দীর্ঘ ৫০ বছর পথে-ঘাটে সাপখেলা দেখিয়ে সংসার চালিয়েছে ঝড়ু সর্দার। আত্মীয়- পরিজন হারিয়ে বয়সের ভারে ন্যূজ হয়ে পড়েছে সর্দারজি। পনেরো বছরের মেয়ে স্বর্ণময়ী এখন তার একমাত্র ভরসা। কয়েকদিন ধরে খাবারের ব্যবস্থা হয়নি বলে সাপ নিয়ে স্বর্ণময়ী রাস্তায় বেড়িয়েছে। কিন্তু আজকাল লোকে সাপখেলা দেখে না। এমন অবস্থা দেখে প্রতিবেশি ব্রাহ্মণের ছেলে রাজন স্বর্ণময়ীকে বিয়ে করে তাদের দায়িত্ব নেয়। এ ঘটনায় সমাজ রাজনের পরিবারকে একঘরে করে রাখে।
গৌরী এম.এ পাস মেয়ে। লেখা-পড়া শেষ করতে তার পঁচিশ বছর পেরিয়ে গেল। বিয়ের ব্যাপারে কয়েকবার আলোচনা এবং দেখাশোনা হলেও শেষ পর্যন্ত তার বিয়ে হয়নি। সে বর্তমানে বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদে সমাজের অধিকার বঞ্চিত নারীদের আইনি সহায়তা দিচ্ছে। গৌরীর কাকা একদিন তাকে বিয়ের কথা বললেন। কিন্তু গৌরী তার কাকাকে বিনয়ের সাথে বলে 'নারীর কল্যাণে আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ'।
স্বামী পরিত্যক্তা সাহেলা শহরের অলিগলিতে শাক-সবজি বিক্রি করে জীবন চালায়। অবস্থাসম্পন্ন ঘরে বিয়ে হলেও ভাগ্য তাকে এখানে এনে দাঁড় করিয়েছে। জীবনযুদ্ধে হার না মানা সাহেলা দুই সন্তানের লেখাপড়াও চালিয়ে যাচ্ছে। যখন ঘরের বাইরে থাকে, তখন তার চিন্তার শেষ থাকে না সোম ও মেয়ে ময়নার জন্য। আবার রাতেও নির্বিঘ্নে ঘুমাতে পারেনা গুণ্ডা-বদমাশদের অত্যাচারে।
পলাশ শিমুলতলী গ্রামের শিক্ষিত যুবক। সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ. পাস করে তার গ্রামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করতে চায়। তখন ঐ গ্রামের কথিত পির তোরাব আলী তার অনুসারী সাগর মিয়া, আকাশ ও সবুজ আলীকে নিয়ে স্কুল প্রতিষ্ঠার কাজে বাঁধার সৃষ্টি করে। পলাশ অকুতোভয়, সে তার গ্রামের শিক্ষিত বন্ধু করিম, কবির ও বসিরের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় স্কুল প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। এ ছাড়াও সে তার বন্ধুদের সহযোগিতায় ভণ্ড পির তোরাব আলীকে গ্রাম থেকে বিতারিত করে দেয়।
সৃষ্টিশীল মানুষ কাজল গ্রামের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে। এক পর্যায়ে সে চিন্তা করে গ্রামের মানুষকে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করা দরকার। এ লক্ষ্যে গ্রামে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করে। এ বিষয়ে একটি সর্বজনীন আলোচনা সভা আহ্বান করে। কিন্তু কিছু মানুষের বিরোধিতার কারণে সভার শুরুতেই কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগটি ভেস্তে যায়।
রফিক সাহেব আত্মীয়-বান্ধব মানুষ। শহরে তাঁর একটি বাসা আছে। তাঁর চাচাত ভাই বাদশা মিয়া গরিব মানুষ। তাই বাদশা মিয়াকে রফিক সাহেব বিনা ভাড়ায় তাঁর বাসায় থাকতে দেন। কিন্তু দুই বছর পেরোতে না পেরোতেই বাদশা মিয়া তার জ্যাঠাত ভাইয়ের বাসাটিকে নিজের বাসা বলে দাবি করে। ফলে দুই ভাইয়ের মধ্যে শুরু হয় চরম দ্বন্দ্ব। একদিন বাক-বিতণ্ডার এক পর্যায়ে বাদশা মিয়া তার জ্যাঠাত ভাই রফিক সাহেবের মাথায় রামদা দিয়ে কোপ মারে। এতে রফিক সাহেব ঘটনাস্থলেই নিহত হন।