'আমার পরিচয়' কবিতায় 'কমলার দীঘি' ও 'মহুয়ার পালা' প্রসঙ্গ এনে কবি কী বুঝিয়েছেন?

Created: 1 year ago | Updated: 8 months ago
Updated: 8 months ago

আমি জন্মেছি বাংলায়, আমি বাংলায় কথা বলি,

আমি বাংলার আলপথ দিয়ে হাজার বছর চলি।

চলি পলিমাটি কোমলে আমার চলার চিহ্ন ফেলে।

তেরোশত নদী শুধায় আমাকে, ‘কোথা থেকে তুমি এলে?”


আমি তো এসেছি চর্যাপদের অক্ষরগুলো থেকে ।

আমি তো এসেছি সওদাগরের ডিঙার বহর থেকে। ।

আমি তো এসেছি কৈবর্তের বিদ্রোহী গ্রাম থেকে।

আমি তো এসেছি পালযুগ নামে চিত্রকলার থেকে ।

 

এসেছি বাঙালি বরেন্দ্রভূমে সোনা মসজিদ থেকে ।

এসেছি বাঙালি আউল-বাউল মাটির দেউল থেকে।

আমি তো এসেছি সার্বভৌম বারোভূঁইয়ার থেকে ।

এসেছি বাঙালি পাহাড়পুরের বৌদ্ধবিহার থেকে ।

এসেছি বাঙালি জোড়বাংলার মন্দির-বেদি থেকে ।

আমি তো এসেছি 'কমলার দীঘি’, ‘মহুয়ার পালা' থেকে।

আমি তো এসেছি তিতুমীর আর হাজী শরিয়ত থেকে।

আমি তো এসেছি গীতাঞ্জলি ও অগ্নিবীণার থেকে ।

এসেছি বাঙালি ক্ষুদিরাম আর সূর্য সেনের থেকে ।

এসেছি বাঙালি জয়নুল আর অবন ঠাকুর থেকে ।

এসেছি বাঙালি রাষ্ট্রভাষার লাল রাজপথ থেকে ।

এসেছি বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর থেকে।

 

আমি যে এসেছি জয়বাংলার বজ্রকণ্ঠ থেকে ।

আমি যে এসেছি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ থেকে।

এসেছি আমার পেছনে হাজার চরণচিহ্ন ফেলে।

শুধাও আমাকে ‘এতদূর তুমি কোন প্রেরণায় এলে?”

তবে তুমি বুঝি বাঙালি জাতির বীজমন্ত্রটি শোন নাই –

‘সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই।'

একসাথে আছি, একসাথে বাঁচি, আজও একসাথে থাকবই –

সব বিভেদের রেখা মুছে দিয়ে সাম্যের ছবি আঁকবই ।

Content added || updated By
Promotion