পাঠ ৯ : টপোলজি

অষ্টম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি - কম্পিউটার নেটওয়ার্ক | | NCTB BOOK
4

তোমরা সবাই জেনে গেছ, কম্পিউটার নেটওয়ার্কে অনেকগুলো কম্পিউটার একসাথে জুড়ে দেওয়া হয়, যেন একটি কম্পিউটার অন্য কম্পিউটারের সাথে যোগাযোগ করতে পারে। জুড়ে দেওয়া কম্পিউটারগুলোর অবস্থানের উপর ভিত্তি করে কম্পিউটার নেটওয়ার্ককে নিম্নলিখিত ভাগে ভাগ করা যায়:
> PAN (Personal Area Network)
> LAN (Local Area Network)
> MAN (Metropolitan Area Network)
> WAN (Wide Area Network)

ব্যক্তিগত পর্যায়ে যে নেটওয়ার্ক (ব্লু-টুথ এর মাধ্যমে) তৈরি করা হয় তা হলো PAN। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যে সকল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে দেখা যায়, এগুলো সবই লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক বা LAN । সচরাচর একটি শহরের মধ্যে যে নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয় তা হলো MAN। দেশ জুড়ে বা পৃথিবী জুড়ে যে নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয় তা হলো WAN । এই নেটওয়ার্কের অন্তর্গত কম্পিউটারগুলো জুড়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়। এই ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিকে বলা হয় নেটওয়ার্ক টপোলজি।

ৰাস টপোলজি

বাস টপোলজি : এই টপোলজিতে একটা মূল ব্যাকবোন বা মূল লাইনের সাথে সবগুলো কম্পিউটারকে জুড়ে দেওয়া হয়। বাস টপোলজিতে কোনো একটা কম্পিউটার যদি অন্য কোনো কম্পিউটারের সাথে যোগাযোগ করতে চায়, তাহলে সব কম্পিউটারের কাছেই সেই তথ্য পৌঁছে যায়। তবে যার সাথে যোগাযোগ করার কথা কেবল সেই কম্পিউটারটি তথ্যটা গ্রহণ করে। অন্য সব কম্পিউটার তথ্যগুলোকে উপেক্ষা করে। মনে রাখতে হবে মূল বাস/ব্যাকবোন নষ্ট হয়ে গেলে সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক অকেজো হয়ে যায়।

রিং টপোলজি

রিং টপোলজি : নাম শুনেই বুঝতে পারছ, রিং টপোলজি হবে গোলাকার বৃত্তের মতো। ছবি দেখতে পারছ, এই টপোলজিতে প্রত্যেকটা কম্পিউটার অন্য দুটো কম্পিউটারের সাথে যুক্ত। এই টপোলজিতে এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে তথ্য যায় একটা নির্দিষ্ট দিকে।

তবে মনে রেখো, রিং টপোলজিতে কম্পিউটারগুলোকে কিন্তু বৃত্তাকারে থাকার দরকার নেই, সেগুলো এলোমেলোভাবে থাকতে পারে। কিন্তু যদি সব সময়েই কম্পিউটারগুলোর মাঝে বৃত্তাকার যোগাযোগ থাকে, তাহলেই সেটি রিং টপোলজি। উল্লেখ্য এক্ষেত্রে কোন একটি কম্পিউটার নষ্ট হয়ে গেলে সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক বিকল হয়ে যাবে।

স্টার টপোলজি : কোনো নেটওয়ার্কের সবগুলো কম্পিউটার যদি একটি কেন্দ্রীয় হাব (Hub)/সুইচ (Switch)-এর সাথে যুক্ত থাকে, তাহলে নেটিকে বলে স্টার টপোলজি। এটি ভুলনামূলকভাবে একটি সহজ টপোলজি এবং অনুমান করা যায়, কেউ যদি খুব তাড়াতাড়ি সহজে একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক তৈরি করতে চায়, তাহলে সে স্টার টপোলজি ব্যবহার করবে। এই টপোলজিতে একটি কম্পিউটার নষ্ট হলেও বাকি নেটওয়ার্ক সচল থাকে। কিন্তু কোনোভাবে কেন্দ্রীয় হাব/সুইচ নষ্ট হলে পুরো নেটওয়ার্কটিই অচল হয়ে পড়বে। স্টার টপোলজিতে কম্পিউটারগুলোকে স্টারের মতোই সাজাতে হবে তা কিন্তু সত্যি নয়!

স্টার টপোলজি

 

 

 

ট্রি টপোলজি : ট্রি মানে হচ্ছে গাছ। কাজেই এই টপোলজিটাকে গাছের যতো দেখানোর কথা। ছবিটা একটু ভালো করে দেখলেই তুমি বুঝতে পারবে আসলে এটা গাছের মতো। গাছে যে রকম কাণ্ড থেকে ডাল, একটা ভাল থেকে অন্য ভাল এবং সেখান থেকে আরো ভাল বের হয়, এখানেও তাই হচ্ছে। এই টপোলজিতে একটি মজার বিষয় হলো এখানে অনেকগুলো স্টার টপোলজিকে একত্র করা!

 

 

ট্রি টপোলজি

 

মেশ টপোলজি : এই টপোলজি কম্পিউটারগুলো একটি আরেকটির সাথে যুক্ত থাকে এবং একাধিক পথে যুক্ত হতে পারে। এখানে কম্পিউটারগুলো শুধু যে অন্য কম্পিউটার থেকে তথ্য নেয় তা নয় বরং সেটি নেটওয়ার্কের অন্য কম্পিউটারের মাঝে বিতরণও করতে পারে। যদি এমন হয় যে একটি নেটওয়ার্কের প্রতিটি কম্পিউটারই সরাসরি নেটওয়ার্কভুক্ত অন্য সবগুলো কম্পিউটারের সাথে যুক্ত থাকে, তাহলে সেটিকে বলে কমপ্লিট মেশ। ছবিতে ছয়টি কম্পিউটারের একটি কমপ্লিট মেশ দেখানো হলো।

দলগত কাজ : বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে টপোলজির উপর পোস্টার তৈরি কর।

নতুন শিখলাম : বাস টপোলজি, রিং টপোলজি, স্টার টপোলজি, ট্রি টপোলজি, মেশ টপোলজি, PAN, LAN, MAN, WAN।

মেশ টপোলজি
Content added || updated By
Promotion