রক্তের পিএইচ নিয়ন্ত্রণ

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - জীববিজ্ঞান - জীববিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্র | NCTB BOOK

রক্তের pH নিয়ন্ত্রণ (Control of Blood pH):
পিএইচ (pH) হচ্ছে হাইড্রোজেন আয়ন ঘনত্বের একটি পরিমাপক। নিরপেক্ষ pH হচ্ছে 7.0, এসিড pH হয় 7-এর নিচে আর ক্ষারীয় pH হছে 7-এর উপরে। কিছু রাসায়নিক পদার্থ দ্রবণে pH-এর পরিবর্তনকে প্রতিহত করতে সক্ষম। এসব পদার্থকে বলে বাফার (buffers)। রক্তের প্লাজমার স্বাভাবিক pH হচ্ছে 7.4। এ মাত্রা যথাসম্ভব বজায় না রাখলে  মারাত্মক বিপর্যয়  ঘটে যেতে পারে। দেহে  ক্ষারের চেয়ে বেশি এসিড বেশি উৎপন্ন হয়। অতএব, এসিডিটি কমানোর বিষয়টি অত্যন্ত জরুরী।এসিডিটি বেড়ে যাওয়ার একটি কারণ হচ্ছে কোষীয় শ্বসনে উৎপন্ন CO2। এটি দ্রবীভূত হয়ে H2CO3  (কার্বনিক এসিড) নামে একটি দুর্বল এসিডে পরিণত হয়। এটি ভেঙ্গে H+ ও H2CO3 (হাইড্রোজেন কার্বনেট আয়ন) উৎপন্ন হয়। CO2 এর ঘনত্ব বেশি হয়ে গেলে পরিত্রাণ পেতে প্রতিবর্ত সাড়া হিসেবে শ্বাসপ্রশ্বাসের হার বেড়ে যায় । HCO3–  বাফার হিসেবে কাজ করতে পারে কারণ H+ এর ঘনত্ব বেশি হয়ে গেলে এগুলো H2CO3 গঠন করে । রক্তে HCO3– ও ফসফেট বাফার অতিরিক্ত H+ প্রতিরোধে সাহায্য করে। এ কারণে রক্তের pH কমে না। প্লাজমার স্বাভাবিক pH এ যেন পরিবর্তন না ঘটে সে উদ্দেশে নেফ্রনের নিকটবর্তী ও দূরবর্তী প্যাঁচানো নালিকা এবং সংগ্রাহী নালি নিম্নোক্ত দু’ভাবে কাজ করে-

রক্ত অতিএসিডিক হতে শুরু করলে দূরবর্তী নালিকা ও সংগ্রাহী নালির কোষগুলোর সাহায্যে রক্ত থেকে H+ সক্রিয় পরিবহন (active transport)-এর মাধ্যমে নালিকাতে পরিবাহিত হয়। CO2 যদি H+ এর উৎস হয়ে থাকে তাহলে HCO3–  ও উৎপন্ন হয়ে ব্যাপন প্রক্রিয়ায় রক্তে ফেরত যাবে । pH বেড়ে গেলে বিপরীত ঘটনা ঘটবে। এসব পরিবর্তনের কারণে মূত্রের pH 4.5-8.5 পর্যন্ত হতে পারে।
pH কমে গেলেও বৃক্ককোষে অ্যামোনিয়াম বেইস (base) আয়ন (NH4+) সৃষ্টিতে উদ্দীপ্ত হয়। NH+ এসিডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বৃক্কে বাহিত হয় এবং অ্যামোনিয়াম লবণ হিসেবে রেচিত হয়।

Content added By
Promotion