মদিনা হিযরত

অষ্টম শ্রেণি (মাধ্যমিক ২০২৪) - ইসলাম শিক্ষা - Islamic Study - আদর্শ জীবন চরিত | | NCTB BOOK
8
8

মদিনায় হিজরত

৬২২ খ্রিস্টাব্দে মহানবি (সা.) জন্মভূমি মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু হযরত আবু বকর (রা.) হিজরতের সঙ্গী ছিলেন। মদিনায় যাত্রা পথে তাঁরা সাওর পর্বতের গুহায় আশ্রয় নেন। ঘটনাচক্রে কাফিরদের একটি দল সাওর পাহাড়ের নিকটে এসে উপস্থিত হয়। হযরত আবু বকর (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বিচলিত হয়ে পড়েন। তখন নবি করিম (সা.) তাকে সান্তনা দিয়ে বলেন-

لَا تَحْزَنْ إِنَّ اللَّهَ مَعَنَا

অর্থ: তুমি চিন্তা করো না, নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাদের সঙ্গে আছেন। (সূরা আত-তওবা, আয়াত: ৪০)

পর্বতের গুহায় তাঁরা তিনদিন অবস্থান করেন। এ সময় হযরত আবু বকর (রা.)-এর কন্যা হযরত আসমা (রা.) তাঁদের জন্য গোপনে খাবার পৌঁছে দিতেন। এখানে ৩দিন অবস্থানের পর ৪র্থ দিনে তাঁরা লোহিত সাগরের অপরিচিত পথ ধরে ইয়াসরিবের দিকে যাত্রা করেন। ছয় দিনের অবিরাম যাত্রার পর ৬২২ খ্রিস্টাব্দের ২২ সেপ্টেম্বর সোমবার তিনি ইয়াসরিবের কয়েক মাইল দূরে কুবা নামক স্থানে পৌঁছেন। এখানে চার দিন থাকার পর ২৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার মহানবি (সা.) মদিনায় (ইয়াসরিব) পৌঁছেন। ইসলামের ইতিহাসে মহানবি (সা.)- এর মক্কা থেকে মদিনায় গমনকেই হিজরত বলা হয়। মহানবি (সা.)-এর আগমনে খুশি হয়ে ইয়াসরিববাসী এর নতুন নাম রাখেন মদিনাতুন্নবি বা নবির শহর।

মদিনায় হিজরতের গুরুত্ব

মহানবি (সা.) -এর মদিনায় হিজরত একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনা। এর ফলে ইসলামের জয়যাত্রা শুরু হয়। মুসলমানদের কষ্টের জীবনের অবসান ঘটে। ইসলামের অনুসারীর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে। আশেপাশের অঞ্চলে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে যায়। অল্প দিনের মধ্যেই মহানবি (সা.) মদিনার আউস, খাযরাজ, বনু নাযির, বনু কারনুকা ও তাদের বন্ধু গোত্রসমূহ নিয়ে একটি ইসলামি সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থার গোড়াপত্তন করতে সক্ষম হন। সকল গোত্র ও সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ করে একটি জাতি গঠন করেন। ফলে মদিনাবাসী নিজেদের কলহ-বিবাদ ভুলে গিয়ে ভ্রাতৃত্ববোধে উদ্বুদ্ধ হয়। এভাবে মহানবি (সা.) সকল ধর্মের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করে একটি আদর্শ রাষ্ট্র গঠন করতে সক্ষম হন।

Content added By
Promotion