রাতুল আদর্শগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে রাতুল ভগ্নাংশ সম্পর্কে জেনেছিল, তাই যখনই সম্ভব হয়, রাতুল ভগ্নাংশের ধারণা ব্যবহার করে হিসাব করে। কারণ ভগ্নাংশের মাধ্যমে আমরা খুব সহজেই নিজেদের মধ্যে জিনিস ভাগাভাগি করে নিতে পারি আবার পূর্ণ সংখ্যায় প্রকাশ করা যায় না এমন বিষয়গুলো বোঝার ক্ষেত্রে ভগ্নাংশ আমাদের সাহায্য করে। যেমন সেদিন রাতুলের মা পিঠা তৈরি করেছিলেন, সেখানে পাঁচটি পিঠা ছিল। রাতুল ঐ পাঁচটি পিঠা তার বোন রিয়ার সাথে ভাগ করে নিল। রিয়া তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। প্রথমে রাতুল নিজে দুইটি পিঠা নিল এবং রিয়াকেও দুইটি পিঠা দিল। এরপর ৫নং পিঠাটি রাতুল দুইটি সমান ভাগে ভাগ করে নিল। তারপর অর্ধেক পিঠা রিয়াকে দিল এবং বাকি অর্ধেক নিজের জন্য রাখল। রাতুল আর রিয়ার এই পিঠার ভাগাভাগি দেখে মা খুব খুশি হলেন।
চিন্তা করে বলো তো রাতুলের মতো কোন কোন ক্ষেত্রে তোমরা এভাবে ভগ্নাংশ ব্যবহার করেছ?
রাতুল আর রিয়া ভাগ করে যে পিঠা পেল তা যদি সংখ্যায় লিখে প্রকাশ করি কেমন হবে বলো তো? রাতুল জানত যে একটি পিঠার অর্ধেককে আমরা ১২ লিখতে পারি। এরপর পিঠা খাওয়ার সময় রাতুল রিয়াকে জিজ্ঞেস করল এখন যদি এই অর্ধেক পিঠাকে আবার সমান দুই ভাগ করি (ছবি ১) তাহলে তা একটি পূর্ণ পিঠার কত অংশ হবে?
রাতুলের প্রশ্ন শুনে রিয়া তার অর্ধেক পিঠাটিকে আবার সমান দুই ভাগে ভাগ করল এবং রাতুলের পিঠার পাশে রেখে দিল। দেখা গেল যে চারটি সমান ভাগ একসাথে করলে একটি।
সম্পূর্ণ পিঠা পাওয়া যায় (ছবি ২)। সুতরাং আমরা বলতে পারি, এই প্রতিটি অংশ ঐ পিঠাটির চার ভাগের এক ভাগ অথবা ১৪।আবার, এই চার ভাগ একসাথে করলে ৪৪ অথবা ১টি পূর্ণ পিঠা পাওয়া যায়।
রিয়া আর রাতুল পিঠা খেতে খেতে আরও আলোচনা করতে থাকল। আমরা যদি একটি পিঠার চারটি সমান ভাগের তিন ভাগ নেই তাহলে আমরা বলব ৩৪ (ছবি ৩)।
আবার যদি আমরা পিঠাকে ছয়টি সমান ভাগে ভাগ করে তিন ভাগ নেই তখন হবে ৩৬ (ছবি ৪)।
রিয়া তখন চিন্তা করে দেখল ভগ্নাংশ (Fraction) হলো এমন এক ধরনের সংখ্যা যা একটি পূর্ণ বস্তুর (Whole) (যেমন : এক্ষেত্রে পিঠা) অংশকে (Part) প্রকাশ করতে আমাদের সাহায্য করে। রাতুল খেয়াল করে দেখল যে, ভগ্নাংশে প্রকাশ করার জন্য পূর্ণ বস্তুর অংশগুলোকে সমান ভাগে ভাগ (equal) করা হয় যেমন: তারা পিঠাটিকে সমান দুই ভাগে এবং পরে সমান চার ভাগে ভাগ করেছিল।
এখন মনে করো, তুমি আর তোমার ৫ জন বন্ধু মিলে বাজার থেকে একই আকারের তিনটি তরমুজ কিনলে। এরপর ছবির মতো করে তোমাদের কেনা তরমুজগুলো কাটা হলো।
এবার তোমার নাম এবং তোমার ৫ জন বন্ধুর নাম লেখো এবং একটি তরমুজকে সম্পূর্ণ বা ১ অংশ বিবেচনা করে নিচের ছবিতে কে কত অংশ তরমুজ পেল তা প্রতিটি ঘরে ভগ্নাংশ আকারে লেখো।
এখন তোমাকে যদি প্রশ্ন করা হয় তুমি ও তোমার ৫ বন্ধুর মধ্যে কোন বন্ধুকে বেশি তরমুজ দেয়া হলো? এই প্রশ্নের উত্তর খুব সহজেই তুমি খুঁজে বের করতে পারবে যদি নিচের খেলাটি নিয়ম মেনে খেলতে পারো।
খেলার নাম: ভগ্নাংশের তুলনাপ্রয়োজনীয় উপকরণ : ছক-কাটা কাগজ, রঙ পেন্সিল। নির্দেশনা : খেলার ধাপগুলো বুঝে নিতে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকের সহায়তা নিতে পারো। যদি তুমি বাসায় খেলাটি খেলতে চাও বাবা/মা/বড় ভাইবোনের কাছ থেকেও নিয়মটি বুঝে নিতে পারো। খেলার ধাপসমূহ : 🔸ছক কাটা কাগজ থেকে দুইটি স্ট্রিপ কেটে নাও। তারপর একটি স্ট্রিপকে সমান তিন ভাগে ভাগ করে দুই ভাগ রঙ করবে। অর্থাৎ, ২৩ অংশ রঙ করবে। একইভাবে, আরেকটি স্ট্রিপ সমান চার ভাগ করে,তিন ভাগ খাতায় বসিয়ে রঙ করে ফেলবে। অর্থাৎ, ৩৪ অংশ রঙ করবে (নিচের ছবি লক্ষ করো)। 🔸এবার রঙ করা অংশ দুইটি তুলনা করো- কোনটি বড় কোনটি ছোট। দেখবে যে তুলনা করতে পারছ না। কারণ, দুইটি স্ট্রিপ্রেই ভাগ করা অংশ এবং রঙ করা অংশ আলাদা। 🔸এবার তাহলে সমান সাইজের দুইটি আয়তাকার ছক আঁকো। ছক দুইটিকে ছক ক ও ছক খ এই দুইটি নাম দাও। প্রয়োজনে শিক্ষকের নির্দেশনা অনুসরণ করো। এরপর, ছক “ক” কে লম্বালম্বিভাবে তিন ভাগ করে তার দুই ভাগ রঙ করবে (অর্থাৎ, ২৩ অংশ)। ছক “খ” তে আড়াআড়িভাবে চারটি দাগ দিয়ে তার তিন ভাগ রঙ করবে (অর্থাৎ, ৩৪ অংশ)। 🔸এর পরের ধাপে ছক- ক এর দাগগুলোর সমান করে ছক- খ তে আঁকো এবং ছক- খ এর দাগগুলোর সমান করে ছক- ক তে আঁকো (পরের ছবি লক্ষ করো)। তোমরা পর্যবেক্ষণ করবে যে দুইটি ছকের ঘর সংখ্যা একই। যেমন: উপরিউক্ত চিত্রের ভাগসংখ্যা হয়ে যাবে ১২টি (নিচের ছবি)। মোট ঘর সংখ্যাকে হর বলতে পারি এবং এই সংখ্যাটিকে ছকের উপরে লেখা ভগ্নাংশের হরের স্থানে লিখে ফেলো। 🔸এবার তোমরা তোমাদের রঙ করা অংশের ঘর সংখ্যা গুনে বের করো। তোমরা গুনে যেই সংখ্যাটা পাবে সেই সংখ্যাটাকে উপরে লিখো। যেমন: নিচের ছবিতে ক ছকে রঙ করা অংশ ৮টি এবং খ ছকে রঙ করা অংশ ৯টি। এই সংখ্যা দুইটি, ভগ্নাংশ দুইটির লব। এবার নিচের ছবির মতো করে লেখো। |
🔹দুইটি ভগ্নাংশের ভাগ সংখ্যা (হর) একই। তাহলে, শুধুমাত্র রঙ করা অংশ (লব) দেখেই বলে দেয়া যাচ্ছে কোন ভগ্নাংশটি বড় হবে। এখানে ৯≥৮, সুতরাং ৯১২≥৮১২ হবে। 🔹এরকম আরও কয়েকটি উদাহরণ অনুশীলন করো। তোমার কাজটি শিক্ষককে দেখিয়ে নাও। |
উপরের আলোচনা থেকে আগের প্রশ্নের উত্তর কী পেলে?ছবি-৫ আরেকবার দেখো এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।প্রশ্ন- ১ : বন্ধু- ১ এবং বন্ধু- ৪ এর তরমুজের অংশ তুলনা করে বলো, কে বেশি অংশ পেলো? উত্তর : প্রশ্ন- ২ : বন্ধু- ২ এবং বন্ধু- ৫ এর তরমুজের অংশ তুলনা করে বলো, কে বেশি অংশ পেলো? উত্তর : প্রশ্ন- ৩ : বন্ধু- ১ এবং বন্ধু- ৫ এর তরমুজের অংশ তুলনা করে বলো, কে বেশি অংশ পেলো? উত্তর : |
এবার একটি মজার বিষয় খেয়াল করো, প্রশ্ন-১ ও প্রশ্ন-২ নং এ তোমরা খুব সহজেই উত্তর খুঁজে বের করতে পারলে, কিন্তু প্রশ্ন-৩ এর ক্ষেত্রে তোমরা একই নিয়মে উত্তর খুঁজে পেলে না, তাই না? প্রশ্ন-৩ এর ক্ষেত্রে কী পার্থক্য পেয়েছিলে চিন্তা করো।
পার্থক্যটি হলো এখানে প্রতিটি ভগ্নাংশের হর আলাদা। এদের মধ্যে তুলনা করতে হলে প্রতিটি ভগ্নাংশের হরকে একই হরে পরিণত করতে হবে। একই হরে পরিণত করতে হলে আমাদের প্রথমে ঐ দুইটি হরের লসাগু বের করতে হবে। কীভাবে লসাগু, হিসাব করতে হয় তা তোমরা আগের শ্রেণিতে জেনে এসেছো।
উদাহরণস্বরূপ, ২৩এবং ৬১০ভগ্নাংশ দুইটির হর আলাদা। এই দুইটির মধ্যে কোনটি বড় আমরা যদি বের করতে চাই তাহলে প্রথমে আমাদের ৩ ও ১০ এর লসাগু বের করতে হবে। ৩ ও ১০ এর লসাগু হলো ৩০। তাহলে প্রতিটি ভগ্নাংশের হরকে ৩০ বানাতে হবে। ২৩ভগ্নাংশের হরকে ৩০ বানানোর জন্য এর লব ও হরকে ১০ দ্বারা গুণ করতে হবে। তাহলে ২৩, ২০৩০ পরিণত হবে। একইভাবে, হবে ১৮৩০ । এবার তুলনা করে দেখা যাচ্ছে যে, ২০৩০এবং ১৮৩০ এর মধ্যে ২০৩০ ভগ্নাংশটি বড়। সুতরাং, ২৩এবং ৬১০ ভগ্নাংশ দুইটির মধ্যে ২৩ ভগ্নাংশটি বড়।
অপ্রকৃত ভগ্নাংশ ও মিশ্র ভগ্নাংশ |
এবার আমরা রাতুলের কাছে ফিরে যাই। রাতুল পরের দিন স্কুলের টিফিনে মায়ের তৈরি ৫টি পিঠা নিয়ে গেল। টিফিনের সময় তার বন্ধু মিলি, হারুন, তানিয়ার সাথে পিঠা ভাগ করে খাবে। কিন্তু এই ৫টি পিঠাকে ৪ জনের মধ্যে কীভাবে ভাগ করবে – রাতুল ভাবতে লাগল। তখন তানিয়া বলল, এখানে ৫টি পিঠা আছে এবং আমরা ৪ জন এর মধ্যে ভাগ করব, তাহলে আমরা প্রত্যেকে ১টি করে পিঠা নিব এবং সর্বশেষ পিঠাটি ৪ ভাগ করে প্রত্যেকে ১ ভাগ করে নিব। তাহলে তারা প্রত্যেকে পিঠার কত অংশ পাবে সেটা কি যোগ করে বের করা সম্ভব? তোমরা পঞ্চম শ্রেণিতে ভগ্নাংশের যোগ ও বিয়োগ সম্পর্কে জেনেছ। সেই অনুসারে নিচের যোগটি করে খালি ঘরে লেখো।
উপরের আলোচনা থেকে আমরা বুঝতে পারলাম যে রাতুল ও তার বন্ধুরা প্রত্যেকে পিঠার ৫৪ অংশ পাবে। এখানে একটি বিষয় খেয়াল করে দেখো, ৫৪ভগ্নাংশটির লব হরের চেয়ে বড়। এ ধরনের ভগ্নাংশ অপ্রকৃত ভগ্নাংশ (Improper fraction) নামে পরিচিত। আবার ৫৪ ভগ্নাংশটিকে আমরা ভেঙ্গে ১১৪ আকারে লিখতে পারি, যেখানে ভগ্নাংশটিকে একটি পূর্ণ সংখ্যা ও একটি ভগ্নাংশের সমন্বয়ে লেখা হয়েছে। এরূপ, একটি পূর্ণ সংখ্যা এবং একটি ভগ্নাংশ মিলে যে ভগ্নাংশ পাওয়া যায় তা হলো মিশ্র ভগ্নাংশ (Mixed fraction)। ১১৪ভগ্নাংশটি একটি মিশ্র ভগ্নাংশ । সুতরাং আমরা বুঝতে পারলাম যে মিশ্র ভগ্নাংশ আলাদা কিছু নয়। আবার ভগ্নাংশটিকে আমরা ভেঙ্গে ১ আকারে লিখতে পারি, যেখানে ভগ্নাংশটিকে 8 একটি পূর্ণ সংখ্যা ও একটি ভগ্নাংশের সমন্বয়ে লেখা হয়েছে। এরূপ, একটি পূর্ণ সংখ্যা এবং একটি ভগ্নাংশ মিলে যে ভগ্নাংশ পাওয়া যায় তা হলো মিশ্র ভগ্নাংশ (Mixed fraction)। ১ - ভগ্নাংশটি একটি মিশ্র ভগ্নাংশ । সুতরাং আমরা বুঝতে পারলাম যে 8 মিশ্র ভগ্নাংশ আলাদা কিছু নয়। |
অপ্রকৃত ভগ্নাংশকে ( ৫৪ ) আমরা মিশ্র ভগ্নাংশ আকারে (১১৪) প্রকাশ করতে পারি।
এবার চলো মিশ্র ভগ্নাংশ থেকে কীভাবে অপ্রকৃত ভগ্নাংশ পাওয়া যায় তা দেখে নেই।
১২৫=৫×১+২৫ =৫+২৫=৭৫
👤 একক কাজ : নিচের সমস্যাগুলো তোমার খাতায় করে শিক্ষকের কাছে জমা দাও । |
---|
১। নিচের রঙ করা অংশগুলো ভগ্নাংশ আকারে লিখে প্রকাশ করো।
২। ছবির পাশে দেয়া ভগ্নাংশগুলো প্রকাশের জন্য ছবির নির্দিষ্ট অংশ রঙ করো। একটি করে দেখানো হলো।
৩। নিচের ৪ জোড়া ভগ্নাংশের মধ্যে কোনটি বড় এবং কোনটি ছোট খুঁজে বের করো।
৪) নিচের মিশ্র ভগ্নাংশগুলোকে কাগজে গ্রিড এঁকে অপ্রকৃত ভগ্নাংশে প্রকাশ করো।
ক) ২৩৭
খ) ৫৫৮
গ) ৩২৫
চলো গ্রিডের সাহায্যে ভগ্নাংশের যোগ ও বিয়োগের কৌশল জেনে নেই।
একক কর্মপত্র : কর্মপত্রটি সম্পন্ন করো এবং পরবর্তী দিনে শিক্ষকের কাছে জমা দাও। |
---|
গ্রিড এঁকে নির্দিষ্ট অংশ রঙ করে ভগ্নাংশের যোগ অথবা বিয়োগের ফলাফল খাতায় লেখো।
ক) ১৪+১৪
খ) ১৫+২৫
গ) ৪৫+৬৫
ঘ) ৩৭+১৩
ঙ) ৫৭-২৭
চ) ১৫-১১০
ছ) ৪৫-২৩
জ) ৫৬-১৪
এক বক্স আইসক্রিম তৈরিতে ২৭ লিটার দুধ প্রয়োজন হয়। এরকম ৩ বক্স আইসক্রিম তৈরিতে কত লিটার দুধ প্রয়োজন? |
---|
মোট পরিমাণ বের করার জন্য আমরা নিচের বাক্যটি ব্যবহার করতে পারি।
এখানে,
চলো হিসাব করি,
২৭×৩=২×৩৭=৬৭ লিটার।
এবার চলো ৫১২×৬ কীভাবে হিসাব করা যায় চিন্তা করি।
নিচের গুণগুলো তুলনা ও ব্যাখ্যা করি।
👤 একক কাজ: খাতায় গ্রিড এঁকে নিচের সমস্যাগুলো সমাধান করো এবং শিক্ষককে দেখাও। |
---|
ক্রমিক নম্বর | সমস্যা | সমাধান |
---|---|---|
১। | একটি বোর্ডের ৭১৫ বর্গমিটার রঙিন করতে ১ ডেসিলিটার রং লাগে। ৫ ডেসিলিটার রং দ্বারা কত বর্গমিটার রঙিন করা যাবে? | |
২। | এক বাটি পায়েস তৈরি করতে ৩৮ কিলোগ্রাম চিনি লাগে। এরূপ ১৬ বাটি পায়েস তৈরি করতে কত কিলোগ্রাম চিনি লাগবে? | |
৩। | তুমি তোমার অভিভাবকের কাছে জেনে নাও, তোমার পরিবারে প্রতিদিন কত কেজি চাল লাগে। সে হিসেবে এক মাসের চালের পরিমাণ হিসাব করো। | |
৪। | ১ মিটার লম্বা একটি ধাতব নলের ওজন ৫৩ কেজি। এরূপ ৬ মিটার লম্বা ধাতব নলের ওজন কত হবে? | |
৫। | তোমার ক্লাসে কতজন গণিত, কতজন ইংরেজি এবং কতজন গণিত ও ইংরেজি উভয় বিষয়ই পছন্দ করে, সেই তথ্যগুলো জেনে নাও। তারপর প্রতিটি তথ্য তোমাদের শ্রেণির মোট শিক্ষার্থীর কত অংশ নির্ণয় করো। |
তোমরা চিন্তা করে বলো তো ২৫×৩ এর অর্থ কী? এ ধরনের গুণ অঙ্ক আমরা কীভাবে করতে পারি?
তোমাদের নিশ্চয়ই ‘বার বার যোগ করে গুণফল বের করার পদ্ধতি' এর কথা মনে আছে। তাই না?
আচ্ছা চলো ২৫×৩ এর অর্থ খোঁজার চেষ্টা করি,
২৫×৩ এর অর্থ হচ্ছে ২৫ কে ৩ বার নেয়া। অর্থাৎ ২৫ কে ৩ বার যোগ করলেই আমরা গুণফল পেয়ে যাব।
অর্থাৎ ২৫+২৫+২৫=২×৩৫=৬৫
এবার চলো অন্যভাবে সমস্যাটির সত্যতা যাচাই করি :
কাগজের স্ট্রিপ কিংবা বৃত্তাকার কাগজ ব্যবহার করে এই সমস্যাটির সমাধান করার চেষ্টা করি। তোমরা সবাই নিজেদের মতো করে কাগজের স্ট্রিপ নিয়ে এই কাজটি করার চেষ্টা করবে।
১টি স্ট্রিপ নিয়ে প্রত্যেকটিকে প্রথমে সমান ৫ ভাগ করে ২টি ভাগ নাও। তাহলে, এই ২ ভাগ হবে ২৫সমান। তারপর, ২৫ এর ৩টি গুচ্ছ তৈরি করো [২টি ১৫ এর টুকরা নিয়ে ২৫এর একটি গুচ্ছ তৈরি হবে, এরকম মোট ৩টি গুচ্ছ হবে]। ১৫ এর স্ট্রিপ ব্যবহার করলে সমাধানটি দেখতে নিচের চিত্রের মতো হবে।
এবার, টুকরোগুলো গুণে দেখো, মোট ৬টি ১৫এর টুকরা আছে বা ২৫এর ৩টি গুচ্ছ আছে। অর্থাৎ ২৫×৩=৬৫। |
আমরা চাইলে, গুণফলটিকে নিচের মতো করেও লিখতে পারি -
২৫=১৫ এর ২ একক |
তাহলে, ২৫×৩=১৫ এর (২ × ৩) একক = ১৫এর ৬ একক = ৬৫ একক
তাহলে আমরা বলতে পারি, ভগ্নাংশের সাথে পূর্ণসংখ্যার গুণ করার সময় মূলত ভগ্নাংশের লবের সাথে পূর্ণসংখ্যার গুণ করলেই গুণফল পাওয়া যায়, হরের কোনো পরিবর্তন হয় না। |
👤 একক কাজ : খাতায় গ্রিড এঁকে নিচের সমস্যাগুলো সমাধান করো এবং শিক্ষককে দেখাও। ক)২৭×৭ খ) ৩৫×১৫ গ) ৭৩×৯ ঘ)৫৬×৮ ঙ) ৩×২৩ |
৪৫লিটার শরবত ২ জনকে সমানভাবে ভাগ করে দিলে প্রত্যেকে কত লিটার শরবত পাবে?
সমস্যাটিকে গাণিতিক বাক্যের মাধ্যমে প্রকাশ করো :
এবার ভেবে দেখো তো, ৪৫ লিটার শরবত যদি ৩ জনের মধ্যে সমানভাবে ভাগ করি, তাহলে কীভাবে করতে হবে?
চলো এখন গ্রিডের সাহায্যে ৪৫÷৩=৪৫×৩ কেন হয় তার কারণ চিন্তা করি।
এবার, একইভাবে গ্রিডের সাহায্যে ৪৫÷২ নির্ণয়ের চেষ্টা করি।
👤 একক কাজ : খাতায় গ্রিড এঁকে সমাধান করো এবং শিক্ষককে দেখাও। |
ক্রমিক নম্বর | সমস্যা | সমাধান |
---|---|---|
১ | ৫৬লিটার দুধ ৫ জনকে সমানভাবে ভাগ করে দিলে প্রত্যেকে কত লিটার করে পাবে? | |
২ | তোমার পরিবারের সবার জন্য চা তৈরি করতে ৭৩গ্রাম চিনি লাগে। তোমার একার জন্য চা তৈরি করতে কত গ্রাম চিনি লাগবে? | |
৩ | ১৫৪কেজি আলু ৫ জনকে সমানভাবে ভাগ করে দিলে প্রত্যেকে কত কেজি করে পাবে? | |
৪ | ৭৩বর্গমিটার দেয়াল রঙিন করার জন্য ২ ডেসি লিটার রং লাগে। ১ ডেসি লিটার রং দ্বারা কত বর্গমিটার দেয়াল রঙিন করা যাবে? |
🚻 জোড়ায় কাজ : A4 কাগজ বা পোস্টার পেপারে, কাগজের স্ট্রিপ দিয়ে ৪৫ অংশ চিহ্নিত করো। চিহ্নিত অংশটুকুকে ২ দ্বারা ভাগ করে ভাগফল বের করো। একই রকম আরও কয়েকটি সমস্যা তৈরি করো এবং এভাবে কাগজের স্ট্রিপ ব্যবহার করে সমাধান করো। সহপাঠীর সাথে খাতা বিনিময় করে একে অপরের ভুল-ত্রুটি চিহ্নিত করো এবং আলাপ-আলোচনা করে সমাধান করার চেষ্টা করো। প্রয়োজনে শিক্ষকের পরামর্শ নিতে পারবে। |
চলো হিসাব করি : ৪৫×২=৮৫বর্গমিটার
(২) ১৩ডেসি লিটার রং দ্বারা কত বর্গমিটার জায়গা রঙিন করা যাবে?
সংখ্যারেখায় দেখা যায় ৪৫×১৩=৪৫÷৩ এর সমান।
(৩) ২৩ ডেসি লিটার রং দ্বারা কত বর্গমিটার ক্ষেত্রফল রঙিন করা যাবে? এখানে,
গাণিতিক বাক্য : ৪৫×২৩
প্রথমে চলো সংখ্যারেখার মাধ্যমে বোঝার চেষ্টা করি :
:- ২৩ডেসি লিটার দ্বারা রঙিন অংশের ক্ষেত্রফল =২×(১৩ ডেসি লিটার দ্বারা রঙিন অংশের ক্ষেত্রফল)
এখানে, নিচের গ্রিডের সাহায্যে চিন্তা করো :
গ্রিড থেকে দেখা যাচ্ছে :
• ২১৩×১২৫ কীভাবে হিসাব করা যায় তা তুলনা ও ব্যাখ্যা করি।
• ১২২৫×৫৬ কীভাবে হিসাব করা যায় তা তুলনা ও ব্যাখ্যা করি।
🚻 দলগত কাজ : গ্রিডের সাহায্যে ভগ্নাংশের সাথে ভগ্নাংশের গুণের সঠিকতা যাচাই উপকরণ : পোস্টার পেপার, A4 কাগজ, মার্কার, রঙ পেন্সিল। • শিক্ষকের নির্দেশনা অনুযায়ী দল গঠন করো। |
• ভগ্নাংশের গুণের পদ্ধতি ব্যবহার করে নিচের সমস্যাটির সমাধান করো।
▪️গুণ না করে কীভাবে গ্রিডের সাহায্যেই ভগ্নাংশের গুণ দেখানো যায় তা দলগত আলোচনার মাধ্যমে বের করো। প্রয়োজনে শিক্ষককে প্রশ্ন করো।
▪️শিক্ষকের প্রদত্ত গাণিতিক সমস্যাগুলো সমাধান করে দলের মধ্যে খাতা বদল করে সঠিকতা যাচাই করো।
👤 একক কাজ : A4 কাগজে গ্রিড এঁকে সমস্যাগুলো সমাধান করো। ক) ২৩৫ মি দৈর্ঘ্য এবং ৫৬ মি প্রস্থ বিশিষ্ট একটি আয়তাকার দেয়ালের ক্ষেত্রফল নির্ণয় করি। খ) ১ টি বর্গাকার বাগানের এক পাশের দৈর্ঘ্য ৩২৩ মি হলে, বাগানের ক্ষেত্রফল নির্ণয় করো। গ) গ্রিডের সাহায্যে ক ও খ নং গাণিতিক সমস্যার সমাধান যাচাই করো। |
রিয়া এবং রাতুল একটি মজার খেলা খেলছে। রিয়া রাতুলকে বলল, আমি একটি ভগ্নাংশ আমার খাতায় লিখব। তোমাকে এমন একটি ভগ্নাংশ লিখতে হবে যেন ভগ্নাংশ দুইটির গুণফল ১ হয়।
তোমরা রাতুলের মতো একটু চিন্তা করে বল তো রাতুলের লেখা ভগ্নাংশটি সঠিক কিনা? আচ্ছা চলো আমরা হিসাব করে দেখি:
খেলাটির একটি নাম দেয়া দরকার। এই খেলাটির নাম হলো বিপরীত ভগ্নাংশের (Reciprocal of Fraction) খেলা। একটু ভেবে দেখো তো, খেলাটির আর কোনো নাম দেয়া যায় কিনা। আমরা খেলাটির আরও একটি নাম দিতে পারি। নামটি হলো- গুণাত্মক বিপরীত ভগ্নাংশের (Multiplicative Inverse) খেলা।
তাহলে আমরা বলতে পারি,
তবে খেয়াল রেখো তোমরা ঋণাত্মক সংখ্যার ধারণা থেকে ‘যোগাত্মক বিপরীত' (Additive Inverse) এর যে ধারনা পেয়েছ সেটা কিন্তু আলাদা। দুইটি ভগ্নাংশের যোগফল শূন্য (০) হলে একটিকে অপরটির 'যোগাত্মক বিপরীত ভগ্নাংশ' বলতে পারো।
🚻 জোড়ায় খেলা: রিয়া ও রাতুলের মতো তুমি তোমার সহপাঠীর সাথে কমপক্ষে ১০টি ভগ্নাংশ নিয়ে বিপরীত ভগ্নাংশ বা গুণাত্মক বিপরীত ভগ্নাংশের খেলাটি খেল। |
চলো গ্রিডের সাহায্যে ভগ্নাংশের গুণফলের ধারণা ব্যবহার করে ভগ্নাংশগুেলোর বিপরীত ভগ্নাংশ নির্ণয় করি।
👤 একক কাজ : গ্রিডের সাহায্যে নিচের ভগ্নাংশগুলোর বিপরীত ভগ্নাংশ নির্ণয় করো। ক) ১ খ) ৫ গ)২৫ ঘ) ৩৭ |
---|
রাতুল ও রিয়ার খেলাটি বিশ্লেষণ করে এবং গ্রিডের উদাহরণের মাধ্যমে আমরা নিচের সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারি -
জাদুর মাঠরবিনদের বাড়ির পাশে একটা বিশাল বড় জাদুর মাঠ আছে। প্রতিদিন সকালেই মাঠের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ পরিবর্তন হয়ে যায় কিন্তু মাঠের আকৃতি আয়তাকারই থাকে এবং ক্ষেত্রফলেরও কোনো পরিবর্তন হয়। না। তো একদিন রবিন হেঁটে হেঁটে মেপে দেখল মাঠের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ দুইটিই ১ কিলোমিটার। এবার রবিন নিশ্চিত হলো ঐদিন মাঠের আকৃতি বর্গাকার। তাহলে মাঠের ক্ষেত্রফল = ১ বর্গকিলোমিটার। আর যেহেতু মাঠের ক্ষেত্রফল পরিবর্তন হয় না তাহলে প্রতিদিনই মাঠের ক্ষেত্রফল ১ বর্গ কিলোমিটার থাকে। পরদিন রবিন জাদুর মাঠে গিয়ে দেখল মাঠের প্রস্থ কমে ২৩ কিলোমিটার হয়ে গেছে। এবার সে ভাবতে লাগল দৈর্ঘ্য কত হতে পারে? নিশ্চয়ই ১ কিলোমিটার থেকে বেশি। কিন্তু দৈর্ঘ্য বরাবর এত দূর রবিন হাঁটতে চায় না। তোমরা যদি রবিনকে সাহায্য করতে চাও তাহলে বলো তো সেদিন মাঠের দৈর্ঘ্য কত ছিল? |
রবিন এরপর দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ দুইটাই জানার জন্য একটা সহজ বুদ্ধি বের করল।
সে তার বন্ধু শিশিরকে নিয়ে রোজ জাদুর মাঠে যেত। এরপর দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ পরিমাপের জন্য ছবির মতো করে দুইজন মাঠের দুইদিক বরাবর একই গতিতে হাঁটা শুরু করত। যখনই যেকোনো একজন মাঠের শেষ প্রান্তে চলে যেত অর্থাৎ দৈর্ঘ্য অথবা প্রস্থ কোনো একটা পেয়ে যেত তখন সে জোরে চিৎকার করে অপর বন্ধুকে থামতে বলত। এরপর অপর বন্ধুকে আর সম্পূর্ণ দূরত্ব হাঁটতে হতো না। দৈর্ঘ্য অথবা প্রস্থ যেকোনো একটা দূরত্ব পাওয়া গেলেই সেখান থেকে তারা অন্য দূরত্বটি নির্ণয় করত। দেখত তোমরাও নিচের দিনগুলোর ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে একই বুদ্ধিতে বের করতে পারো কিনা।
একক কাজ : এবার ভেবে দেখো তো জাদুর মাঠের দৈর্ঘ্য অনেক অনেক বড় হলে প্রস্থ কেমন হবে? আবার প্রস্থ অনেক অনেক ছোট হয়ে শূন্যের কাছাকাছি হলে দৈর্ঘ্যের মান কেমন হবে? |
ঘরের দেয়াল রঙ করার জন্য তোমাদের বাড়িতে নীল রঙ কিনে আনা হলো। রঙটির ২ ডেসি লিটার দ্বারা ১৮৫ বর্গ মি. দেয়াল রঙ করা যায়। ১ ডেসি লিটার রঙ দ্বারা ঐ দেয়ালের কত অংশ রঙিন করা যাবে? |
প্রথমে সংখ্যা রেখার সাহায্যে সমস্যাটিকে গাণিতিক বাক্যের মাধ্যমে প্রকাশ করি।
চিত্র ব্যবহার করে ৩৫÷১৩ কীভাবে হিসাব করা যায় তা চিন্তা করি।
আমরা ১ ডেসি লিটার রং দ্বারা রঙিন অংশের ক্ষেত্রফল নির্ণয় করব।
এবার উপরের দুইটি সমস্যা সমাধানের পদ্ধতির সাহায্য নিয়ে নিচের সমস্যাটি সমাধান করার চেষ্টা করা যাক।
৩৫বর্গমিটার দেয়াল রঙিন করার জন্য ২৩ডেসি লিটার রং লাগে। ১ ডেসি লিটার রং দ্বারা কত বর্গমিটার দেয়াল রঙিন করা যাবে? |
চলো এবার আমরা আরও কয়েকটি উপায়ে ভগ্নাংশের ভাগের সঠিকতা যাচাই করি।
ভাজ্য ও ভাজককে একই সংখ্যা দিয়ে গুণ অথবা ভাগ করলে ভাগফলের কোনো পরিবর্তন হয় না।
যেমন: ৬÷২=৩ তাহলে, (৬×৫) ÷ (২× ৫) = ৩০÷১০=৩
আবার, (৬÷২)÷(২÷২)=৩÷১=৩
ভগ্নাংশের ক্ষেত্রেও সমতুল ভগ্নাংশ নির্ণয়ে আমরা লব ও হরকে একই সংখ্যা দিয়ে গুণ অথবা ভাগ করে থাকি। দুটি ভগ্নাংশের ভাগের ক্ষেত্রেও আমরা একই ধারণা ব্যবহার করতে পারি।
৩৫÷২৩=(৩৫×৩২)÷(২৩×৩২)
=(৩৫×৩২)÷১=৩৫×৩২
=৩×৩৫×২=?
ভগ্নাংশকে পূর্ণসংখ্যা দিয়ে গুণ ও ভাগের ধারণা এবং বিপরীত ভগ্নাংশের মাধ্যমে চাইলে আরও বেশ কিছু উপায়ে দুইটি ভগ্নাংশের ভাগ করা যায়। এমন একটি উপায় দেখানো হলো নিচে :
=((৪÷২)(৯÷৩)×২৩)÷২৩
=(৪÷২)(৯÷৩)×২৩÷২৩
=(৪÷২)(৯÷৩)×(২৩÷২৩)
=(৪÷২)(৯÷৩)×১
=(৪÷২)(৯÷৩)
=?
তাহলে, উপরের সবগুলো পদ্ধতি অনুসারে আমরা বলতে পারি :
এবার সুবর্ণপুরের বাঁশিওয়ালার গল্পটি পড় এবং রাখাল বালকের পুরস্কার কীভাবে ভাগ করা যায় তা বের করো। |
সুবর্ণপুর গ্রামে এক রাখাল ছিল, নাম তার বশির। বশির খুব ভোরে গরুর পাল নিয়ে মাঠে যায় আর সন্ধ্যা নামার আগে বাড়ি ফিরে আসে। গ্রামের সবাই অবশ্য বশিরকে বাঁশিবাদক রাখাল হিসেবে চেনে। কারণ বশির অবসর পেলেই বাঁশি বাজাত। অদ্ভুত সুন্দর তার বাঁশির সুর। দুপুরে গরুগুলো যখন মাঠে আপনমনে ঘাস খেতে থাকে। বশির তখন গাছের ছায়ায় বসে আর ঝুলি থেকে তার বাঁশি বের করে। বাঁশিতে ফু দিতেই বের হয়ে আসে জাদুকরি সব সুর, তখন পথ দিয়ে কেউ গেলে সে সুর শুনে দাঁড়াতে বাধ্য হয়। একদিন সুবর্ণপুরের রাজা ঐ মাঠের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। সময়টা দুপুরের দিকে, প্রতিদিনের মতোই বশিরের গরুর পাল মাঠে চরে বেড়াচ্ছিলো আর বশির আপনমনে বাঁশি বাজাচ্ছিলো। রাজা বাঁশির সুর শুনেই থমকে গেলেন, এতো সুন্দর সুর আগে কখনো তিনি শুনেননি! সাথে সাথে তিনি তার উজিরকে পাঠালেন খবর আনার জন্য, তাঁর রাজ্যে কে এতো সুন্দর বাঁশি বাজায়? উজির বশিরকে নিয়ে রাজার সামনে আসলো। বশির তো ভয়েই শেষ, রাজার সামনে তাকে নিয়ে আসা হলো, সে ভেবে পাচ্ছিলো না কি ভুল সে করেছে। রাজা তখন বশিরকে অভয় দিলেন, তার বাঁশির খুব প্রশংসা করলেন এবং পরদিন তাকে রাজদরবারে এসে সবার সামনে বাঁশি বাজানোর আমন্ত্রণ জানিয়ে সেখান থেকে বিদায় নিলেন। ■ বশির খুব খুশি হলো কারণ সে রাজদরবারে এর আগে কখনো যায় নি। কিন্তু পরক্ষণেই সে চিন্তায় পড়ে গেলো। কারণ রাজদরবারে যাওয়ার মতো তার কাছে ভালো কোনো পোশাক নেই, জুতা নেই, এমনকি এতো দূরের পথ পাড়ি দেয়ার জন্য কোনো গাড়ি/বাহনও নেই! বশির মাঠ থেকে গরু নিয়ে দ্রুত তার বাড়িতে গেলো। এরপর আসেপাশের প্রতিবেশিদের ব্যাপারটি জানালো এবং তাদের কাছে সাহায্য চাইলো। ■ একজন বুড়িমা এগিয়ে এলেন। তিনি বললেন, 'আমি তোমাকে সুন্দর একটা জামা বানিয়ে দিবো। কিন্তু এর বিনিময়ে তুমি যা পুরষ্কার পাবে তার দশ ভাগের এক ভাগ আমাকে দিতে হবে।” বশির মনে মনে হিসেব করলো, 'আমি যদি ৫০টি স্বর্ণমুদ্রা পাই তাহলে বৃদ্ধাকে দিতে হবে 🔲টি।” বশির বুড়িমার প্রস্তাবে রাজি হলো। ■ এরপর একজন মুচি এগিয়ে এলেন। তিনি বললেন, 'আমি তোমাকে একটি জুতা তৈরি করে দিবো। কিন্তু এর বিনিময়ে তুমি যা পুরষ্কার পাবে তার দশ ভাগের দুই ভাগ আমাকে দিতে হবে।’ বশির মনে মনে হিসেব করলো, ‘আমি যদি ৫০টি স্বর্ণমুদ্রা পাই তাহলে মুচিকে দিতে হবে 🔲 টি।' বশির মুচির প্রস্তাবেও রাজি হলো। ■ সবশেষে, একজন কামার এগিয়ে এলেন। তিনি বললেন, 'আমি তোমাকে খুব মজবুত একটা বাহন তৈরি করে দিবো। কিন্তু এর বিনিময়ে তুমি যা পুরষ্কার পাবে তার পাঁচ ভাগের এক ভাগ আমাকে দিতে হবে।' বশির মনে মনে হিসেব করলো, 'আমি যদি ৫০টি স্বর্ণমুদ্রা পাই তাহলে কামারকে দিতে হবে 🔲 টি।' বশির কামারের প্রস্তাবেও রাজি হলো। ■ পরদিন বশির নতুন জামা-জুতা-বাহন নিয়ে রাজার দরবারে গেলো। রাজার অনুমতি নিয়ে সবাইকে বাঁশি বাজিয়ে শুনালো। রাজ দরবারে সবাই খুব খুশি হলো। রাজা খুশি হয়ে বশিরকে ১০০টি স্বর্ণমুদ্রা উপহার দিলেন। বশিরও এই উপহার পেয়ে খুব খুশি হলো। |
এবার প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
ক) বুড়িমা কয়টি স্বর্ণমুদ্রা পাবে?
খ) মুচি কয়টি স্বর্ণমুদ্রা পাবে?
গ) কামার কয়টি স্বর্ণমুদ্রা পাবে?
ঘ) বশিরের কাছে অবশিষ্ট কয়টি স্বর্ণমুদ্রা থাকবে?
🚻 দলগত কাজ : প্রথমে দলের মধ্যে সকল সদস্য গল্পটি পড়। |
“অচিনপুরের বৃদ্ধা ও তার ছাগলের পাল” “অচিনপুর নামে এক গাঁয়ে এক বৃদ্ধা বাস করত। তার তিন কুলে কেউ ছিল না। কেবল ৩ মেয়ে ছিলো, আর ছিলো ১৯ টা ছাগল। সেই বৃদ্ধা একদিন ঠিক করলো। সবকটা ছাগল ভাগ করে সে তার মেয়েদের দিয়ে দিবে। বৃদ্ধা বললো, ■ বড় মেয়ে পাবে আমার ছাগলের ১২ অংশ, ■ মেজো মেয়ে পাবে আমার ছাগলের ১৪অংশ, ■ আর ছোট মেয়ে পাবে আমার ছাগলের ১৫অংশ। শুনে মেয়েরা একটু ঘাবড়ে গেলো। ১৯টা ছাগলকে না করা যায় ২ ভাগ, না ৪ ভাগ, না ৫ ভাগ! তারা কীভাবে এখন ছাগল ভাগ করে নিবে? “বৃদ্ধার তিন মেয়ে কিভাবে ১৯টি ছাগলকে বৃদ্ধার দেয়া শর্ত অনুসারে ভাগ করবে তার কোনো কুল-কিনারা পাচ্ছিলনা। এমন সময় সেখান থেকে ঐ একই পাড়ার তাদের প্রতিবেশী ছোট্ট একটি ছেলে তার পোষা ছাগল নিয়ে যাচ্ছিল। ছোট্ট ছেলেটি বৃদ্ধার তিন মেয়েকে চিন্তিত দেখে তার কারণ জিজ্ঞেস করলো। ছোট্ট ছেলেটা তাদের কাছে সমস্ত ঘটনা শুনে বললো, এটা কোনো সমস্যাই না। তোমরা আমার ছাগলটা নাও, তাহলে মোট ছাগল হলো ২০টা। এবার তোমাদের মা যেমন চেয়েছেন সেভাবে ছাগলগুলো ভাগ করে নাও। তবে ভাগাভাগি শেষে আমার ছাগলটি ফেরত দিতে ভুলে যেও না কিন্তু।” এবার তোমরা দলের মধ্যে আলোচনা করে বৃদ্ধা কিভাবে তার মেয়েদেরকে ছাগলগুলো ভাগ করে দিবে তা সিদ্ধান্ত নাও। দলের সকল সদস্য মিলে এ গল্পটি নাটকের মাধ্যমে শ্রেণিকক্ষে উপস্থাপন করো। |
একক কাজ : A4 কাগজে গ্রিড এঁকে নিচের ছকের সমস্যাগুলো সমাধান করো। |
পূর্ববর্তী শ্রেণিতে তোমরা দশমিকের স্থানীয় মান সম্পর্কে জেনেছ। এ পর্যায়ে একটি খেলার মাধ্যমে তোমরা দশমিকের স্থানীয় মান খুব সহজে বের করতে পারবে। শিক্ষকের সহায়তায় নিচের নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করে তোমার সহপাঠীর সাথে খেলাটি খেলবে। বাড়িতেও এ খেলাটি চেষ্টা করতে পারো।
■ শিক্ষকের নির্দেশনা অনুযায়ী তোমার সহপাঠীর সাথে একটি জোড়া তৈরি করো।
■ প্রথমে নিচের ছবির মতো করে একটি সাদা A4 সাইজের কাগজকে চারটি ভাগে ভাগ করো। এরপর তা থেকে একটি টুকরা নিয়ে তোমরা খেলাটি শুরু করবে।
■ ছবির মতো কাগজে ভাঁজ করে সংখ্যা বানানোর পদ্ধতিটি শিক্ষকের কাছ থেকে দেখে নাও। তোমরা দশমাংশ থেকে সহস্রাংশ পর্যন্ত যেকোনো ঘর পর্যন্ত এই পদ্ধতিতে সিক্রেট নম্বর তৈরি করবে। যেমন: ০.৭৯৮৩ সংখ্যাটি কীভাবে তৈরি করা যায় তা ছবির মাধ্যমে দেখানো হল-
■ প্রথমে কাগজের একদম ডান পাশে ০.০০০৩ সংখ্যাটি লিখতে হবে।
■বাম পাশের “০” এর প্রান্ত থেকে কাগজটি ভাঁজ করে দশমিকের পর “০” তিনটি ঢেকে শুধুমাত্র “৩” অঙ্কটি বের করা হবে।
■ এরপর কাগজের উপর ০.০০৮ সংখ্যাটি লিখতে হবে।
■ এরপর একইভাবে কাগজ ভাঁজ করে এবং সংখ্যা লিখে কাগজে নিম্নের চিত্রের মতো সবশেষে ০.৭৯৮৩ সংখ্যাটি তৈরি করতে হবে।
■ তোমার বানানো ভাঁজ করা কাগজটি তোমার শিক্ষককে দেখিয়ে নাও। যেমন উপরের চিত্রে ০.৭৯৩৮ দেখা যাচ্ছে। আবার, ভাঁজ খুলে প্রতিটি সংখ্যার স্থানীয় মান কত তা দেখা যায় কিনা পর্যবেক্ষণ করে দেখো। যেমন: নিম্নের চিত্রে ০.৭৯৩৮ সংখ্যাটির প্রতিটি ঘরের স্থানীয় মান দেখা যাচ্ছে।
■ তোমরা নিজেদের তৈরি করা কাগজ সংরক্ষণ করবে এবং নিজেদের কাজ যাচাই করবে। সবশেষে, শিক্ষক তোমাদের কাজের সঠিকতা যাচাই করবেন।
■ প্রতিবার সংখ্যা বানানোর পর সংখ্যাটি অবশ্যই খাতায় কথায় এবং অঙ্কে লিখে রাখবে।
👤 একক কাজ : তোমরা পূর্বের শ্রেণিতে দশমিক সংখ্যা সম্পর্কে জেনেছ। চলো নিচের ছকটি পূরণ করে দশমিক সংখ্যার ধারণাটি মনে করার চেষ্টা করি। |
০.৪ × ৩ =?
শিক্ষকের নির্দেশ না অনুসারে নিজেদের খাতায় আঁকো এবং গুণফল খাতায় লেখো।
এবার গ্রিড বা আয়তাকার ঘরের মাধ্যমে উপরের গাণিতিক সমস্যাটি সমাধান করো।
এখন প্রত্যেকের খাতায় তিনটি গ্রিড আঁক যাদের প্রত্যেকটি দশ ভাগে ভাগ করা থাকবে।
এবার ০.৪ × ৩ = নির্ণয় করার জন্য ০.৪ কে ৩ বার নাও।
এরপর, গ্রিডের মাধ্যমে গুণে দেখো ০.৪ কে ৩ বার নিলে গুণফল কত হয়?
চলো গ্রিডের সাহায্যে কীভাবে গুণফল নির্ণয় করা নির্ণয় হলো তা দেখি:
গ্রিডের মাধ্যমে গুণ করার পদ্ধতি থেকে আমরা ০.৪ × ৩ = ১.২ এই গুণটি করার জন্য একটা সহজ উপায় খুঁজে পেলাম।
দশমিক বিন্দুর কথা চিন্তা না করে সংখ্যাগুলো সাধারণ গুণের মতো গুণ করতে হবে। যেমন: ৪ × ৩ = ১২ গুণ্যের যে স্থানের দশমিক বিন্দু আছে গুণফলের সে স্থানে (ঘর গুণে) দশমিক বিন্দু বসাতে হবে অর্থাৎ ০.৪ × ৩ = ১.২ |
আর এটাই দশমিক ভগ্নাংশকে পূর্ণসংখ্যা দিয়ে গুণ করার প্রচলিত পদ্ধতি।
👤 একক কাজ : গ্রিড এঁকে সমাধান করো। ক) ০.৪ × ৫ খ) ০.৭ × ৯ গ) ০.২ × ১৩ ঘ) ০.৭২ × ৬ ঙ) ০.২৭ × ৩ |
০.৬ ÷ ৩ = ?
শিক্ষকের নির্দেশনা অনুসারে ভাগফল খাতায় লেখো। এবার গ্রিড বা আয়তাকার ঘরের মাধ্যমে উপরের গাণিতিক সমস্যাটি সমাধান করো।
এরপর, গ্রিডের মাধ্যমে গুণে দেখো ০.৬ কে ৩ দিয়ে ভাগ করলে ভাগফল কত হয়? এবার গ্রিডের সাহায্যে কীভাবে ভাগফল নির্ণয় করা হলো তা দেখি:
গ্রিডের মাধ্যমে ভাগ করার পদ্ধতি থেকে আমরা ০.৬ : ৩ = ০.২ ভাগটি করার জন্য একটা সহজ উপায় খুঁজে পেলাম।
দশমিক বিন্দুর কথা চিন্তা না করে সংখ্যাগুলো সাধারণ ভাগের মতো ভাগ করতে হবে। যেমন: ৬ ÷ ৩ = ২ ভাজ্যের যে স্থানে দশমিক বিন্দু আছে (কিংবা ভাজ্যের দশমিকের পর যতগুলো ঘর আছে) ভাগফলের সে স্থানে দশমিক বিন্দু বসাতে হবে অর্থাৎ ০.৬ + ৩ = ০.২ |
আর এটাই দশমিক ভগ্নাংশকে পূর্ণসংখ্যা দিয়ে ভাগ করার প্রচলিত পদ্ধতি।
👤 একক কাজ : গ্রিডের মাধ্যমে সমাধান করো। ক) ৭.৫ ÷ ৫ খ) ৯.৬ ÷ ৮ গ) ১.৪ ÷ ৭ ঘ) ১.০৫ ÷ ৩ (ঙ) ০.০৯÷ ৩ |
চলো চিন্তা করে বের করি- দশমিক ভগ্নাংশের সাথে অন্য একটি দশমিক ভগ্নাংশ কীভাবে গুণ করা যায়? পূর্ণসংখ্যার গুণের মতোই নাকি অন্য কোনো উপায়ে? নিচের গাণিতিক সমস্যাটির সমাধান চিন্তা করি।
দশমিক বিন্দুর কথা চিন্তা না করে সংখ্যাগুলো সাধারণ গুণের মতো গুণ করতে হবে। যেমন: ২ × ৩ = ৬ গুণ্য ও গুণকের যে স্থানে দশমিক বিন্দু আছে তাদের ঘর সংখ্যা হিসাব করে দশমিকের পর কত ঘর পর্যন্ত অঙ্ক আছে তা গুণ্য ও গুণকের উভয়ের ক্ষেত্রে হিসাব করতে হবে) গুণফলের ডান দিক থেকে তত ঘর বামে এসে দশমিক বিন্দু বসাতে হবে। অর্থাৎ ০.২ × ০.৪ = ০.০৬ |
আর এটাই দশমিক ভগ্নাংশকে অন্য একটি দশমিক ভগ্নাংশ দিয়ে গুণ করার প্রচলিত পদ্ধতি।
👤 একক কাজ : গ্রিড এঁকে সমাধান করো। ক) ০.২ x ০.৪ খ) ০.৫×০.৮ গ) ০.৬×০.৪ ঘ) ০.৭ x ০.৪ |
চলো চিন্তা করে বের করি- দশমিক ভগ্নাংশের সাথে অন্য একটি দশমিক ভগ্নাংশ কীভাবে ভাগ করা যায়? পূর্ণসংখ্যার ভাগের মতোই, নাকি অন্য কোনো উপায়ে? নিচের গাণিতিক সমস্যাটির সমাধান চিন্তা করি।
১.২ ÷ ০.৩ = ?
ইতোমধ্যেই তোমরা জেনেছ,
আমরা আরও একটি উপায়ে দশমিকে দশমিকে ভাগের ব্যাপারে ধারণা পেতে পারি। ভাজ্য ও ভাজককে একই সংখ্যা দিয়ে গুণ অথবা ভাগ করলে ভাগফলের কোনো পরিবর্তন হয় না। চলো এই নীতি ব্যবহার করে আমরা দশমিকে দশমিকে ভাগ করার চেষ্টা করি।
১.২ ÷ ০.৩ = (১.২ ×১০) ÷ (০.৩× ১০) = ১২ ÷ ৩ = ৪
উপরের আলোচনা থেকে আমরা ১.২ ÷ ০.৩ = ৪ এই ভাগফল নির্ণয়ের একটা সহজ উপায় খুঁজে পেলাম।
▪️ভাজ্য ও ভাজককে একই সংখ্যা দিয়ে গুণ করে উভয়কেই পূর্ণ সংখ্যায় নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। ▪️এক্ষেত্রে ভাজ্য ও ভাজকের দশমিক বিন্দুর পর অংক সংখ্যা সমান আছে কিনা দেখতে হবে। ▪️তারপর সেই অনুসারে ১০, ১০০, ১০০০ ইত্যাদি দিয়ে ভাজ্য ও ভাজককে গুণ করতে হবে। ▪️এরপর সাধারণ ভাগের মতো ভাগ করে ভাগফল নির্ণয় করতে হবে। |
🚻 জোড়ায় কাজ : জোড়ার প্রত্যেকেই কমপক্ষে পাঁচটি করে এরকম সমস্যা তৈরি করো। তারপর সমস্যাগুলো সমাধান করে পরস্পর খাতা বিনিময় করো। একে অপরের ভুল-ত্রুটি চিহ্নিত করো। এবার দুজনে আলোচনার মাধ্যমে সংশোধন করো। প্রয়োজনে শিক্ষকের সহযোগিতা নাও। |
একক কাজ : গ্রিডের মাধ্যমে সমাধান করো। ক) ৪.৫ ÷ ১.৫ খ) ৯.১২ ÷ ০.০৬ গ) ১০.৪ ÷ ২.৬ ঘ) ৯.৫ ÷ ০.৩৮ |
📚 অনুশীলনী |
১। চিত্রের মাঝের ভগ্নাংশগুলো ব্যবহার করো। উপরের দিকে যাওয়ার সময় প্রতি জোড়া গুণ করে খালি স্থান পূরণ করো এবং নিচের দিকে যাওয়ার সময় প্রতি জোড়ার বামের ভগ্নাংশটিকে ডানের ভগ্নাংশ দ্বারা ভাগ করো। এভাবে উপরের ও নিচের সর্বশেষ ভগ্নাংশটি নির্ণয় করো।
২। রিয়া তার বাড়ির সামনের বাগানের তিন দিকে বেড়া দিতে চায়। বাগানের তিন দিকের দৈর্ঘ্য যথাক্রমে ১৫ মিটার, ১৩.৫ মিটার এবং ১২.৩ মিটার। বেড়া দিতে রিয়ার মিটারপ্রতি ৭৫.৭৫ টাকা খরচ হয়।
ক) রিয়াকে কত মিটার বেড়া দিতে হবে?
খ) বেড়া দিতে রিয়ার মোট কত টাকা খরচ হবে?
৩) নিচের চিত্রগুলোর পরিসীমা ও ক্ষেত্রফল নির্ণয় করো।
৪।
উপরের চিত্রটি লক্ষ করো এবং আমাদের শরীর সম্পর্কে ভাবো।
ক) তোমার মস্তিষ্কের ভর কত কেজি?
খ) মাথার হাড়ের সংখ্যা তোমার মোট হাড়ের সংখ্যার অংশ হলে, তোমার মোট কতগুলো হাড় আছে?
গ) সুস্থ থাকার জন্য তোমার শরীরে মোট কত কেজি পানি থাকা প্রয়োজন?
৫। রাতুল তার আয়তাকৃতি বাগানের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ বরাবর প্রতিটি সারিতে যথাক্রমে চারটি ও তিনটি করে ফুলের চারা রোপণ করে। পাশাপাশি দুইটি চারার মধ্যকার দূরত্ব- মিটার। ছবি এঁকে চিন্তা করো।
ক) রাতুলের বাগানটির ক্ষেত্রফল নির্ণয় করো।
খ) রাতুল বাগানে মোট কয়টি ফুলের চারা রোপণ করেছে?
৬। রিয়ার পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৮। রিয়া সকলকে সমপরিমাণ চা পরিবেশন করার জন্য ০.৫৬ লিটার চা তৈরি করে। কিন্তু রিয়া চা পান করে না। প্রত্যেকের কাপে কত লিটার চা থাকবে?
৭। রাতুল বাজার থেকে ১০৫ টাকা কেজি দরে ১.৫ কেজি ডাল, ৪৫.৫০ টাকা কেজি দরে ৫ কেজি পিঁয়াজ ক্রয় করে। সে দোকানদারকে কত টাকা দিবে?
৮। সুমন সাইকেলে চড়ে প্রতি ঘণ্টায় ৮ কিলোমিটার পথ যেতে পারে।
ক) সুমন ৬ ঘণ্টায় কত কিলোমিটার পথ যেতে পারবে?
খ) ৩০কিলোমিটার পথ যেতে সুমনের কত ঘণ্টা সময় লাগবে?
৯। অহনা ও তার ছোট ভাইয়ের জন্য সালাদ তৈরি করতে গিয়ে অহনা সালাদের উপকরণ হিসেবে নিচের জিনিসগুলো ব্যবহার করেছে।
ক) অহনার তৈরি করা সালাদের ওজন কত কেজি?
খ) মা-বাবাসহ পরিবারের মোট ৫ জন সদস্যের জন্য সালাদটি তৈরি করতে হলে সালাদের প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো ছক আকারে উপস্থাপন করো এবং মোট কত কেজি সালাদ তৈরি করলে তা নির্ণয় করো।
Read more