ওয়েল্ডিং জোড়ের অধ্বংসাত্মক পদ্ধতির মধ্যে বহুলভাবে ব্যবহৃত এক্স-রে টেস্ট অন্যতম। ওয়েল্ড জোড়ের অভ্যন্তরের ত্রুটি-বিচ্যুতি নিখুঁতভাবে শনাক্ত করার জন্য এটি সর্বোত্তম। বর্তমানে উৎপাদনশীল সকল শিল্প কারখানায় এ পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। যে স্থানে বিদ্যুতের সুবিধা রয়েছে সেখানে এক্স-রে টেস্ট করা হয়। গামা-রে এবং এক-রে উভয় পদ্ধতিতে ওয়েল্ড জোড়ের স্থানে রেডিওগ্রাফি করা হয়। মানুষের শরীরে যেমন এক্স-রে করে শরীরে রোগ শনাক্ত করা হয় অদ্রুপ ওয়েল্ড জোড়ের ক্ষেত্রে ও এক্স-রে বা গামা-রে যারা ওয়েল্ড জোড়ের ত্রুটি-বিচ্যুতি শনাক্ত করা হয়। মানুষের শরীরের এক্স-রে করার জন্য এক্স-রে ফিল্ম ব্যবহার করা হয়, এক্স-রে করার জন্য সময় নির্ধারিত থাকে। এক্স-রে তে শট নেওয়ার সময় অতিরিক্ত সময় নেওয়া যায় না, কারণ এক্স-রে হলো তেজস্ক্রিয় বিকিরণ। এ তেজঞ্জির মানুষের শরীরের ভেতর দিয়ে প্রবেশ করে এক্স-রে ফিল্মের উপর পড়ে এবং ভিউয়ার এর মাধ্যমে ভালোভাবে দেখা হয়। ওয়েন্ড জোড়ের বেলায়ও ঠিক একই অবস্থা।
ধাতু জোড়ের উপর এক্স-রে ফিল্ম লাগিয়ে বিপরীত এক্স-রে বা গামা-রে এর সাহায্যে রেডিওগ্রাফি করা হয়। এ রেডিওগ্রাফির জন্যও নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। তা নির্ভর করে ধাতুর পুরুত্বের উপর। ধাতুর পুরুত্ব যত বেশি হবে রেডিওগ্রাফির সময় তত বেশি লাগবে। রেডিওগ্রাফির এ সময়কে বলা হয় এক্সপোজার টাইম বেশি বা কম হলে ফিল্মে সঠিক ত্রুটি পেতে কষ্ট হবে। এক্স-পোজার টাইম বেশি হলে, ফিল্ম ডেভেলপ করার পর সম্পূর্ণ কালো দেখা যাবে। আবার এক্সপোজার টাই কম হলে ফিল্ম ডেভেলপ করে ভিউয়ার এর মধ্যে দেখে দোষ- ত্রুটি শনাক্ত করতে হয়। অধ্বংসাত্মক পদ্ধতির মধ্যে ধাতু জোড়ের ত্রুটি-বিচ্যুতি শনাক্ত করার সর্বোত্তম পদ্ধতি হলো রেডিওগ্রাফি।
নিরাপত্তাঃ
আমরা জানি তেজস্ক্রিয়তা মানুষের শরীরের মারাত্মক ক্ষতিসাধন করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের ঐ হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে আণবিক বোমা ফেলা হয়েছে, যার বিক্রিয়া এখনও বিদ্যমান রয়েছে। এলাকার শিশুরা এখনও বিকলাঙ্গ হিসেবে জন্মগ্রহণ করছে। এ তেজস্ক্রিয়তার ফলে মানুষের শরীরের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে থাকে। ওয়েল্ডিং জোড় রেডিওগ্রাফি করার সময়ও এ রেডিয়েশন মানুষের শরীরে প্রবেশ করে, এতে শরীরের নানা অংশের মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হয়। এখন কথা হলো এ বিপদজনক রেডিওগ্রাফি মানু করবে না? না, করবে? এটি ব্যবহারেরও নিয়ম কানুন রয়েছে, সঠিক নিয়মে ব্যবহার করা হলে কোন বিপদের আশঙ্কা নেই। এ রেডিয়েশন মাপার একক হলো রেম, যাকে বলা হয় রঞ্জন অ্যাবজরবম্যান। অর্থাৎ একজন মানুষ মাসে, তিন মাসে বা প্রতিবছর কতটুকু রেম গ্রহণ করতে পারবে।
এক্স-রে ফিল্ম ইন্টার প্রিটেশনঃ
রেডিওগ্রাফি শেষে এক্স-রে ফিল্মকে ডেভেলপ ও ড্রাই করে ভিউয়ার যারা ফিল্মের গায়ে প্রদর্শিত ত্রুটি-বিচ্যুতি শনাক্ত করা হয়। ওয়েল্ডিং জোড়-ফিল্ম বসানোর সময় জোড়ের পায়ে দাগ ও মাপ নেওয়া হয়। যার ফলে ত্রুটি- বিচ্যুতি শনাক্ত করার পর সঠিক স্থানে ত্রুটি মেরামত করা সম্ভব হয়। ওয়েল্ডিং জোড়ের সাধারণত সব ধরনের ত্রুটি এক্স-রে ফিল্মে প্রদর্শিত হয় যেমন বো-হোল, স্পা, গ ইনক্লুশান, ল্যাক অব পেনিট্রেশন, অতিরিক্ত পেনিট্রেশন, আন্ডার কাট, গ্রাস পকেট, পোরসিটি, ফাটল, কনকেভ, কনভেক্স, বার্নগ্রো ইত্যাদি ত্রুটি-বিচ্যুতি শনাক্ত করা যায়। তবে কোন ত্রুটি কতটুকু পর্যন্ত গ্রহণযোগ্য (Acceptance) API-1104 মোতাবেক তার নিয়মকানুন রয়েছে।
আরও দেখুন...