মন্দির হলো দেবালয়। মন্দিরে দেব-দেবীর মূর্তি থাকে। প্রতিদিন মন্দিরে দেব-দেবীর পূজা-অর্চনা করা হয়। সুতরাং যেখানে দেব-দেবীর মূর্তি থাকে এবং পূজা-অর্চনা করা হয় সে স্থানকে মন্দির বলে। সাধারণত দেব- দেবীর নামানুসারে মন্দিরের নামকরণ হয়। যেমন দুর্গা মন্দির, শিব মন্দির, কালী মন্দির, কৃষ্ণ মন্দির ইত্যাদি। মন্দির পবিত্র স্থান। মন্দিরে গেলে পুশালাভ হয়। দেহ-মন পবিত্র হয়। ভক্তরা মন্দিরে গিয়ে দেব- দেবীর পূজা-অর্চনা করেন। ভগবানের উদ্দেশে ভক্তি নিবেদন করেন। মনের বাসনা পূর্ণতার জন্য, নিজের ও সকলের শান্তির জন্য প্রার্থনা করেন। মন্দিরে গিয়ে দেব-দেবীর দর্শনে অন্তরে ভক্তিভাব উদয় হয়। মনে শান্তি আসে। আমরা সবাই মন্দির বা দেবালয়ে যাব। এখান আমরা একটি মন্দিরের পরিচয় জান
রমনা কালী মন্দিরা : আমাদের একটি বিখ্যাত মন্দির হচ্ছে রমনা কালী মন্দির। এটি ঢাকায় অবস্থিত। মন্দিরটি বহু শতাব্দীর প্রাচীন। ১৯৭১ সালের ২৭শে মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী রমনা কালীবাড়ি মন্দিরটি ধ্বংস করে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ বহু মানুষ হানাদার বাহিনীর আক্রমণে নিহত হয়। মন্দিরের কাছে ছিল আনন্দময়ী মায়ের আশ্রম। এই আশ্রমটিও ধ্বংস করে দেয়া হয়। বর্তমান মন্দিরটি আগের জায়গা থেকে কিছুটা দুরে অবস্থিত। নতুনভাবে নান্দনিক করে নির্মিত হয়েছে মন্দিরটি। মন্দিরের সামনে আছে একটি বড়ো
পুকুর। মন্দির অঙ্গনে রয়েছে মা আনন্দময়ীর আশ্রম। আনন্দময়ী ছিলেন একজন সন্ন্যাসিনী। তিনি আধ্যাত্মিক শক্তিসম্পন্না এবং সাধিকা হিসেবে পুজিতা। এখানে কালী মন্দির, দুর্গা মন্দির, মা আনন্দময়ীর আশ্রম সহ আরও অনেক মন্দির আছে।
তীর্থক্ষেত্র হলো দেব-দেবী, অবতার কিংবা মহাপুরুষ মহীয়সীদের নামের সঙ্গে যুক্ত পবিত্র স্থান। তীর্থক্ষেত্রে গেলে মনে ধর্মের ভাব উদয় হয়। দেহ-মন পবিত্র হয়। পুণ্যলাভ হয়। সকল পাপ দূর হয়। কারও প্রতি হিংসা- বিদ্বেষ থাকে না।
বাংলাদেশ ও ভারতে অনেক তীর্থস্থান রয়েছে। যেমন: চন্দ্রনাথ ধাম, লাঙ্গলবন্দ, গয়া, কাশী, বৃন্দাবন, পুরী, মথুরা, নবদ্বীপ ইত্যাদি। দেশ-বিদেশ থেকে অসংখ্য পুণ্যার্থী এসব পুণ্যভূমিতে তীর্থ করতে আসেন। আমরা এখন একটি তীর্থক্ষেত্র সম্পর্কে জানব।
চন্দ্রনাথ ধাম : বাংলাদেশের একটি বিখ্যাত তীর্থক্ষেত্র হচ্ছে চন্দ্রনাথ ধাম। চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড উপজেলায় এ তীর্থক্ষেত্রটি অবস্থিত। চন্দ্রনাথ পাহাড়ের উপর একটি শিব মন্দিরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এই তীর্থক্ষেত্র। শিবের এক নাম চন্দ্রনাথ। চন্দ্রনাথ পাহাড়ের এই তীর্থস্থানকে কেন্দ্র করে এখানে আরও অনেক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। যেমন শম্ভুনাথ মন্দির, বিরূপাক্ষ মন্দির, ভোলানাথ গিরি সেবাশ্রম, দোল চত্বর, শ্রীকৃষ্ণ মন্দির ইত্যাদি
সীতাকুণ্ডের অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি এ চন্দ্রনাথ ধাম। ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথির রাতে চন্দ্রনাথ ধামে ভগবান শিবের আরাধনা করা হয়। শিবের নামের সঙ্গে যুক্ত এই তিথি শিব চতুর্দশী বলে পরিচিত। শিব চতুর্দশী তিথিতে চন্দ্রনাথ ধামে বহু মানুষের সমাগম হয়। এ সময় এখানে বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়। মেলার আয়োজন করা হয়। দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য ভক্তের সমাগম ঘটে। চন্দ্রনাথ ধানে গেলে মন শান্ত ও পবিত্র হয়।
আরও দেখুন...