একনায়কতান্ত্রিক রাষ্ট্রের দোষ

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - পৌরনীতি ও নাগরিকতা - রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থা | NCTB BOOK

একনায়কতন্ত্র চরম স্বেচ্ছাচারী ব্যবস্থা। এর দোষগুলো নিম্নরূপ ।

১. গণতন্ত্রবিরোধী : একনায়কতন্ত্র গণতন্ত্র বিরোধী । এটি ব্যক্তি-স্বাধীনতাকে স্বীকার করে না, যা গণতন্ত্রের মূল কথা । এটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার খর্ব করে । ফলে ব্যক্তিত্বের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয় ৷

২. স্বৈরাচারী শাসন : একনায়কতন্ত্র স্বৈরাচারী শাসন প্রতিষ্ঠা করে । কারণ একনায়ককে কারও নিকট জবাবদিহি করতে হয় না । তার কথাই আইন। এতে ব্যক্তির স্বাধীন চিন্তা ও মুক্ত বুদ্ধি চর্চার সুযোগ নেই । একনায়কতন্ত্র বস্তুত একটি স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা ।

৩. নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক চেতনা সৃষ্টির অন্তরায় : এ শাসন ব্যবস্থা একক নেতার নেতৃত্বে চলে বলে বিকল্প নেতৃত্ব গড়ে উঠার সুযোগ থাকে না । আবার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জনগণের অংশগ্রহণের সুযোগ না থাকায় রাজনৈতিক সচেতনতাও তৈরি হয় না ।


8. বিপ্লবের সম্ভাবনা : এ শাসন ব্যবস্থায় জনগণের অংশগ্রহণ নেই বলে সর্বদা বিপ্লবের ভয় থাকে। অভ্যন্তরীণ বিরোধিতা ও গণ-অসন্তোষের কারণে একনায়কতন্ত্র বেশি দিন টিকতে পারে না ।


৫. বিশ্বশান্তির বিরোধী : একনায়কতন্ত্রে উগ্র জাতীয়তাবোধ ধারণ ও লালন করা হয় । ক্ষমতার লোভ একনায়কের মধ্যে যুদ্ধংদেহী মনোভাব সৃষ্টি করে। হিটলার এ ধরনের মনোভাব পোষণ করে সারা পৃথিবীতে ধ্বংস ডেকে এনেছিলেন। এ ধরনের মনোভাব আন্তর্জাতিক শান্তির পরিপন্থী ।
একনায়কতান্ত্রিক ব্যবস্থা ব্যক্তিকে রাষ্ট্রের বেদীমূলে উৎসর্গ করে । এখানে ব্যক্তি রাষ্ট্রের জন্য, রাষ্ট্র ব্যক্তির
জন্য নয় । তাই বর্তমান বিশ্বে কোনো রাষ্ট্র একনায়ককে সমর্থন করে না ।

Promotion