তেজস্ক্রিয়তা আবিষ্কারের তিন বছর পরে এলস্টার (Elster) ও পাইটেল (Geitel) নামক দু'জন বিজ্ঞানী লক্ষ করেন যে, কোনো তেজস্ক্রিয় বন্ধুর তেজস্ক্রিয়তা সময় অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথে কমতে থাকে এবং এই ক্ষয় সূচক নিয়ম (exponential law) মেনে চলে। তেজস্ক্রিয়তা বলতে একটি স্বতন্ত্র পরমাণুর পরিবর্তন বোঝায় এবং সমগ্র বস্তুখণ্ডের পরিবর্তন বোঝায় না। তেজস্ক্রিয়তা একটি স্বতঃস্ফূর্ত আকস্মিক ঘটনা। কোন্ মুহূর্তে কোন্ পরমাণুটি ভেঙে যাবে তা নির্দিষ্ট করে বলা অসম্ভব। এর ক্ষয় পরিসংখ্যানের নিয়ম মেনে চলে। পরীক্ষার সাহায্যে প্রমাণিত হয়েছে, তেজস্ক্রিয় পরমাণুর ভাঙনের বা ক্ষয়ের হার ঐ সময়ে উপস্থিত অক্ষত পরমাণুর সংখ্যার সমানুপাতিক ।
ধরা যাক, সময় গণনার শুরুতে (যখন t = 0) কোনো তেজস্ক্রিয় পদার্থে অক্ষত পরমাণুর সংখ্যা ছিল No । সময় অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথে কিছু পরমাণু ভেঙে যায়। মনে করি । সময়ে অবশিষ্ট অক্ষত পরমাণুর সংখ্যা N । এখন dN যদি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র dr সময়ে dN সংখ্যক পরমাণু ভেঙে যায়, তাহলে পরমাণুর ভাঙনের হার । এখন এ ভাঙনের হার অক্ষত পরমাণুর সংখ্যার সমানুপাতিক, অর্থাৎ
যেহেতু সময় অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথে পদার্থের পরমাণুর সংখ্যা কমে যাচ্ছে তাই ঋণাত্মক চিহ্ন ব্যবহার করা হয়েছে।
:-
(9.16) সমীকরণ থেকে দেখা যায়,
এ সমীকরণ থেকে আমরা পাই, N = 1 হলে
অর্থাৎ ক্ষয় ধ্রুবক একটি পরমাণুর একক সময়ে ভাঙনের সম্ভাব্যতা নির্দেশ করে। ক্ষয় ধ্রুবক যত বড় হবে নির্দিষ্ট সময়ে একটি পরমাণুর ক্ষরের সম্ভাবনা তত বেশি হবে। কোনো তেজস্ক্রিয় পদার্থের একটি পরমাণুর একক সময়ে ভাঙনের তাকে ঐ পদার্থের ক্ষয় ধ্রুবক বলে।
(9.17) সমীকরণ থেকে দেখা যায় যে, এর একক হলো s-1। রেডনের (Rn) ক্ষয় ধ্রুবক 2.11 x 10-6 s-1 বলতে বোঝায় । সেকেন্ডে 1টি রেডন পরমাণুর ভেঙে যাবার সম্ভাবনা 1 এর মধ্যে 2.11 × 10-6
কোনো তেজস্ক্রিয় পদার্থের ক্ষয় ধ্রুবক । এবং সময়ে অক্ষত পরমাণুর সংখ্যা N হলে (9.16) সমীকরণ থেকে আমরা পাই,
মনে করি শুরুতে অর্থাৎ t = 0, তখন পরমাণুর সংখ্যা N = No এবং অন্য কোনো এক সময় t = t তে N = N।
সুতরাং এই সীমার মধ্যে উপরোক্ত সমীকরণকে যোগজীকরণ করে আমরা পাই,
<math xmlns="http://www.w3.org/1998/Math/MathML"><munderover accent='false' accentunder='false'><mo>∫</mo><mrow><mi>N</mi><mi>O</mi></mrow><mi>N</mi></munderover><mfrac><mrow><mi>d</mi><mi>N</mi></mrow><mi>N</mi></mfrac><mo>=</mo><mo>−</mo><munderover accent='false' accentunder='false'><mo>∫</mo><mi>ο</mi><mi>t</mi></munderover><mi>λ</mi><mi>d</mi><mi>t</mi></math>
এ সমীকরণটিই তেজস্ক্রিয় রূপান্তর সমীকরণ নামে পরিচিত এবং এ সমীকরণ হতে স্পষ্টত বোঝা যায় যে, তেজস্ক্রিয় রূপান্তর সূচক নিয়ম মেনে চলে। চিত্র ৯.৭-এ তাই প্রদর্শিত হলো।
যে সময়ে কোনো তেজস্ক্রিয় পদার্থের মোট পরমাণুর ঠিক অর্ধেক পরিমাণ ভেঙে যার, তাকে ঐ পদার্থের অর্থ জীবন বা অর্থায়ু বলে।
যে সময় কোনো তেজস্ক্রিয় পদার্থের N সংখ্যক পরমাণু ভেঙে সংখ্যক হয়, সেই সময়ই হচ্ছে অর্থ জীবন। অর্ধ জীবনকে T1/2 দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
ইউরেনিয়ামের অর্থ জীবন 450 কোটি বছর বলতে বোঝার নির্দিষ্ট সংখ্যক ইউরেনিয়াম পরমাণু ভেঙে ঠিক অর্ধেক হতে সময় লাগে 450 কোটি বছর। আরো 450 কোটি বছরে ভেঙে হয় এক-চতুর্থাংশ।
(9.18) নং সমীকরণ হতে আমরা জানি,
উপরোক্ত সমীকরণ হতে বোঝা যায় যে, অৰ্থ জীবন T1/2 র ধ্রুবক এর ব্যস্তানুপাতিক অর্থাৎ অর্থ জীবনের মান বেশি হলে ক্ষয় ধ্রুবকের মান কম হবে।
আমরা আগেই বলেছি যে, তেজস্ক্রিয়া একটি স্বতঃস্ফূর্ত ঘটনা। এর প্রকৃতি পরিসংখ্যানের নিয়মাবলি মেনে চলে এবং যে কোনো পরমাণুর জীবন শূন্য (0) থেকে ০০ পর্যন্ত হতে পারে। সুতরাং কোনো তেজস্ক্রির পদার্থের গড় জীবন নির্ণয় করা সম্ভব। প্রত্যেকটি তেজস্ক্রিয় পরমাণুর জীবনের যোগফলকে পরমাণুর প্রারম্ভিক সংখ্যা দ্বারা ভাগ করলে ঐ তেজস্ক্রিয় পদার্থের গড় জীবন পাওয়া যায়। গড় জীবনকে সাধারণত দ্বারা প্রকাশ করা যায়।
দেখা গেছে যে, গড় জীবন ..(1.20)
আমরা জানি,
:- T1/2 =0.693π…(9.21)
সুতরাং অর্ধ জীবন গড় জীবনের সমানুপাতিক ।
min
min
min
min
আরও দেখুন...