এই শিখনফল অর্জনের মাধ্যমে আমরা মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রাংশগুলো সম্পর্কে জানতে পারব। সাথে কার এসি সিস্টেম সম্পর্কেও ধারণার্জন করব।
১৯৩৫ সাল ৭ অক্টোবর তারিখ Ralph Peo of Houde Engineering, Buffalo, Newyork, "Air Cooling Unit for Automobiles এর পেটেন্ট জন্য আবেদন করে। ১৯৩৭ সালের ১৬ নভেম্বর তারিখ তাদের আবেদন মঞ্জুর হয়। ১৯৪০ সালে Packard প্রথম গাড়িতে এয়ারকন্ডিশনিং সিস্টেম স্থাপন করে। ১৯৬৯ সাল হতে প্রায় ৫০% ব্যক্তিগত গাড়ী এয়ারকন্ডিশনিং সিস্টেমের আওতায় চলে আসে। বর্তমানে প্রায় ৯৯% নতুন কার (Car ) আধুনিক এয়ারকন্ডিশনিং সিস্টেমে চলে।
অটোমাবোইল এয়ারকন্ডিশনিং-এর রেফ্রিজারেন্ট ইউনিট পরিচালনার জন্য প্রাইমমুভার হিসেবে ইঞ্জিন ব্যবহৃত হয়। তাই ইঞ্জিনের আরপিএম পরিবর্তনের সাথে সাথে কম্প্রেসরের গতি ওঠানামা করে। যে কারণে রেফ্রিজারেন্ট প্রক্রিয়া কিছুটা বিঘ্নিত হয়। এই অসুবিধা দুর করার জন্য বর্তমানে পাড়িতে থার্মোস্টেটিক সুইচ নিয়ন্ত্রিত ম্যাগনেটিক ক্লাচ-এর মাধ্যমে কম্প্রেসরের কাজ নিরন্ত্রণ করা হয়। যে সিস্টেমের মাধ্যমে একটি আবদ্ধ স্থান বা কক্ষের মধ্যে অবস্থিত বাতাসের তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, গতিবেগ এবং বিরুদ্ধতা ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে আরামদায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করা যায় তাকে এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেম বলে। অটোমোবাইল এয়ার কন্ডিশনিং অন্যান্য এয়ার কন্ডিশনিং এর মতই। তবে এর রেফ্রিজারেন্ট হিসেবে ১৯৯৬ সাল হতে R-12 এর পরিবর্তে R-134a ব্যবহৃত হয় এবং কম্প্রেসর ইঞ্জিন দিয়ে পরিচালিত হয়। ইঞ্জিনের শক্তি ক্র্যাংক শ্যাফট থেকে সরাসরি তি-বেল্ট ও পুলির মাধ্যমে কম্প্রেসরে সরবরাহ করা হয়। তাই ইঞ্জিন দিয়ে পরিচালিত কম্প্রেসর কর্তৃক রেফ্রিজারেন্ট সাইকেল এবং রোয়ার দিয়ে বাতাস প্রবাহের মাধ্যমে গাড়ি এয়ার কন্ডিশনিং হয়।
কার এয়ার কন্ডিশনারের উদ্দেশ্য (Purpose of Car Air Conditioner )
গাড়ির কেবিন বা অভ্যন্তরে কুলিং ক্ষমতা প্রয়োগ করে গ্রীষ্মকালে (Summer) আরামদায়ক শীতল পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং হিটিং ক্ষমতা প্রয়োগ করে শীতকালে আরামদায়ক গরম পরিবেশ সৃষ্টি করাই কার এরার কন্ডিশনারের প্রধান কাজ। গ্রীষ্মকালে এয়ারকন্ডিশনিং স্পেসের আর্দ্রতা (Humidity) কমানো প্রয়োজন। তখন ইভাপোরেটর কিছু পরিমাণ জলীয়বাষ্প (Moisture) শোষণ করে বাতাসকে আর্দ্রতা যুক্ত করে। এ ছাড়াও নিয়ন্ত্রিত বাতাসকে পরিশ্রুত করার জন্য ফিস্টার ব্যবহার করা হয়। এক বাক্যে বলতে গেলে, গাড়ির ভেতরের বাতাসের তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, বিশুদ্ধতা, গতিবেগ নিয়ন্ত্রণ করে মানুষের জন্য আরামদায়ক আবহাওয়া সৃষ্টি করাই এয়ার কন্ডিশনারের উদ্দেশ্য।
কার এয়ারকন্ডিশনিং-এর ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল সিস্টেম (Electrical and Electronic Control Systen of Car Air Conditioning)
কার এয়াকন্ডিশনিং-এ ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল সিস্টেম দু'টি ভাগে বিভক্ত করা হয়। যথা
(ক) হস্তচালিত ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল সিস্টেম (Manually Electronic Control System )
(খ) স্বয়ংক্রিয় ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল সিস্টেম (Automatic Electronic Control System)
(ক) হস্তচালিত ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল সিস্টেম (Manually Electronic Control System )
কার এয়াকন্ডিশনিং পদ্ধতিতে বেশ কিছু কার এ হস্তচালিত ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল সিস্টেম ব্যবহার হয়ে থাকে । পাড়িচালক এয়ার কন্ডিশনিং নিয়ন্ত্রণের জন্য সিলেক্টর সুইচগুলো হাত দিয়ে সেটিং করে পাড়ির অভ্যন্তরে নিয়ন্ত্রিত প্রবাহ সৃষ্টি করে। তাই সিলেক্টর লিভারগুলোকে হাত দিয়ে স্থানান্তর (Transfer ) করে মুক্ত (Mode) পরিবর্তন করে বলে একে হস্তচালিত ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল সিস্টেম (Manually Elctronic Control COOL System) বলে।
এ পদ্ধতিতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের এয়ারজেন্ট (Airvent) ও কন্ট্রোল হিটার বা কুলার (Control Heater or Cooler) কে চালু বা বন্ধ করার জন্য সিলেক্টর সুইচ বা লিভারকে শার্ট অফ (Shut Off) করা হয়, ফলে পাড়ির অভ্যন্তরে নিয়ন্ত্রিত বাভাসের (Conditioning Air) সৃষ্টি হয়। চিত্র ২.২১এ হস্তচালিত ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল সিস্টেম দেখানো হয়েছে।
কন্ট্রোল প্যানেলে ১ থেকে ৭ পর্যন্ত সাতটি সিলেক্টর লিভার আছে-
১। ব্লোয়ার বন্ধ (Blower Stop), তাই সিলেক্টর লিডার অফ (Off) পজিশন।
২। সর্বোচ্চ ঠান্ডা (Maximum Cool) বাতাস প্রবাহের মাধ্যমে গাড়ির অভ্যন্তরে শীতলতা বজায় রাখে।
৩। নিয়ন্ত্রিত বাভাস সরাসরি প্যানেলে প্রবাহিত হয়ে ফ্লোর আউটলেট (Floor Outlet) এবং উইন্ডশিল্ড (Windshield) এর মধ্যে প্রবেশ করে।
৪। নিয়ন্ত্রিত বাতাস সরাসরি প্যানেলে (Directly Panel) প্রবাহিত হয়ে ফ্লোর আউটলেট এবং উইন্ডশিল্ডে পরিচালিত হবে।
৫। কম্প্রেসর বন্ধ অবস্থায় বাইরের সজীব বাতাস (Fresh Air) কন্ট্রোল প্যানেল আউটলেটে প্রবেশ করে।
৬। কম্প্রেসর বন্ধ অবস্থায় বাইরের সজীব বাতাস এবং নিয়ন্ত্রিত কক্ষের বাতাস ৪০% এবং ২০% হারে মিক্সিং (Mixing) করে নিয়ন্ত্রিত স্থানে প্রবেশ করে ।
৭। নিম্নন্ত্রিত বাতাস ৪০% উইন্ডশিল্ডে (Windshield) ও জানালা দিয়ে এবং ২০% ক্লোর আউটলেট দিয়ে প্রবাহিত হয়। তবে বর্তমানে এই কন্ট্রোল সিস্টেম তেমন ব্যবহার করা হয় না ।
(খ) স্বয়ংক্রিয় ইলেকট্রোনিক কন্ট্রোল সিস্টেম (Automatic Electronic Control System )
স্বয়ংক্রিয় ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল সিস্টেম কার এয়ারকন্ডিশনিং অনেকটা হস্তচালিত ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল সিস্টেমের মতই। তবে পার্থক্য শুধু গাড়ির চালককে সিলেক্টর সুইচের লিভার অটোমেটিক পজিশনে রাখতে হয়। নির্ধারিত তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও সিলেক্টর সুইচকে অটোমেটিক পজিশনে রাখতে হবে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্যাসোর কম্পার্টমেন্টের (Passenger Compartment) চাহিদা অনুসারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্রের মাধ্যমে পরম ৰা ঠান্ডা (Hot or Cool) প্রয়োজন অনুসারে কাজ করে। বিশেষ ক্ষেত্রে ব্রোয়ারের গতি স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে বলে পাড়ির চালকের অন্যকোন অতিরিক্ত নিম্নম্নণের প্রয়োজন হয় না, কারণ সিস্টেমটি তখন প্রোগ্রাম সেটিং অনুযায়ী কাজ করে।
উচ্চ বিলাসী গাড়ি বা কারসমূহে ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল সিস্টেমে বড়ি কন্ট্রোল মডিউল (Body Control Module, BCM) ব্যবহার করা হয়। একে সূক্ষ্ম তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে একটি মাইক্রো প্রসেসরের (Microprocessor) প্রয়োজন হয়, বা কারের সামনের ও পিছনের সিটে (Front seat and back seat) ভিন্ন ভিন্ন তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
স্বয়ংক্রিয় ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল সিস্টেমে বিভিন্ন সেন্সর থেকে উপাত্ত (Data) সংগ্রহ করে এয়ার কন্ডিশনিং নিয়ন্ত্রণ করে। যেমন-
(ক) সানলোড বা সোলার সেন্সর (Sunload or Solar Sensor)
(খ) ইন ভেহিক্যাল টেম্পারেচার সেন্সর (In Vehicle Temperature Sensor)
(গ) অ্যামবিয়েন্ট টেম্পারেচার সেন্সর (Ambient Temperature Sensor)
(ঘ) ইঞ্জিন কুলেন্ট টেম্পারেচার সেন্সর (Engine Coolant Temperature Sensor)
(ঙ) ক্লাচ সাইক্লিং প্রেসার সুইচ (Clutch Cycling Pressure Switch)
(চ) ইনট্রুমেন্ট প্যানেল (Instrument Panel) |
বিভিন্ন উপাত্ত থেকে সংগৃহীত উপাত্ত সমন্বয় করে ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল মডিউল স্বয়ংক্রিয়ভাবে এয়ার কন্ডিশনিং নিয়ন্ত্রণ করে । এ পদ্ধতিতে গাড়ির দরজাগুলো, ব্রোয়ার মোটর (Blower Motor) এবং কম্প্রেসরের ক্লাচ (Compressor's Chutch) স্বয়ংক্রিয়ভাৰে নিয়ন্ত্রিত হয়। চিত্র: ২.২৩ এ একটি উন্নতমানের গাড়ির এয়ারকন্ডিশনিং কন্ট্রোল সিস্টেমের ওয়ারিং ডায়াগ্রাম দেখানো হয়েছে।
কার এয়ারকন্ডিশনিং হিমায়ন ইউনিটকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক্স কম্পোনেন্টগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা (Prime Role) পালন করে। কার এয়ারকন্ডিশনিং-এ হিটিং সিস্টেম (Heating system), কুলিং সিস্টেম, হিউমিডিফিকেশন সিস্টেম (Humidification System), ডি- হিউমিডিফিকেশন (De-Humidification) সিস্টেমসমূহ স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু, বন্ধ, নিরাপত্তা বিধান ও নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কম্পোনেন্টসমূহ অত্যাবশ্যক। শুধু তাই নয়, এটা সিস্টেমে বিভিন্ন সমস্যাবলী (Problems) নির্দেশকের মাধ্যমে চিহ্নিত করে হিমায়ন ইউনিটকে নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন (Safe and Smooth) পরিচালনা করে।
ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল মডিউল (ECM)
কার এয়ার কন্ডিশনারের ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল মডিউল (ECM) এর বৈদ্যুতিক সার্কিট, সেন্সর ও স্বয়ংক্রির নিয়ন্ত্রক ডিভাইসগুলোকে একটি ইলেকট্রনিক প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড (PCB) এ সন্নিবেশিত করেছে। এতে করে সিস্টেমের দক্ষতা বৃদ্ধির সাথে সাথে স্থায়িত্বতা ও বিশ্বস্ততাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইলেকট্রো সার্ভো-কন্ট্রোল (Electro Servo Control)
কার এয়ারকন্ডিশনিং এর হিমায়ন ইলেকট্রো সার্ভো-কন্ট্রোল সিস্টেম সচরাচর ব্যবহৃত কন্ট্রোলিং ডিভাইস, যা নিয়ন্ত্রিত বাতাসকে প্যাসেঞ্জার কম্পার্টমেন্টের (Passanger Compartment), চাহিদা অনুসারে তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে (Automatically) সরবরাহ করা যায়। ইলেকট্রো সার্ভো-কন্ট্রোল বাতাসের প্রবাহ নির্দিষ্ট পরিমাণে সার্ভো মোটর (Servo Motor) ভেনসমূহ (Vanes) ওপেন ক্লোজ করে নিয়ন্ত্রণ করে। এটা এসি ডিসি উভয় বৈদ্যুতিক প্রবাহ দিয়ে পরিচালিত হলেও সাধারণত ডিসি সরবরাহ দিয়ে এ কন্ট্রোলিং ডিভাইস কাজ করে । সম্পূর্ণ কন্ট্রোল ইউনিটটি হিমায়ন সিস্টেমের অভ্যন্তরে নিরাপদ স্থানে (Safety Place) স্থাপন করা যায়। চিত্র: ২.২৬ এ ইলেকট্রো সার্ভো কন্ট্রোল সিস্টেম দেখানো হয়েছে। এ পদ্ধতি অ্যান্টি-আইসিং (Anti-Icing) | করে কোনক্রমেই ইভাপোরেটর বা কুলিং করেলে (Evaporator or Cooling Coil) তুষার জমতে দেয় না ।
কার এয়ারকন্ডিশনারের ক্লাচ সাইক্লিং সুইচ (Clutch Cyeling Switch of Air Conditioning)
কার এয়ারকন্ডিশনিং-এর হিমায়ন সিস্টেমের ক্লাচ সাইক্লিং সুইচ হল একটি নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা ডিভাইস। সিস্টেমের লো-সাইড এবং হাই-সাইড দু'দিকেই এই ইলেকট্রিক সুইচ লাগানো থাকে। লো প্রেশার সুইচ কম্প্রেসরের পূর্বে সাধারণত এ্যাকুমুলেটরের উপর স্থাপন করা হয় এবং হাই প্রেশার সুইচ কম্প্রেসরের পরে থাকে। সুইচটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ক্লাচের বৈদ্যুতিক প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে হিমায়ন দক্ষতা বৃদ্ধি করে। এয়ার কন্ডিশনারের সাইক্লিং সুইচ হিমায়ন চক্রের অভ্যন্তরীন চাপ অনুযায়ী রেজিস্ট্যান্সের পরিবর্তন ঘটার। তখন এই ইনফরমেশন ব্যবহার করে ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল মডিউল (ECM) সেটিং প্রোগ্রাম অনুযায়ী কম্প্রেসরের ক্লাচ নিয়ন্ত্রণ করে। এভাবে প্রক্রিয়াটি অনবরত (Continuously) চলতে থাকে। হাই প্রেশার সুইচও অনুরূপ ভাবে বেশি চাপে কম্প্রেসর বন্ধ করে এবং সেটিং প্রেসারে চালু করে ।
থার্মোস্ট্যাটিক সাইক্লিং সুইচ (Thermostatic Cycling Switch)
থার্মোস্ট্যাটিক সাইক্লিং সুইচ বা সাইক্লিং থার্মোস্ট্যাট (Cycling Thermostat ) হিমায়ন সিস্টেমে ইভাপোরেটরের তাপমাত্রা নির্দিষ্ট মানে পৌছানোর আগে পর্যন্ত ইভাপোরেটরকে নিয়ন্ত্রণ করে। ইভাপোরেটরের তাপমাত্রা নির্দিষ্ট মানে পৌঁছানোর পর কম্প্রেসরের ক্লাচকে অন/অফ করে। চিত্র ২.২৮ এ থার্মোস্ট্যাটিক সাইক্লিং সুইচ দেখানো হয়েছে। কার এয়ারকন্ডিশনিং এর হিমায়ন সিস্টেমে ইভাপোরেটরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিতে থার্মোস্ট্যাটিক সাইক্লিং সুইচ ডিস্টিং (De-Frosting) বা অ্যান্টি আইসিং ক্রিয়া (Anti Icing Action) সম্পন্ন করে। কন্ট্রোল সিস্টেমের এ্যাডজাস্টমেন্ট সেটিং এর মাধ্যমে থার্মোস্ট্যাটটিকে অন-অফ করে। সিস্টেমে যখন ২৬° ফাঃ (-৩° সে.) তাপমাত্রার উদ্ভব হয় তখন ইভাপোরেটরে বরফ জমার প্রবণতা সৃষ্টি করে ফলে এ তাপমাত্রায় পৌঁছানোর সাথে সাথে থার্মোস্ট্যাট সিগন্যালের মাধ্যমে বরফ সৃষ্টিতে বাধা প্রদান করে।
অ্যাম্বিয়েন্ট টেম্পারেচার সুইচ (Ambient Temperature Switch)
অ্যাম্বিয়েন্ট টেম্পারেচার সুইচটি হিমায়ন সিস্টেমের ইনলেট এয়ার ডাক্টে ( Inlet Air Duct) বসানো থাকে। এটা বাইরে থেকে সিস্টেমে প্রবাহিত বাতাসের তাপমাত্রা সেনসিং (Sensing) করে । যদি বাতাসের তাপমাত্রা প্রিসেট তাপমাত্রা (Preset Temperature) থেকে নিচে থাকে অর্থাৎ 40°. (8.8° সে.) তবে এ সুইচ কম্প্রেসর ক্লাচ সার্কিটকে খুলে দেয়।
লো-প্রেসার কার্ট অব সুইচ (Low Pressure Cut off Switch)
লো-প্রেসার কাট অফ সুইচটি ইভাপোরেটর এর চাপ সেনসিং করে। যদি ইভাপোরেটরে প্রেসার-ড্রপ (Pressure Drop) খুবই বেশি হয়, তখন লো-প্রেসার কাট অফ সুইচটি কম্প্রেসরের ক্লাচকে বিচ্ছিন্ন (Disangages Compressor Clutch) করে দেয়। নিম্ন ইভাপোরেটিভ প্রেসার সিস্টেমে হিমায়ক ঘাটতি এবং কম্প্রেসরে তেলের ঘাটতি প্রকাশ করে। এভাবে সিস্টেমে কম্প্রেসর চালনা করলে কম্প্রেসর ক্ষতিগ্রস্ত কিংবা নষ্ট (Damage or Destroy) হতে পারে।
হাই-প্রেসার রিলিফ ভালভ (High Pressure Relief Valve)
কোন কারণে সিস্টেমের হাই-সাইডে প্রেসার ( High Side Pressure) যদি অতিরিক্ত মাত্রায় বেড়ে যায় তখন রিলিফ ভালভ ওপেন হয়ে চাপ সমতা করে। কোন ময়লা-আবর্জনা (Dirt- Trash) দিয়ে কন্ডেন্সার ব্লকড (Blocked) হলে অথবা অন্য কোন কারণে বাতাস প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হলে সিস্টেমের চাপ অত্যধিক বেড়ে যায়, তখন হাই প্রেসার রিলিফ ভাকৃত স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে সিস্টেমকে নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়া চার্জিং (Charging ) এর সময় অতিরিক্ত হিমায়ক চার্জ হলে সিস্টেম প্রতিকূল অবস্থায় পড়ে-বা হাই প্রেসার রিলিফ ভালুত নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
হাই-প্রেসার কার্ট অব সুইচ (High Pressure Cut of Switch)
হাই প্রেসার কাট অফ সুইচ কম্প্রেসর আউটলেটে অর্থাৎ ডিসচার্জ লাইনে বসানো হয়। সিস্টেমে যখন ডিসচার্জ প্রেসার (Discharge Pressure) বেশি হয় তখন হাই প্রেসার কাট অফ সুইচ ওপেন হয়ে কম্প্রেসর ক্লাচকে বিচ্ছিন্ন করে। হাই প্রেসার কাট অফ সুইচের ওপেনিং প্রেসার প্রায় 430 Psi (2967 Kpa)।
হিমায়ন ছাড়া এয়ারকন্ডিশনিং সম্ভব নয়, তাই একে রেফ্রিজারেন্ট বাই এয়ারকন্ডিশনিং (Refrigeration by Air Conditioning) বলে। কার এয়ারকন্ডিশনিং এর ক্ষেত্রেও অনুরূপ রেফ্রিজারেশন পদ্ধতির প্রয়োজন পড়ে। সাধারণত কার এয়ারকন্ডিশনিং মেকানিক্যাল রেফ্রিজারেশন পদ্ধতি বা ভেগার কম্প্রেসন রেফ্রিজারেশন bur (Mechanical Refrigeration System or Vapour Compression Refrigeration Cycle) ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
কার এয়ারকন্ডিশনিং এ হিমায়কের (Refrigerant) অবস্থার পরিবর্তন তাপমাত্রা ও চাপের পরিবর্তনের মাধ্যমে ঠাাকরণ সম্পন্ন হয়। ইভাপোরেটরে (Evaporator) मং ক্রিয়া বা তাপ শোষনের মাধ্যমে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ বা এয়ারকন্ডিশনিং ক্রিয়া কার্যে রূপান্তরিত হয়ে থাকে। ইভাপোরেটর টিউব অ্যান্ড ফিন টাইপ (Tube And Fin Type) একটি হিট এক্সচেঞ্জার ( Heat Exchanger), বা গাড়িতে প্যাসেজার কম্পার্টমেন্টের পেছনে/সামনে অবস্থান করে শীতল বা গরম বাতাস নিয়ন্ত্রিত করে গাড়ির অভ্যন্তরে সরবরাহ করে । এখানে তরল হিমায়ক প্রবেশ করে তাপ শোষণের (Heat Absorbed) মাধ্যমে বাষ্পীভূত হয়, অর্থাৎ তরুণ হিমায়ক বাপ্পীর হিমারকে পরিণত হয়, যার চাপ ৩০ পিএসআই (২০০ কেপিএ) এবং তাপমাত্রা ৩২° ফাঃ (০° সে.)। এই লো-প্রেসার ভ্যাপার রেফ্রিজারেন্ট অ্যাকুমুলেটরের (Accumulator) মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সম্পুর্ণ বাষ্পীভূত হিমায়ক কম্প্রেসরে (Compressor) প্রবেশ করে। কম্প্রেসর লো-প্রেসার ভ্যাপার রেফ্রিজারেন্টকে উচ্চ চাপীয় ও তাপীয় হিমারকে (High Pressureed and Temperatured) পরিণত করে কলোরে (Condenser) প্রেরণ করে । কভেলার একটি টিউব অ্যান্ড ফিন টাইপ ( Tube and Fin Type) হিট এক্সচেঞ্জার, যা ইঞ্জিনের রেডিয়েটরের সামনে বসানো থাকে। কন্ডেন্সার হিমায়কের সুপ্ত তাপ অপসারণ করে তরলে পরিণত করে। উচ্চ চাপীয় তৰল হিমায়ক নিয়ন্ত্রকের Refrigerant Controller) মাধ্যমে ইভাপোরেটরে প্রবেশ করে পারিপার্শ্বিক হতে সুপ্ততাপ গ্রহণ করে বাষ্পীয় হিমায়কে পরিণত হয়। এই বাষ্পীয় হিমায়ক আবার কম্প্রেসর দিয়ে শোষিত এবং কম্প্রেসড হয়ে কন্ডেন্সারে যায়। এভাবে প্রক্রিয়াটি অনবরত কাজ করে কার এয়ারকন্ডিশনিং-এ হিমায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন কৰে ।
এয়ার কন্ডিশনিং মেকানিক্যাল সার্কিটের কম্পোনেন্ট সমূহ-
কম্প্রেসর
কম্প্রেসর হচ্ছে এক ধরনের পাম্প যা দিয়ে অটোমোবাইল এয়ারকন্ডিশনিং সিস্টেমের রেফ্রিজারেন্টকে চাপ প্রয়োগ করা হয়। অর্থাৎ ৰায়ৰীয় (Gasius) পদার্থের অণুগুলো সংকোচন (Compress) করে চাপ বৃদ্ধি করা হয়। কম্প্রেসর গাড়ির ফ্রন্ট সাইডে ইঞ্জিনের পাশে সেট করা থাকে। ম্যাগনেটিক ক্লাচের মাধ্যমে বেল্ট দিয়ে ইঞ্জিন জাঙ্কশ্যাফট গুলির সাথে সংযাগ দেয়া হয়। কার এরার কন্ডিশনিং সিস্টেমে সাধারণত সোয়াল প্লেট কম্প্রেসর ব্যবহৃত হয়। ইঞ্জিন চলন্ত অবস্থায় এটি চালু থাকে। গাড়ির আইডো স্পীডে কম্প্রেসর ফুল স্পীডে চলতে পারে কারণ এতে ক্লাচ ও গিয়ার ব্যবহার করা হয়।
কম্প্রেসর মূল কাজগুলো হল-
কন্ডেন্সার
রেফ্রিজারেন্ট সাইকেলের যে অংশে সুপ্ততাপ অপসারণের মাধ্যমে হাই প্রেশার বাস্পীয় (Vapor) রেফ্রিজারেন্টকে তরলে পরিণত করে তাকে কন্ডেসার বলে। রেডিয়েটরের মতো ইঞ্জিনের সামনে কভেলার স্থাপন করা হয় এবং সিস্টেমে কম্প্রেসরের পরে এবং রিসিভারের আগে বসানো থাকে। গাড়ি যখন চলতে থাকে তখন সামনের বাধাপ্রাপ্ত বাতাস কন্ডেলারের তাপ শোষণ করে- ফলে রেফ্রিজারেন্ট ঠাণ্ডা ও ঘনীভূত হয় | গাড়ি থামা অবস্থায় ব্যাটারির বিদ্যুৎ চালিত ফ্যান দিয়ে ঠাণ্ডা করা হয়।
কন্ডেন্সারের মূল কাজ-
ইভাপোরেটর
এয়ারকন্ডিশনিং সিস্টেমের যে অংশে তরল রেফ্রিজারেন্ট সুপ্ততাপ গ্রহণ করে বাষ্পীভূত হয় তাকে ইভাপোরেটর বলে। ইভাপোরেটরকে হিট এক্সচেঞ্জারও বলা হয়। কার এসিতে সাধারণত ফিন্স টাইপ ইভাপোরেটর ব্যবহার করা হয়।
ইভাপোরেটররের মূল কাজগুলো হল-
১) ইভাপোরেটর লো প্রেসারের তরল রেফ্রিজারেন্টকে বাস্পীভূত করে।
২) ইভাপোরেটর নিজে তাপ গ্রহণ করে এয়ারকন্ডিশনিং সিস্টেমের অন্যান্য এলাকাকে তুলনামূলক নিম্ন তাপমাত্রায় আনতে পারে।
৩) এটি ভাগ বহনকারী উপাদান হতে তাপ শোষণ করে।
৪) ইভাপোরেটর এয়ারকন্ডিশনিং সিস্টেমের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
কার এয়ারকন্ডিশনিং-এ সাধারণত দুই প্রকারের ইভাপোরেটর ব্যবহৃত হয়-
ক) ফিল টাইপ ইভাপোরেটর (Fines Type Evaporator)
(খ) ফোর্সড কনডেকশন টাইপ ইভাপোরেটর (Forced Convection Type Evaporator)
এক্সপানশন ডিভাইস/ভালভ
এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেমে যে ডিভাইস দিয়ে তরল রেফ্রিজারেন্ট এর প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হয় তাকে এক্সপানশন ডিভাইস/ভাষ বলে। কার এসিতে ব্যবহৃত এক্সপানশন ডিভাইস তিন প্রকার-
রিসিভার
রিসিভার এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেমের রেফ্রিজারেন্ট জমা রাখে। রিসিভার এমন একটি ডিভাইস যা এরারকন্ডিশনিং সিস্টেমের সাইকেলে লিকুইড বা তরল রেফ্রিজারেন্টকে ইভাপোরেটরে প্রবাহের নিশ্চয়তা প্রদান করে। এটি কন্ডেন্সার ও কন্ট্রোল ডিভাইসের মধ্যে ৰসানো থাকে। অটোমাবোইল এসিতে রিসিভার ও ড্রারার একই সাথে সন্নিবেশিত থাকে। সঠিকভাবে রেফ্রিজারেন্ট চার্জ অবস্থায় রিসিভার হতে এক্সপানশন ভাত পর্যন্ত তরল রেফ্রিজারেন্ট দিয়ে পূর্ণ থাকে।
ড্রায়ার বা স্ট্রেইনার
এয়ারকন্ডিশনিং সিস্টেমের যন্ত্রপাতি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা প্রয়োজন- এতে কোন ধরনের ময়লা, আর্দ্রতা, ক্ষতিকরি পদার্থ যেন না থাকে। যদি অপদ্রব্য থাকে তাহলে এক্সপানশন ভালভের সরু পথে আটকে গিয়ে রেফ্রিজারেন্ট সরবরাহে বাঁধার সৃষ্টি করতে পারে। তাই স্ট্রেইনার বা ফিস্টার সম্বলিত ড্রায়ার ব্যবহার করা হয়।
অ্যাকুমুলেটর
অ্যাকুমুলেটর, ইভাপোরেটর এবং কম্প্রেসর লো প্রেশার লাইনে সংযুক্ত থাকে। এর প্রধান কাজ হল ইভাপোরেটর হতে অনাকাঙ্কিত বা অতিরিক্ত ভরণ রেফ্রিজারেন্ট কম্প্রেসরে যেতে বাধা প্রদান করা, ফলে কম্প্রেসৱ তরল রেফ্রিজারেন্ট শোষণ করা হতে রক্ষা পায়।
লিকুইড ইনডিকেটর
লিকুইড ইনডিকেটর স্বচ্ছ কাঁচযুক্ত তরল পদার্থ পর্যবেক্ষণ যন্ত্রাংশ। এটি রিসিভার ও ড্রায়ারের একটা অংশ। তরল পদার্থের সাথে কোন বাষ্প বা ময়লা প্রবাহিত হচ্ছে কিনা তা এই লিকুইড ইনডিকেটরের সাহায্যে পর্যবেক্ষণ করা যার। এর পার্শ্ববর্তী বায়ু অথবা রিসিভারের তাপমাত্রা ২৯° সেন্টিগ্রেড এর উপরে উঠলে গ্যাসের বাবল পরিলক্ষিত হয়।
ম্যাগনেটিক ক্লাচ
যখন অটোমোবাইল এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেমে কম্প্রেসর পরিচালনা দরকার তখন ম্যাগনেটিক ক্লাচটি নিয়ন্ত্রণ করলে কম্প্রেসর চালু হয়। ইঞ্জিনের পুলি দিয়ে ক্লাচটি সংযোজিত থাকে। রেফ্রিজারেন্ট এর চাহিদা কম্প্রেসরকে চালু বা বন্ধ করে। এটি একটি স্থির কয়েল বা বৈদ্যুতিক চুম্বকীয় (Magnetized) সার্কিট দিয়ে আটি হয়। এর ড্রাইভ শ্যাফটের সাথে আর্মেচার শ্যাফট থাকে। আর্মেচার শ্যাফটি চৌম্বকত্ব দিয়ে কম্প্রেসর শ্যাফটকে আটকে ফেলে এবং কম্প্রেসর চলতে শুরু করে। ম্যাগনেটিক ক্লাচ সংযোগ বা বিচ্ছিন্ন কোনটিতে ঘূর্ণায়মান (Rotating) কম্প্রেসর পুলির ঘূর্ণনে বাঁধা দেয় না।
সলিনয়েড বাইপাস ভালভ
সলিনয়েড ভালভ থার্মোস্ট্যাট এবং মেইন সুইচ সিরিজে সংযুক্ত থাকে । ইভাপোরেটরের তাপমাত্রা ০° হলে থার্মোস্ট্যাটের মলিনয়েড ভাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে সলিনয়েড বাইপাস লাইন খুলে যায় । ঐ সময়ে কন্ডেন্সার হতে উচ্চ চাপযুক্ত (High Pressure) গ্যাসীয় রেফ্রিজারেন্ট সলিনয়েড ভাত ৰাইপাস লাইন এবং ইভাপোরেটর হয়ে সাকশন লাইনের মধ্য দিয়ে কম্প্রেসরে ফিরে যায় । এই প্রক্রিয়ার ৩° সেন্টিােডে পৌঁছলে সলিনয়েড তালুত বন্ধ হয়ে যায় এবং আবার স্বাভাবিক প্রবাহ চলতে থাকে।
সাকশন থ্রোটল কন্ট্রোল
অত্যাধুনিক অটোমাবোইল এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেমে এ ধরনের প্রোটন কন্ট্রোল ব্যবহার করা হয়। এর ইনলেট পোর্টে ইন্ডাপারেটরের আউটলেটের সাথে এবং আউটলেট পোর্ট কম্প্রেসরের সাকশন পোর্টের সাথে সংযোগ করা থাকে।
অয়েল সেপারেটর
রেফ্রিজারেন্ট কম্প্রেসর হতে নির্গমনের সময় এর সাথে কিছু পরিমাণ কম্প্রেসর অয়েল চলে আসে। অয়েল সেপারেটর এই অয়েলকে জমা করে। অয়েল সেপারেটর ভার্টিক্যাল হাই প্রেশার লাইনে স্থাপন করা হয়।
হিট এক্সচেঞ্জার
এটি সাকশন লাইন এবং লিকুইড লাইনের মধ্যে ভাগ বিনিময়ের কাজে হিট এক্সচেয়ার ব্যবহৃত হয়। যে তরল রেফ্রিজারেন্ট এক্সপানশন তাতে বার তাকে আরো শীতল করে এবং যে গ্যাসীয় রেফ্রিজারেন্ট কম্প্রেসর শোষণ করে তাকে আরো গরম করে।
কার এয়ার কন্ডিশনারে ব্যবহৃত রেফ্রিজারেন্ট (Refrigerant )
রেফ্রিজারেন্ট(Refrigerant) এক ধরনের বিশেষ গুণাবলিসম্পন্ন প্রবাহী যা হাই প্রেশার (High Pressure) বা উচ্চ চাপে তরলায়ন (Liqudification) এবং লো প্রেশার (Low Pressure) বা নিম্নচাপে বাষ্পায়ন (Vaporisation) গুণসম্পন্ন গ্যাসীয় পদার্থ। এই রেফ্রিজারেন্ট এয়ারকন্ডিশনিং সাইকেলে কোন বস্তুর বা স্থান থেকে তাপ অপসারণের (Heat rejection) জন্য ব্যবহৃত হয় । প্রকৃতপক্ষে এয়ারকন্ডিশনিং সিস্টেমে রেফ্রিজারেন্টের মাধ্যমেই তাপমাত্রা কমানো (Reduce) হয়।
বর্তমানে প্রায় সব কার এসিতেই R-134 রেফ্রিজারেন্ট ব্যবহৃত হয়। R-134a রেফ্রিজারেন্ট আধুনিক এবং ক্লোরোফ্লোরো কার্বন বা সিএফসি (CFC) মুক্ত এইচএফসি (HFC) রেফ্রিজারেন্ট। এটি মূলত গ্রীনহাউস প্রভাবমুক্ত গ্যাস নয়। বর্তমানে R-12 এর পরিবর্তে রেফ্রিজারেন্ট হিসেবে আবাসিক রেফ্রিজারেটরে, বড় বড় এয়ারকন্ডিশনিং প্লান্ট, অটোমোবাইলে R-134a ব্যবহার খুবই জনপ্রিয়। এর রাসায়নিক নাম - টেট্রাক্লোরোইখেন এবং এর আণবিক সংকেত CH2FCF3. বরেলিং পয়েন্ট -২৬.১°সে.। এই গ্যাসের সিলিন্ডারের রং হাল্কা নীল (Light blue ) ।
অক্টোবর ২০১৬ সালের ক্ষরাস্তার রাজধানী কিগালিতে বিশ্বের প্রায় ২০০ টি দেশ অংশগ্রহণ করে একমত গোষণ করেছে যে সাধারন ফ্রিজ ও এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেমে রেফ্রিজারেন্ট হিসেবে যে হাইড্রোফ্লোরো কার্বন (HFC) নামের রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয় তা বর্জন করার জন্য। এইচএফসি একটি গ্রীনহাউস গ্যাস হিসেবে কার্বন ডাই অক্সাইড এর চেরে কয়েক হাজার গুণ বেশি শক্তিশালী। এটি পরিহার করলে ২০৫০ সাল নাগাদ বায়ুমণ্ডল থেকে ৭০০০ কোটি টন পর্যন্ত কার্বন ডাই অক্সাইড এর সমপরিমাণ গ্রীনহাউস গ্যাস অপসারণ করা যাবে। কারণ এই এইচএফসি গ্যাস বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। এইচএফসি গ্যাসের ব্যবহার কমালে বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধি বহুলাংশে কমবে। কিন্তু এ গ্যাস ওজোন স্তরের কোন ক্ষতি / ক্ষয় সাধন করে না।
শ্রেণির তাত্ত্বিক কাজ ২
তোমরা নিচের ছবিটি লক্ষ্য করি এবং বিভিন্ন অংশের নাম ও কাজ লেখ।
Read more