পরমাণু গঠনের ধারণার ক্রমবিকাশ

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - পদার্থবিদ্যা - পদার্থবিজ্ঞান – ২য় পত্র | NCTB BOOK

 ১৯০০ সালের দিকে এ ধারণা প্রায় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, এই মহাবিশ্বের সকল কিছু পরমাণু দিয়ে গড়া। এটাও প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছিল যে, সকল পরমাণুতেই রয়েছে ইলেকট্রন। এর প্রমাণ অবশ্য পাওয়া গিয়েছিল ক্যাথোড রশ্মি ও ফটোইলেকট্রিক ক্রিয়া নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করার সময়। ইলেকট্রন ঋণাত্মক আধানযুক্ত কণিকা। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে পরমাণু সর্বসমেতভাবে একটি নিরপেক্ষ কণিকা। সুতরাং এটা ধারণা করা স্বাভাবিক ছিল যে, পরমাণুতে অবশ্যই ঋণাত্মক আধানের সমপরিমাণ ধনাত্মক আধান রয়েছে। এছাড়া, ইলেক্ট্রনের মোট ভর পরমাণুর ভরের তুলনায় খুবই নগণ্য। সুতরাং ধারণা করা হয়েছিল যে, পরমাণুতে অধিক ভরবিশিষ্ট ধনাত্মক আধানযুক্ত কণিকা রয়েছে। এ ধারণার প্রেক্ষিতে বিজ্ঞানী থমসন পরমাণুর গড়নের একটি মডেল প্রস্তাব করেন। এই মডেলটি প্লাম পুডিং মডেল নামে অভিহিত। একে বাংলায় কিশমিশ পুডিং মডেল বলা যেতে পারে ।

থমসনের কিশমিশ পুডিং মডেল বিজ্ঞানীদের মধ্যে তেমন গ্রহণযোগ্যতা না পাওয়ায় বিজ্ঞানীরা নতুন নতুন মডেলের সন্ধানে গবেষণা চালিয়ে যেতে থাকেন। রাদারফোর্ড আলফা কণা পরীক্ষার মাধ্যম সৌর মডেল প্রদান করেন। পরবর্তীতে নীলস্ বোর রাদারফোর্ডের পরীক্ষালব্ধ ফলাফল ও প্ল্যাঙ্কের কোয়ান্টাম তত্ত্ব সমন্বয় করে পরমাণুর কোয়ান্টাম মডেল প্রদান করেন। 

থমসন পরমাণু মডেল : কিশমিশ পুডিং মডেল

১৮৯৮ সালে বিজ্ঞানী জে. জে. থমসন যে কিশমিশ পুডিং মডেল তাতে তিনি বলেন যে, পুডিংয়ের ভেতর কিশমিশ যেমন বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে পরমাণুতে ঠিক তেমনি নিরবচ্ছিন্নভাবে বণ্টিত ধনাত্মক আধানের মধ্যে ইলেকট্রন ছড়িয়ে আছে। দেশজভাবে এ মডেলকে তরমুজ মডেল বলা যেতে বে বঞ্চিত rner.cবস্তার করেন পারে। তরমুজের রসালো অংশকে যদি ধনাত্মক আধান বিবেচনা করা হয় এবং তরমুজের বীচিকে যদি ঋণাত্মক আধানযুক্ত ইলেকট্রন মনে করা হয় তাহলে তরমুজের রসালো অংশের মধ্যে এর বীচিগুলো বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে থাকাকে থমসন পরমাণু মডেলের সাথে তুলনা করা যেতে পারে (চিত্র ৯.১)।

চিত্র :৯.১

 থমসন বলেছিলেন যে, ইলেকট্রনগুলোর মধ্যে তড়িৎ মিথস্ক্রিয়ার দরুন এরা এক অ্যাঙ্গউম (10-10m) পর্যায়ের ব্যাসার্ধের কল্পিত গোলাকৃতি পরমাণুর ভেতর সুবিন্যস্ত থাকে।

Content added By
Promotion