তোমরা কি জানো, আমাদের বহুল ব্যবহৃত ব্লিচিং পাউডার কীভাবে তৈরি হয়?
এটি তৈরি হয় শুকনো ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইড ও ক্লোরিন গ্যাসের (CL) বিক্রিয়া ঘটিয়ে। আবার ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইডের পাতলা দ্রবণ যা চুনের পানি বা লাইম ওয়াটার (Lime water) নামে পরিচিত সেটি আমাদের ঘরবাড়ি হোয়াইট ওয়াশ করতে ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে পানি ও ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইডের তৈরি পেস্ট যা মিল্ক অফ লাইম (Milk of Lime) নামে অধিক পরিচিত, তা পোকামাকড় দমনে ব্যবহৃত হয়।
তোমরা কি জানো, আমাদের পাকস্থলীতে এসিডিটি হলে যে এন্টাসিড ঔষধ খাই তা আসলে কী?
এন্টাসিড ঔষধ হলো মূলত ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রোক্সাইড যা সাসপেনশান ও ট্যাবলেট দুভাবেই পাওয়া যায়। ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রোক্সাইড এর সাসপেনশান মিল্ক অফ ম্যাগনেসিয়া (Milk of Magnesia) নামেই অধিক পরিচিত। কখনো কখনো এন্টাসিডে অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রোক্সাইডও থাকে।
তোমরা কি জানো, আমাদের সমাজের কিছু খারাপ চরিত্রের লোক যে এসিড ছুড়ে মানুষের শরীর ঝলসে দেয় সেগুলো কোন ধরনের এসিড? এগুলো হলো খনিজ এসিড।
তোমরা কি জানো, এসিড ছোড়ার শাস্তি কী?
এসিড ছোড়ার শাস্তি খুবই কঠোর এমনকি মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে।
দুষ্ট চরিত্রের লোকেরা এসিড ছুড়ে একদিকে যেমন মারাত্মক অপরাধ করছে অন্যদিকে শিল্প কারখানায় অতি প্রয়োজনীয় এসিড অপচয় করছে। এর বিরুদ্ধে অবশ্যই আমাদের সোচ্চার হতে হবে এবং মানুষকে সচেতন করতে হবে। সেক্ষেত্রে আমরা পোস্টার, লিফলেট এগুলো তৈরি করে মানুষের মধ্যে বিলি করতে পারি। এতে একদিকে যেমন আমাদের মূল্যবান সম্পদ খনিজ এসিডসমূহের অপচয় রোধ করা যাবে অন্যদিকে এসিড ছোড়ার মতো মারাত্মক শাস্তিযোগ্য অপরাধ থেকে আমাদের সমাজও রক্ষা পাবে।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এবং শিল্প কারখানায় এসিডের ব্যবহার অনস্বীকার্য। আমরা টয়লেট পরিষ্কারের কাজে যে সমস্ত পরিষ্কারক ব্যবহার করি তাতে এসিড থাকে। সোনার গহনা তৈরির সময় স্বর্ণকাররা নাইট্রিক এসিড ব্যবহার করেন। আমরা বিভিন্ন কাজে যেমন— আইপিএস, গাড়ি, মাইক বাজানোর সময়, সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন ইত্যাদি ক্ষেত্রে যে ব্যাটারি ব্যবহার করি তাতে সালফিউরিক এসিড ব্যবহৃত হয়। তোমরা অনেকে হয়তো জানো যে, বাসাবাড়িতে সাপের উপদ্রব কমানোর জন্য যে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহৃত হয় সেটি হলো কার্বোলিক এসিড।
তোমরা কি জানো, আমাদের খাদ্যদ্রব্য হজম করার জন্য পাকস্থলীতে এসিড অত্যাবশ্যকীয় এবং সেটি হলো হাইড্রোক্লোরিক এসিড।
সার কারখানায় অতি প্রয়োজনীয় একটি উপাদান হলো সালফিউরিক এসিড। এছাড়া ডিটারজেন্ট থেকে শুরু করে নানারকম রং, ঔষধপত্র, কীটনাশকসহ পেইন্ট, কাগজ, বিস্ফোরক ও রেয়ন তৈরিতে প্রচুর H2SO4 ব্যবহৃত হয়।
কোনো একটি দেশ কতটা শিল্পোন্নত তা বিচার করা হয় ঐ দেশ কতটুকু ব্যবহার করে তার উপর ভিত্তি করে। ইস্পাত তৈরির কারখানা, ঔষধ, চামড়া শিল্প ইত্যাদি অনেক শিল্পে HCl ব্যবহৃত হয়।
সার কারখানায়, বিস্ফোরক প্রস্তুতি, খনি থেকে মূল্যবান ধাতু যেমন সোনা আহরণে ও রকেটে জ্বালানির সাথে HNO3 ব্যবহৃত হয়।
আরও দেখুন...