শুদ্ধাচার চর্চা করি মর্যাদার জীবন গড়ি

নবম শ্রেণি (মাধ্যমিক ২০২৪) - স্বাস্থ্য সুরক্ষা - Wellbeing - | NCTB BOOK
29
29

শুদ্ধাচার চর্চা করি 

মর্যাদার জীবন গড়ি

পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে আহমদ সাহেব শুদ্ধাচার পুরস্কার পেয়েছেন। রিপন কথাটির মানে খুব ভালো বুঝতে পারল না, শুধু বুঝল ভালো কিছু ঘটেছে। তা না হলে পুরস্কার পেত না। চিন্তাটা মাথায় নিয়ে স্কুলে গেল। কয়েকজন সহপাঠী মিলে বোঝার চেষ্টা করল, কিন্তু পরিষ্কার বোঝা গেল না তার পরেও। ওরা ঠিক করল, নির্মল স্যারের কাছ থেকে বিষয়টা জানবে। স্যার ক্লসে এলে রিপনই স্যারের কাছে প্রশ্নটা করল; স্যার শুদ্ধাচার কী? স্যার বললেন, শুদ্ধাচার হলো শুদ্ধ আচার মানে ভালো কাজ অর্থাৎ যে কাজে নিজের, অন্যের, সমাজ ও দেশের ভালো হয়, কল্যাণ হয়। যে কাজগুলোর জন্য কেউ তাঁকে বলেনি; নিজের উদ্যোগে, কারও সাহায্যের আশা না করে নিজে নিজেই দায়িত্ব নিয়ে করেছেন। ওরা এবার বুঝতে পারল; আহমদ সাহেব এমন কিছু ভালো কাজ করেছেন, যার জন্য তিনি সরকারের কাছ থেকে পুরস্কার পেয়েছেন। নির্মল স্যার জানতে চাইলে ওরা নিজেদের প্রশ্নের কারণ খুলে বলল।

স্যার বললেন, আমরা সবাই নিজেদের জীবনে অনেক ভালো কাজ করি; যেমন কেউ হয়তো তার বই বা কলম ফেলে চলে গেল, আমরা তাকে পৌছে দিই, আমাদের দ্বারা কোনো একটা ভুল কাজ হলো, যা কেউ দেখেনি

কিন্তু আমরা নিজেরাই তার দায়িত্ব স্বীকার করি। কিংবা খেলতে গিয়ে আউট হয়ে গেলাম, কেউ খেয়াল করেনি, আমরা নিজেরাই বললাম যে আউট হয়ে গেছি; যা কিছু ক্ষতিকর তা না করা, আবার যা সবার জন্য ভালো দায়িত্ব নিয়ে তা করা, অন্যায়ের প্রতিবাদ করা। বীথি বলল, স্যার এসব ভালো কাজের পুরস্কার পাওয়া যায়, তাই না স্যার? স্যার বললেন, তা পাওয়া যায়, তবে আমরা নিজেরা কিন্তু নিজেদের ভালো কাজের পুরস্কার দিতে পারি। সবাই অবাক; কেমন করে! স্যার বললেন বুঝতে চাও? এটা অনেকটা উপলব্ধি দিয়ে বুঝতে হবে। তাহলে চলো, আমরা কিছু কাজ করে বুঝে নিই কেমন করে সম্ভব। আর কী পুরস্কারই বা দিতে চাই আমরা নিজেদের।

নির্মল স্যার যেভাবে ওদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, আমরাও তেমন করে বুঝার চেষ্টা করব- কীভাবে আমরা শুদ্ধাচার করে নিজেদের পুরস্কৃত করতে পারি। প্রথমেই আমরা নিজেদের একটি শুদ্ধাচারের অভিজ্ঞতা মনে করে নিজেদের জীবনে তার প্রভাব বোঝার চেষ্টা করব। আমরা সবাই মিলে একটি শুদ্ধাচার দেয়াল তৈরি করব। নিজেদের জীবনে কোন কোন ক্ষেত্রে কী ধরনের শুদ্ধাচারের চর্চা করতে চাই তা পরিকল্পনা ও চর্চা করব। এভাবে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাব পুরস্কারের পথে। আমরা ঠিক করব, কী পুরস্কার দিয়ে নিজেদের স্বীকৃতি দিতে চাই। নিজেদের জন্য নিজেরাই কিছু শুদ্ধাচার ঠিক করব, যা করে সমাজের একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হয়ে উঠতে পারি নিজের ইচ্ছায় এবং চেষ্টায়।

শুরুতেই আমরা একটু ভেবে দেখিতো, এমন কোনো ভালো কাজ কি আমি করি? এমন কোনো কাজ, যা কেউ আমাকে তা করতে বলেনি, করতে দেখেওনি এমনকি আমি যে কাজটি করেছি তা খেয়ালও রাখেনি। মনে পড়ে গেল তো? এবার, তাহলে আরেকটি কাজের কথা ভাবি, যে কাজটি একইভাবে আমাকে কেউ করতে বলেনি, দেখেনি কিংবা আমার দিকে খেয়ালও রাখেনি; আমি নিজে থেকেই কাজটি করেছি; কিন্তু এই কাজটি করার পরে আমার মনে হয়েছে নাহ ঠিক হলো না, এমন কাজ না করলেই পারতাম। ভালো লাগছে না কাজটা করার পরে একেবারেই। আমার এই ব্যক্তিগত ঘটনা দুটি নিজের মতো করে খাতায় বা কাগজে লিখি।

আমার ব্যক্তিগত জীবনের দুটি ঘটনা লিখলাম এবং সেগুলোকে পর্যালোচনা করলাম। কী পেলাম? পার্থক্য আছে দুটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার অনুভূতি ও চিন্তায়? চলো ঐ ঘটনা দুটি পর্যালোচনা করি- আমার এখনকার যে অভিজ্ঞতা এবং সে সময়ে ঐ ঘটনার কাজ দুটি আমার নিজের জীবনে যেভাবে প্রভাব ফেলেছে, তা 'আমার অভিজ্ঞতা' ছকে লিখে নিই।

আমার অভিজ্ঞতা

আমার অভিজ্ঞতা

এই ঘটনাগুলোকে আমরা নিজেরাই বিশ্লেষণ করলাম। আমরাই কিন্তু এখানে নিরপেক্ষ বিশ্লেষক; বাইরের কোনো মানুষ কী ভাবল অথবা ভাবল না তা আমাদের চিন্তায় ছিল না। এভাবে আমরা নিজেদের জীবনে এ ঘটনা দুটি যে প্রভাব ফেলেছে, তার ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক সম্পর্কেও সচেতন হলাম। এভাবে আমরা নিজেকে গভীরভাবে জানার সুযোগ পাচ্ছি তাই না? আর তা করতে পারছি নিজেই, অন্য কাউকে প্রয়োজন নেই এর জন্য। আরও জানতে চাই?

চলো তাহলে এবার আমরা একটু সময় নিয়ে ভাবি নিজেদের জীবনের অন্যান্য পরিস্থিতিতে এমন আর যে সকল অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছি। যা অন্য কেউ জানে না এবং আমি জানাতেও চাই না। কিন্তু তা মনে পড়লে আমি নিজের কাছে বিব্রত হই বা ছোট লাগে। কখনো কখনো মনে হয়, এই কথাটা না বললেও পারতাম কিংবা কাজটি হঠাৎ করেই করে ফেললাম। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, ঠিক করিনি। তা হতে পারে শ্রেণিতে, পরিবারে কিংবা অন্য কোথাও। নিজের চিন্তা থেকে এমন আরও কিছু ঘটনা অপর পৃষ্ঠার ছকে নিজের মতো করে সংক্ষেপে লিখে নিই; কারো সঙ্গে শেয়ার করার প্রয়োজন নেই।

যে কাজগুলোতে আমি বিব্রতবোধ করি

এবার আমরা আবার নিজেদের ঘটনায় ফিরে যাই। ভেবে দেখি, সেদিনের ঘটনায় যেভাবে ভেবেছিলাম, অনুভব করেছিলাম আজও কি তেমনই মনে হচ্ছে? আর কী কী ভাবনা হচ্ছে এবং তাতে কেমন অনুভব করছি এবং ঐ ঘটনা এখন ঘটলে কী করতাম তা অপর পৃষ্ঠার 'সে দিনের ঘটনায় আজকের ভাবনা' ছকে লিখে নিই।

আমরা কি বুঝতে পারলাম যে অজান্তেই আমরা এমন কিছু আচরণ করি যা আমাদের মন সায় দেয় না? আমাদের ভেতরে একটি শুদ্ধাচার সত্তা বা অংশ রয়েছে সে কিন্তু সব সময় সজাগ থাকে। এই সত্তাটি আমাদের অভ্যন্তরীণ বিচারকের কাজ করে। যে সব সময় অন্যায় কাজ থেকে আমাকে বিরত রাখতে চায়, রক্ষা করতে চায়। এ জন্যইতো বুঝে বা না বুঝে যখনই এমন কোনো অন্যায় বা ভুল কাজ করে ফেলি, তখন আমাদের সেই বিচারক সত্তাটি মানতে পারে না। ফলে আমরা অশান্তিবোধ করি। কেউ না জানলেও বা না বুঝলেও আমরা নিজের কাছে নিজে ছোট হয়ে যাই। এর কারণ হলো আমরা সব সময় একজন সৎ, দায়িত্বশীল ও ভালো মানুষ হয়ে সবার মাঝে সম্মান নিয়ে বাঁচতে চাই।

বিষয়টি খুব গভীর এবং একাধারে মজার না? আমরা কি নিজের ভেতরের বিচরকের সামনে ছোট হয়ে থাকতে চাই? নাকি মাথা উঁচু করে থাকতে চাই, যাতে নিজেই নিজেকে সম্মান করতে পারি ভালো কাজের জন্য? আমরা যদি নিজেদের ব্যাপারে আরও সচেতন হই, তাহলে কিন্তু এই বোধশক্তিকে কাজে লাগিয়ে আমরা নিজেদের চিন্তায়, কাজে শুদ্ধতার চর্চা করতে পারি। আমাদের কাজ ও চিন্তা যেন সহজ ও স্বচ্ছ হয়, কারও ক্ষতির কারণ না হয়, আমরা নিজেরাই যেন সে ব্যাপারে সজাগ থাকি- এ বিষয়গুলো সম্পর্কে আমাদের শুদ্ধাচার সত্তা সচেতন করে দেয়; যাকে আমরা বিবেকও বলে থাকি।

আমরা নিজের অভিজ্ঞতা বিশ্লেষণ করে ইতোমধ্যে নিজের চিন্তায় ও কাজে শুদ্ধাচারের প্রয়োজনীয়তা তো উপলব্ধি করতে পারলাম। এরমধ্যে আমার কাছে উল্লেখযোগ্য মনে হয়েছে, তা ছবির মধ্যে লিখে নিই।

তাহলে এবার চলো, নিজেদের জায়গা থেকে আমরা কোন কোন ক্ষেত্রে এর চর্চা করতে পারি বলে মনে করি তা খুঁজে দেখি। এর জন্য আমরা নিজেদের মতো করে চিন্তা করব এবং প্রত্যেকে দুটি করে শুদ্ধাচারের ক্ষেত্র বা বিষয়ের উল্লেখ করে একটা ছোট কাগজে লিখব। এরপর সেগুলো দিয়ে সবাই মিলে একটি বুলেটিন বোর্ড তৈরি করব। আমাদের হয়তো অনেক ক্ষেত্রে শুদ্ধাচার করার সুযোগ রয়েছে যা আমরা খেয়াল করিনি সেসব ক্ষেত্র সম্পর্কে জানতে পারব। আর এর মধ্য থেকে নিজেদের সুবিধামতো ক্ষেত্র বেছে নেব, যেখানে আমরা নিজের পরিবর্তন আনতে চাই, শুদ্ধাচার চর্চা করতে চাই।

অনেকেই শুদ্ধাচারকে শুধু টাকাপয়সা বা সম্পদের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে চিন্তা করে থাকেন। আসলে কি তাই? আমরা নিজেদের কাজে কী তেমন দেখলাম? নিজে অন্যায় কাজ না করা, অন্যায় সুবিধা ভোগ না করা এবং অন্যায় কাজে অন্যকে সমর্থন না দেওয়া ও অন্যায় হতে দেখলে সচেতন করা বা যাতে অন্যায় সংঘটিত হতে না পারে, তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া, নিজের সুবিধার জন্য কোনো তথ্য গোপন না করা ও অসত্য তথ্য সংযোজন করা থেকে বিরত থাকা, এসব আচরণই শুদ্ধাচারের অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ আমাদের যেসকল আচরণ নৈতিকতা, কর্তব্যবোধ ও সততা দ্বারা পরিচালিত সেগুলো শুদ্ধাচার।

আমরা তাহলে বুঝতে পারছি শুদ্ধাচার আমাদের সচেতনতা ও চিন্তার দ্বারা প্রভাবিত হলেও তার প্রকাশ করি আমরা আমাদের আচরণ দিয়ে। এবার আমরা দলগত আলোচনার মাধ্যমে শুদ্ধাচারের ক্ষেত্রগুলো বিবেচনা করে কিছু সামঞ্জস্যপূর্ণ আচরণ নির্বাচন করব।

 

শুদ্ধাচারের অভাবে আমরা মানসিক শক্তি ও দৃঢ়তার অভাববোধ করি। অন্য কাউকে বুঝতে দিতে না চাইলেও নিজের মধ্যে একধরনের অস্বস্তি, অশান্তি এমনকি কখনো কখনো অপরাধবোধের জন্ম নেয়। নিজেদের মনে শুদ্ধাচারের যে সন্তুষ্টি ও আনন্দ অনুভূত হয়, তা আমাদের ভালো কাজের অনুপ্রেরণা দেয়। আমরা ভালো ও কল্যাণমূলক কাজ করতে পারি; নিজের প্রতি এমন বিশ্বাস বাড়ায়। নিজের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ বাড়ায়। আমাদের নিজেদের দ্বারা যেন কোনো অকল্যাণ না হয়, এমন দায়িত্ববোধ জন্মায়। নিজের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়, এমন কাজ থেকে বিরত থাকতে আমরা সচেষ্ট হই। অন্যদিকে যখন নিজের চিন্তায়, কথায় কাজে সততা বজায় রাখতে সচেতন থাকি না, তখন নিজেকে সম্মান করতে পারি না। অন্যের অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করতে সাহস পাই না। এতে আমাদের মূল্যবোধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, আত্মমর্যাদাবোধ নষ্ট হয়। যা অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

এবার নিজের মতো করে আমরা দশটি আচরণ বেছে নেব যেগুলো আমি শ্রেণি ও বিদ্যালয় কার্যক্রমে এবং পরিবারে চর্চা করতে চাই। আমরা মনে রাখব, শুদ্ধাচার চর্চা করতে গিয়ে আমরা যেকোনো আচরণ করতে পারি না। অন্যের ভুল আচরণ ধরিয়ে দেওয়ার জন্য আমাদেরও দায়িত্বশীল আচরণ করা জরুরি। তাই যথাযথ আচরণ বেছে নেওয়ার জন্য দৃঢ়তা, শ্রদ্ধাবোধ ও নমনীয়তা সমন্বয়ে আমরা আত্মপ্রত্যয়ী যোগাযোগের দক্ষতা কাজে লাগাব। মনে রাখব, শরীরের বল কিংবা অযাচিত আচরণ নয়; বরং অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াব বুদ্ধি দিয়ে, কৌশল দিয়ে, দায়িত্বশীলতার সঙ্গে। এবার তাহলে অপর পৃষ্ঠায় 'আমি যে শুদ্ধাচারগুলো চর্চা করতে চাই' ছকটি নিজের মতো করে পূরণ করি।

আমরা এই শিখন অভিজ্ঞতার শুরুতে নিজেদের চিন্তা থেকে শ্রেণি ও বিদ্যালয়, পরিবার ও অন্যদের সঙ্গে করা এমন আরও কিছু ঘটনা, যে কাজগুলোতে আমি বিব্রতবোধ করি তা একটি ছক পূরণ করেছিলাম। এবার এই ছকের আচরণগুলোর পরিবর্তে উপরের দশটি আচরণ ব্যবহার করে কী কী পরিবর্তন আনতে চাই, তার একটি পরিকল্পনা তৈরি করি।

শুদ্ধাচার ব্যবহার করে আমার নতুন আচরণ

শ্রেণিতে ও বিদ্যালয়ে

 

 

 

 

 

 

 

পরিবারে

 

 

 

 

 

 

 

 

অন্যদের সঙ্গে

 

 

 

 

 

 

 

আমরা মনে রাখব, নিজের কথা ও আচরণে সামঞ্জস্য বজায় রাখা শুদ্ধাচারের অংশ। নিজে যা বলি ও চাই তা পালন করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তা করতে না পারলে নিজেরা খারাপ থাকার পাশাপাশি অন্যের অন্যায় আচরণ নিয়ে প্রশ্ন করা বা পরিবর্তনের কথা বলার অধিকার হারিয়ে ফেলি। এভাবে ধীরে ধীরে সমাজের বিভিন্ন জায়গায় অসততা ও অমানবিকতা জেঁকে বসে।

শুদ্ধাচার বিষয়টিকে আমরা বিভিন্নভাবে বোঝার চেষ্টা করলাম এবং নিজের আচরণে দৈনন্দিন জীবনে কীভাবে চর্চা করতে চাই তা-ও ঠিক করে নিলাম। এবার আমাদের উপলব্ধি ব্যবহার করে শুদ্ধাচার দেয়াল তৈরি করার পালা। আমাদের প্রত্যেকের শুদ্ধাচারবিষয়ক উপলব্ধি নিয়ে কোনো গল্প, কার্টুন বা ছবি এঁকে, শুদ্ধাচার বিষয়ে কোনো গান, ছড়া, কবিতা, স্লোগান, কৌতুক বা নাটক বা কমিক ইত্যাদি দিয়ে শুদ্ধাচার দেয়াল তৈরি করে সবার সামনে উপস্থাপন করব।

সচেতন হয়ে শুদ্ধাচার চর্চা করে আমরা সবাই মিলেই পারি নিজেদের জীবন, সমাজ ও রাষ্ট্রকে অবক্ষয় থেকে রক্ষা করতে।

এই অভিজ্ঞতার কাজগুলোর মধ্য দিয়ে শুদ্ধতার বিভিন্ন বিষয় শিখলাম। বিভিন্ন সময়ে নিজের অজান্তেই আমরা শুদ্ধচার চর্চা করতে পারি না ফলে তা আমাদের আত্মবিশ্বাসে কীভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, সে বিষয়ে ধারণা লাভ করলাম। এবার এই সচেতনতা ও ধারণাগুলোকে ব্যবহার করে আমাদের নিজেদের জীবনে তা চর্চা করার পালা। এর জন্য আমরা নিজেদের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজগুলো সারা বছর ধরে চর্চা করব ও অপর পৃষ্ঠার 'আমার শুদ্ধাচার চর্চার রেকর্ড' ছকের নির্ধারিত স্থানে লিখে রাখব। শিক্ষকের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় পরপর নিজে থেকে শিক্ষককে দেখিয়ে নেব।

এই অভিজ্ঞতার শুরুতে আমরা বলেছিলাম, নিজেদের শুদ্ধাচার চর্চার জন্য আমরা নিজেদের পুরস্কৃত করব, স্বীকৃতি দেব। এবার আমার শুদ্ধাচার চর্চার রেকর্ড দেখে নিজেকে একেকটি স্টারে একটি করে শব্দ বা বাক্যে প্রশংসা করব – এটাই নিজের পক্ষ থেকে আমাদের জন্য পুরস্কার, স্বীকৃতি।

আমার অগ্রগতি, আমার অর্জন

নিচের ছকটি আমার অভিভাবক ও শিক্ষক পূরণ করবেন। আমি নিজেও পূরণ করব। এর মাধ্যমে আমি আমার অগ্রগতি সম্পর্কে জানব, কোথায় আরও ভালো করার সুযোগ আছে তা খুঁজে বের করব। দলগত কাজের অভিজ্ঞতা থেকে আমার অংশগ্রহণের বিষয়ে সহপাঠীদের মতামত জেনে নিয়ে আমি সংশ্লিষ্ট অংশে লিখে নেব। আমার অভিভাবক বইয়ে সম্পাদিত কাজ দেখে মন্তব্য লিখবেন। অভিভাবক লিখতে না পারলে তাদের মন্তব্য জেনে নিয়ে অন্য কেউ বা আমি লিখে নেব। সমস্ত কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে শিক্ষক আমাকে স্বীকৃতি দেবেন। কী ভালো করেছি, কীভাবে আরও ভালো করতে পারি, সে উপায় জানাবেন।

মূল্যায়ন ছক ১: আমার অংশগ্রহণ ও পাঠ্যপুস্তকে করা কাজ

 

নিজের

 মন্তব্য

সহপাঠীর 

মন্তব্য

অভিভাবকের 

মন্তব্য

শিক্ষকের

 মন্তব্য

স্বতঃস্ফূর্ত উদ্যোগ গ্রহণ

 

    

শ্রদ্ধাশীল আচরণ

 

    

সহযোগিতামূলক 

মনোভাব

 

    

 

পাঠ্যপুস্তকে সম্পাদিত 

কাজের মান

    

মূল্যায়ন ছক ২: আমার জীবনে শুদ্ধাচার চর্চা

শিক্ষার্থীর নামশুদ্ধাচার চর্চা সংক্রান্ত ব্যক্তিগত পরিকল্পনার যথার্থতাপরিকল্পনার আলোকে শুদ্ধাচার চর্চা সংক্রান্ত কাজগুলো পাঠ্য পুস্তক এবং খাতা/ডায়েরি/ জার্নালে লিপিবদ্ধ করাপাঠ্য পুস্তক ডায়েরি/ খাতা/জার্নালে লিপিবদ্ধ করা কাজগুলোতে শুদ্ধাচার চর্চার ধারণাগুলোর সঠিক প্রতিফলন

বর্ণনামূলক ফিডব্যাক

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

   

 

Content added By
Promotion