hsc

বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ কৌশলের মূলনীতি

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - রসায়ন - রসায়ন - দ্বিতীয় পত্র | | NCTB BOOK
5

বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ কৌশলের মূলনীতি


বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ কৌশলগুলি পরিবেশের স্বাস্থ্য রক্ষা এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বায়ুদূষণ, যা মূলত শিল্পকারখানা, যানবাহন এবং কৃষি কার্যক্রম থেকে ঘটে, তা পরিবেশ ও মানবস্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক। এই দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন কৌশল এবং প্রযুক্তির প্রয়োগ করা হয়, যা মূলত বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণের নিয়মাবলী ও পদক্ষেপের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে।

বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের প্রধান কৌশলগুলি

  1. উৎস নিয়ন্ত্রণ (Source Control):
    • বায়ুদূষণের মূল উৎসগুলো চিহ্নিত করে সেই উৎসগুলোতে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। যেমন, শিল্প কারখানার ধোঁয়া নির্গমন কমানো, যানবাহনের দূষণ নিয়ন্ত্রণ, এবং কৃষির ব্যবহারে পরিস্কার প্রযুক্তির ব্যবহার।
    • উদাহরণস্বরূপ, শিল্প কারখানাগুলোর কালো ধোঁয়া নির্গমন কমাতে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার এবং শিল্পের বর্জ্য নিয়ন্ত্রণ।
  2. দূষিত বায়ুর পরিশোধন (Pollution Abatement):
    • বায়ুতে মিশ্রিত দূষিত উপাদানগুলো পরিশোধন করার জন্য পরিস্কারক যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে ফিল্টার, স্ক্রবার, সাইক্লোন, এবং স্যাফটকেট (scrubber) ব্যবহারের মাধ্যমে দূষিত গ্যাস ও কণা দূর করা হয়।
    • উদাহরণস্বরূপ, এসিড গ্যাস পরিশোধন করতে আলকালাইন স্ক্রাবিং ব্যবহার করা।
  3. দূষণ শোষণ (Pollution Absorption):
    • দূষিত বায়ুতে থাকা বিষাক্ত গ্যাসগুলি বিশেষ শোষক উপাদানের মাধ্যমে শোষিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, গাছপালা বা বিশেষ শোষক যন্ত্র দ্বারা কার্বন ডাইঅক্সাইড শোষণ করা।
    • উদাহরণস্বরূপ, বনায়ন এবং উদ্ভিদসংক্রান্ত প্রযুক্তির মাধ্যমে বায়ু পরিষ্কার করা।
  4. দূষণ পরিমাণ কমানো (Pollution Reduction):
    • নির্গমনের পরিমাণ কমানোর জন্য প্রযুক্তি এবং কৌশল ব্যবহার করা হয়, যেমন অধিক দক্ষ ইঞ্জিনের ব্যবহার, ক্লিন ফুয়েল প্রযুক্তি, এবং শক্তির দক্ষতা বৃদ্ধির কৌশল।
    • উদাহরণস্বরূপ, ইলেকট্রনিক যানবাহন ব্যবহার এবং পুনঃব্যবহারযোগ্য শক্তির উৎসে পরিবর্তন।
  5. প্রতিকূল অবস্থার নিয়ন্ত্রণ (Control of Adverse Conditions):
    • পরিবেশে বিদ্যমান প্রতিকূল অবস্থার যেমন বায়ুর গতি, আর্দ্রতা, এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য পরিবেশ পর্যবেক্ষণ প্রযুক্তি এবং পূর্বাভাস ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রভাব কমানো হয়।
  6. শিক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধি (Education and Awareness):
    • বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে জনসচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জনগণকে বায়ুদূষণের প্রভাব সম্পর্কে সচেতন করে তাদের আচরণ পরিবর্তন করতে সাহায্য করা হয়। এটি পরিবেশ সংরক্ষণে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
    • উদাহরণস্বরূপ, সরকারী প্রচারণা, পরিবেশ সংরক্ষণ নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম ইত্যাদি।

সারাংশ


বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য যে কৌশলগুলি প্রয়োগ করা হয় তা পরিবেশের সুস্থতা এবং জনস্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এগুলির মধ্যে উৎস নিয়ন্ত্রণ, দূষিত বায়ুর পরিশোধন, দূষণ শোষণ, দূষণ পরিমাণ কমানো, প্রতিকূল পরিবেশের নিয়ন্ত্রণ এবং সচেতনতা বৃদ্ধি অন্যতম। এসব কৌশলের সমন্বয়ে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব এবং পরিবেশগত স্থিতিশীলতা অর্জন করা যেতে পারে।

Content added By
Promotion