দৃশ্যমান আলো এবং রেখা বর্ণালি, বিশেষ করে পরমাণু ও অণুর গঠন এবং ধর্ম বোঝার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
দৃশ্যমান আলো কী?
দৃশ্যমান আলো হল তড়িৎ চুম্বকীয় বর্ণালির একটি খুব ছোট অংশ যা মানুষের চোখে দৃশ্যমান।
এটি বিভিন্ন রঙের সমন্বয়ে গঠিত, যেমন- বেগুনি, নীল, আকাশী, সবুজ, হলুদ, কমলা এবং লাল।
প্রতিটি রং নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সাথে সম্পর্কিত।
রেখা বর্ণালি কী?
যখন কোনো নির্দিষ্ট মৌলের বাষ্পকে উত্তপ্ত করা হয়, তখন এটি নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো নির্গত করে। এই আলোকে যখন একটি প্রিজমের মধ্য দিয়ে পাঠানো হয়, তখন এটি বিভিন্ন রঙের আলাদা আলাদা রেখায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই রেখাগুলোকেই রেখা বর্ণালি বলে।
প্রতিটি মৌলের রেখা বর্ণালি অনন্য হয়, যেমন একটি আঙুলের ছাপ।
রেখা বর্ণালির উৎপত্তি
শক্তিস্তরের পরিবর্তন: পরমাণুর ইলেকট্রন নির্দিষ্ট শক্তিস্তরে থাকে। যখন এই ইলেকট্রন উচ্চ শক্তিস্তরে উত্তেজিত হয় এবং তারপর আবার নিম্ন শক্তিস্তরে ফিরে আসে, তখন শক্তির পার্থক্যের সমান শক্তির একটি ফোটন নির্গত হয়।
ফোটনের তরঙ্গদৈর্ঘ্য: নির্গত ফোটনের তরঙ্গদৈর্ঘ্য শক্তিস্তরের পরিবর্তনের উপর নির্ভর করে।
রেখা বর্ণালির সৃষ্টি: বিভিন্ন শক্তিস্তরের মধ্যে পরিবর্তনের ফলে বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের ফোটন নির্গত হয়, যা রেখা বর্ণালি সৃষ্টি করে।
রেখা বর্ণালির ব্যবহার
মৌল সনাক্তকরণ: কোনো অজানা পদার্থের রেখা বর্ণালি পরীক্ষা করে তার উপাদান মৌলগুলো সনাক্ত করা যায়।
তারার গঠন: তারার আলোর রেখা বর্ণালি পরীক্ষা করে তারা কী দিয়ে গঠিত এবং তার তাপমাত্রা কত তা নির্ণয় করা যায়।
পদার্থের গঠন: পদার্থের ভেতরে পরমাণু ও অণুর বিন্যাস সম্পর্কে জানতে রেখা বর্ণালি বিশ্লেষণ করা হয়।
দৃশ্যমান আলো এবং রেখা বর্ণালির মধ্যে সম্পর্ক
দৃশ্যমান আলোর বিভিন্ন রঙের প্রতিটি রেখা বর্ণালিতে একটি নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সাথে মিলে যায়।
কোনো মৌলের রেখা বর্ণালি পরীক্ষা করে আমরা জানতে পারি যে, সেই মৌল কোন কোন দৃশ্যমান রঙের আলো নির্গত করে।