এই শিখনফল অর্জনের মাধ্যমে আমরা এরার কন্ডিশনিং ইউনিটের লিকেজ নির্ণর ও রেফ্রিজারেন্ট চার্জ করণ, উইন্ডো টাইপ এয়ার কুলারের এবং স্প্লিট টাইপ এসির ত্রুটির কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানব ।
এয়ার কন্ডিশনিং ইউনিট বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রে লিকেজ নির্ণয় ও রেফ্রিজারেন্ট চার্জ করতে হলে নিম্নলিখিত কাজগুলো ধারাবাহিক ভাবে সম্পন্ন করতে হয়-
রেফ্রিজারেন্ট চার্জিং ঠিক আছে বোঝার উপায়
রেফ্রিজারেন্ট বা হিমায়ক চার্জ বেশি হলে বোঝার উপায়
এয়ার কন্ডিশনারের ক্ষেত্রে নিন্মলিখিত বিষয় সমূহ বিবেচনা করা অত্যন্ত প্রয়োজন:
ঘরের মাপ অনুযায়ি মিলিয়ে কত টনের AC প্রয়োজন হবে তা নিচের তালিকা থেকে মিলিয়ে নেই
উইন্ডো টাইপ এয়ার কুলারের বিভিন্ন ধরনের ত্রুটির কারণগুলো নিচে বর্ণনা করা হল ।
এয়ার কুলার চলে কিন্তু ঠান্ডা কম হওয়ার কারণ-
এয়ার কুলার না চলার কারণ-
এয়ারকুলার চালু করার সাথে সাথে ফিউজ জ্বলে যায় বা সার্কিট ব্রেকার ট্রিপ করার কারণ-
এয়ারকুলারের কুলিং কয়েল বা ইভাপোরেটরে বরফ জমার কারণ-
এয়ার কুলার থেকে বাতাস (Air) না পাওয়ার কারণ
এয়ারকুলার চালালে খুব বেশি শব্দ হওয়ার কারণ-
উইন্ডো টাইপ এয়ার কুলারের ত্রুটির তালিকা
এয়ার কুলার চলে কিন্তু ঠান্ডা কম হয়- তার প্রতিকার
ফিল্টার ময়লাযুক্ত হলে বাতাস প্রবাহের হার কমে যায়। এই ক্ষেত্রে ফিল্টার পরিষ্কার করলে বা বদলিয়ে দিলে এয়ার কুলার থেকে ভালো ঠান্ডা পাওয়া যাবে। থার্মোস্ট্যাট (Th.) ক্রুটি যুক্ত হলে এ রূপ হতে পারে। থার্মোস্ট্যাট খুলে পরীক্ষা করতে হবে। থার্মোস্ট্যাট এ্যাডজাস্ট করা না গেলে পরিবর্তন করতে হবে। হিমায়ক বা রেফ্রিজারেন্ট কমে গেলে ঠান্ডা কমে যেতে পারে। রেফ্রিজারেন্ট কমে যাওয়ার কারণ খুঁজে বের করতে হবে অর্থাৎ লিক শনাক্ত করতে হবে। লিক মেরামত করে বায়ুশূন্য/ ভ্যাকুয়াম করে হিমায়ক চার্জ করতে হবে। কম্প্রেসরের পাম্পিং কমে গেলে কম্প্রেসর পরিবর্তন করে নতুন কম্প্রেসর লাগাতে হবে এবং বায়ুশূন্য করে সঠিক পরিমান রেফ্রিজারেন্ট/ হিমায়ক চার্জ করতে হবে। কন্ডেনসার ও ইভাপোরেটরে ময়লা জমলে পরিষ্কার করতে হবে। ভোল্টেজ কম হলে স্বাভাবিক ভোল্টেজের ব্যবস্থা করতে হবে।
এয়ার কুলার চলে না- তার প্রতিকার
বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকলে ফিউজ, সার্কিট ব্রেকার, প্লাগ পয়েন্ট, মেইন সাপ্লাই পরীক্ষা করতে হবে। সমস্যা সমাধান করে বিদ্যুৎ সাপ্লাই/সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। ভোল্টেজ কম হলে স্বাভাবিক ভোল্টেজের ব্যবস্থা করতে হবে। সার্কিট খোলা আছে কিনা পরীক্ষা করার জন্য অ্যাভোমিটারে (AVO) ওহমে (S2) সেট করতে হবে এবং প্লাগ পয়েন্ট,সিলেক্টর-সুইচ, ওভার লোড প্রটেক্টরের সংযোগগুলো পরীক্ষা করে ত্রুটি বের করে সে মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ক্যাপাসিটর খারাপ হলে, তা পরিবর্তন করতে হবে। মোটরে গোলযোগ থাকলে পরিবর্তন করতে হবে। সিলেক্টর সুইচ ক্রুটি আছে কিনা পরীক্ষা করতে হবে, ত্রুটি আছে নিশ্চিত হলে পরিবর্তন করতে হবে।
এয়ার কুলার চালু করার সাথে সাথে ফিউজ জ্বলে যায় (সার্কিট ব্রেকার ট্রিপ করা) -তার প্রতিকার
ক্যাপাসিটর শর্ট হলে পরিবর্তন করতে হবে, মোটর জ্বলে গেলে পরিবর্তন করতে হবে। লাইনে শর্ট সার্কিট থাকলে পরীক্ষা করে শর্ট সার্কিট বের করে মেরামত করে ইউনিট চালু করতে হবে। এসি লাইন বা মোটরের ভেতর শর্ট সার্কিট হয়ে থাকতে পারে। ভালোভাবে পরিক্ষা করে মেরামত করতে হবে। প্রয়োজন হলে মোটর বদলাতে হবে। কারেন্ট প্লাগ বা সংযোগ কডের মধ্যে দুই লাইন একসাথে লেগে থাকতে পারে ৷
এয়ার কুলারের কুলিং কয়েল বা ইভাপোরেটরে বরফ জমে- তার প্রতিকার
ব্লোয়ার মোটর না ঘুরলে তা পরীক্ষা করে না ঘুরার কারণ বের করতে হবে। ক্যাপাসিটর দুর্বল হলে বদলাতে হবে, ওয়্যান্ডিং-এ ত্রুটি থাকলে মোটর পরিবর্তন করতে হবে। ফিল্টার ও ইভাপোরেটরে ময়লা থাকলে পরিষ্কার করতে হবে ।
এয়ার কুলার থেকে বাতাস (Air) কম পাওয়া- তার প্রতিকার
ব্লোয়ার ফ্যান মোটর খারাপ হলে পরিবর্তন করতে হবে। ফ্যান বুশ বিয়ারিং খারাপ হলে ফ্যান বুশ বদলাতে হবে। ক্যাপাসিটর দুর্বল হলে তা পরিবর্তন করতে হবে। ফিল্টার ও ইভাপোরেটর ময়লায় জ্যাম হলে পরিষ্কার করতে হবে।
এয়ার কুলার চালালে খুব বেশি শব্দ হয় - তার প্রতিকার
মোটরের বুশ খারাপ হলে বদলাতে হবে। ফ্যান ব্লেড বাঁকা বা ভাঙ্গা হলে ফ্যান ব্লেড বদলাতে হবে। ফ্যান মোটর বা ব্লেড ঢিলা হলে যথাযথভাবে বদলাতে হবে এবং টাইট দিতে হবে। ব্লেড যথাস্থানে বসানো না থাকলে যথাস্থানে বসাতে হবে। কম্প্রেসর মাউন্টিং বোল্ড ঢিলা হলে টাইট দিতে হবে। ভোল্টেজ ওঠানামা করার কারণে এয়ার কুলার ঝাঁকুনি দিলে এয়ার কুলার বন্ধ রাখতে হবে। ভোল্টেজ স্বাভাবিক হলে আবার এয়ার কুলার (AC) চালাতে হবে ।
উইন্ডো টাইপ এয়ার কুলার মেরামত খরচের হিসাব
কথায়: পাঁচ হাজার পাঁচশত টাকা মাত্র
নোট: ভ্যাট প্রযোজ্য হলে বিলে সংযোজন করতে হবে।
স্প্লিট টাইপ এয়ার কন্ডিশনারের রক্ষণাবেক্ষণ
১. এয়ার ফিল্টার পরিষ্কার করা বা পরিবর্তন করা ।
২. ফ্যান মোটরের বুশ বিয়ারিং যথানিয়মে তেল দেয়া
৩. বুশ বিয়ারিং মেরামত বা পরিবর্তন করা ।
৪. ক্যাপাসিটর পরীক্ষা করা এবং প্রয়োজন হলে বদলানো ।
৫. বৈদ্যুতিক লাইন ও সংযোগসমূহ পরীক্ষা ও মেরামত করা ।
৬. ফ্যান ব্লেড মেরামত করা ।
৭. ইভাপোরেটর এবং কন্ডেনসারের ফিন্স সোজা করা।
৮. রিমোট পরীক্ষা করা ।
৯. ওভার লোড প্রটেক্টর, রীলে, ম্যাগনেটিক কন্ট্রাক্টর পরীক্ষা করা এবং নষ্ট হলে তা মেরামত বা বদলানো ।
১০. সরবরাহ/ সাপ্লাই ভোল্টেজ পরিমাপ করা ।
১১. রেফ্রিজারেন্ট/হিমায়ক চার্জ করা ।
স্প্লিট টাইপ এয়ার কন্ডিশনারের মাসিক ও বাৎসরিক রক্ষণাবেক্ষন
মাসিক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কাজ খুব কম সময়ের ফ্রন্ট গ্রিল এবং ফিল্টার পরিষ্কার করা। পরিষ্কার করার কাজে হাল্কা ডিটারজেন্ট মিশ্রিত পানি ব্যবহার করতে হবে। বৈদ্যুতিক প্লাগ পরীক্ষা করে দেখতে হবে তারের সংযোগ ঢিলা কিনা। সংযোগ ঢিলা হলে টাইট করে দিতে হবে। বাৎসরিক রক্ষণাবেক্ষণ বলতে সার্ভিসিং বোঝায়। ইনডোর ইউনিট খুলে প্রথমে কম্প্রেসড এয়ার বা ডাস্ট ব্লোয়ার দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। ইনডোর ইউনিট এর সুইং মোটর, গ্রিল ব্লোয়ার ফ্যান খুলতে হবে। কুলিং কয়েল আলাদা করতে হবে। সেগুলো আলাদা আলাদা পরিষ্কার করতে হবে। ভালোভাবে যাচাই ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে । নষ্ট হলে তা বদলাতে হবে। তারপর নির্মাতার নির্দেশনা মোতাবেক ফিটিং করতে হবে। চালু করে তা পরীক্ষা করতে হবে। বৈদ্যুতিক সংযোগগুলো পরীক্ষা করতে হবে। সেন্সর বোর্ড পরীক্ষা করতে হবে। কার্যদক্ষতা/ইফিসিয়েন্সি পরীক্ষা করতে হবে। যদি ত্রুটি থাকে তাহলে মেরামত বা বদলাতে হবে। আউটডোর এর ফ্যান মোটর, ফিন্স ইত্যাদি কেসিং থেকে আলাদা করতে হবে। ডিটারজেন্ট মিশ্রিত পানি দিয়ে কম্প্রেসর পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। কম্প্রেসড এয়ার (ব্লোয়ার) দিয়ে শুকাতে হবে। বৈদ্যুতিক/ ইলেকট্রিক কানেকশন সমূহ পরীক্ষা করতে হবে। ত্রুটি হলে তা মেরামত করতে হবে বা বদলাতে হবে। পরিশেষে ইনডোর আউটডোর এবং অন্যান্য অংশ পুণঃস্থাপন করে রেফ্রিজারেন্ট বা হিমায়ক চার্জ করতে হবে। এয়ার কন্ডিশনার চালিয়ে পূর্বের কার্যক্ষমতার সাথে তুলনা করা তথা পারফরম্যান্স যাচাই করতে হবে ।
আরও দেখুন...