ভূ-ত্বকের গভীরতা প্রায়-

Created: 6 years ago | Updated: 6 months ago
Updated: 6 months ago

আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান

Modern Physics

রঞ্জর রশ্মি বা অজানা রশ্মি (X-ray)

ক্যাথোড রশ্মি হচ্ছে এক রাশি ইলেকট্রন। ১৮৯৫ সালে জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী উইলিয়াম রন্টজেন আবিষ্কার করেন যে, তড়িৎক্ষরণ নল থেকে যখন ক্যাথোড রশ্মি নলের দেয়ালে পড়ে তখন এক্সরে উৎপন্ন হয়। এক্সরে হলো ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্য বিশিষ্ট তাড়িত চৌম্বক বিকিরণ। এক্সরের একক রন্টজেন। এক্সরে উচ্চ ভেদন

ক্ষমতা সম্পন্ন। এক্সরে হীরকের ভিতর দিয়ে যেতে পারে-যা হীরক সনাক্তকরণে ব্যবহৃত হয়। স্থানচ্যুত হাড়, হাড়ে দাগ বা ফাটল, ভেঙ্গে যাওয়া হাড়, শরীরের ভিতরের কোনো বস্তুর বা ফুসফুসে কোনো ক্ষতের অবস্থান নির্ণয়ে, গোয়েন্দা বিভাগে যেমন: কাঠের বাক্স বা চামড়ার থলিতে বিস্ফোরক লুকিয়ে রাখলে তা খুঁজে বের করতে এক্স রশ্মি ব্যবহৃত হয়।

 

তেজষ্ক্রিয়তা (Radioactivity)

ফরাসি বিজ্ঞানী হেনরি বেকলের ১৮৯৬ সালে এক্সরে নিয়ে গবেষণার সময় লক্ষ্য করেন যে, ইউরেনিয়াম ধাতুর নিউক্লিয়াস থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অবিরত বিশেষ ভেদনশক্তি সম্পন্ন রশ্মি বা বিকিরণ নির্গত হয়। তাঁর নামানুসারে এই রশ্মির নাম দেওয়া হয় ‘বেকরেল রশ্মি’। পরবর্তীকালে মাদাম ক্যুরি এবং তার স্বামী পিয়ের ক্যুরি ব্যাপক গবেষণা চালিয়ে লক্ষ্য করেন যে, রেডিয়াম, পোলোনিয়াম, থোরিয়াম, অ্যাকটিনিয়াম প্রভৃতি ভারী মৌলের নিউক্লিয়াস থেকেও ‘বেকরেল রশ্মির’ মত একই ধরণের রশ্মি নির্গত হয়। এই রশ্মি এখন ‘তেজষ্ক্রিয় রশ্মি’ নামে পরিচিত। তেজষ্ক্রিয়তা নিয়ে গবেষণার জন্য তেজষ্ক্রিয়তার আবিষ্কারক হেনরি বেকরেল এবং মারি ক্যুরি ও তাঁর স্বামী পিয়ের ক্যুরি যৌথভাবে ১৯০৩ সালে নোবেল পুরস্কার পান। কৃত্রিম তেজষ্ক্রিয়তা আবিষ্কারের জন্য জুলিও ক্যুরি দম্পতি ১৯৩৫ সালে যৌথভাবে রসায়নে নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন। ভারি মৌলিক পদার্থের নিউক্লিয়াস থেকে স্বতঃস্ফুর্তভাবে আলফা, বিটা ও গামা রশ্মি নির্গমনের প্রক্রিয়াকে তেজষ্ক্রিয়তা বলে। যে সকল মৌল হতে তেজষ্ক্রিয় রশ্মি নির্গত হয়, তাকে তেজষ্ক্রিয় মৌল বলে। যে সকল মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা ৮২ এর বেশি, সাধারণত সে সকল মৌল তেজষ্ক্রিয় হয়। যেমন: ইউরেনিয়াম (৯২), নেপচুনিয়াম (৯৩), প্লুচোনিয়াম (৯৪), রেডিয়াম (৮৮), থোরিয়াম (৯০), রেডন (৮৬) ইত্যাদি তেজষ্ক্রিয় পদার্থ। আন্তর্জাতিক (Sl) পদ্ধতিতে তেজষ্ক্রিয়তার একক পরিমাপের একক বেকরেল (Bq)। রেডিও অ্যাকটিভ মৌল সনাক্তকরণের জন্য গাইগার মুলার কাউন্টার বা গাইগার কাউন্টার ব্যবহৃত হয়।

 

তেজষ্ক্রিয় আইসোটোপ (Radioactive Isotopes)

অস্থিত আইসোটোপগুলো স্বতঃস্ফুর্তভাবে বিভিন্ন ধরণের রশ্মি বিকিরণ করে নিজের নিউক্লিয়াসে পরিবর্তন এনে মৌলের স্থিত আইসোটোপে পরিণত হয়, এই ধরণের আইসোটোপ গুলোকে তেজষ্ক্রিয় আইসোটোপ বলে। যেমন: কার্বন-১৪, ইউরেনিয়াম-২৩৬, আয়োডিন-১৩০ ইত্যাদি রেডিও আইসোটোপ। কার্বন-১৪ এর অর্ধায়ু ৫৭৩০ বছর। ইউরেনিয়াম-২৩৮ এর অর্ধায়ু ৪৫০ কোটি বছর। গলগন্ড রোগ নির্ণয়ে আইসোটোপ ব্যবহৃত হয়। রেডিও আইসোটোপ থেকে নির্গত গামা রশ্মি টিউমার, ক্যান্সার প্রভৃতি রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।

 

আলফা, বিটা ও গামা রশ্মি (Alfa, Beta and Gamma rays)

আলফা (α): এটি একটি হিলিয়াম নিউক্লিয়াস বা দ্বি-আয়নিত হিলিয়াম পরমাণু। আলফা রশ্মি ধনাত্মক আধানযুক্ত। এই রশ্মি চৌম্বক ও তড়িৎ ক্ষেত্র দ্বারা বিচ্যুত হয়।

 

বিটা (β): এই রশ্মি অতি উচ্চ দ্রুতি সম্পন্ন ইলেকট্রনের প্রবাহ। বিটা রশ্মি ঋণাত্মক আধানযুক্ত। এই রশ্মি চৌম্বক ও তড়িৎ ক্ষেত্র দ্বারা বিক্ষিপ্ত হয়।

 

গামা (γ): গামা রশ্মি অত্যন্ত ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্যের তাড়িত চৌম্বক বিকিরণ। এর কোনো চার্জ বা ভর নেই এবং ইহা চৌম্বক ক্ষেত্র দ্বারা বিক্ষিপ্ত হয় না। এটি জীবজগতের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। তবে টিউমার, ক্যান্সার প্রভৃতি রোগের চিকিৎসায় এ রশ্মি ব্যবহার করা হয়। ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যবহৃত গামা বিকিরণের উৎস হলো আইসোটোপ।

 

 

 

Content added by
Promotion