রুমা বাংলাদেশের রাজধানীর একটি স্বনামধন্য কলেজে পড়ালেখা করছে। ২০২০ সালে করোনা মহামারির কারণে বাংলাদেশে লক-ডাউন চলছিল। বাসার বাইরে যাওয়া, এমনকি বাসার গেইট থেকে বের হওয়াও অনেক এলাকার মানুষের জন্য নিষেধ ছিল। কারিগরি জ্ঞান থাকায় মিস রুমা অনলাইন মার্কেটিং তথা ই-মার্কেটিং কার্যক্রম করার পরিকল্পনা গ্রহণ করলো। বাসায় বসেই ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে রুমা প্রথমে একটি ফেসবুক পেইজ ওপেন করলো। ফেসবুক ফ্রেন্ডদের ছাড়াও সকলের মনোযোগ আকর্ষণের জন্য রুমা তার পণ্যের বিক্রয় বৃদ্ধির জন্য ফেসবুক পেজের 'লাইভ' অপশনে বিভিন্ন পণ্যের গুণাগুণ তুলে ধরলো । শুরুতে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনরা রুমার কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করলেও পরবর্তীতে ফেসবুক লাইভের কারণে অপরিচিত অনেকেই পণ্য ক্রয়ের অর্ডার দিতে লাগলো। এতে করে রুমার পণ্যের বিক্রয় বৃদ্ধির পাশাপাশি রুমার পরিচিতিও বাড়তে থাকল । বর্তমানে রুমা একজন সুপরিচিত মুখ ও বড় মাপের ই-মার্কেটার ।
ওপরের ছবিগুলোর দিকে খেয়াল করো। তোমাদের অনেকেই এই ছবিগুলো সম্পর্কে ধারণা অর্জন করলেও এগুলোর ব্যবহারে অভ্যস্ত নও। অথচ একসময় এগুলোই ছিল সবচেয়ে আধুনিক ও স্মার্ট মাধ্যম। তখন বর্তমান সময়ের ইন্টারনেট লাইন ছিল না, এন্ড্রয়েড মোবাইল বা ল্যাপটপ ছিল না। তথাপিও একদেশের মানুষ ওপরের মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে বিশ্বের অন্যান্য দেশের খবর জানার সুযোগ পেত, নতুন পণ্যের খবর পেত। আর এসব মিডিয়া তথা রেডিও, টেলিভিশন, টেপ রেকর্ডার, সংবাদপত্র, বিলবোর্ড ইত্যাদির মাধ্যমে অফলাইনে যে বাজারজাতকরণ কার্যক্রম পরিচালিত হতো তাকেই ট্রেডিশনাল মার্কেটিং বলে।
অফলাইন চ্যানেল ব্যবহার করে অভীষ্ট ক্রেতাদের নিকট পণ্যের তথ্য পৌঁছানোর প্রক্রিয়াকে ট্রেডিশনাল মার্কেটিং বলে। অন্যভাবে বলতে গেলে, যে প্রক্রিয়ায় বাজারজাতকারীরা প্রিন্ট মিডিয়া ও ব্রডকাস্ট মিডিয়া ব্যবহার করে ক্রেতাদের নিকট পৌঁছানোর চেষ্টা করে তাকে ট্রেডিশনাল মার্কেটিং বলে। সর্বোপরি, ট্রেডিশনাল মার্কেটিং হলো এমন ধরনের কার্যক্রম যেখানে সংবাদপত্র, টেলিভিশন, রেডিও ইত্যাদির মাধ্যমে ক্রেতাদেরকে বিভিন্ন পণ্য বা সেবা বিষয়ে অবগত করা হয়।
জেনে রাখো ■ ট্রেডিশনাল মার্কেটিং প্রসঙ্গে Hitesh Bhasin বলেন, "Traditional marketing is a type of marketing where marketers use traditional platforms such as print media and broadcast media etc." (অর্থাৎ, ট্রেডিশনাল মার্কেটিং হলো এমন এক ধরনের মার্কেটিং যেখানে মার্কেটারগণ বিভিন্ন প্রথাগত প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করেন। যেমন: প্রিন্ট মিডিয়া, ব্রডকাস্ট মিডিয়া।) |
---|
ওপরের আলোচনা থেকে বলা যায় যে, মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে সম্পূর্ণভাবে অফলাইনে যে মার্কেটিং কার্যক্রম পরিচালনা হয়ে থাকে তাকেই ট্রেডিশনাল মার্কেটিং বলে।
উল্লিখিত লোগোগুলোর দিকে মনোযোগ সহকারে খেয়াল করো। সবগুলোর সাথেই তোমরা পরিচিত। ইন্টারনেট জগতে ব্যবহৃত জনপ্রিয় লোগো এগুলো ।
বর্তমান যুগ হলো ইন্টারনেটের যুগ। পুরো পৃথিবী এখন তোমার হাতের মুঠোয়। ঘরে বসেই অনলাইনে বা ইলেকট্রনিক উপায়ে তুমি পৃথিবীর সব খবর জানতে পারছো। এমনকি মোবাইলে ইন্টারনেট ডেটা কিনে যখন-তখন, যেখানে-সেখানে তুমি ইন্টারনেট অন করে কোথায় কী হচ্ছে তা জানার সুযোগ পাচ্ছো।
আর এ কথাগুলো বলে তোমাকে বোঝানোর চেষ্টা করা হলো তুমি কোন সময়ে বসবাস করছো, বা কোন সময়ে তুমি পৃথিবীতে এসেছো তা অনুধাবনের জন্য । এবার চলো আমরা জেনে নিই ই-মার্কেটিং কী?
সহজ ভাষায় ই-মার্কেটিং (বা ইলেকট্রনিক মার্কেটিং) বলতে ইন্টারনেটের মাধ্যমে পরিচালিত মার্কেটিংকে বোঝায়। তাই বলা যায়, “E-marketing refers to the marketing conducted over the internet.”
ই-মার্কেটিং আবার ইন্টারনেট মার্কেটিং, ওয়েব মার্কেটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং বা অনলাইন মার্কেটিং হিসেবেও পরিচিত। স্পষ্ট করে বলতে গেলে, ই-মার্কেটিং হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যে প্রক্রিয়ায় ইন্টারনেট ব্যবহার করে স্মার্টফোন, ডিভাইস, সোশ্যাল মিডিয়া ইত্যাদির মাধ্যমে অভীষ্ট ক্রেতাদের নিকট পণ্য বা সেবা পৌঁছানোর চেষ্টা করা হয়।
বর্তমান সময়ে ই-মার্কেটিং এর কার্যকারিতা এত বেশি যে, বাজারজাতকারীগণ দ্রুত এবং সহজ উপায়ে বিশ্বব্যাপী ক্রেতাদের নিকট পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। এজন্য ফেসবুক মার্কেটিং থেকে শুরু করে ইউটিউব মার্কেটিং, টুইটার মার্কেটিং ইত্যাদি আজ সকলের কাছে জনপ্রিয় মাধ্যম।
আরও দেখুন...