ট্রেডিশনাল মার্কেটিং-এর প্রধান চ্যানেলগুলো হলো— টেলিমার্কেটিং, ব্রডকাস্ট, সরাসরি মেইল ও প্রিন্ট মিডিয়া। নিচে ট্রেডিশনাল মার্কেটিং-এর সুবিধা ও সীমাবদ্ধতা সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো :
১. স্থানীয় দর্শকদের নিকট পৌঁছানো (Reaching local audience): স্থানীয় লোকদের কাছে পণ্য পৌঁছানোর ক্ষেত্রে ট্রেডিশনাল মার্কেটিং কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম। এক্ষেত্রে রেডিও-টেলিভিশন হলো সবচেয়ে উৎকৃষ্ট মাধ্যম। এর মাধ্যমে দ্রুত ক্রেতাদের কাছে পৌঁছানো যায় অর্থাৎ, ক্রেতাদেরকে পণ্য বা সেবা সম্পর্কে জানানো যায়।
২. পরিচিত মার্কেটিং এর ধরন (Familiar marketing mode ) : বর্তমানে ব্যবহৃত খুব পরিচিত একটি মার্কেটিং মোড বা ধরন হলো টেলিভিশন। বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে টেলিভিশন খুব কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। আর টেলিভিশনের দর্শক সাধারণত বেশি হয়ে থাকে। যেকোনো পণ্য বা সেবা সম্পর্কে ক্রেতাদের নিকট ধারণা পৌঁছে দিতে টেলিভিশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৩. বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি (Builds credibility): অনলাইন বিজ্ঞাপনের চেয়ে টিভিতে দেখে বা সরাসরি পণ্য সম্পর্কে জানতে পারলে ক্রেতাদের বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়। যেকোনো ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের চেয়ে প্রিন্ট মিডিয়ার প্রতি গ্রাহকদের বিশ্বাসযোগ্যতা বেশি হয়ে থাকে।
৪. ডাইরেক্ট ই-মেইল (Direct e-mail): এ পদ্ধতিতে যেকোনো কিছুর অফার প্রদানে ক্রেতাদেরকে সরাসরি ই-মেইল করে জানানো হয়। এতে করে ক্রেতারা নিজেদেরকে গুরুত্বপূর্ণভাবে এবং অফারকৃত কোম্পানির প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে।
৫. ঝুঁকি কম (Less risk): ট্রেডিশনাল মার্কেটিং-এ জালিয়াতি ও প্রতারণার মাত্রা ততটা বেশি নয়। তাই এক্ষেত্রে ঝুঁকির পারিমাণও কম।
৬. উচ্চ সফলতার হার (High success rate) : ট্রেডিশনাল মার্কেটিং-এ উচ্চ সফলতার হার অত্যধিক। কেননা এটি ইতোমধ্যে পরীক্ষিত পদ্ধতি হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। অনেক ব্যবসায়ী ইতোমধ্যে এ পদ্ধতি ব্যবহার করে সফল হয়েছেন ।
৭. নতুন দর্শক তৈরি (Creating new audience ) : ট্রেডিশনাল মার্কেটিং- এ বিভিন্ন বিলবোর্ড, রেডিও, টেলিভিশন, সরাসরি মেইল ইত্যাদি মাধ্যমে নতুন নতুন দর্শকদের মনোযোগ আকর্ষণ করা সম্ভব।
১. অধিক ব্যয়বহুল (More expensive ) : ট্রেডিশনাল মার্কেটিং-এর সবচেয়ে বড় সমস্যা বা সীমাবদ্ধতা হলো অধিক খরচ। টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন দিতে অনেক টাকা খরচ হয়ে থাকে। যেমন: টেলিভিশনে কোনো খবরের পূর্বে ৬০ সেকেন্ডের একটি বিজ্ঞাপন বাবদ খরচ হয় প্রায় ৪২,০০০ টাকা।
২. সীমিত সংখ্যক দর্শক (Limited number of audience): ট্রেডিশনাল মার্কেটিং কার্যক্রম বিশ্বব্যাপী সম্ভব নয়। তাই ক্রেতা ও দর্শকের সংখ্যাও কম।
৩. কর্মসম্পাদন পরিমাপযোগ্য নয় (Performance is not measurable ) : ট্রেডিশনাল মার্কেটিং-এ বিভিন্ন বিষয়ের ডেটা কালেকশন করা অত্যন্ত কঠিন। তাই এই মার্কেটিং প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন মাধ্যমে দেওয়া বিজ্ঞাপনের কার্যকারিতা পরিমাপ করা সম্ভব নয়।
৪. ক্রেতাকেন্দ্রিকতা সম্ভব নয় (Customization is not possible ) : ট্রেডিশনাল মার্কেটিং-এ ক্রেতাদের চাহিদা ও প্রয়োজন সম্পর্কে তেমন জানার সুযোগ নেই। টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন দেখেই একজন দর্শক আসলেই বুঝতে পারবে না যে পণ্যটি কেমন। তাছাড়া ট্রেডিশনাল মার্কেটিং ক্রেতাদের জন্য আলাদা আলাদা পণ্য উৎপাদন ও প্যাকেজিং করা সম্ভব নয়।
৫. কম তথ্যপূর্ণ মাধ্যম ( Less informative medium) : ট্রেডিশনাল মার্কেটিং-এর আরেকটি সীমাবদ্ধতা হলো কম তথ্যপূর্ণ মাধ্যম। যেমন- টেলিভিশনের অল্প সময়ের বিজ্ঞাপনে পণ্যের ধরন, রং, মূল্য, দরকষাকষির সুযোগ সবকিছু তুলে ধরা সম্ভব নয়। তাই ক্রেতারা পণ্য সম্পর্কে যথাযথ ধারণা পায় না ।
৬. অনাগ্রহ (Dirinterest) : বর্তমান ডিজিটাল যুগে এসে ট্রেডিশনাল মার্কেটিং-এর প্রতি মানুষ দিন দিন আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। এখন অনেকেই আর টিভির সামনে খুব একটা বসেন না। সবকিছু এখন তাদের হাতের মুঠোয়। টেলিভিশন অনুষ্ঠানের মাঝে বার বার বিজ্ঞাপন দেখতে হয় বলে এখন কেউ একটি নাটক দেখতে চাইলেও ইউটিউব থেকে দেখে।
আরও দেখুন...