ব্যবসা বাণিজ্য বা কেনাবেচায় ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করা দিনে দিনে বাড়ছেই। জীবনকে সহজ করতে আমরা ইন্টারনেট বা অনলাইন ভিত্তিক এই কেনাবেচাকে ই-কমার্স বলি। অর্থাৎ ই-কমার্স বা ইলেকট্রনিক কমার্স একটি ব্যবসায়িক মডেল, যেখানে পণ্য এবং সেবার বিনিময় ইন্টারনেট বা অনলাইন মাধ্যমে হয়।
বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন ই-কমার্সের মাধ্যমে সেবা দিচ্ছে, আবার ছোট ছোট প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি পর্যায়ের ব্যবসায়িক সেবাও এখন অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের পণ্য বিক্রি করছেন। নিজেরা বা আমাদের পরিচিত কারো ই-কমার্সের মাধ্যমে কেনাকাটার অভিজ্ঞতা থাকলে এবার সেগুলোর কয়েকটি উদাহরণ নিচের ছকে লিখি -
পণ্যের নাম | পণ্যের ধরন |
বই
| শিক্ষা |
| |
| |
| |
|
ছক-৩.৩: ই-কমার্স পণ্য ও ধরন
উপরের তালিকায় যেসব পণ্যগুলো ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে কেনা হলো তার সবই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কিনেছি। এভাবে কেনাকাটা হলো ই-কমার্সের একটা ধরন (ব্যবসায়ী থেকে ভোক্তা)। নিচের তিনটি ঘটনা আমরা প্রত্যেকে নীরবে পাঠ করে ই-কমার্সের আরো কয়েকটি ধরন সম্পর্কে জানব।
দিপুর বাবা খাইরুল সাহেব আধুনিক শপিং সেন্টারে ছেলেদের পোশাক বিক্রি করেন। তিনি ঢাকার চকবাজার থেকে নিজে গিয়ে পাইকারিতে পণ্য কিনে অল্প লাভে বেশি বিক্রি করতেন। কিন্তু পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এখন অনলাইনে পণ্যের জন্য অর্ডার করলে অল্প খরচে পার্সেলের মাধ্যমে চকবাজার থেকে পাইকারি বিক্রেতা পণ্য পাঠিয়ে দেয়। ফলে খাইরুল সাহেব আগের মতোই অল্প লাভে পণ্য বিক্রি করতে পারছেন
সুজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন যে ঢাকা শহরের মধ্যে কেউ যদি ব্যবহৃত পুরনো ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী বিক্রি করতে চান তাহলে যেন তার সাথে যোগাযোগ করেন। প্রায় প্রতিদিনই কেউ না কেউ সুজনকে জানালে তিনি ব্যবহারযোগ্য মালামাল পার্সেলের মাধ্যমে সংগ্রহ করেন। সংগ্রহকৃত মালামাল কিছুটা মেরামত করে পুনরায় বিক্রয়যোগ্য করা হয়।
তমালের মা অপরূপা বাসার জন্য একটা ফ্রিজ কিনেছিলেন। কিন্তু কিছুদিন ব্যবহার করে দেখলেন যে তার এরচেয়ে বড় আকারের একটি ফ্রিজ দরকার। তাই আন্নাফীর মা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আইডি থেকে কেনাবেচার একটি পেইজে কেনা দামের চেয়ে কমে বিক্রির জন্য পোস্ট দিলে আগ্রহী একজন সেটি কিনে নিলেন। কিছুদিনের মধ্যে অপরূপা তারই মতো আরেকজনের কাছ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে নিজের জন্যও পছন্দ মতো একটি ফ্রিজ অল্প দামে কিনে ফেললেন।
এই প্রতিটি ঘটনা থেকে আমরা জানলাম যে ই-কমার্সের ধরন মূলত ব্যবসায়ী আর ক্রেতা বা ভোক্তার যোগাযোগের উপর ভিত্তি করে হয়। নিচের চারটি ঘরে উপরের তথ্য ও ডানের তথ্য সমন্বয় করে ধরন বা শ্রেণিকরণের নাম চারটি ঘরে লিখি। সবার সুবিধার জন্য প্রথম ঘরটি পূরণ করে দেওয়া হল-
উপরের ঘর পূরণের মাধ্যমে আমরা ই-কমার্সের চারটি শ্রেণিকরণ পাই। অর্থাৎ যোগাযোগ ও পণ্য আদান প্রদানের উপর ভিত্তি করে এই শ্রেণিকরণ হয়। নিচের ছকে ই-কমার্সের চারটি ধরনের নাম ও এদের বর্ণনা লিখি-
ক্রেতার চাহিদার উপর ভিত্তি করে ই-কমার্সের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। চাহিদা বিবেচনা না করে ইচ্ছে মতো ই-কমার্সের উদ্যোগ নিলে সফল হওয়া যায় না। এজন্য দরকার চাহিদা নিরূপণ ও পরিকল্পনা। যেকোনো একটা উদ্যোগ শুরু করলেই হবে না, তার আগে টার্গেট গ্রুপ ও প্রেক্ষাপট বিবেচনা করা জরুরি। আমাদের আগামী সেশনে নাগরিক বা ই-কমার্সের উদ্যোগ গ্রহণের আগে চাহিদা নিরূপণ ও শর্তাবলি যাচাইয়ের জন্য কিছু কাজ করব।
আরও দেখুন...