কোনটি রক্তনালীর সংকোচন ঘটিয়ে রক্তপাত হ্রাস করে?

Created: 6 months ago | Updated: 1 month ago
Updated: 1 month ago

রক্ত জমাট বাঁধা বা রক্ত তঞ্চন (Blood Clotting):

যে প্রক্রিয়ায় ক্ষতস্থান থেকে নির্গত হওয়া রক্তের প্লাজমা থেকে ফাইব্রিনোজেন আলাদা হয়ে ক্ষতস্থানে জালক নির্মাণের মাধ্যমে রক্তপাত বন্ধ করে ফলে রক্তের অবশিষ্টাংশ থকথকে পিত্তে পরিণত হয় সে প্রক্রিয়ার নাম রক্ত তঞ্চন বা রক্তের জমাট বাঁধা।

রক্তবাহিকার অভ্যন্তরে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে না, কারণ সেখানে হেপারিন (heparin) নামে এক পদার্থ সংব হয়। কিন্তু দেহের কোনও অংশে ক্ষত সৃষ্টি হলে রক্ত যখন দেহের ক্ষত অংশ থেকে বের হতে থাকে তখন ঐ অনে অণুচক্রিকাগুলো বাতাসের সংস্পর্শে ভেঙ্গে যায় এবং ক্ষতের মুখে রক্ত জমাট বাঁধিয়ে রক্তপাত বন্ধ করে। ব্রুক্তরসে অবস্থিত ১৩টি ভিন্ন ভিন্ন ক্লটিং ফ্যাক্টর (clotting factor) রক্ত তঞ্চনে অংশ নেয়। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ৪টি ফ্যাক্টর হলো-

ক. ফাইব্রিনোজেন, 
খ.প্রোথ্রম্বিন, 
গ. থ্রম্বোপ্লাস্টিন ও 
ঘ. Ca++


এগুলোর ধারাবাহিক কার্যকারিতার ফলে ক্ষতস্থানে রক্ত জমাট বাঁধে। সংক্ষেপে রক্ত জমাট বাঁধার কৌশলটি তুলে ধরা হলো-  
১.দেহের কোন অংশে ক্ষত সৃষ্টি হলে সেখান থেকে নির্গত রক্তের অনুচক্রিকাগুলো বাতাসের সংস্পর্শে এসে ভেঙ্গে যায় এবং প্রস্বোপাস্টিন
(thromboplastin; ক্লটিং ফ্যাক্টর) নামক প্লাজমা প্রোটিন উৎপন্ন হয়।

২.থ্রম্বোপ্লাস্টিন রক্তের হেপারিনকে অকেজো করে দেয় এবং রক্তরসে অবস্থিত ক্যালসিয়াম আয়নের উপস্থিতিতে প্রোথ্রম্বিন (prothrombin) নামক গ্লাইকোপ্রোটিনের সাথে ক্রিয়া করে সক্রিয় থ্রম্বিন (thrombin) এনজাইম (ক্লটিং ফ্যাক্টর)  উৎপন্ন করে।

৩.থম্বিন রক্তে অবস্থিত ফাইব্রিনোজেন (fibrinogen; ক্লটিং ফ্যাক্টর I) নামক দ্রবণীয় প্লাজমা প্রেটিনের সাথে মিলে ফাইব্রিন (fibrin) নামক অদ্রবণীয় প্রোটিন সূত্রের সৃষ্টি করে। এভাবে সৃষ্ট সূত্রগুলো পরস্পর মিলিত হয়ে জালকের আকার ধারণ করে।

৪.ফাইব্রিনের জালকে লোহিত রক্তকণিকাগুলো আটকে যায়। ফলে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয় এবং রক্ত জমাট বেঁধে যায় (মানুষে রক্ত জমাট বাঁধার স্বাভাবিক সময় ৪-৫ মিনিট)।

সিরামঃ জমাট বাঁধা রক্ত থেকে যে হালকা হলুদ বর্ণের তরল জলীয় অংশ বেরিয়ে আসে তাকে রক্তের সিরাম (serum) বলে। সিরাম বস্তুতপক্ষে রক্তরস, তবে এতে ফাইব্রিনোজেন থাকে না।

Content added By
Promotion