এসডিজি অর্জনে অংশীদারিত্বের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করার পূর্বে আমাদের জানা দরকার অংশীদারিত্ব কী? উন্নয়নের সুফল ভোগকারী গোষ্ঠীই হলো অংশীজন। তারা যদি উন্নয়নের সুফল ভোগ করতে চায় তাহলে অংশীজন হিসেবে তাদের কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য থাকে। সেই দায়িত্ব ও কর্তব্য ঠিকমতো পালন করলে উন্নয়নে তাদের অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। উন্নয়ন কর্মী বা সরকারের একার পক্ষে উন্নয়ন গতিধারাকে অব্যাহত রাখা সম্ভব নয়। যেমন ধরা যাক, ভালো ফসল ফলানোর জন্য সরকার বা কোনো উন্নয়ন সংগঠন সার ও প্রয়োজনীয় কীটনাশক সরবরাহ করবে। কিন্তু যারা এটি ব্যবহার করবে তারা যদি অসচেতনভাবে যাত্রার অতিরিক্ত ব্যবহার করে তা কখনো পরিবেশবান্ধব হবে না। এক্ষেত্রে তাদের দায়িত্ব হচ্ছে সচেতনতার সাথে পরিমিত সার ও কীটনাশক ব্যবহার করা। কেবল ব্যক্তিক লাভের কথা চিন্তা না করে সামষ্টিক উপকারিতা কীভাবে আসবে সেটি চিন্তা করে কাজ করাটা হলো এক ধরনের অংশীদারিত্ব। যে কোনো উন্নয়ন কর্মকাণ্ডই পরিচালিত হোক না কেন তা যেন সকলের কথা ভেবে হয়। যার যতটুকু দায়িত্ব তা স্ব-স্ব অবস্থানে থেকেই পালন করতে হবে। এসডিজি বাস্তবায়নে অংশীদারিত্বের গুরুত্ব একটি প্রধান বিবেচ্য বিষয়। এক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসতে হবে। শুধু বেসরকারি খাত বা সংগঠন নয়, তৃণমূল পর্যায় থেকে শুরু করে ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও সমাজের সর্বস্তরের অংশগ্রহণ ও মিলিত প্রচেষ্টায় একযোগে উন্নন্নন লক্ষ্য অর্জনে কাজ করতে হবে। বিচ্ছিন্নভাবে পরিচালিত তৎপরতাকে আরও সুসমন্বিত করতে হবে।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে জাতীয় পর্যায়ের সঙ্গে অংশীদারিত্বের গুরুত্ব রয়েছে। অংশীদারিত্বের প্রক্রিয় সমাজের উঁচুতলার সঙ্গে সাধারণ মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ফলে সাধারণ মানুষ এসডিজি অর্জনে তাদের ভূমিকা সম্পর্কে সচেতন হবে। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব খুবই গুরুত্ব বহন করে। এসডিজি অর্জন কেবল নিজ দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটা পৃথিবীর সব দেশের সব মানুষের জন্য সমভাবে প্রযোজ্য।
এসডিজি অর্জনে সমাজের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের কথা যেমন চিন্তা করা হচ্ছে, তেমনি সমাজ ও রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসমূহের অংশীদারিত্বকে নিশ্চিত করে উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করতে হবে। তবে সব অভীষ্ট সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য নাও হতে পারে। যে সেলের জন্য বেসন অতীষ্ট অর্জন জরুরি তারা সেগুলোকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করবে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে একটি বিশেষ দিক হচ্ছে সার্বিক সক্ষমতা অর্জন। টেকসই উন্নয়নের প্রধান একটি অভীষ্ট হচ্ছে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা গড়ে তোলা। এক্ষেত্রে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা পারস্পরিক অংশীদারিত্বের সূচনা করে। যে দেশের যে ধরনের সক্ষমতা রয়েছে সে দেশ সেভাবে নিজেদের ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সামষ্টিক উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ অর্জনে এগিয়ে আসবে। কাউকে পিছিয়ে রেখে অন্যরা এগিয়ে গেলে সেই উন্নয়ন জাতীয় ও বৈশ্বিকভাবে টেকসই হবে না ।
কাজ: টেকসই উন্নয়নে অংশীদারিত্ব কেন প্রয়োজন আলোচনা করে লেখ।
আরও দেখুন...