ট্রানজিস্টর (Transistor)
দু'টি পি টাইপ সেমিকন্ডাক্টর মাঝে একটি এন টাইপ সেমিকন্ডাক্টরের স্থাপন করলে বা দু'টি এন টাইপ সেমিকন্ডাক্টরের মাঝে একটি পি টাইপ সেমিকন্ডাক্টর স্থাপন করলে যে দু'টি জাংশন তৈরী হয়ে তিনটি টার্মিনাল বিশিষ্ট আকৃতি সৃষ্টি করে তাকে ট্রানজিস্টর বলে। ট্রানজিস্টর এমন একটি ডিভাইস/সুইচ যার সাহায্যে ইনপুটে দুর্বল ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যাল দিলে আউটপুটে বর্ধিত আকারের সিগন্যাল পাওয়া যায়।
ট্রানজিস্টরের টার্মিনাল তিনটি হল-
১) ইমিটার: ট্রানজিস্টরের যে অংশে হোল বা ইলেকট্রন সরবরাহ করে তাকে ইমিটার বলে। ইমিটারে সর্বদা ফরোয়ার্ড বায়াস প্রয়োগ করা হয়।
২) কালেক্টর: ট্রানজিস্টরের যে অংশ হোল বা ইলেকট্রন সংগ্রহ করে তাকে কালেক্টর বলে। কালেক্টরে সর্বদা রিভার্স বায়াস প্রয়োগ করা হয়।
৩) বেস : ইমিটার ও কালেক্টরের মধ্যবর্তী স্তরকে বেস বলে। বেসের স্তর খুব পাতলা থাকে। বেসের মধ্য দিয়ে কালেক্টর অল্প কারেন্ট পাঠালে ইমিটার থেকে কালেক্টরে অনেক বেশি কারেন্ট প্রবাহিত হয়। মূলত বেস কারেন্ট ইমিটার কালেক্টর কারেন্টকে নিয়ন্ত্রণ করে।
গঠন অনুসারে ট্রানজিস্টর প্রধানত দুই প্রকার-
১) পি-এন-পি-ট্রানজিস্টর (P-NP Transistor)
২) এন-পি-এন ট্রাজিউর (N-P N Transistor)
পি-এন-পি-ট্রানজিস্টর (P-N-P Transistor)
N টাইপ সেমিকন্ডাক্টরের উভয় পার্শ্বে ১টি করে P টাইপ সেমিকন্ডাক্টর সংযুক্ত করে P.N.P ট্রানজিস্টর তৈরি করা হয় । ট্রানজিস্টরের ইমিটার লেয়ারে খুব বেশি এবং বেলের লেয়ারে খুব হাল্কা করে ডোপিং করা হয় এবং কালেক্টরকে ইমিটার ও নেস এৱ তুলনায় মাঝামাঝি আকারে ডোপিং করা হয়। কালেক্টরের লেয়ার তুলনামূলক ভাবে বন্ধ করা হয় । চিত্রে NPN ট্রানজিস্টরে দুইটি জাংশন দেখানো হয়েছে।
এন-পি-ট্রানজিস্টর (N-P- N Transistor)
P টাইপ সেমিকন্ডাক্টরের উভয় পাশে ১টি করে N টাইপ সেমিকন্ডাক্টর সংযুক্ত করে N.P.N ট্রানজিস্টর তৈরি করা হয়। ট্রানজিস্টরের ইমিটার লেয়ারে খুব বেশি এবং বেসের লেয়ারে খুব হাল্কা করে ডোপিং করা হয় এবং কালেক্টরকে ইমিটার ও বেস এর তুলনায় মাঝামাঝি আকারে ডোপিং করা হয়। কালেক্টরের লেয়ার তুলনামূলকভাবে বড় করা হয়। চিত্রে PNP ট্রানজিস্টরে দুইটি জাংশন দেখানো হয়েছে।
NPN ট্রানজিস্টর চিহ্নিত করার ধাপ -
১) মাল্টিমিটারকে ডায়োড যুদ্ধে রাখি।
২) পজেটিভ প্রোবকে ট্রানজিস্টরের মাঝখানের পিন (বেস) এ ধরে রাখি।
৩) নেগেটিভ প্রোবকে পিন-১ (ইমিটার) এ স্পর্শ করাই, দেখবো মিটারে কিছু ভোল্টেজ প্রদর্শন করছে।
৪) অনুরূপ ভাবে নেগেটিভ প্রোবকে পিন-৩ (কালেক্টর) এ স্পর্শ করাই, দেখবো এবারও মিটারে কিছু ভোল্টেজ প্রদর্শন করছে।
৫) নিশ্চিত হওয়া পেল এটি NPN ট্রানজিস্টর। এটির পেছনে যুক্তি হল NPN ট্রানজিস্টরে-
(যদি মাল্টিমিটারের পজেটিভ প্রোবকে এ্যানোড এবং নেগেটিভ প্রোবকে ক্যাথোডে ধরি, তখন মিটারে ভোল্টেজ প্রদর্শন করবে। আর যদি বিপরীতভাবে ধরি তাহলে মিটারে ভোল্টেজ প্রদর্শন করবে না।)
PNP ট্রানজিস্টর চিহ্নিত করার ধাপ-
১) মাল্টিমিটারকে ডায়োড মুডে রাখি।
২) পজেটিভ প্রোবকে ট্রানজিস্টরের পিন ১ (ইমিটার) এ ধরে রাখি ।
৩) নেগেটিভ প্রোবকে মাঝখানের পিন (বেস) এ স্পর্শ করাই, দেখবো মিটারে কিছু ভোল্টেজ প্রদর্শন করছে।
৪) অনুরূপ ভাবে নেগেটিভ প্রোবকে মাঝখানের পিন (বেস) এ ধরি এবং পজেটিভ প্রোবকে ট্রানজিস্টরের পিন ও কালেক্টর) এ, দেখবো এবারও মিটারে কিছু ভোল্টেজ প্রদর্শন করছে।
৫) নিশ্চিত হওয়া পেল এটি PNP ট্রানজিস্টর। এর পেছনে যুক্তি হল PNP ট্রানজিস্টরে-
(যদি মাল্টিমিটারের পজেটিভ প্রোবকে এ্যানোডে এবং নেগেটিভ প্রোবকে ক্যাথোডে ধরি, তখন মিটারে ভোল্টেজ প্রদর্শন করবে। আর যদি বিপরীতভাবে ধরি তাহলে মিটারে ভোল্টেজ প্রদর্শন করবে না।)
Read more