বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের রাষ্ট্র ব্যবস্থা লক্ষ করা যায় । নিম্নে রাষ্ট্রের বিভিন্ন ধরন লক্ষ করি ।
অর্থনীতির ভিত্তিতে রাষ্ট্র
সম্পত্তি বা অর্থনৈতিক ব্যবস্থার উপর নিয়ন্ত্রণ থাকা না-থাকার ভিত্তিতে রাষ্ট্র দুই ধরনের হয়, যেমন- পুঁজিবাদী রাষ্ট্র ও সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র।
পুঁজিবাদী রাষ্ট্র
পুঁজিবাদী রাষ্ট্র বলতে সেই রাষ্ট্রকে বোঝায়, যেখানে সম্পত্তির উপর নাগরিকদের ব্যক্তিগত মালিকানা স্বীকার করা হয় । এ সরকারব্যবস্থায় উৎপাদনের উপাদানসমূহ (ভূমি, শ্রম, মূলধন ও ব্যবস্থাপনা) ব্যক্তিগত মালিকানায় থাকে । এর উপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। অবাধ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থা পরিচালিত হয়। এ ধরনের রাষ্ট্রে নাগরিকগণ সম্পদের মালিকানা ও ভোগের ক্ষেত্রে স্বাধীন । বর্তমান বিশ্বের অধিকাংশ রাষ্ট্রই পুঁজিবাদী ।
সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র
সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলতে সেই ধরনের রাষ্ট্রকে বোঝায়, যা ব্যক্তিমালিকানা স্বীকার করে না। এতে উৎপাদনের উপকরণগুলো রাষ্ট্রীয় মালিকানায় থাকে। রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে উৎপাদন ও বণ্টনের ব্যবস্থা পরিচালিত হয়। এটি পুঁজিবাদী রাষ্ট্রের বিপরীত। সমাজতন্ত্রে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যকে স্বীকার করা হয় না। এ ধরনের রাষ্ট্রে একটিমাত্র রাজনৈতিক দল থাকে। গণমাধ্যম রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে থাকে । বিরোধী মত প্রচারের সুযোগ থাকে না । যেমন- চীন ও কিউবা সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র ।
ক্ষমতার উৎসের ভিত্তিতে রাষ্ট্র
ক্ষমতার উৎসের ভিত্তিতে রাষ্ট্রকে দুভাগে ভাগ করা যায় । যথা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও একনায়কতান্ত্রিক রাষ্ট্র ।
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র
যে শাসন ব্যবস্থায় রাষ্ট্রের শাসনক্ষমতা জনগণের হাতে ন্যস্ত থাকে, তাকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলে । এটি এমন একটি শাসন ব্যবস্থা যেখানে শাসনকার্যে জনগণের সকলে অংশগ্রহণ করতে পারে এবং সকলে মিলে সরকার গঠন করে । এটি জনগণের অংশগ্রহণে, জনগণের দ্বারা এবং জনগণের কল্যাণার্থে পরিচালিত একটি শাসন ব্যবস্থা। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনগণের মতপ্রকাশ ও সরকারের সমালোচনা করার সুযোগ থাকে । এতে নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় অর্থাৎ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তিত হয়। একাধিক রাজনৈতিক দল থাকে, সকলের স্বার্থরক্ষার সুযোগ থাকে এবং নাগরিকের অধিকার ও আইনের শাসনের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। বাংলাদেশ, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ইত্যাদিসহ পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা রয়েছে ।
আরও দেখুন...