এবং প্রশ্ন করছি। | এবার আমি তার ভূমিকায় থেকে উত্তর দিচ্ছি |
এভাবে আমরা তার পরিস্থিতি, মনোভাব ও তার আচরণের কারণ উপলব্ধি করতে পারি। কাজটি শেষ করে নিচের ছকটি পূরণ করি।
বন্ধু/সহপাঠীর ভূমিকায় কথা বলতে গিয়ে আমার উপলব্ধি | উপলব্ধি থেকে আমার সিদ্ধান্ত |
---|---|
|
বন্ধুর কাছ থেকে তার অনুভূতি, পরিস্থিতি ও চিন্তা জানলাম। এবার বাড়িতে পরিবারের কারও সাথে এমন একটি ঘটনার কথা মনে করি। আমার এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বাড়িতে একইভাবে তার ভূমিকায় গিয়ে কথা বলি। মা, বাবা, ভাইবোন বা অন্য কেউ যার ওপর আমাদের রাগ বা কষ্ট আছে তাকে নিয়ে কাজটি করতে পারি।
নাম ও তার সাথে আমার সম্পর্ক | তার ভূমিকায় কথা বলতে গিয়ে আমার উপলব্ধি | উপলব্ধি থেকে আমার সিদ্ধান্ত |
---|---|---|
|
এভাবে কারও ওপর আমাদের অপ্রত্যাশিত কোনো অনুভূতি থাকলে তার পরিস্থিতি ও মনোভাব বুঝতে পারি। এতে আমাদের অন্যের আচরণের পেছনে কারণ বুঝতে সুবিধা হয়। প্রয়োজন হলে আমরা তার আচরণে আমার অনুভূতি কী এবং এতে আমার কোনো সমস্যা হলে তা জানাতে পারি। নিজের অনুভূতির যত্ন না নেওয়া ও ম্যানেজ করতে না পারার কারণে অনেক সময় বড়রাও আমাদের সাথে অপ্রত্যাশিত আচরণ করে থাকেন। সেটি বুঝতে পারলে আমরা তার সাথে কথা বলতে পারি। এতে আমাদের সমস্যা অনেক ক্ষেত্রে সমাধান হয়। এভাবে আমরাই কিন্তু আমাদের সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব অনেকটা নিতে পারছি। তাহলে কি আমরা ম্যানেজার হয়ে উঠছি না?
আমাদের রিসোর্স ব্যাংক
এবার আমরা সবাই মিলে একটি রিসোর্স ব্যাংক তৈরি করব।
আমরা সবাই মিলে রিসোর্স ব্যাংকটি তৈরি করেছি। আজ থেকে এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আমাদের সবার। এই ব্যাংকে আমরা রিসোর্স দেব। আবার আমার যখন যে রিসোর্স দরকার হবে এখান থেকে নিয়ে নেব। আমরা যেহেতু এই ব্যাংকটিকে কোনো দেয়ালে আটকে রাখিনি, তাই আমাদের এ রিসোর্সগুলো প্রকৃতির সাথে মিশে থাকবে। আমরা যেকোনো জায়গা থেকে যেকোনো সময় প্রয়োজন মত নিতে পারব। এভাবে রিসোর্স দিয়ে ও নিয়ে সহমর্মী হয়ে আমরা সবাই মিলেমিশে ভালো থাকব।
প্রকৃতির প্রতি আমার সহমর্মিতা
আমরা প্রকৃতির উপাদান পশুপাখি ও গাছপালার প্রতি সহমর্মী আচরণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জেনেছি। এবার আমরা এর মধ্যে যেকোনো একটা বেছে নিয়ে নিয়ে তার যত্ন ও পরিচর্যা করব। বাড়িতে পোষা প্রাণী, যেমন বিড়াল, কুকুর, গরু, ছাগল, ভেড়া, হাঁস, মুরগি যার যেটা আছে তাকে যত্ন করা, খাবার দেওয়া, ক্ষতিকর কোনো কিছু থেকে রক্ষা করা এই দায়িত্বগুলো নিতে পারি। অথবা বাড়ির যেকোনো একটা জায়গা বেছে নিয়ে পছন্দমতো ফল, ফুল বা কাঠের গাছ লাগাতে পারি। বাড়িতে জায়গা না থাকলে একটা টব বা যেকোনো পরিত্যক্ত পাত্রেও লাগাতে পারি। তাহলে এবার আমাদের যার যেটা পছন্দ তেমন একটা বেছে নিই এবং একটি পরিকল্পনা করি তার যত্ন ও পরিচর্যার জন্য কী কী করব। পরিকল্পনাটিতে প্রয়োজন হলে মা-বাবা বা ভাই-বোনের সহযোগিতাও নিতে পারি।
কার যত্ন ও পরিচর্যার দায়িত্ব নিলাম (ছবি ও সংক্ষিপ্ত বর্ণনা) | যত্ন ও পরিচর্যায় কী কী করব |
---|---|
|
আমরা নিজেরা ম্যানেজার হওয়ার প্রক্রিয়া জানলাম। ম্যানেজার শুধু নিজের জন্য কাজ করে না বা যে সহযোগিতা চায় শুধু তার জন্যই কাজ করে না। বরং সে সতর্ক দৃষ্টি রাখে যাতে অসচেতনভাবে কেউ কিছু না করে এবং তার ও আশপাশের কারও ক্ষতি না হয়। এবার আমরা খুঁজে বের করব সহমর্মিতার অভাবে আমাদের বিদ্যালয়ে ও আশপাশে কী কী সমস্যা হতে পারে।
সহমর্মিতার অভাবে আমাদের বিদ্যালয়ের সমস্যা
সহমর্মিতার অভাবে আমাদের বিদ্যালয়ে ও আশপাশে কী কী সমস্যা হতে পারে তা নিয়ে শিক্ষকের নির্দেশনায় আমরা দলগত আলোচনা ও তথ্য উপস্থাপন করেছি । এরপর শিক্ষক ও একজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকেও তাদের মতামত শুনেছি। সহপাঠীদের সাথে আলোচনা ও শিক্ষকদের মতামত বিবেচনা করে আমাদের কাছে বিদ্যালয়ে যে দুটি সমস্যা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে তা আলোচনা করেছি। সেগুলো সমাধানের জন্য কী করা যায় তা নিয়েও আলোচনা করেছি। এবার ‘আমাদের সমস্যা ও তা সমাধানে আমার কাজ' ছকটি পূরণ করি।
আমাদের সমস্যা ও তা সমাধানে আমাদের দলগত কাজ
আমাদের বিদ্যালয়ে সহমর্মিতার অভাবে সমস্যা | সমস্যা সমাধানে আমাদের দলগত কাজ |
---|---|
|
আমরা সঙ্গীকে সহমর্মিতার সাথে পথ দেখালাম এবং পথ দেখাতে গিয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা, অনুভূতি ও চিন্তাগুলোকেও খুঁজে বের করলাম। নিজেদের সহমর্মী আচরণগুলো খুঁজে বের করলাম। এরপর অন্যের অবস্থানে নিজেকে রেখে তার পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করলাম ও নিজের প্রশ্নের উত্তর খুঁজলাম। রিসোর্স ব্যাংক তৈরি করে কীভাবে একে অপরের সহমর্মী হতে পারি তাও শিখলাম। সবশেষে সহমর্মিতার অভাবে বিদ্যালয়ের সমস্যা ও তা সমাধানের জন্য দলগত সিদ্ধান্ত নিলাম। এসব বিবেচনা করে আমরা একটু দেখি আমার সহমর্মিতার স্কেলের মোট মান যদি ১০ হয় তাহলে এখন আমি কত নম্বরে আছি। এ বছরের শেষে কত নম্বরে যেতে চাই এবং তার জন্য কী কী করব। আমার চিন্তা ও বিবেচনা অনুযায়ী আমার সহমর্মিতার স্কেলে দাগ দিই এবং কাজগুলো দিয়ে ছকটি পূরণ করি।
এখন যেখানে আছি | যেখানে যেতে চাই | যে যে সহমর্মী আচরণ করতে চাই |
---|---|---|
আমদের বয়স ও অবস্থান থেকে দক্ষ ম্যানেজার হওয়ার উপায়গুলো আবিষ্কার করলাম। এবার আমাদের উপায়গুলো কাজে লাগিয়ে এবং দক্ষতার উন্নয়ন করে নিজেকে দক্ষ ম্যানেজার করে তোলার পালা। নিজের ওপর বিশ্বাস রাখব ও নিজেকে স্বীকৃতি দেব ‘আমি একজন দক্ষ ম্যানেজার। আমি আমার অনুভূতির যত্ন নিতে পারি। আমার নেতিবাচক চিন্তা পরিবর্তন করে ইতিবাচক চিন্তা করতে পারি। আমি সহমর্মী আচরণ করতে পারি। আমি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিতে পারি। আর এভাবেই আমি বেড়ে উঠি মন ও মননে'।
নিজের যত্ন ও সহমর্মী আচরণ চর্চা
এই অধ্যায়ের কাজগুলোর মধ্য দিয়ে নিজের অনুভূতির যত্ন, অনুভূতির ইতিবাচক ও কার্যকর প্রকাশ সম্পর্কে জেনেছি। সহমর্মিতামূলক আচরণে নিজের চিন্তা ও অনুভূতির প্রভাব সম্পর্কেও জেনেছি। এখন চর্চা করার পালা। এই বছরের বাকি সময় জুড়ে এই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজগুলো করব। শিক্ষকের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ বা চর্চাগুলো ব্যক্তিগত ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ করব। এছাড়া যখন আমার সুবিধা মতো প্রতিদিন ২০-৩০ মিনিট সময় নিজেকে দেব। এই সময়ে আমি আমার সারাদিনের কাজের ওপর প্রতিফলন করব। ইতিবাচক অভিজ্ঞতা থেকে শক্তি নেব। নেতিবাচক অভিজ্ঞতা হলে নিজেকে নিজেকে আদর ও ভালোবাসা দেব। একটু সময় দিয়ে চিন্তা করব আমি নিজের কোনো কাজে পরিবর্তন আনতে চাই কিনা, কারও কাছে থেকে সহযোগিতা নিতে চাই কিনা।
নির্দিষ্ট সময় পরপর কাজের ওপর প্রতিবেদন তৈরি করে শিক্ষককে দেখিয়ে নেব। পাশাপাশি শিক্ষক নির্দিষ্ট সময় পরপর আমাদের সাথে শ্রেণিতে এই বিষয়ে আলোচনা করবেন। এভাবে চর্চা এবং মতবিনিময় বছর জুড়ে চলবে।
নিজের চর্চাগুলো ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ করব এবং প্রতিফলন লেখার সময় নিচের প্রশ্নগুলোর আলোকে লিখব।
• গত একমাসে নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী নিজের যত্নে কী কী কাজ করেছি?
• কাজগুলো করতে কেমন লেগেছে?
• সহমর্মিতার চর্চায় কী কী করেছি?
• এই কাজগুলো অন্যদের সাথে বন্ধুত্ব তৈরি ও রক্ষায় কীভাবে সাহায্য করছে?
• কোনো সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি কি? হয়ে থাকলে কীভাবে তা মোকাবিলা করেছি?
• শিক্ষক বা পরিবারের কাছে কি আমার কোনো সাহায্য দরকার? তা কী?
আমার অগ্রগতি, আমার অর্জন
নিচের ছকটি আমার অভিভাবক ও শিক্ষক পূরণ করবেন। আমি নিজেও পূরণ করব। এর মাধ্যমে আমার অগ্রগতি সম্পর্কে আমি ধারণা লাভ করব। আমি নিজে আমাকে উৎসাহ দেব এবং কোথায় আরও ভালো করার সুযোগ আছে তা খুঁজে বের করব। আমার অভিভাবক ও শিক্ষক আমাকে স্বীকৃতি দেবেন। কী ভালো করেছি এবং কীভাবে আরও ভালো করতে পারি সেই উপায় জানাবেন। এর মাধ্যমে আমাদের অগ্রগতি সম্পর্কে শিক্ষক ধারণা দেবেন। কীভাবে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে আরও ভালো করতে পারি সেই উপায় জানাবেন।
শিখন কার্যক্রমের ওপর ভিত্তি করে আমার কাজগুলো মান অনুযায়ী নিম্নলিখিতভাবে তারকা বা স্টার দিয়ে মূল্যায়ন করবেন।
ছক ১ : আমার অংশগ্রহণ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা বইয়ে করা কাজ
সেশন নং | অংশগ্রহণের সময় অন্য শিক্ষার্থীদের সাথে শ্রদ্ধাশীল আচরণ | অংশগ্রহণের সময় অন্য শিক্ষার্থীদের অনুভূতি ও চিন্তার সাথে নিজের আচরণ বোঝার আগ্রহ | বইয়ে সম্পাদিত কাজের মান ও অনুশীলন | |
---|---|---|---|---|
সেশন ১-২ | নিজের রেটিং | |||
মন্তব্য | ||||
শিক্ষকের রেটিং | ||||
মন্তব্য | ||||
সেশন ৩-৮ | নিজের রেটিং | |||
মন্তব্য | ||||
শিক্ষকের রেটিং | ||||
মন্তব্য | ||||
সেশন ৯-১০ | নিজের রেটিং | |||
মন্তব্য | ||||
সেশন ১১-১৭ | শিক্ষকের রেটিং | |||
মন্তব্য |
ছক ২ : আমার অনুভূতির যত্ন ও সহমর্মী আচরণ চর্চা
নিজের অনুভূতির যত্ন ও সহমর্মী আচরণ চর্চা সংক্রান্ত পরিকল্পনার যথাৰ্থতা | নিজের অনুভূতির যত্ন নেওয়ার অনুশীলনগুলো জার্নালে লিপিবদ্ধকরণ | সহমর্মী আচরণ অনুশীলন সম্পর্কিত ধারণাগুলোর সঠিক প্রতিফলন | |
---|---|---|---|
নিজের রেটিং |
| ||
মন্তব্য |
| ||
অভিভাবকের মন্তব্য |
| ||
শিক্ষকের রেটিং |
| ||
মন্তব্য |
|
আরও দেখুন...