সজল জীবনে অনেক আত্মপ্রবঞ্চনা করে করে অশেষ যন্ত্রণা ভোগ করেছে। কত রাত্রি অনুশোচনায় তার ঘুম হয়নি। এখন তার আত্মপোলব্ধি হয়েছে। সে ভাবে আমি যা ভাল বুঝি, যা সত্য বুঝি, শুধু সেটুকু প্রকাশ করব। তাতে লোকে যতই নিন্দা করুক, আমি আমার কাছে ছোট হয়ে থাকব না, আত্মপ্রবঞ্চনা করে আর আত্মযন্ত্রণা ভোগ করব না।
কাজী নজরুল ইসলাম তার ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে অসাম্প্রদায়িক চেতনার কথা তুলে ধরে ‘মানুষ-ধমর্কেই সবচেয়ে বড় ধর্ম’ বলেছে।
ভারতের স্বাধীনতা আর মুক্তির পথে সবচেয়ে বড় বাধা ছিল হিন্দু-মুসলিমের বিরোধ। এ সাম্প্রদায়িক বিভেদ না থাকলে আরও আগে দেশ মুক্ত হতো। প্রত্যেকে যার যার ধর্মকে বড় ভেবেছে; কিন্তু অন্যকে সম্মান করতে শেখেনি। ফলে মানবিকচেতনাই যে সবচেয়ে বড় তার কেউ অনুভব করতে পারেনি। মানবিকচেতনাকে মূল্য দিতে পারলেই প্রকৃত ধার্মিক হওয়া যায়। এভাবেই ‘মানুষ-ধমর্কেই সবচেয়ে বড় ধর্ম’ মানতে পারলে জাতিগত ঐক্য-সংহতি প্রতিষ্ঠিত হয়।