৭ম শ্রেণিতে আমরা জেনেছি কীভাবে যোগাযোগ করতে হয় এবং নিয়ম মেনে কীভাবে ই-মেইল লিখতে হয়। আমরা আরো জেনেছি কীভাবে প্রযুক্তির পরিবর্তনের ফলে আমাদের পারিপার্শ্বিক আরো অনেক কিছু পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে এবং কীভাবে সেই পরিবর্তনগুলোর ইতিবাচক দিকগুলোকে গ্রহণ করতে হয়। এবার আমরা ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে কীভাবে শিষ্টাচার বজায় রেখে যোগাযোগ করা যায় তা জানব, সেই সাথে এশিয়া প্যাসিফিক পরিমন্ডলে যোগাযোগের পাশাপাশি সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক আর কোন কোন ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে কী কী ধরনের পরিবর্তন এসেছে তা পর্যালোচনা করে একটি নীতিমালা তৈরি করব। সবশেষে আমরা একটা অনলাইন মেলারও আয়োজন করব।
৭ম শ্রেণিতে আমরা আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ সম্পর্কে জেনেছিলাম। এবার আমরা আলোচনা করব প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ সম্পর্কে। প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ হলো আনুষ্ঠানিক যোগাযোগেরই একটি ধরন যেখানে আমরা আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনো প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করি। আমাদের পরিবারের বড়রা সবসময়ই নানাভাবে প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ করছে। কিন্তু আমরাও যে প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ করি, বা করতে পারি, তা কি আমরা জানি? এসো তাহলে খুঁজে দেখি আমাদের জীবনে আমরা কী কী ভাবে প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ করি বা করতে পারি। পাশের বন্ধুর সাথে আলোচনা করে এসো নিচের উদাহরণের মতো করে আমাদের নিজেদের জীবনের প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগের আরো কয়েকটি উদাহরণ লিখে ফেলি।
আমার জীবনে প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ-
১। অন্য কোনো বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণিতে ভর্তির নিয়ম জানতে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষকের কাছে ই-মেইল পাঠানো
২।
৩।
8।
৫।
৬। লেখা শেষ হলে এবার এসো বাকি বন্ধুদের সাথে মিলিয়ে দেখি আমরা কে কী লিখেছি। এবার নিচের তালিকাটি লক্ষ করি। এসো নিচের তালিকাটি থেকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করি যে কোনগুলো প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ আর কোনগুলো প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ নয়।
প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ নয় এমন যোগাযোগগুলোতে ক্রস (X) চিহ্ন দিই-
তাহলে প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ কোনগুলো তা তো আমরা বুঝতে পারলাম। কিন্তু অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগের সাথে এ ধরনের যোগাযোগের পার্থক্যটা কী তা কি আমরা জানি? এবার তাহলে সেটা জেনে নেওয়া যাক।
অনিক অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। আজ সারাদিনে সে বন্ধুকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বার্তা পাঠিয়েছে, বাবাকে ফোনে বার্তা পাঠিয়েছে, এবং ওর এলাকার পাঠাগারে একটি ই-মেইল পাঠিয়েছে। নিচের তিনটি ছবিতে অনিকের পাঠানো ই-মেইল আর বার্তাগুলো দেখা যাচ্ছে। চিত্রগুলো ভালভাবে লক্ষ করে দেখি প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগের সাথে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগের কোনো পার্থক্য খুঁজে পাই কিনা-
বন্ধুকে পাঠানো বার্তা-
বাবাকে ফোনে পাঠানো বার্তা -
পাঠাগারে পাঠানো ই-মেইল-
To: library.abe@xyz.com From: anik.ahmed@xyz.com Subject: বই ফেরত দেওয়ার সময় বৃদ্ধিকরণ জনাব, আমি অনিক আহমেদ, আপনাদের পাঠাগারের একজন সদস্য। গত ১০ জুলাই আমি পাঠাগার থেকে "রবীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড" বাড়িতে পড়ার জন্য নিয়েছিলাম। আজ ১৭ জুলাই বইটি ফেরত দেওয়ার কথা থাকলে আমি বইটি এখনো পড়ে শেষ করতে পারিনি। এমতাবস্থায় আমি বইটি ফেরত দেওয়ার জন্য আরো এক সপ্তাহ সময় চাইছি। আশা করি আপনারা আমার বই ফেরত দেওয়ার সময় বৃদ্ধি করে বাধিত করবেন। ধন্যবাদ, অনিক আহমেদ সদস্য নম্বর: ২১০৬৩৪৫
|
উপরের চিত্রগুলোতে প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগের সাথে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগের কী কী পার্থক্য খুঁজে পেলাম তা নিচের ঘরে লিখি।
প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ | অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ |
১। প্রতিষ্ঠানের সময়সূচি অনুসারে যোগাযোগ করতে হয়
| ১। যেকোনো সময় যোগাযোগ করা যায়
|
২।
| ২।
|
৩।
| ৩।
|
৪।
| ৪।
|
৫।
| ৫।
|
তাহলে প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগের সাথে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগের বেশ কিছু পার্থক্য আমরা খুঁজে পেলাম। এছাড়া বাংলা এবং ইংরেজি বিষয়েও আমরা যোগাযোগের বিভিন্ন ধরন এবং সেগুলোর মধ্যে পার্থক্য সম্পর্কে জেনেছি। এবার তাহলে নিচের ঘটনাগুলোর কোনটি প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য তা সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পারি কিনা দেখি। সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পারলে আমরা প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগের আরো কিছু বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জেনে যাব।
ঘটনা | প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কিনা |
১। প্রতিষ্ঠানের সময়সূচী অনুসারে যোগাযোগ করতে হয়
| প্রযোজ্য
|
২। স্পষ্টভাবে যোগাযোগের কারণ উল্লেখ করা
| প্রযোজ্য
|
৩। যোগাযোগের ক্ষেত্রে কী বলতে হবে বা জানতে চাওয়া হবে তা আগে থেকে ঠিক করে নেওয়া
| ৩।
|
৪। দিনের যেকোনো সময় যোগাযোগ করা
| ৪।
|
৫। যোগাযোগটির ক্ষেত্রে সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য মাধ্যম কোনটি তা নির্ধারণ করে নেওয়া (যেমন ফোনে কল করা হবে, নাকি বার্তা পাঠানো হবে, নাকি ই-মেইল করা হবে)
| ৫।
|
আগামী সেশনের প্রস্তুতি:
আগামী সেশনে আমরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে কী কী শিষ্টাচার মেনে চলতে হয় তা জানব। তাই আগামী সেশনের প্রস্তুতি হিসেবে আজকের সেশন থেকে শেখা প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগের বিভিন্ন নিয়মের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে আরো কী কী নিয়ম মেনে চলতে হতে পারে তা আমরা নিজেরা চিন্তা করে বা বড় কারো সাহায্য নিয়ে একটু জানার চেষ্টা করব।
আগের সেশনে আমরা প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগের বিভিন্ন ধরন এবং প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগের সাথে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগের পার্থক্য নির্ণয় করেছি। এবারের সেশনে আমরা আলোচনা করব আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কীভাবে শিষ্টাচার বজায় রেখে প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ করতে হয় সেই বিষয়ে। তবে তার আগে একটু যাচাই করে দেখি, গত সেশনে আমরা যা যা শিখেছি তা আমাদের মনে আছে কি না।
প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে আমরা কোন কোন কাজগুলো করব আর কোনগুলো করব না তা এসো পাশের বন্ধুর সাথে আলোচনা করে নিচের ঘরগুলোতে লিখে ফেলি-
এখন তো আমরা জানি প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে আমাদের কী কী করতে হবে আর কী কী করা যাবে না, তাই না? তবে আমরা গত সেশনে যা যা জেনেছি তা সবই আমাদের নিজেদের দেশে যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কিন্তু আমরা যদি আমাদের দেশের বাইরে অন্য দেশের কারো সাথে প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ করতে চাই, তাহলে আমরা কী করব? অন্য দেশের কারো সাথে প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগের ক্ষেত্রেও আমরা যা যা নিয়ম জেনে এসেছি সেগুলো মেনে চলব। কিন্তু সেই সাথে আমাদের আরো কয়েকটি বিষয়ে লক্ষ রাখতে হবে। এবার তাহলে সেগুলো সম্পর্কে জেনে নিই।
এখন আমরা ৪টি ই-মেইল পড়ব যেখানে বাংলাদেশের একজন শিক্ষার্থী ভারত, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপানের ৪টি বিদ্যালয়ের ৪জন প্রধান শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করেছে। এসো ই-মেইলগুলো পড়ি, এবং সেগুলোতে কী কী পার্থক্য রয়েছে তা লক্ষ করি -
From: sarah.islam@mail.com To: anim.biswas@mail.com Subject: Request for admission in online cultural exchange program
Dear Sir, I am Sarah Islam, a high school student from Bangladesh. I am writing to express my interest in joining the online cultural exchange program of your school and learn about the cultural diversity of India. I look forward to attending this program. Regards, Sarah Islam Student ABC School Bangladesh
|
From: sarah.islam@mail.com To: akira.hayashi@mail.com Subject: Request for admission in online cultural exchange program
Dear Hayashi Sensei, I am Sarah Islam, a high school student from Bangladesh. I am writing to express my interest in joining the online cultural exchange program of your school and learn about the cultural diversity of Japan. I look forward to attending this program. Regards, Sarah Islam Student ABC School Bangladesh
|
ই-মেইলগুলোর মাঝে মূল পার্থক্য কোথায় চিহ্নিত করে নিচের ছকে লিখি-
ভারতে পাঠানো ই-মেইল | যুক্তরাজ্যে পাঠানো ই-মেইল | যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো ই-মেইল | জাপানে পাঠানো ই-মেইল |
|
|
|
|
এবার এসো নিচের গল্পটি পড়ি-
রাবেয়া তার বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি আন্তর্জাতিক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য ইংল্যান্ডে যাচ্ছে। কিছু বিষয়ে ভালভাবে জানার জন্য সে বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজকদের একজনকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি বার্তা পাঠাল, "Hi, I am Rabeya from Bangladesh. I need some information about the debate competition." কিছুক্ষণ পর সে উত্তর পেল, "Hi, I am available to help you today at 2pm CET. Call me at that time." রাবেয়া দেখল তখন তার ঘড়িতে দুপুর ২টা বাজে, তাই সে তখনই নম্বরটিতে কল করল। কিন্তু ওপাশ থেকে কলটি কেটে দেওয়া হলো। কিছুক্ষণ পর রাবেয়া আরেকটি বার্তা পেল যেখানে লেখা, "Please call me at 2pm CET, not now." রাবেয়া কিছু বুঝতে না পেরে যখন তার বড় আপুকে বার্তাটির দেখাল তখন আপু তাকে বুঝিয়ে দিল যে CET মানে Central European Time। বাংলাদেশের সময় আর সেন্ট্রাল ইউরোপিয়ান সময় এক নয়, তাই যখন বাংলাদেশে দুপর ২টা, তখন আসলে সেন্ট্রাল ইউরোপিয়ান সময়ে দুপুর ২টা নয়।
|
উপরের গল্পটি থেকে আমরা বিদেশে প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি বিশেষ শিষ্টাচার বা সতর্কতা সম্পর্কে জানলাম। সেটি কী তা নিচের ঘরে লিখি-
|
এবার এসো নিচের ছকের পরিস্থিতিগুলো পর্যালোচনা করি। এখানে কয়েকটি পরিস্থিতি দেওয়া আছে যেখানে আন্তর্জাতিক যোগাযোগ করা হয়েছে। আমাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে যে এই পরিস্থিতিগুলোতে আন্তর্জাতিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে কী কী ভুল করা হয়েছে। এসো তাহলে কাজটি করে ফেলি
পরিস্থিতি | কী ভুল হয়েছে? |
হাসান সাহেবের একটি ব্যবসায়িক কাজে আমেরিকায় একজন ব্যক্তির সাথে মিটিং করা প্রয়োজন। তিনি তাই সেই ব্যক্তির মোবাইল ফোনে কল করলেন। এক মিনিট কথা বলার পরই ফোন কেটে গেল আর হাসান সাহেব দেখলেন তার ফোনের সব টাকা শেষ।
| |
কবিতা ইংল্যান্ডের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাচ্ছে। কিছু ব্যাপারে ভালভাবে জানতে সে বিশ্ববিদ্যালয়টির আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী উপদেষ্টাকে ইংল্যান্ডের সময় হিসাবে না করেই, বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টায় কল করল।
| |
১০ম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী অনেকদিন ধরে বিদেশের কলেজে বৃত্তি নিয়ে পড়ার জন্য আবেদন করছিল। আজকে একটি কলেজ থেকে ই-মেইলে জানানো হলো যে সে ভর্তির সুযোগ পেলেও কোনো বৃত্তি পায়নি। সে সেই ই-মেইল এর উত্তরে লিখল "Why didn't I get the scholarship? I tried really hard for the scholarship. I am very sad."
| |
একজন ব্যক্তি বিদেশ থেকে একটি পণ্য অর্ডার করেছিল। পণ্যটি কুরিয়ারের মাধ্যমে গতকাল তার কাছে পৌঁছানোর কথা থাকলে আজও সে পণ্যটি হাতে পায়নি। তাই সে কুরিয়ার সার্ভিসে নিচের ই-মেইলটি পাঠাল- To: parceldelivery123@mail.com From: abcdefg@mail.com Subject: Lost Pkg - Need Help ASAP Hi, Hope u r doing gr8. My pkg iz lost & I need help. I ordered this really imp thing & it was supposed 2 reach yestrdy. But guess what? It didn't. So, find it & send 2 me ASAP. Thanx 4 help. Bye.
| |
বিদেশের একটি কলেজে ভর্তির প্রক্রিয়া জানতে এক শিক্ষার্থী সেই কলেজের ওয়েবসাইটের তথ্য জানতে চাওয়ার অংশে তার ই-মেইল ঠিকানাসহ কিছু প্রশ্ন পোস্ট করল এবং সাথে সাথেই এই ই-মেইলটি পেল- Thank you for your mail. Please visit http://www. ouruniversity.com/admissioninfo for admission related information and http://www.ouruniversity. com/scholarshipinfo for information about our different scholarships.
| |
You can also visit http://www.ouruniversity.com/ contactus for any other query. Please do not reply to this message. Replies to this message are routed to an unmonitored mailbox. If you have any other questions you may call us at 202-555-1212. ই-মেইলটি ভালভাবে না পড়েই সেই শিক্ষার্থী সেই ই-মেইল ঠিকানায় একটি ফিরতি ই-মেইল পাঠিয়ে আরো অনেক তথ্য জানতে চাইল।
|
আজকে আমরা জেনেছি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগের জন্য আমরা কী কী নিয়ম মেনে চলি। সেই সাথে আমরা যোগাযোগের ক্ষেত্রে কী কী ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করি এবং কোন ডিজিটাল মাধ্যমে কীভাবে যোগাযোগ করি সে সম্পর্কেও জেনেছি। এবার আমরা পরিবারের সদস্য, আত্মীয়, প্রতিবেশী বা পাড়ার বন্ধুদের সাথে আলোচনা করে যোগাযোগের পাশাপাশি আমরা আর কোন কোন ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার করি তা জেনে নিচের ছকটি পূরণ করে আনব -
ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্র | |
১।
| ৫।
|
২।
| ৬।
|
৩।
| ৭।
|
৪।
| ৮।
|
গত ২টি সেশনে আমরা প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে জেনেছি। তবে আমরা কিন্তু কেবল যোগাযোগের ক্ষেত্রেই প্রযুক্তি ব্যবহার করি না। বর্তমানে আমরা আমাদের ব্যক্তিগত, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক নানা ক্ষেত্রেই প্রযুক্তি ব্যবহার করি। প্রযুক্তির প্রভাবে আমাদের সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে যেসব পরিবর্তন এসেছে সেগুলো সম্পর্কেই আমরা আজ জানব। আর শুধু আমাদের নিজেদের সমাজ বা দেশ নয়, সেই সাথে আমরা এশিয়া প্যাসিফিক পরিমণ্ডলের অন্যান্য দেশে প্রযুক্তির প্রভাবে সৃষ্ট পরিবর্তনগুলো সম্পর্কেও জানব।
শুরুতেই আমরা কয়েকটি ছবি দেখি এবং সেগুলোর মধ্যে কী পার্থক্য তা ছবির নিচের খালি ঘরে লিখি -
উপরের ছবিগুলো দেখে আমরা একটা ব্যাপার বুঝতে পারি যে ডিজিটাল প্রযুক্তির নিত্যনতুন আবিষ্কারে আমাদের জীবন অনেক সহজ হয়েছে। আগে যেমন কোনো প্রয়োজনীয় চিঠি আসতে অনেক সময় লেগে যেত। কখনো কখনো এমনও হতো যে বিদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির চিঠি ভর্তির সময় পার হয়ে যাওয়ার পর আসতো। কিন্তু এখন ই-মেইলের মাধ্যমে মুহূর্তেই আমরা যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ চিঠি বা সংবাদ পেয়ে যাই। আবার অন্যদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানুষে মানুষে যোগাযোগ বাড়লেও মানুষের মধ্যে মুখোমুখি যোগাযোগ বা কথা বলা কমে গিয়েছে। এর বাইরেও আরও অনেক ক্ষেত্রেই ডিজিটাল প্রযুক্তির কারনে অনেক পরিবর্তন এসেছে, কিছু ইতিবাচক আবার কিছু কিছু নেতিবাচক।
এখন আমরা আমাদের দৈনন্দিন নানা কাজে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার সম্পর্কিত কয়েকটি ঘটনা পড়ব। ঘটনাগুলো পড়ে আমাদের বিশ্লেষণ করতে হবে যে সেগুলো কী আমাদের জীবনে ইতিবাচক নাকি নেতিবাচক: ইতিবাচক হলে কেন এবং নেতিবাচক হলে প্রতিকারের উপায় কী? এসো তাহলে ঘটনাগুলো পড়ে বিশ্লেষণ শুরু করি-
ঘটনা | বিশ্লেষণ |
অনলাইনে সহজেই বিভিন্ন লক্ষণ জানিয়ে রোগ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। অনেকেই তাই এখন ইন্টারনেট খুঁজে লক্ষণ জানিয়ে রোগ নির্ণয় করে সেই রোগের ঔষধ সেবন করছেন।
| |
বিভিন্ন অনলাইন কোর্স করে অনেক শিক্ষার্থী তাদের পাঠ্যবিষয়ের পাশাপাশি অন্যান্য অনেক বিষয়ে জ্ঞান এবং দক্ষতা অর্জন করছে।
| |
ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রভাবে আজকাল দূরদেশে বা অন্য শহরে বা বাড়িতে বসে অনেকেই অফিসের বা ব্যবসা বাণিজ্যের কাজ করছেন।
| |
ডিজিটাল প্রযুক্তির কারণে আজকাল সহজেই বন্ধুবান্ধব, পরিচিতজন, এমন কি খ্যাতিমান ব্যক্তিত্বদের সাথেও যোগাযোগ করা যায়। অনেকেই আজকাল তাই অনেক তারকাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা পোস্টে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করছেন।
|
আজকের সেশনে আমরা ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রভাবে নানা ধরনের ইতিবাচক এবং নেতিবাচক পরিবর্তন সম্পর্কে জানলাম। আগামী সেশনে আমরা এশিয়া প্যাসিফিক পরিমণ্ডলের বিভিন্ন দেশে ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রভাবে সামাজিক এবং সংস্কৃতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে কী কী পৃথক পৃথক পরিবর্তন এসেছে তা তুলে ধরব। আমরা বন্ধুরা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে এক এক দল এক একটি দেশ নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করব। দল ভাগ করা এবং দেশ নির্বাচনের ক্ষেত্রে শিক্ষক আমাদেরকে সহায়তা করবেন। তথ্য সংগ্রহের জন্য আমরা আমাদের পরিবারের সদস্যদের, আত্মীয়স্বজনদের এবং প্রতিবেশীদের সহায়তা নিতে পারি। পাশাপাশি ইন্টারনেট, টিভি সংবাদ, বই, ম্যাগাজিন, সংবাদপত্র ইত্যাদি মাধ্যম ব্যবহার করেও আমরা তথ্য সংগ্রহ করতে পারি। যেই দলকে যেই দেশ সম্পর্কে তথ্য আনতে বলা হবে সেই দল সেই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা, চিকিৎসা ব্যবস্থা, খ্যাদ্যাভ্যাস, যাতায়াত ব্যবস্থা, কর্মক্ষেত্র এবং দৈনন্দিন জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারে কী কী পরিবর্তন এসেছে সে সম্পর্কে তথ্য নিয়ে আসব।
গত সেশনে আমাদের "আগামী সেশনের প্রস্তুতি" হিসেবে যে তথ্যগুলো নিয়ে আসার কথা ছিল সেগুলো তো আমরা দলের প্রত্যেক সদস্য আলাদা আলাদা ভাবে বের করে আনার চেষ্টা করেছি, তাই না? এবার তাহলে দলের সবাই মিলে আলোচনা করে তথ্যগুলো দিয়ে নিচের ছকটি পূরণ করে ফেলি -
দলের নাম: দেশের নাম: | |
ক্ষেত্র
| ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রভাবে পরিবর্তন: |
শিক্ষা | |
চিকিৎসা | |
খাদ্য | |
যাতায়াত ব্যবস্থা | |
কর্মক্ষেত্র |
উপরের ছকে আমরা যা যা লিখেছি তা আমরা 'এশিয়া প্যাসিফিক পরিমন্ডলে প্রযুক্তির প্রভাবে সামাজিক সাংস্কৃতিক পরিবর্তন'- শীর্ষক অনলাইন মেলায় উপস্থাপন করব। অন্য দলগুলোও তারা যে যে দেশ নিয়ে কাজ করেছে সেই সব দেশ সম্পর্কে উপস্থাপন করবে। কিন্তু তার আগে আমাদের কাজ হলো অনলাইন মেলাটির আয়োজন করা। সেই মেলার জন্য আমাদের কিছু নীতিমালা তৈরি করতে হবে।
মেলাটি কবে, কখন, কোন অনলাইন প্লাটফর্মে হবে তা আমাদের শিক্ষকের সহায়তায় এবং ক্লাসের সব বন্ধুরা মিলে ঠিক করতে হবে। মেলাটিতে কারা কারা অংশগ্রহণ করবে, অর্থাৎ আমাদের ক্লাসের আমাদের প্রতিটি দলের নাম, মেলাটি আমরা যাদের সামনে উপস্থাপন করব তাদের নাম, পরিচয় ইত্যাদিও আমাদের নির্ধারণ করতে হবে। পাশাপাশি মেলাটিতে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনাও আমাদেরকে নির্ধারণ করে নিতে হবে যাতে মেলা চলাকালে সময় সব কাজ সুষ্ঠু এবং সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়। এছাড়া, মেলার অনুষ্ঠান সূচিটিও আমাদের সাজিয়ে ফেলতে হবে।
তাহলে চলো শিক্ষকের সহায়তায় শ্রেণির সকলে মিলে অনলাইন মেলার নীতিমালাটি তৈরি করে ফেলি -
নীতিমালা তৈরি হয়ে গেলে তারপর আমাদের কাজ হল অংশগ্রহণকারীদের তালিকা অনুসারে তাদের সাথে যথাযথ মাধ্যমে যোগাযোগ করে মেলায় অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানানো। আমন্ত্রণের ক্ষেত্রে আমরা প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগের নীতিমালা অনুসরণ করব।
আমন্ত্রণ জানানো হয়ে গেলে আমরা আমাদের দলগত উপস্থাপনার জন্য ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করব। কনটেন্ট তৈরির ক্ষেত্রে দলের সকল সদস্যের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করব।
আগামী সেশনের প্রস্তুতি:
আগামী সেশনটি হবে আমাদের অনলাইন মেলা। মেলায় আমরা কে কী করব তা ঠিক করে নিব এবং সে অনুসারে প্রস্তুতি নিয়ে মেলার দিন উপস্থিত হব।
গত সেশনে অনলাইন মেলা আয়োজনের জন্য যে নীতিমালা তৈরি করেছিলাম তা অনুসরণ করে আমরা এবার নির্ধারিত দিনে নির্ধারিত সময়ে অনলাইন মেলার আয়োজন করব। মেলায় আমরা প্রতিটি দল নিজ নিজ কনটেন্ট উপস্থাপন করব।
এবার নিচের এই ছকটি পূরণ করে আমরা শিক্ষকের কাছে জমা দিব। এর উপর ভিত্তি করে শিক্ষক আমাদের এশিয়া মহাদেশীয় বৈচিত্র্যপত্রে স্বাক্ষর করবেন।
আরও দেখুন...