শামসুজ্জামান খানের জন্ম ১৯৪০ সালে এবং মৃত্যু ২০২১ সালে। প্রবন্ধ রচনায় ও লোকসাহিত্য গবেষণায় তিনি বিশেষ অবদান রেখেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে আছে ‘ফোকলোর চর্চা’, ‘বাংলা সন ও তার ঐতিহ্য’, ‘গ্রাম বাংলার রঙ্গরসিকতা' ইত্যাদি। নিচে তাঁর লেখা একটি প্রবন্ধ দেওয়া হলো।
প্রবন্ধটি প্রথমে নীরবে পড়ো। এরপর সরবে পড়ো।
শামসুজ্জামান খান
বাংলা সনের প্রথম মাসের নাম বৈশাখ। পয়লা বৈশাখে বাঙালির নববর্ষ উৎসব। নববর্ষ সকল দেশের, সকল জাতির আনন্দ উৎসবের দিন। শুধু আনন্দ উচ্ছ্বাস নয়, সকল মানুষের জন্য কল্যাণ কামনারও দিন। আমরাও সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধি ও কল্যাণের প্রত্যাশা নিয়ে মহা ধুমধামের সঙ্গে আমাদের নববর্ষ উৎসব উদযাপন করি। একে অন্যকে বলি, শুভ নববর্ষ।
বাংলা নববর্ষ এখন আমাদের প্রধান জাতীয় উৎসব। প্রতি বছরই এ উৎসব বিপুল মানুষের অংশগ্রহণে বিশাল থেকে বিশালতর হয়ে উঠছে। পাকিস্তান আমলে পূর্ববাংলার বাঙালিকে এ উৎসব পালন করতে দেওয়া হয়নি। বলা হয়েছে, এটা পাকিস্তানি আদর্শের পরিপন্থী। বাঙালি তার সংস্কৃতির উপর এ আঘাত সহ্য করেনি। তারা এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। তখন ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সকল বাঙালি এ উৎসবকে জাতীয় ছুটির দিন ঘোষণার দাবি জানিয়েছে। কিন্তু সে দাবি অগ্রাহ্য হয়েছে। ফলে পূর্ববাংলার বাঙালি ফুঁসে উঠেছে। এভাবেই বাঙালি জাতিসত্তা গঠন-প্রক্রিয়ার সঙ্গে বাংলা নববর্ষ এবং তার উদ্যাপনের আয়োজন যুক্ত হয়ে যায়।
১৯৫৪ সালে পূর্ববাংলার যুক্তফ্রন্ট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক বাংলা নববর্ষে ছুটি ঘোষণা করেন এবং দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। সেটা ছিল বাঙালির এক তাৎপর্যপূর্ণ বিজয়ের দিন। কিন্তু সে বিজয় স্থায়ী হয়নি। যুক্তফ্রন্ট সরকার ভেঙে দিয়ে এবং সামরিক শাসন জারি করে তা সাময়িকভাবে রুখে দিয়েছে স্বৈরাচারী পাকিস্তান সরকার। তবু পূর্ববাংলার বাঙালি পিছু হটেনি। সরকারিভাবে আর নববর্ষ উদযাপিত হয়নি পাকিস্তান আমলে; কিন্তু বেসরকারিভাবে উদ্যাপিত হয়েছে প্রবল আগ্রহ ও গভীরতর উৎসাহ-উদ্দীপনায়। এর মধ্যে সবচেয়ে সুসংগঠিত এবং সুপরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণ করে সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানট। ১৯৬৭ সাল থেকে রমনার বটমূলে ছায়ানট নববর্ষের উৎসব শুরু করে। স্বাধীন বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় বাধাহীন পরিবেশে এখন তা জনগণের বিপুল আগ্রহ-উদ্দীপনাময় অংশগ্রহণে দেশের সর্ববৃহৎ জাতীয় অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। রাজধানী ঢাকার নববর্ষ উৎসবের দ্বিতীয় প্রধান আকর্ষণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ছাত্রছাত্রীদের বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা। এই শোভাযাত্রায় মুখোশ, কার্টুনসহ যেসব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীকধর্মী চিত্র বহন করা হয় তাতে আবহমান বাঙালিত্বের পরিচয় এবং সমকালীন সমাজ-রাজনীতির সমালোচনাও থাকে।
এবার আমরা বাংলা সন ও নববর্ষ উদ্যাপনের কথা বলি। বাংলা সনের ইতিহাস এখনো সুস্পষ্টভাবে জানা যায়নি। তবে অধিকাংশ ঐতিহাসিক ও পণ্ডিত মনে করেন মোগল সম্রাট আকবর চান্দ্র হিজরি সনের সঙ্গে ভারতবর্ষের সৌর সনের সমন্বয় করে ১৫৫৬ সাল বা ৯৯২ হিজরিতে বাংলা সন চালু করেন। আধুনিক গবেষকদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করেন মহামতি আকবর সর্বভারতীয় যে ইলাহি সন প্রবর্তন করেছিলেন তার ভিত্তিতেই বাংলায় আকবরের কোনো প্রতিনিধি বা মুসলমান সুলতান বা নবাব বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। সেজন্যই একে ‘সন’ বা ‘সাল’ বলে উল্লেখ করা হয়। ‘সন’ কথাটি আরবি, আর ‘সাল' হলো ফারসি। এখনো সন বা সালই ব্যাপকভাবে চালু। তবে বঙ্গাব্দও বলেন কেউ কেউ।
বাংলা সন চালু হবার পর নববর্ষ উদ্যাপনে নানা আনুষ্ঠানিকতা যুক্ত হয়। নবাব এবং জমিদারেরা চালু করেন ‘পুণ্যাহ' অনুষ্ঠান। পয়লা বৈশাখে প্রজারা নবাব বা জমিদারবাড়িতে আমন্ত্রিত হতেন, তাদের মিষ্টিমুখ করানো হতো। পান-সুপারিরও আয়োজন থাকত। তবে তার মূল উদ্দেশ্য ছিল খাজনা আদায়। মুর্শিদাবাদের নবাবেরা এ অনুষ্ঠান করতেন। বাংলার জমিদারেরাও করতেন এ অনুষ্ঠান। জমিদারি উঠে যাওয়ায় তা এখন লুপ্ত হয়েছে। পয়লা বৈশাখের দ্বিতীয় বৃহৎ অনুষ্ঠান ছিল ‘হালখাতা'। এ অনুষ্ঠান করতেন ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশ কৃষিপ্ৰধান। তাই ফসলের মৌসুমে ফসল বিক্রির টাকা হাতে না এলে কৃষকসহ প্রায় কেউই নগদ টাকার মুখ খুব একটা দেখতে পেত না। ফলে সারা বছর বাকিতে প্রয়োজনীয় জিনিস না কিনে তাদের উপায় ছিল না। পয়লা বৈশাখের হালখাতা অনুষ্ঠানে তারা দোকানিদের বাকির টাকা মিটিয়ে দিতেন। অন্তত আংশিক পরিশোধ করেও নতুন বছরের খাতা খুলতেন। হালখাতা উপলক্ষে দোকানিরা ঝালর কাটা লাল নীল সবুজ বেগুনি কাগজ দিয়ে দোকান সাজাতেন। ধূপধুনা জ্বালানো হতো। মিষ্টিমুখ করানো হতো গ্রাহক-খরিদ্দারদের। হাসি-ঠাট্টা, গল্পগুজবের মধ্যে বকেয়া আদায় এবং উৎসবের আনন্দ উপভোগ দুই-ই সম্পন্ন হতো। হালখাতাও এখন আর তেমন সাড়ম্বরে উদ্যাপিত হয় না। এখন মানুষের হাতে নগদ পয়সা আছে। বাকিতে বিকিকিনি এখন আর আগের মতো ব্যাপক আকারে হয় না ।
বাংলা নববর্ষের আর একটি প্রধান অনুষ্ঠান হলো বৈশাখী মেলা। দেশের বিভিন্ন স্থানে বৈশাখের প্রথম দিনে বার্ষিক মেলা বসে। এইসব মেলার অনেকগুলোই বেশ পুরনো। এই মেলাগুলোর মধ্যে খুব প্রাচীন ঠাকুরগাঁ জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদের মেলা এবং চট্টগ্রামের মহামুনির বৌদ্ধপূর্ণিমা মেলা। এক সময়ে এইসব মেলা খুব ধুমধামের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হতো। সে মেলা এখনো বসে, তবে আগের সে জৌলুস এখন আর নেই। আগে গ্রামবাংলার এই বার্ষিক মেলাগুলোর গুরুত্ব ছিল অসাধারণ। কারণ তখনো সারাদেশে বিস্তৃত যোগাযোগ ও যাতায়াত ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। ফলে মানুষের জীবনযাত্রা ছিল স্থবির। এখন যেমন দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে এক দিনের বেশি লাগে না, আগে তা সম্ভব ছিল না। নৌকা, ঘোড়ার গাড়ি, গরু- মোষের গাড়িতে মানুষ বা পণ্য পরিবহনে বহু সময় বা কয়েকদিন লেগে যেত। এখন নতুন নতুন পাকা রাস্তা ও দ্রুতগতির যানবাহন হওয়ায় সে সমস্যা আর নেই। আগে এইসব আঞ্চলিক মেলা থেকেই মানুষ সারা বছরের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে রাখত। তাছাড়া এইসব মেলা অঞ্চলবিশেষের মানুষের মিলনমেলায়ও পরিণত হতো। নানা সংবাদ আদান-প্রদান, নানা বিষয়ে মত বিনিময়েরও আদর্শ স্থান ছিল এইসব মেলা। আবার বাৎসরিক বিনোদনের জায়গাও ছিল মেলা। মেলায় থাকত কবিগান, কীর্তন, যাত্রা, গম্ভীরা গান, পুতুল নাচ, নাগরদোলাসহ নানা আনন্দ-আয়োজন।
নববর্ষের ওই তিনটি প্রধান সর্বজনীন উৎসব ছাড়াও বহু আঞ্চলিক উৎসব আছে। এদের মধ্যে চট্টগ্রামের লালদিঘি ময়দানে অনুষ্ঠিত বলী খেলা বিশেষ উল্লেখযোগ্য। ১৯০৭ সাল থেকে কক্সবাজারসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের নানা স্থানে এই খেলার প্রচলন আছে। এই বিখ্যাত কুস্তি খেলাকেই বলা হয় বলী খেলা। আবদুল জব্বার নামে এক ব্যক্তি এ খেলার প্রবর্তন করেন বলে একে ‘জব্বারের বলী খেলা' বলা হয়।
নববর্ষের এ ধরনের আরও নানা অনুষ্ঠান আছে। তোমরা নিজ নিজ এলাকায় খোঁজ নিলে তার সন্ধান পাবে। তোমাদের সঙ্গে পরিচয় ঘটবে নানা ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায়ও নববর্ষের উৎসব হয়। নানা আনন্দময় ক্রীড়া-কৌতুকের মধ্য দিয়ে তারা বৈসুব, সাংগ্রাই ও বিজু তিনটিকে একত্র করে ‘বৈসাবি’ নামে উৎসব করে। গ্রাম-বাংলায় নববর্ষে নানা খেলাধুলারও আয়োজন করা হতো। মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জে হতো গোরুর দৌড়, হাডুডু খেলা; ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মোরগের লড়াই; কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোণা, নড়াইলে ষাঁড়ের লড়াই প্রভৃতি।
আমাদের নববর্ষ উৎসব ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পর নতুন গুরুত্ব ও তাৎপর্য লাভ করে। আগে সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের আয়োজনের কথা বলেছি। এছাড়া বাংলা একাডেমিতে বৈশাখী ও কারুপণ্য মেলা এবং গোটা বিশ্ববিদ্যালয় ও রমনা এলাকা পয়লা বৈশাখের দিনে লক্ষ মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে। নতুন পাজামা-পাঞ্জাবি পরে ছেলেরা এবং নানা রঙের শাড়ি পরে মেয়েরা এই অনুষ্ঠানকে বর্ণিল করে তোলে। রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত, লোকসংগীত এবং বাঁশির সুরে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে সমবেত আবাল- বৃদ্ধ-বনিতা। আনন্দময় ও সৌহার্দ্যপূর্ণ এই পরিবেশ আধুনিক বাঙালি জীবনের এক গৌরবময় বিষয়।
আবহমান: চিরকালীন। | প্রতীকধর্মী: যা কোনো বিষয়কে ইঙ্গিত করে। |
আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা: সব বয়সের নারী-পুরুষ। | প্রবর্তন করা: চালু করা। |
ইলাহি সন: সম্রাট আকবরের চালু করা সাল । | ফুঁসে ওঠা: প্রতিবাদী হওয়া। |
ঐতিহ্য: গর্ব করার মতো পুরাতন বিষয়। | বর্ণাঢ্য: বিচিত্র রংযুক্ত। |
কবিগান: প্রতিযোগিতামূলক এক ধরনের লোকগান। | বৈসাবি: বৈসুব, সাংগ্রাই ও বিজু নামের তিনটি অনুষ্ঠানের সংক্ষিপ্ত নাম। |
কারুপণ্য: কাঠ, বাঁশ, বেত ও মাটি দিয়ে তৈরি জিনিসপত্র। | মঙ্গল শোভাযাত্রা: পহেলা বৈশাখে আয়োজিত আনন্দ মিছিল। |
কীর্তন: রাধা-কৃষ্ণ বিষয়ক গান। | মুখর: কোলাহলপূর্ণ। |
গম্ভীরা: অভিনয়-ভিত্তিক এক ধরনের লোকগান। | মুখ্যমন্ত্রী: পাকিস্তান আমলে পূর্ববাংলার সরকার-প্রধানের পদ। |
চান্দ্র হিজরি সন: চাঁদের হিসাবের সাথে মিল রেখে তৈরি হিজরি সন। | যাত্রা: এক ধরনের লোকনাটক। |
ছায়ানট: ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত ঢাকার একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন। | যুক্তফ্রন্ট সরকার: ১৯৫৪ সালে পূর্ববাংলায় গঠিত একটি বহুদলীয় সরকার। |
জাতিসত্তা: জাতির নিজস্ব পরিচয়। | রমনা: ঢাকার একটি জায়গার নাম। |
জৌলুস: জাঁকজমক। | লুপ্ত হওয়া: হারিয়ে যাওয়া। |
ঝালর কাটা: নকশা করে কাটা। | সমকালীন: একই সময়ের। |
ধুমধাম: আড়ম্বর। | সমন্বয় করা: মিল করা। |
ধূপধুনা: সুগন্ধি দ্রব্য। | সর্বজনীন: সবার জন্য । |
নাগরদোলা: চক্রাকারে ঘোরার দোলনা। | সাড়ম্বরে: আড়ম্বর সহকারে। |
নেকমরদ: জায়গার নাম। | সৌর সন: সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর একবার ঘুরে আসার কালপর্ব। |
পরিপন্থী: বিরোধী। | সৌহার্দ্যপূর্ণ: আন্তরিক। |
পাকিস্তান আমল: ১৯৪৭ সালের ১৪ই আগস্ট থেকে ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ। | স্থবির: গতিহীন। |
পুণ্যাহ: নববর্ষে খাজনা আদায়ের প্রতীকী অনুষ্ঠান। | স্বৈরাচারী: স্বেচ্ছাচারী। |
পুতুল নাচ: কাপড় দিয়ে তৈরি করা পুতুল দিয়ে দেখানো নাচ। | হাডুডু: বাংলাদেশের জাতীয় খেলা। |
পূর্ববাংলা: পাকিস্তান আমলে বাংলাদেশ যে নামে পরিচিত ছিল। | হালখাতা: নববর্ষে ব্যবসায়ীদের নতুন হিসাবের খাতা খোলার অনুষ্ঠান। |
শিক্ষকের নির্দেশ অনুযায়ী তোমরা দলে ভাগ হও। উপরের প্রবন্ধে কী বলা হয়েছে, তা দলে আলোচনা করে বোঝার চেষ্টা করো। কোন দল কেমন বুঝতে পেরেছে, তা যাচাই করার জন্য এক দল অপর দলকে প্রশ্ন করবে। এজন্য আগেই দলে আলোচনা করে কাগজে প্রশ্নগুলো লিখে রাখো
‘বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধটি নিজের ভাষায় বলো এবং নিজের ভাষায় লেখো ।
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
প্রবন্ধের সাধারণ কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার মাধ্যমে বৈশিষ্ট্যগুলো বোঝার চেষ্টা করো।
ক্রম | প্রশ্ন | হ্যাঁ | না |
---|---|---|---|
১ | লাইনের শেষে কি মিল-শব্দ আছে? | ||
২ | পড়ার সময়ে কি তাল রক্ষা করতে হয়? | ||
৩ | লাইনগুলোতে শব্দসংখ্যা কি সমান? | ||
৪ | সুর করে গাওয়া হয় কি? | ||
৫ | এটি কি পদ্য-ভাষায় লেখা? | ||
৬ | এটি কি গদ্য-ভাষায় লেখা? | ||
৭ | এখানে কোনো কাহিনি পাওয়া যায়? | ||
৮ | এখানে কোনো চরিত্র আছে কি? | ||
৯ | এখানে কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে কি না? | ||
১০ | এটি একাধিক অনুচ্ছেদে ভাগ করা কি না? | ||
১১ | এর মধ্যে কোনো সংলাপ আছে কি না? | ||
১২ | এটি অভিনয় করা যায় কি না? |
প্রবন্ধ হলো এক ধরনের সুবিন্যস্ত গদ্য রচনা। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রবন্ধ রচিত হয়; যেমন—ইতিহাস, বিজ্ঞান, সমাজ, সংস্কৃতি, রাজনীতি, ধর্ম, খেলাধুলা ইত্যাদি। এই বইয়ের ‘পিরামিড' লেখাটি ইতিহাস বিষয়ক, ‘জগদীশচন্দ্র বসু’ লেখাটি বিজ্ঞান বিষয়ক, ‘কত কাল ধরে’ লেখাটি সমাজ বিষয়ক এবং ‘বাংলা নববর্ষ’ লেখাটি সংস্কৃতি বিষয়ক।
ধরন অনুযায়ী প্রবন্ধ নানা রকম হতে পারে; যেমন: বিবরণমূলক প্রবন্ধ, তথ্যমূলক প্রবন্ধ, বিশ্লেষণমূলক প্ৰবন্ধ ইত্যাদি। বিবরণমূলক প্রবন্ধে কোনো বিষয়ের বিবরণ দেওয়া হয়, তথ্যমূলক প্রবন্ধে মূলত তথ্য তুলে ধরা হয়, আর বিশ্লেষণমূলক প্রবন্ধে উপাত্ত ও তথ্যের বিশ্লেষণ করা হয়।
যিনি প্রবন্ধ লেখেন, তাঁকে বলা হয় প্রাবন্ধিক বা প্রবন্ধকার। প্রবন্ধের মধ্যে সাধারণত আবেগের চেয়ে যুক্তি প্রাধান্য পায়। বেশ কয়েকটি অনুচ্ছেদে প্রাবন্ধিক তাঁর বক্তব্য তুলে ধরেন। প্রবন্ধের প্রথম অংশ ভূমিকা নামে পরিচিত। ভূমিকায় মূল আলোচনার ইঙ্গিত থাকে। প্রবন্ধের শেষ অংশ উপসংহার নামে পরিচিত। উপসংহারে প্রাবন্ধিকের সমাপ্তিসূচক মন্তব্য থাকে।
প্রবন্ধ লেখার জন্য কোনো একটি বিষয় নির্বাচন করো। বিষয়টির কোন কোন দিক নিয়ে আলোচনা করবে, তা প্রথমে কাগজে টুকে রাখো। এবার আলোচনার দিকগুলো সাজিয়ে নিয়ে আলাদা আলাদা অনুচ্ছেদে গদ্যভাষায় বিষয়টি উপস্থাপন করো। লেখার উপরে একটি শিরোনাম দাও।
……………………………………………………………………………
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
প্রবন্ধ লেখা হয়ে গেলে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে বের করো:
১. প্রবন্ধটি কোন বিষয় নিয়ে লেখা? (ইতিহাস, বিজ্ঞান, সমাজ, সংস্কৃতি, রাজনীতি, ধর্ম, খেলাধুলা ইত্যাদি)………………………..
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
২. প্রবন্ধটির ধরন কী এবং কেন? (বিবরণমূলক, তথ্যমূলক, বিশ্লেষণমূলক)…………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
আরও দেখুন...