রোধ হচ্ছে বিদ্যুৎ প্রবাহের বাধা, তাই কোনো পদার্থের দৈর্ঘ্য (L) যত বেশি হবে তার বাধা তত বেশি হবে অর্থাৎ রোধও বেশি হবে।
আবার সরু একটা পথ দিয়ে যত সহজে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হতে পারবে, চওড়া একটা পথ দিয়ে তার থেকে অনেক সহজে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হতে পারবে অর্থাৎ প্রস্থচ্ছেদ (A) যত বেশি হবে রোধ তত কম হবে।
এই দুটি বিষয়কে আমরা যদি একসাথে আনুপাতিক না লিখে সমীকরণ হিসেবে লিখতে চাই তাহলে একটা ধ্রুবক p ব্যবহার করতে হবে। অর্থাৎ রোধ R হচ্ছে
যেখানে ধ্রুবক হচ্ছে
একটা নির্দিষ্ট পদার্থের জন্য হচ্ছে আপেক্ষিক রোধ এবং তাই এর একক হচ্ছে .
পদার্থ | আপেক্ষিক রোধ ( ) |
রূপা | |
তামা | |
সোনা | |
গ্রাফাইট | |
হীরা | |
বাতাস |
কোনো পদার্থ কতটুকু বিদ্যুৎ পরিবাহী সেটা বোঝানোর জন্য পরিবাহকত্ব বলে একটা রাশি তৈরি করা হয়েছে, যে পদার্থ যত বেশি বিদ্যুৎ পরিবাহী তার পরিবাহকত্ব তত বেশি, যেটা আপেক্ষিক রোধ ( টেবিল 11.01 ) এর ঠিক বিপরীত।
পরিবাহকত্ব এর একক হচ্ছে
এখানে একটা বিষয় মনে রাখতে হবে কোনো পদার্থের রোধ হচ্ছে ইলেকট্রন প্রবাহের বাধা, অণু- পরমাণুগুলো যত বেশি কাঁপাকাঁপি করে একটা ইলেকট্রন তাদের ভেতর দিয়ে যেতে তত বেশি বাধাগ্রস্ত হয়, কিংবা তার রোধ তত বেশি। ভাপমাত্রা বাড়িয়ে দিলে যেহেতু অণু-পরমাণুগুলো বেশি কাঁপাকাঁপি করে ভাই সব সময়ই তাপমাত্রা বাড়ালে পরিবাহী পদার্থের আপেক্ষিক রোধ বেড়ে যায়। সেজন্য যখন কোনো পদার্থের রোধ বা আপেক্ষিক রোধ প্রকাশ করতে হয় তখন তার জন্য তাপমাত্রাটা নির্দিষ্ট করে বলে দিতে হয়।
স্থির মানের রোধ: বিভিন্ন বর্তনী বা সার্কিটে ব্যবহার করার জন্য নির্দিষ্ট মানের রোধ বা রেজিস্টর ব্যবহার করা হয়। এগুলো নানা আকারের এবং নানা ধরনের হতে পারে। ল্যাবরেটরিতে ব্যবহার করার জন্য যে রোধ ব্যবহার করা হয় সাধারণত তার উপরে বিভিন্ন রঙের ব্যান্ডের মাধ্যমে তার মান প্রকাশ করা হয়। একটি রোধের মান ছাড়াও সেটি কত বৈদ্যুতিক ক্ষমতা সহ্য করতে পারবে সেটিও নির্দিষ্ট করে দেওয়া থাকে।
পরিবর্তী রোধ: মাঝে মাঝেই কোনো ইলেকট্রিক সার্কিটে একটি রোধের প্রয়োজন হয়, যেটির মান প্রয়োজনমতো পরিবর্তন করা যেতে পারে। যে ধরনের রোধের মান একটি নির্দিষ্ট সীমার ভেতরে পরিবর্তন করা যায় সেটিকে পরিবর্তী রোধ বা রিওস্টেট বলে। স্থির রোধের দুটি প্রাঙ্ক থাকে, পরিবর্তী রোখে দুই প্রান্ত ছাড়াও মাঝখানে আরেকটি প্রান্ত থাকে, যেখানে পরিবর্তন করা রোধের মানটুকু পাওয়া যায়।
পরিবাহীতে তাপমাত্রা বাড়ালে রোধ বেড়ে যায় কিন্তু সেমিকন্ডাক্টরের বেলায় ঠিক তার উল্টো ব্যাপারটা ঘটে। সেমিকন্ডাক্টরে তাপমাত্রা বাড়ালে রোধ কমে যায়। তার কারণ কন্ডাক্টরে যেমন বিদ্যুৎ প্রবাহের জন্য মুক্ত ইলেকট্রন রয়েছে সেমিকন্ডাক্টরে তা নেই। সেখানে তাপমাত্রা বাড়ালেই শুধু কিছু ইলেকট্রন বিদ্যুৎ প্রবাহের জন্য পাওয়া যায়। তাই সেখানে তাপমাত্রা বাড়ালে রোধ কমে যায়।
আরও দেখুন...